![পাহাড়ে কাজুবাদাম চাষের দ্বার উন্মোচন](uploads/2024/06/12/kazu-badam-1718177339.jpg)
পাহাড়ে কাজুবাদাম চাষের ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হয়েছে। ২০২১ সালে কাজুবাদাম ও কফি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় কাপ্তাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পাহাড়ের প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে কাজুবাদাম ও কফি চাষ শুরু করা হয়। এর মধ্যে উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের কারিগরপাড়া ব্লকে ১০ জন কৃষকের মাধ্যমে ৫০ একর জমিতে প্রায় ৭ হাজার এম-২৩ জাতের কাজুবাদাম গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল। রোপণের তিন বছরের মাথায় প্রায় পাঁচ হাজার গাছে ফুল আসে এবং এসব গাছে এ বছর ফল এসেছে।
রাইখালী কারিগর পাড়ার ওই কৃষি ব্লকের বাণিজ্যিক বাগানের ১০ একর জমিতে সম্মিলিতভাবে কাজুবাদাম চাষ করে সফল হওয়া কৃষক অংসুই উ মারমা, উসাই মারমা, পাইসুই খই মারমা ও সাজাই প্রু মারমা জানান, তারা কাপ্তাই কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও তত্ত্বাবধানে এবং তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে অনেকটাই সফল হয়েছেন। কাজুবাদামের ফলনও অনেক ভালো হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তারা। কৃষকরা জানান, আগামী বছরে এখানকার কৃষক কাজুবাদামসহ কফিচাষে শতভাগ সফলতার মুখ দেখবে।
বর্তমানে রাইখালী ব্লকে কৃষকদের এ বাগানে পাহাড়জুড়ে রঙ বেরঙের কাজু আপেলের সঙ্গে কাজুবাদাম ঝুলে আছে। দৃষ্টিনন্দন এ বাগানের বিভিন্ন অংশ ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইমরান আহমেদ জানান, কাপ্তাইয়ের প্রত্যন্ত এলাকার পাহাড়ি জনপদে কাজুবাদাম চাষে ব্যাপক সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। অত্যধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এবং উচ্চ মূল্যের ফসল কাজুবাদামের পরীক্ষামূলক চাষে দেখা যায়, পাহাড়ের মাটি এ ফসলের জন্য খুবই উপযুক্ত। এ কারণে পাহাড়ে কাজুবাদাম ফসলের চাষাবাদ দিন দিন কৃষকদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় হচ্ছে। পরীক্ষামূলকভাবে কাজুবাদাম চাষে সফলতা দেখা দেওয়ায় তা পাহাড়ের প্রত্যন্ত এলাকায় কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।
কৃষি কর্মকর্তা বলছেন, পার্বত্যাঞ্চলের আবহাওয়া ও মাটি কাজুবাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এ অঞ্চলে যে বাগানগুলো আছে তাতে অন্য ফলের পাশাপাশি কাজুবাদামের চাষ করা হলে কৃষক অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। পাশাপাশি পাহাড়ি এলাকা কাজুবাদাম চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠবে।
বাগানে পানি সরবরাহের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্প হতে গাছে পানির পাইপ লাইনসহ চারটি সোলার ডিপ ইরিগেশন সিস্টেম চালু করা হয়েছে।
পাহাড়ে চাষ উপযোগী ফসলের জাত এবং অন্য কৃষি প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্যে পাহাড়ি অঞ্চলে কৃষির উন্নয়নে ১৯৭৬ সালে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে প্রায় ১০০ একর জমিতে গড়ে উঠে রাইখালী পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফলের জাত উদ্ভাবন করে সফলতা অর্জন করেছেন এ কেন্দ্রে কর্মরত বিজ্ঞানীরা। পাহাড়ে এবার কফি এবং কাজুবাদাম চাষ এবং গবেষণা করে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছেন এ গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। কাজুবাদাম চাষের সম্ভাবনা পাহাড়ে প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়বে এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। সূত্র: বাসস