![শরীয়তপুরে বাণিজ্যিকভাবে মলা মাছ চাষে সফলতা](uploads/2024/06/13/Shariyatpur-fish-1718265365.jpg)
শরীয়তপুরে বাণিজ্যিকভাবে মলা মাছ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন মৎস্যচাষিরা। ৮০ শতাংশ জমিতে ৯ মাসে ৪০ মণ মলা মাছ উৎপাদন করেছে জাজিরা উপজেলার চাষিরা। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) অর্থায়নে শরীয়তপুর ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (এসডিএস) সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে এ মাছের চাষাবাদ করছে মৎস্যচাষিরা। এসডিএসের মৎস্য বিভাগ বলছে, অল্প খরচে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন দেশি এ মাছ চাষ করে অধিক লাভবান হওয়া সম্ভব।
জানা গেছে, দেশীয় মাছ মলা খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিসমৃদ্ধ। বিভিন্ন ধরনের রোগীর চিকিৎসকরা প্রায়ই মলা মাছ খেতে পরামর্শ দেন। এক সময় খালে-বিলে প্রচুর মলা মাছ পাওয়া যেত। তবে সেই মাছ এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। মলা মাছ যেন হারিয়ে না যায় সেজন্য পিকেএসএফের অর্থায়নে ও এসডিএসের সহযোগিতায় এই মাছ পুকুরে বাণিজ্যিকভাবে চাষে জেলেদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে চাষের মাধ্যমে উৎপাদন, ব্রুড ব্যাংক (উচ্চমানের পোনা উৎপাদনের জন্য নির্বাচিত মাছ) করছেন শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার বিকেনগর ইউনিয়নের জেলেরা। এ ধরনের মাছ চাষ করে তারা নিজেদের ভাগ্য বদল করছেন। ভালো উৎপাদন হচ্ছে আর প্রত্যাশিত দামও পাওয়া যাচ্ছে।
এসডিএসের মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি আবিষ্কার হওয়ার ফলে মলা মাছ এখন বড় পরিসরে চাষাবাদ শুরু হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া দেশীয় অন্য মাছও তারা চাষের মাধ্যমে উৎপাদন করছেন। এ ধরনের উদ্যোগ দেখে অনেক খামারিরা মলা চাষে আগ্রহ দেখিয়েছেন। আর এদিকে ভালো দাম পেয়ে খুশি মৎস্য খামারিরা।
এ ব্যাপারে বিকেনগর এলাকার মাছচাষি আব্দুস সালাম মাদবর বলেন, ‘আমরা এসডিএস মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেনের পরামর্শ নিয়ে মলা মাছ চাষ শুরু করি। চলতি বছরে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার মলা-ঢেলা মাছ বিক্রি করেছি। আগামীতে আরও বেশি করে এসব মাছ চাষ করব।’
এ মাছ চাষ ও খাদ্য সম্পর্কে এসডিএসের কৃষি কর্মকর্তা তানভীর হোসেন জানান, কার্প বা অন্য মাছ চাষের মতো পুকুর প্রস্তুত করে মলা মাছ চাষ করা হয়। মলা কার্প মাছের সঙ্গে মিশ্র চাষ বা এককভাবেও চাষ করা যায়। মলা প্রাকৃতিক খাদ্য পানির প্লাংকটন, জৈব পদার্থ খায়। পুকুরে নিয়মিত ভাসমান খাদ্য ও রাসায়নিক সার ইউরিয়া, টিএসসি প্রয়োগে উৎপাদন বাড়ায়।
এসডিএসের মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশের খাল-বিল কমে যাওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে এখন আর মলা মাছ তেমন একটা পাওয়া যায় না। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতেই মলা মাছ এখন বড় পরিসরে চাষাবাদ শুরু হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মলা দেশীয় প্রজাতির ছোট মাছ, যা সুস্বাদু, পুষ্টিকর। এ মাছে প্রচুর ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও জিংক রয়েছে।’