লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার তেওয়ারীগঞ্জে ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার দায়ে পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেছে।
পরে নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাইন ভুলু ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেন বোরহান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল সোমবার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
একটি মামলায় তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের বিজয়ী চেয়ারম্যান ওমর ইবনে হুছাইন ভুলুকে প্রধান ও পরাজিত প্রার্থী আকতার হোসেন বোরহান চৌধুরীকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। এতে আরও ১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
অপর মামলাতেও ওই দুজনসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর মডেল থানার ওসি সাইফ উদ্দিন আনোয়ার।
জানা গেছে, গত রবিবার তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আঁধার মানিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আক্তার হোসেন বোরহান চৌধুরীর লোকজন পুলিশ ও আনসার সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে রামগতি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সাইফুল আলমের গাড়ির গ্লাস ভেঙে যায়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ রাউন্ড রাবার বুলেট, চার রাউন্ড গ্যাস সেল এবং দুই রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় সদর থানার এসআই মো. কাউসার বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
একই সময় ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শহর কসবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ব্যালট বাক্স নিয়ে আসার সময় এক পক্ষ পুলিশকে বাধা দেয়। সেখানে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সেখান থেকে রাতেই পুলিশ নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক ইবনে হুছাইন ভুলু ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আকতার হোসেন বোরহান চৌধুরীকে আটক করে। এ ঘটনায় ভুলুকে প্রধান আসামি ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বোরহান চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০০-৫০০ জনকে বিবাদী করে মামলা করা হয়। মামলার বাদী সদর থানার এসআই জালাল উদ্দিন। ওই মামলায় চেয়ারম্যান ভুলু এবং পরাজিত প্রার্থী বোরহান চৌধুরীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক হুসাইন ইবনে ভুলু আনারস প্রতীকে ৭ হাজার ৫৪২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তার হোসেন বোরহান চৌধুরী পেয়েছেন অটোরিকশা প্রতীকে ৬ হাজার ২৩৯ ভোট।