ঢাকা ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয় এমপি আজীমকে, পরিকল্পনা দেড় মাসের

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৪, ০২:০৬ পিএম
আপডেট: ২৩ মে ২০২৪, ০৪:৪৬ পিএম
বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয় এমপি আজীমকে, পরিকল্পনা দেড় মাসের

ভারতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে কলকাতায় পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। তবে তার দেহের খোঁজ পাওয়া যায়নি এখনো। জানা যায়, হত্যার পর লাশ টুকরো টুকরো করে লাগেজে ভরে গুম করা হয়েছে। 

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, এমপি আজীম হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী তারই বাল্যবন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আখতারুজ্জামান শাহীন। তিনিই নিখুঁত ছক করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে। এ জন্য খরচ করেছেন ৫ কোটি টাকা।

মরদেহ উদ্ধার না হলেও সুনির্দিষ্ট কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও কলকাতা পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসিক এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনসের একটি ফ্ল্যাটে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। হত্যার পর মরদেহ টুকরো টুকরো করে অজ্ঞাত স্থানে গুম করে খুনিরা। 

এ ঘটনায় পুলিশ ঢাকার মোহাম্মদপুর ও সাভার থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা কলকাতায় গিয়ে কিলিং মিশন শেষে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। আর এই পুরো কিলিং মিশনে নেতৃত্ব দেন শাহীনের আত্মীয় আমানউল্লাহ নামে এক উচ্চশিক্ষিত পেশাদার খুনি। যিনি একাধিক খুনের দায়ে অন্তত ২০ বছর জেল খেটেছেন। তাকে গ্রেপ্তার করে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এ ঘটনায় বাংলাদেশে তিনজন ছাড়াও ভারতে আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেছে সেখানকার পুলিশ। 

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরেই কলকাতার অভিজাত এলাকা নিউ টাউনের এই ফ্ল্যাটের খোঁজ পাওয়া যায়। শাহীনের ভাড়া করা ওই ফ্ল্যাটের দেয়ালে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে।

পুলিশের জেরায় গ্রেপ্তার তিনজন স্বীকার করেন যে, কলকাতার যে ফ্ল্যাটটিতে তারা ছিলেন, সেখানেই বালিশচাপা দিয়ে খুন করা হয়েছে আজীমকে। এর পর লাশ টুকরো টুকরো করে চারটি ব্যাগে ভরে গায়েব করা হয়। পরে ওই তিনজন বিভিন্ন পথে বাংলাদেশে ফিরে আসেন।

দুই দেশের পুলিশের সন্দেহ, হত্যাকাণ্ডের পেছনে সোনা চোরাকারবারের লেনদেন নিয়ে বিরোধ। 

আজীমের ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আখতরুজ্জামান শাহীন যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী। গত ১০ মে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী কলকাতায় বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করে দেশ থেকে ছয়জনের একটি কিলিং স্কোয়াড ভারতে নিয়ে যান। পরে ব্যবসায়িক আলোচনা করতে ফ্ল্যাটে ডেকে এমপি আজীমকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করা হয় লাশ। এরপর উবার ভাড়া করে লাগেজে ভরে সেই লাশ গুম করেন কিলিং মিশনের সদস্যরা।

একটি সূত্র জানায়, এরই মধ্যে শাহীনের ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে একটি ডায়েরি জব্দ করা হয়েছে। সেখানে ভাড়াটে খুনির কাকে কত টাকা দিয়েছেন, সে হিসাবও আছে।

ভাড়াটে দুই খুনির পাসপোর্ট করে দিয়েছেন শাহীন
হত্যা ছকের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ থেকে ভাড়াটে দুই খুনি জিহাদ ওরফে জুয়েল ও সিয়ামের পাসপোর্ট তৈরি করে দিয়েছেন শাহীন। এই দুইজন হত্যাকাণ্ডের সাত থেকে আট দিন আগে কলকাতায় যান। 

আজীমকে হত্যা করা হয় ১৩ মে
গত ১২ মে দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যান আজীম। সেদিন তিনি বরাহনগর থানা এলাকার মণ্ডলপাড়ায় বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। পরদিন দুপুরে তিনি চিকিৎসকের কাছে যাবেন বলে বাসা থেকে বের হন। বিকেলে বাসায় ফেরার কথা থাকলেও এদিন তিনি ফিরেননি। 

মিশনে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তারের পর জানা যায়, ভারতে যাওয়ার পরদিন ১৩ মে আজীমকে হত্যা করা হয়। বন্ধু গোপালের বাসা থেকে বের হওয়ার পর কলকাতায় প্রথমে একটি সাদা গাড়িতে আজীমকে তুলে নেয় এক ব্যক্তি। ওই গাড়িতে চালক, এমপিসহ তিনজন ছিলেন। কিছুদূর যাওয়ার পর লাল আরেকটি গাড়িতে ওঠেন আজীম। ওই গাড়িতে আজীমের বাল্যবন্ধু আখতারুজ্জামান শাহীনের বেয়াই সৈয়দ আমানুল্লাহ ছিলেন। এমপিরও পূর্বপরিচিত আমানুল্লাহ।

সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দুই দেশের গোয়েন্দারা বলছেন, ১৩ মে দুপুর পৌনে ১টার দিকে এমপিকে বহনকারী লাল গাড়িটি কলকাতার অভিজাত এলাকা নিউ টাউনের আবাসিক ভবন সঞ্জীবা গার্ডেনসে ঢোকে। বিকেল ৫টা ১১ মিনিটের দিকে এমপির জুতা ও পলিথিনের দুটি বড় ব্যাগ হাতে নিয়ে ওই বাসা থেকে আমানুল্লাহ ও কিলিং মিশনের আরেকজন বেরিয়ে আসেন।

গ্রেপ্তার তিনজনের বরাত গিয়ে গোয়েন্দারা সংবাদমাধ্যমকে জানান, হত্যার পর লাশের টুকরো চারটি ব্যাগে ভরা হয়। আরও দুটি ব্যাগ নিয়ে ১৪ মে ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যায় হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরেকটি গ্রুপ। 

কিলিং মিশনের প্রথম দল কলকাতায় যায় ৩০ এপ্রিল। এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, এমপি হত্যায় জড়িতদের মধ্যে রয়েছেন আজীমের বাল্যবন্ধু শাহীন ও তার বেয়াই আমানুল্লাহ। হত্যার ১৩ দিন আগে গত ৩০ এপ্রিল শাহীন, তার ‘গার্লফ্রেন্ড’ সেলিস্তি রহমান ও আমানুল্লাহ কলকাতা যান। সেখানে নিউ টাউনে তারা শাহীনের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ওঠেন। তবে আমানুল্লাহ ও সেলিস্তিকে কলকাতায় রেখে ১০ মে বৈধ পথে বাংলাদেশে ফিরে আসেন শাহীন। মূলত কিলিং মিশনের অংশ হিসেবে ঘনিষ্ঠ সহচর আমানুল্লাহকে নিয়ে আগেভাগে কলকাতায় যান।

তবে সেলিস্তি রহমান সরাসরি আজীম হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত কি-না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেলিস্তির বয়স ২০ থেকে ২৫-এর মধ্যে। তার বাড়ি টাঙ্গাইল। 

কলকাতায় শাহীনের ফ্ল্যাটে যখন এমপিকে খুন করা হয়, তখন সেলিস্তি সেখানে ছিলেন না। হত্যাকাণ্ডের পর ওই কক্ষে যান সেলিস্তি। ব্লিচিং পাউডারের উৎকট গন্ধ পেয়ে তার কারণ অন্যদের কাছে জানতে চান তিনি। তখন খুনিরা তাকে জানায়, ফ্ল্যাটে একজন মলত্যাগ করেছে। ওই গন্ধ দূর করতে ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হয়েছে।

তবে ১৫ মে আমানুল্লাহর সঙ্গে একই ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরেন সেলিস্তি।

গ্রেপ্তার আমানুল্লাহ জিজ্ঞাসাবাদে জানান, আজীমকে হত্যার জন্য শাহীনের সঙ্গে তার ৫ কোটি টাকার চুক্তি হয়। এ জন্য কিছু টাকা অগ্রিমও দিয়েছেন। হত্যার পর ঢাকায় এসে শাহীনের সঙ্গে দেখা করেন আমানুল্লাহ। ঢাকায় এসে মোহাম্মদপুরে বোনের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। সেখান থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

আমানুল্লাহ আরও জানান, ১২ মে এমপি আজীম কলকাতা যাবেন এটা আগে থেকেই জানতেন শাহীন। হত্যার প্রস্তুতি হিসেবে সেখানে চাপাতিও সংগ্রহ করে রাখেন। ভারতে যাওয়ার পর কৌশলে সংসদ সদস্যকে ফ্ল্যাটে ডেকে নেন। এরপর সিয়াম, ফয়সাল, মোস্তাফিজ ও জিহাদ চাপাতির মুখে আজীমকে জিম্মি করে শাহীনের পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেন। এ নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু হলে হঠাৎ বালিশচাপা দিয়ে আজীমকে হত্যা করা হয়।

হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ ঘেটে খুনের রহস্য উদ্ঘাটন
কলকাতায় সংসদ সদস্য আজীম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই কাজ শুরু করে গোয়েন্দারা। হত্যা মিশনে জড়িত সন্দেহভাজন একজনের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বাংলাদেশি গোয়েন্দার হাতে আসে। ওই নম্বরটি খুব ব্যবহৃত হয়। পরে ওই খুদেবার্তা ও ফোন নম্বরের সূত্র ধরে এমন একজনের খোঁজ মেলে, যিনি কিলিং মিশনে বড় ভূমিকা রাখেন। এর পর তার বিষয়টি ভারতীয় পুলিশকে জানানো হয়।

এদিকে আজীম হত্যার ঘটনায় ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা করেছে তার পরিবার। এরই মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

নারী পাচারের অভিযোগে এক সময় আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের ওয়ারেন্টভুক্ত ছিলেন আজীম। স্বর্ণ চোরাচালানের বিরোধের জের ধরেই দেড় মাস আগে এ খুনের পরিকল্পনা করা হয়। আজীমের বিরুদ্ধে হুন্ডি কারবার, মাদক চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

লাশের সন্ধানে কলকাতা পুলিশ
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মহাপরিদর্শক (সিআইডি) অখিলেশ চতুর্বেদী সাংবাদিকদের বলেন, আজীমের লাশ এখনো পায়নি পুলিশ। তবে কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে তারা মনে করছেন, তাকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি জানান, পূর্ব কলকাতার নিউ টাউন অঞ্চলে যে ফ্ল্যাটে আজীম উঠেছিলেন, সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরের কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার রায়ের। সন্দীপের কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামে এক ব্যক্তি।

অন্য একটি সূত্র বলছে, চোরাচালান ও অপরাধজগতের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে শাহীন ব্যারাকপুর এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনসে বেনামে এই ফ্ল্যাটটি কেনেন। ফ্ল্যাটের মালিক হিসেবে ঘনিষ্ঠ সন্দীপ রায়ের নাম ব্যবহার করেন তিনি।

ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে কী ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া গেছে, তা সুনির্দিষ্ট করে জানাননি অখিলেশ চতুর্বেদী। 

তিনি বলেন, পুলিশের ফরেনসিক বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে। অগ্রগতিও হয়েছে। তবে তারা কবে বেরিয়ে গেলেন, সে বিষয়ে আমরা তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলতে পারছি না। এটুকু বোঝা যাচ্ছে, ১৩ মে আজীম এখানে এসেছিলেন। তবে তার আগেও এসেছিলেন কি-না, সেটা আমরা এখনো জানি না।

আখতারুজ্জামান শাহীন এমপি আজীমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র শহিদুল ইসলাম সেলিমের আপন ছোট ভাই। অগাধ বিত্তের মালিক শাহীন এলাকায় সবার কাছে রহস্যময় মানুষ। আর আমানুল্লাহর বাড়ি খুলনার ফুলতলা এলাকায়। তিনি সম্পর্কে শাহীনের বিয়াই।

অমিয়/

মাগুরায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:৩৭ পিএম
মাগুরায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা
ছবি: খবরের কাগজ

মাগুরা শহরের পূর্ব দোয়ারপাড় এলাকা থেকে তীর্থ রুদ্র (২১) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে আল-আমীন ট্রাস্ট পূর্ব পুকুরপাড় থেকে লশাটি উদ্ধার করা হয়। 

নিহত তীর্থ রুদ্র মাগুরা শহরের পুরাতন বাজার এলাকার নিমাই রুদ্রের ছেলে। চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল সে। 

পুলিশ জানায়, তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী রাসেল খবরের কাগজকে বলেন, স্থানীয়রা সকালে পুকুরপাড়ে এক যুবকের লাশ দেখে খবর দিলে লাশটি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তার পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরে পিবিআই ও সিআইডির তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। 

ওসি জানান, তার বাড়ি শহরের পুরাতন বাজার এলাকায়। সে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিল বলে তার পরিবার জানিয়েছে। রাতে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হওয়ার পর থেকে সে নিখোঁজ ছিল। নিহতের গলা, মাথা, শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

কাশেমুর রহমান/ইসরাত চৈতী/অমিয়/

সাক্ষীর অনুপস্থিতি ও বৈরী সাক্ষ্যে খালাস পাচ্ছে দুর্ধর্ষ আসামিরা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৬ এএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৬ এএম
সাক্ষীর অনুপস্থিতি ও বৈরী সাক্ষ্যে খালাস পাচ্ছে দুর্ধর্ষ আসামিরা
প্রতীকী ছবি

২০০৫ সালের ৯ এপ্রিল ঢাকার শাজাহানপুর ফুটওভার ব্রিজের নিচ থেকে স্থানীয় জনগণ একটি ব্যাগসহ শংকর চন্দ্র দেবনাথ ও জাকির হোসেন নামের দুজনকে আটক করে। তাদের ব্যাগে পাওয়া যায় একটি বালকের কাটা মাথা। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ২০১৬ সালের মার্চে ওই বালককে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শংকর ও জাকির হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার বিচারিক আদালত। এরপর নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন।

২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় যেসব পুলিশকে সাক্ষী করা হয়েছিল তারা কেউ সাক্ষ্য দিতে আসেননি।

সে সময়ে আইনজীবী শিশির মনির জানান, সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে না আসায় দুজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে পুলিশ কেন সাক্ষ্য দিতে এল না, সে জন্য তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা যায়, হত্যার শিকার ওই বালকটি গাজীপুর ভাওয়াল শালবনের ছিন্নমূল শিশু। তাকে কেন হত্যা করা হয়েছিল, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি পুলিশি তদন্তে।

পাঁচ বছর আগে হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মহিউদ্দিনসহ চারজনকে একটি মামলায় বেকসুর খালাস দেন ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা ওই মামলাটির রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর আপিল করা হবে বলে সেই সময় জানিয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ। তবে আজ পর্যন্ত সেই মামলায় কোনো আপিল দায়ের হয়নি। 

শুধু এটিই নয়, সন্ত্রাসবিরোধী দমন আইনের ৮৬ শতাংশ মামলায় আসামিরা খালাস পেয়ে গেলেও পরবর্তী আর কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয়নি রাষ্ট্রপক্ষ। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়নি একটি মামলায়ও।

একইভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছিল পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর দায়ের করা ওই মামলায় আইসিটি ও পাবলিক পরীক্ষা আইনে অভিযোগ আনা হয়েছিল। তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৪ জুন ১২৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক আইনে দুটি আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। সম্প্রতি আইসিটি আইনের অভিযোগ থেকে সব আসামিকে খালাস দেন আদালত।

কারণ হিসেবে আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী হাজির করতে পারেনি। মাত্র একজন সাক্ষী আদালতে হাজির হলেও তিনি বৈরী (অপরাধীদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া) সাক্ষ্য দিয়েছেন।

পুলিশের একাধিক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে জানান, সাক্ষীর অনুপস্থিতি ও বৈরী সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে অসংখ্য মামলা থেকে সাধারণ থেকে দুর্ধর্ষ আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলার তদন্তে ত্রুটি, যথাযথভাবে সাক্ষীদের ব্রিফ না করা, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে অনীহা এবং আসামিপক্ষ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েও অনেক সাক্ষী বৈরী সাক্ষ্য দিচ্ছেন। আবার মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক সাক্ষী মারা যান, অনেকেই দূরে বসবাস করার কারণে সাক্ষ্য দিতে আসতে চান না। পুলিশের সাক্ষীদেরও একই অবস্থা।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য বলছে, সাক্ষীর জন্য সমন জারি করার পরও আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার হার মাত্র ৩৬ দশমিক শতাংশ। বাকি ৬৩ দশমিক ২০ শতাংশ সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা যাচ্ছে না।

বৈরী সাক্ষীর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈরী সাক্ষ্য দেওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রকৃত সাক্ষী উপস্থিত না থাকা। তখন বানানো সাক্ষী সাক্ষ্য দেন। পুলিশ কর্মকর্তারা অনেক সময় যে কাজটি করেন তা হলো- উদ্ধারজনিত মামলা করার সময় সাদা কাগজে সাক্ষীদের স্বাক্ষর নেন। ফলে সাক্ষী হয় আদালতে অনুপস্থিত থাকেন অথবা বৈরী সাক্ষ্য দেন।

ঢাকার আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আনোয়ারুল কবির বাবুল খবরের কাগজকে বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা, ভাসমান লোককে সাক্ষী করা, সাক্ষীর যাতায়াত বা অন্যান্য খরচ বহন না করা ও সাক্ষীকে সমন জারির নোটিশ না পৌঁছানোর কারণে সাক্ষীরা মূলত আদালতে হাজির হতে পারেন না। এ ছাড়া অর্থ দিয়ে আসামিপক্ষ সাক্ষীকে ম্যানেজ করার কারণে বৈরী সাক্ষ্য দিয়ে থাকেন। ফলে দীর্ঘদিন এভাবে একটি মামলা চলতে থাকলে সাক্ষীর অনুপস্থিতির কারণে আদালত মামলাটি খারিজ করে দেন। তাই এসব বিষয়ে পুলিশ সদস্যকে আরও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। তবেই যথাযথ সাক্ষীকে হাজির করা সম্ভব হবে।

ডিএমপি সূত্র জানায়, সর্বশেষ মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় জারি করা সমনের মধ্যে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ সাক্ষীর আদালতে হাজির থাকার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার। একই সঙ্গে প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে জারি করা সমনের কত ভাগ সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন, সেই তথ্য উপস্থাপনের জন্য ডিসি প্রসিকিউশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ড. খ. মহিদ উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, সাক্ষী হাজির করা খুবই কঠিন একটি কাজ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সাক্ষী অসুস্থ, বয়স্ক, পঙ্গু ও অনেকে মারাও যান। ধরুন, একটি লোকের বাড়ি লালমনিরহাট, তিনি যদি অসুস্থ থাকেন, তবে তাকে আদালতে হাজির করা খুবই কঠিন কাজ।

তিনি বলেন, ‘সাক্ষীদের ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হলো তিনি যে সাক্ষী দিতে আদালতে আসবেন সেই খরচ তার কাছে থাকে না। এ ক্ষেত্রে অনেক মামলায় আমরা নিজের টাকা খরচ করে সাক্ষীকে হাজির করেছি, এমনও নজির রয়েছে।’

খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘সাক্ষী হাজিরের ক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকি। এ নিয়ে আমাদের সব সময় প্রচেষ্টা ছিল, থাকবে।’

কলকাতায় চুরি হওয়া আইফোন কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৪ পিএম
কলকাতায় চুরি হওয়া আইফোন কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বেনিয়াপুকুর থেকে হারিয়ে যাওয়া মৌটুসী গাঙ্গুলি নামে একজনের ব্যবহৃত ১৩ সিরিজের একটি আইফোন ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করেছে ডিএমপির শাহজাহানপুর থানা পুলিশ।

রবিবার (৩০ জুন) ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে ফোনটি উদ্ধার করা হয়।

শাহজাহানপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, ২০২৩ সালের জুলাই মাসের ২৬ তারিখ কলকাতার বেনিয়াপুকুর থানা এলাকা থেকে হারিয়ে যায় মৌটুসী গাঙ্গুলির ব্যবহৃত এই আইফোনটি। পরে বেনিয়াপুকুর থানায় মৌটুসী গাঙ্গুলির হয়ে জিডি করেন তার মেয়ে অস্মিতা গাঙ্গুলী।

পরবর্তীতে অস্মিতা গাঙ্গুলী ভারত থেকেই আইফোনের বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানতে পারেন, তার মায়ের মোবাইলের বর্তমান লোকেশন বাংলাদেশ। তখন থেকেই তিনি হন্যে হয়ে খোঁজ করতে থাকেন কীভাবে তার মায়ের মোবাইলফোনটি উদ্ধার করা যায়। পরে ইন্টারনেট ঘেটে খুঁজতে থাকেন উপায়।

একপর্যায়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানতে পারেন- বাংলাদেশ পুলিশের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহজাহানপুর থানায় কর্মরত এসআই মিলটন কুমার দেব দাস হারিয়ে যাওয়া মোবাইল উদ্ধারে অত্যন্ত দক্ষ এবং তার কর্মদক্ষতায় এই পর্যন্ত অগণিত হারানো মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। তখন তিনি কলকাতা পুলিশের পরামর্শে কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে তার জিডির একটি কপি জমা দেন। 

পরবর্তীতে তিনি ইন্টারনেটের মাধ্যমে শাহজাহানপুর থানার এসআই মিলটন কুমার দেব দাসের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশ হাইকমিশনে জমা দেওয়া জিডি’র একটি কপি তাকে পাঠিয়ে দেন। পরে তাকে বিস্তারিত জানিয়ে মোবাইলটি উদ্ধার করে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেন।

এর পর থেকেই অস্মিতা গাঙ্গুলী নিয়মিত এসআই মিলটন কুমার দেব দাস-এর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা চালিয়ে যান।

পরে এসআই মিলটন কুমার দেব দাস ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তাদের পরামর্শে অস্মিতা গাঙ্গুলীর মায়ের হারিয়ে যাওয়া আইফোন উদ্ধারের চেষ্টা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে প্রযুক্তির সহায়তায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে সন্ধান মেলে কাঙ্খিত সেই মোবাইল ফোনের।

প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে হারিয়ে যাওয়া আইফোনটি কীভাবে বাংলাদেশে এলো? এ নিয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে বলে জানা গেছে।

অমিয়/

আ.লীগ নেতা হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৪ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫০ এএম
আ.লীগ নেতা হত্যায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ গ্রেপ্তার ৪

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার আলীপাড়া এলাকায় দিন-দুপুরে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা ঘটনায় মূল পরিকল্পনারকারী আলাউদ্দিন ওরফে হীরাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত শনিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

রবিবার (৩০ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদমজী র‌্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক তানভীর আহাম্মেদ পাশা এ তথ্য জানান। গ্রেপ্তাররা হলেন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আলাউদ্দিন ওরফে  হীরা (৩৫), আল আমিন (২২), রাসেল (২০) ও সানি (২৯)। নিহত সুরুজ মেম্বার ফতুল্লার কাশিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ছিলেন।

র‌্যাব জানায়, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার  কাশিপুরের গেদ্দার বাজার আলীপাড়া এলাকায় ইট-বালুর ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সালাউদ্দিন সালু ও আলাউদ্দিন ওরফে হীরার সঙ্গে নিহত সুরুজ আলী মেম্বারের ছেলে মুন্না আহমেদের দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ওই বিরোধের জেরে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সালাউদ্দিন সালুর লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আগে থেকেই আলীপাড়া মসজিদের সামনে ওত পেতে থাকেন। মুন্না আহমেদের বাবা সুরুজ আলী জোহরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদের সামনে এলে সন্ত্রাসীরা সুরুজ আলীকে কুপিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে রাখেন। খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা এগিয়ে এলে সন্ত্রাসীরা তাদেরও কুপিয়ে আহত করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় সুরুজ আলীসহ আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরুজ আলীকে মৃত ঘোষণা করেন। 

হত্যার ঘটনায় নিহতের ছেলে মুন্না আহমেদ বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়ার নামে অধ্যক্ষের প্রতারণা!

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
পরীক্ষায় সুযোগ দেওয়ার নামে অধ্যক্ষের প্রতারণা!
ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ

টেস্ট পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ ছয় শিক্ষার্থীকে মূল পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ার আশ্বাসে প্রায় চার লাখ টাকা নিয়েছিলেন ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর কবির। 

তবে রবিবার (৩০ জুন) এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও ওই শিক্ষার্থীরা প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং স্কলারস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেয় ওই শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সেখানে কেউ একাধিক আর কেউ এক বিষয়ে পাস করতে পারেনি। সে কারণে নিয়মানুযায়ী কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ফরম ফিলাপ করেনি। পরে একজন শিক্ষকের পরামর্শে তারা ঢাকা পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তিনি তাদের জনপ্রতি ৬৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বোর্ডের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত অভিভাবকরা প্রবেশপত্রের জন্য যোগাযোগ করলেও আলমগীর কবির সাড়া দেননি।

পরীক্ষার্থী ইফতেখার হোসেন রিজভীর অভিভাবক খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার ছেলে গণিতে ফেল করেছিল। রেজা স্যারের কথা অনুযায়ী আমরা এখানে এলে প্রিন্সিপাল বলেন তিনি সব করে দেবেন। ৬৫ হাজার টাকা করে দিতে হবে। আমি অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে দিয়েছি। কিন্তু এখন তো আমার ছেলে পরীক্ষা দিতে পারল না। প্রিন্সিপালও ফোন ধরেন না। কলেজে গিয়েও কাউকে পাইনি।’

আরেক অভিভাবক শাহীরুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি অধ্যক্ষকে ক্যাশ এবং বিকাশের মাধ্যমে ৬৫ হাজার টাকা দিয়েছি। কিন্তু তারপরেও আমার চাচাতো ভাই পরীক্ষার প্রবেশপত্র পায়নি।’

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ আলমগীর কবিরের বক্তব্য জানতে তার দুটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।