![চাচাতো বোনকে বিয়ে করায় খুন হন সৌরভ!](uploads/2024/06/04/my-1717486530.jpg)
চাচাতো বোনকে গোপনে বিয়ে করায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওমর ফারুক সৌরভ (২২) তার চাচার হাতে খুন হয়েছেন বলে দাবি পরিবারের।
সোমবার (৩ জুন) বিকেলে সৌরভের পরিবার খবরের কাগজকে এ তথ্য জানায়।
সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ইলিয়াস আলী আমার ছোট ভাই। তাকে আমি বাবার স্নেহ দিয়ে বড় করেছি। পাঁচ বছর ধরে ইলিয়াসের মেয়ে ইশরাত জাহান ইভার সঙ্গে আমার ছেলে সৌরভের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ১২ মে তারা ঢাকায় বিয়ে করে। এ বিয়ে ইলিয়াস ও আমি মেনে নেইনি। কিন্তু ছেলে-মেয়েরা তো ভুল করতেই পারে। তাই বলে আমার ছেলেকে টুকরো টুকরো করে খুন করতে হবে? আমার ছোট ভাই এমন নৃশংস ঘটনা ঘটাবে কল্পনাও করিনি।’
তিনি বলেন, ‘সৌরভ-ইভার বিয়ের পরপরই ইলিয়াস বিভিন্ন সময়ে আমাদের কল করে হত্যার হুমকি দিয়েছে। গত ১৬ মে নিজের মেয়েকে কানাডায় পাঠিয়ে দিয়ে সৌরভকে হত্যার ছক আঁকে ইলিয়াস। পরে শনিবার সৌরভকে কৌশলে ময়মনসিংহে ডেকে এনে রাতে শরীর খণ্ড খণ্ড করে করে মরদেহের তিন টুকরো ট্রলি ব্যাগে ভরে এবং মাথা পলিথিনে মুড়িয়ে মনতলা ব্রিজের নিচে ফেলে দেয়।’
নিহতের মা মাহমুদা আক্তার পারুল কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়েই আমার সাজানো সংসার ছিল। কোনো দিন ভাবিনি, আপন চাচা তার ভাতিজাকে এমন নৃশংসভাবে হত্যা করবে। আমি এর বিচার চাই।’
সৌরভের ফুফাতো ভাই জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ওমর ফারুক ও ইভা বোন বিয়ের কথা জানালে দুই পরিবারের কেউ বিষয়টি মেনে নেননি। পরে বিয়ে মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে দুজন নিজ নিজ বাসায় ফিরে যান। এরইমধ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটে।’
এদিকে সৌরভের হত্যাকাণ্ডের আলামত তার চাচার বাসায় পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ঘটনার পর তার চাচা-চাচি বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে পারিবারিক বিরোধের কারণেই সৌরভ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এর আগে রবিবার (২ জুন) সকালে ময়মনসিংহ সদর ও মুক্তাগাছা উপজেলার সীমান্তবর্তী মনতলা ব্রিজের নিচে সুতিয়া নদী থেকে এক যুবকের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় নদী থেকে কালো রঙের একটি ট্রলি ব্যাগ থেকে মরদেহের তিন খণ্ড এবং পাশেই একটি বাজারের ব্যাগে পলিথিনে মোড়ানো অবস্থায় খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় রবিবার রাতেই অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন সৌরভের বাবা ইউসুফ আলী।
সৌরভের চাচা ইলিয়াস আলী ময়মনসিংহ নগরীর গোহাইলকান্দিতে একটি বাসায় পরিবার নিয়ে ভাড়ায় থাকতেন। তিনি সেনবাহিনীর নায়েক পদে থাকা অবস্থায় অবসরে যান।
এদিকে ইউসুফ আলী পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। তিনি ডাক বিভাগে কর্মরত রয়েছেন। তাদের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার তারাটি এলাকায়। সৌরভ রাজধানীর প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
কামরুজ্জামান/পপি/