ঢাকা ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

আশালতার খুনি তারই প্রতিবেশী

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:৩৮ পিএম
আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:০১ পিএম
আশালতার খুনি তারই প্রতিবেশী
ছবি : সংগৃহীত

দেনাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন আশালতা দাসের প্রতিবেশ বিশ্বজিৎ বিশ্বাস। তাদের  বাপ-দাদারা বংশানুক্রমে ঠাকুরুন বাড়িতে কাজ করতেন। তাদের বাড়িটিও ঠাকুরুন বাড়ির দানের জমিতে। আর এই বাড়ির সন্তানের হাতেই খুন হলেন গৃহকর্ত্রী আশালতা। 

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সরিষা ইউনিয়নের প্রেমটিয়া গ্রামের আশালতা দাস (৭৫)। স্বামী সন্তোষ দাস মারা গেছেন ১১ বছর আগে। দুই মেয়ে বিয়ে হয়েছে অনেক বছর। বাড়িতে একাই বসবাস করতেন তিনি। মেয়ে-জামাই, নাতি-নাতনিরা তাদের কাছে রাখার জন্য অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বাড়িতে কাজের লোক ছিল। মেয়ে-জামাই বাজার করে দিতেন। কয়েকশ বছরের পুরাতন বাড়িটিতে এভাবেই বাস করতেন আশালতা দাস।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাড়ির দেখভালের দায়িত্বে থাকা সুকুমার মজুমদার গেটে এসে অনেক ডাকাডাকির পরও ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে তার ছেলে সীমানাপ্রাচীর টপকে বাড়ির ভেতরে গিয়ে দেখে আশালতার রক্তাক্ত দেহ ঘরের বারান্দায় পড়ে রয়েছে।

আশালতার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার মানুষ বাড়িতে ভিড় করেন। কারণ আশালতার বাড়ি ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। তাদের দান করা জমিতে এলাকায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা নেই। আশালতার বাড়িটি এলাকায় ঠাকুরুন বাড়ি হিসেবে পরিচিত। এমন মানুষকে কে হত্যা করবে! কেনই-বা হত্যা করবে!

পুলিশ এসে দেখে, আশালতার শরীরে কোনো সোনার গহনা নেই। পরে পুলিশ আশালতার প্রতিবেশী বিশ্বজিৎ বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। বিশ্বজিতের ঘর আশালতার ঘর থেকে ১০ ফুট দূরে। তার বাবার নাম সুজিত বিশ্বাস। তিনি পেশায় একজন ইলেকট্রনিক মিস্ত্রি। স্থানীয় সরিষা বাজারে তার একটা ইলেক্ট্রনিক্সের দোকান রয়েছে। বিশ্বজিতের দেড় বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে।

পরে পুলিশ বিশ্বজিতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার দোকান থেকে আশালতার গলার স্বর্ণের চেইন, কানের দুল ও হাতের বালা উদ্ধার করে। এ ছাড়া একটি নালা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়িটি উদ্ধার করে পুলিশ। 

আশালতার ছোট মেয়ে পলি দাস বলেন, ‘আমার মা সব সময় সোনার গহনা পরতেন। এই গহনার জন্যই আমার মাকে খুন করল। ওরা আমাদের বাড়ির খাবার খেয়েই বড় হয়েছে। আমাদের জমিতে বসবাস করেছে। তারাই এ কাজ করল। আমার মায়ের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা ছিল না।’

আশালতার বড় জামাই রাজবাড়ী আদালতের সিনিয়র আইনজীবী স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এই বাড়িটি একটি ঐতিহাসিক বাড়ি। বাড়ি ছেড়ে আমার শাশুড়ি আমার বাসায় গিয়েও থাকত না। বাড়িটাকে এত ভালোবাসত। কিন্তু প্রতিবেশী ছেলেটা কী করল! কিছু বলার ভাষা নেই।’

প্রতিবেশী স্কুলশিক্ষক দ্বীপক দাস বলেন, ‘আমরা খুবই মর্মাহত। বলার ভাষা আমাদের নেই। এখনো আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। কারণ দুইজনের দুই বাড়ির দূরত্ব কয়েক হাত। বিশ্বজিতের বাবা, তার বাবা সবাই আশালতার বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছে। এখনো এই ঠাকুরুন বাড়ির সাহায্য-সহযোগিতা নিয়েই ওরা বেঁচে আছে। তাদের দ্বারা এই কাণ্ড এটা আসলে ভাবাই যায় না।’

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জিএম আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনার পাঁচ ঘণ্টার মধ্যে আমরা আসামিকে ধরতে পেরেছি। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের রহস্যও উদ্ঘাটন করতে পেরেছে পুলিশ। বিশ্বজিৎ একটি বিদ্যালয়ে দপ্তরি পদে চাকরির জন্য ঘুষ দেয়। কিন্তু চাকরি হয়নি, টাকাও ফেরত পায়নি। এসব মিলিয়ে তার অনেক টাকার দেনা হয়ে যায়। তখন সিদ্ধান্ত নেয় আশালতার গহনা ছিনতাই করবে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গহনা ছিনতাই করতেই এ হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাতুড়ি, গামছা এগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডটি সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে হয়। প্রথমে গামছা দিয়ে আশালতাকে গলায় ফাঁস দেয় বিশ্বজিৎ। পরে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় বাড়ি দেয়। 

সুমন বিশ্বাস/জোবাইদা/অমিয়/

মাগুরায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩৭ পিএম
মাগুরায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা
ছবি: খবরের কাগজ

মাগুরা শহরের পূর্ব দোয়ারপাড় এলাকা থেকে তীর্থ রুদ্র (২১) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে আল-আমীন ট্রাস্ট পূর্ব পুকুরপাড় থেকে লশাটি উদ্ধার করা হয়। 

নিহত তীর্থ রুদ্র মাগুরা শহরের পুরাতন বাজার এলাকার নিমাই রুদ্রের ছেলে। চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল সে। 

পুলিশ জানায়, তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী রাসেল খবরের কাগজকে বলেন, স্থানীয়রা সকালে পুকুরপাড়ে এক যুবকের লাশ দেখে খবর দিলে লাশটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তার পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরে পিবিআই ও সিআইডির তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। 

ওসি জানান, তার বাড়ি শহরের পুরাতন বাজার এলাকায়। সে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল বলে তার পরিবার জানিয়েছে। রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। নিহতের গলা, মাথা, শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

কাশেমুর রহমান/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

সাক্ষীর অনুপস্থিতি ও বৈরী সাক্ষ্যে খালাস পাচ্ছে দুর্ধর্ষ আসামিরা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৬ এএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৬ এএম
সাক্ষীর অনুপস্থিতি ও বৈরী সাক্ষ্যে খালাস পাচ্ছে দুর্ধর্ষ আসামিরা
প্রতীকী ছবি

২০০৫ সালের ৯ এপ্রিল ঢাকার শাজাহানপুর ফুটওভার ব্রিজের নিচ থেকে স্থানীয় জনগণ একটি ব্যাগসহ শংকর চন্দ্র দেবনাথ ও জাকির হোসেন নামের দুজনকে আটক করে। তাদের ব্যাগে পাওয়া যায় একটি বালকের কাটা মাথা। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৬ সালের মার্চে ওই বালককে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শংকর ও জাকির হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিচারিক আদালত। এরপর নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন।

২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় যেসব পুলিশকে সাক্ষী করা হয়েছিল তারা কেউ সাক্ষ্য দিতে আসেননি।

সে সময়ে আইনজীবী শিশির মনির জানান, সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে না আসায় দুজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে পুলিশ কেন সাক্ষ্য দিতে এল না, সে জন্য তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা যায়, হত্যার শিকার ওই বালকটি গাজীপুর ভাওয়াল শালবনের ছিন্নমূল শিশু। তাকে কেন হত্যা করা হয়েছিল, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি পুলিশি তদন্তে।

পাঁচ বছর আগে হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মহিউদ্দিনসহ চারজনকে একটি মামলায় বেকসুর খালাস দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা ওই মামলাটির রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর আপিল করা হবে বলে সেই সময় জানিয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ। তবে আজ পর্যন্ত সেই মামলায় কোনো আপিল দায়ের হয়নি। 

শুধু এটিই নয়, সন্ত্রাসবিরোধী দমন আইনের ৮৬ শতাংশ মামলায় আসামিরা খালাস পেয়ে গেলেও পরবর্তী আর কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়নি রাষ্ট্রপক্ষ। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়নি একটি মামলায়ও।

একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর দায়ের করা ওই মামলায় আইসিটি ও পাবলিক পরীক্ষা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছিল। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৪ জুন ১২৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক আইনে দুটি আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। সম্প্রতি আইসিটি আইনের অভিযোগ থেকে সব আসামিকে খালাস দেন আদালত।

কারণ হিসেবে আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। মাত্র একজন সাক্ষী আদালতে হাজির হলেও তিনি বৈরী (অপরাধীদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া) সাক্ষ্য দিয়েছেন।

পুলিশের একাধিক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে জানান, সাক্ষীর অনুপস্থিতি ও বৈরী সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে অসংখ্য মামলা থেকে সাধারণ থেকে দুর্ধর্ষ আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলার তদন্তে ত্রুটি, যথাযথভাবে সাক্ষীদের ব্রিফ না করা, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে অনীহা এবং আসামিপক্ষ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েও অনেক সাক্ষী বৈরী সাক্ষ্য দিচ্ছেন। আবার মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক সাক্ষী মারা যান, অনেকেই দূরে বসবাস করার কারণে সাক্ষ্য দিতে আসতে চান না। পুলিশের সাক্ষীদেরও একই অবস্থা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য বলছে, সাক্ষীর জন্য সমন জারি করার পরও আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার হার মাত্র ৩৬ দশমিক শতাংশ। বাকি ৬৩ দশমিক ২০ শতাংশ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা যাচ্ছে না।

বৈরী সাক্ষীর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈরী সাক্ষ্য দেওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রকৃত সাক্ষী উপস্থিত না থাকা। তখন বানানো সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। পুলিশ কর্মকর্তারা অনেক সময় যে কাজটি করেন তা হলো- উদ্ধারজনিত মামলা করার সময় সাদা কাগজে সাক্ষীদের স্বাক্ষর নেন। ফলে সাক্ষী হয় আদালতে অনুপস্থিত থাকেন অথবা বৈরী সাক্ষ্য দেন।

ঢাকার আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আনোয়ারুল কবির বাবুল খবরের কাগজকে বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা, ভাসমান লোককে সাক্ষী করা, সাক্ষীর যাতায়াত বা অন্যান্য খরচ বহন না করা ও সাক্ষীকে সমন জারির নোটিশ না পৌঁছানোর কারণে সাক্ষীরা মূলত আদালতে হাজির হতে পারেন না। এ ছাড়া অর্থ দিয়ে আসামিপক্ষ সাক্ষীকে ম্যানেজ করার কারণে বৈরী সাক্ষ্য দিয়ে থাকেন। ফলে দীর্ঘদিন এভাবে একটি মামলা চলতে থাকলে সাক্ষীর অনুপস্থিতির কারণে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। তাই এসব বিষয়ে পুলিশ সদস্যকে আরও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। তবেই যথাযথ সাক্ষীকে হাজির করা সম্ভব হবে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, সর্বশেষ মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় জারি করা সমনের মধ্যে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ সাক্ষীর আদালতে হাজির থাকার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার। একই সঙ্গে প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জারি করা সমনের কত ভাগ সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন, সেই তথ্য উপস্থাপনের জন্য ডিসি প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, সাক্ষী হাজির করা খুবই কঠিন একটি কাজ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সাক্ষী অসুস্থ, বয়স্ক, পঙ্গু ও অনেকে মারাও যান। ধরুন, একটি লোকের বাড়ি লালমনিরহাট, তিনি যদি অসুস্থ থাকেন, তবে তাকে আদালতে হাজির করা খুবই কঠিন কাজ।

তিনি বলেন, ‘সাক্ষীদের ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হলো তিনি যে সাক্ষী দিতে আদালতে আসবেন সেই খরচ তার কাছে থাকে না। এ ক্ষেত্রে অনেক মামলায় আমরা নিজের টাকা খরচ করে সাক্ষীকে হাজির করেছি, এমনও নজির রয়েছে।’

খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সাক্ষী হাজিরের ক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকি। এ নিয়ে আমাদের সব সময় প্রচেষ্টা ছিল, থাকবে।’

কলকাতায় চুরি হওয়া আইফোন কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম
কলকাতায় চুরি হওয়া আইফোন কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বেনিয়াপুকুর থেকে হারিয়ে যাওয়া মৌটুসী গাঙ্গুলি নামে একজনের ব্যবহৃত ১৩ সিরিজের একটি আইফোন ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে ডিএমপির শাহজাহানপুর থানা পুলিশ।

রবিবার (৩০ জুন) ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে ফোনটি উদ্ধার করা হয়।

শাহজাহানপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, ২০২৩ সালের জুলাই মাসের ২৬ তারিখ কলকাতার বেনিয়াপুকুর থানা এলাকা থেকে হারিয়ে যায় মৌটুসী গাঙ্গুলির ব্যবহৃত এই আইফোনটি। পরে বেনিয়াপুকুর থানায় মৌটুসী গাঙ্গুলির হয়ে জিডি করেন তার মেয়ে অস্মিতা গাঙ্গুলী।

পরবর্তীতে অস্মিতা গাঙ্গুলী ভারত থেকেই আইফোনের বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানতে পারেন, তার মায়ের মোবাইলের বর্তমান লোকেশন বাংলাদেশ। তখন থেকেই তিনি হন্যে হয়ে খোঁজ করতে থাকেন কীভাবে তার মায়ের মোবাইলফোনটি উদ্ধার করা যায়। পরে ইন্টারনেট ঘেটে খুঁজতে থাকেন উপায়।

একপর্যায়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারেন- বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহজাহানপুর থানায় কর্মরত এসআই মিলটন কুমার দেব দাস হারিয়ে যাওয়া মোবাইল উদ্ধারে অত্যন্ত দক্ষ এবং তার কর্মদক্ষতায় এই পর্যন্ত অগণিত হারানো মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তখন তিনি কলকাতা পুলিশের পরামর্শে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে তার জিডির একটি কপি জমা দেন। 

পরবর্তীতে তিনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে শাহজাহানপুর থানার এসআই মিলটন কুমার দেব দাসের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দেওয়া জিডি’র একটি কপি তাকে পাঠিয়ে দেন। পরে তাকে বিস্তারিত জানিয়ে মোবাইলটি উদ্ধার করে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।

এর পর থেকেই অস্মিতা গাঙ্গুলী নিয়মিত এসআই মিলটন কুমার দেব দাস-এর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা চালিয়ে যান।

পরে এসআই মিলটন কুমার দেব দাস ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তাদের পরামর্শে অস্মিতা গাঙ্গুলীর মায়ের হারিয়ে যাওয়া আইফোন উদ্ধারের চেষ্টা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে প্রযুক্তির সহায়তায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে সন্ধান মেলে কাঙ্খিত সেই মোবাইল ফোনের।

প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে হারিয়ে যাওয়া আইফোনটি কীভাবে বাংলাদেশে এলো? এ নিয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।

অমিয়/

আ.লীগ নেতা হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৪ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫০ এএম
আ.লীগ নেতা হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীপাড়া এলাকায় দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা ঘটনায় মূল পরিকল্পনারকারী আলাউদ্দিন ওরফে হীরাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদমজী র‌্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভীর আহাম্মেদ পাশা এ তথ্য জানান। গ্রেপ্তাররা হলেন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আলাউদ্দিন ওরফে  হীরা (৩৫), আল আমিন (২২), রাসেল (২০) ও সানি (২৯)। নিহত সুরুজ মেম্বার ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ছিলেন।

র‌্যাব জানায়, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার  কাশিপুরের গেদ্দার বাজার আলীপাড়া এলাকায় ইট-বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সালাউদ্দিন সালু ও আলাউদ্দিন ওরফে হীরার সঙ্গে নিহত সুরুজ আলী মেম্বারের ছেলে মুন্না আহমেদের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জেরে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সালাউদ্দিন সালুর লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আগে থেকেই আলীপাড়া মসজিদের সামনে ওত পেতে থাকেন। মুন্না আহমেদের বাবা সুরুজ আলী জোহরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের সামনে এলে সন্ত্রাসীরা সুরুজ আলীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রাখেন। খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদেরও কুপিয়ে আহত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় সুরুজ আলীসহ আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরুজ আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। 

হত্যার ঘটনায় নিহতের ছেলে মুন্না আহমেদ বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়ার নামে অধ্যক্ষের প্রতারণা!

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়ার নামে অধ্যক্ষের প্রতারণা!
ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ

টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ছয় শিক্ষার্থীকে মূল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাসে প্রায় চার লাখ টাকা নিয়েছিলেন ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর কবির। 

তবে রবিবার (৩০ জুন) এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও ওই শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং স্কলারস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেয় ওই শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সেখানে কেউ একাধিক আর কেউ এক বিষয়ে পাস করতে পারেনি। সে কারণে নিয়মানুযায়ী কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ফরম ফিলাপ করেনি। পরে একজন শিক্ষকের পরামর্শে তারা ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি তাদের জনপ্রতি ৬৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত অভিভাবকরা প্রবেশপত্রের জন্য যোগাযোগ করলেও আলমগীর কবির সাড়া দেননি।

পরীক্ষার্থী ইফতেখার হোসেন রিজভীর অভিভাবক খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার ছেলে গণিতে ফেল করেছিল। রেজা স্যারের কথা অনুযায়ী আমরা এখানে এলে প্রিন্সিপাল বলেন তিনি সব করে দেবেন। ৬৫ হাজার টাকা করে দিতে হবে। আমি অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে দিয়েছি। কিন্তু এখন তো আমার ছেলে পরীক্ষা দিতে পারল না। প্রিন্সিপালও ফোন ধরেন না। কলেজে গিয়েও কাউকে পাইনি।’

আরেক অভিভাবক শাহীরুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি অধ্যক্ষকে ক্যাশ এবং বিকাশের মাধ্যমে ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু তারপরেও আমার চাচাতো ভাই পরীক্ষার প্রবেশপত্র পায়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ আলমগীর কবিরের বক্তব্য জানতে তার দুটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।