![দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড](uploads/2023/11/23/1700741056.Sylhet.jpg)
সিলেটে ঘুমন্ত স্ত্রী ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে হিফজুর রহমানকে (৩৬) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সিলেটের দায়রা জজ আদালতে এ মামলার রায় দেওয়া হয়। রায় ঘোষণা করেন সিনিয়র দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. নিজাম উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রায়ের আদেশের সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা গেছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের ফুলেরতল গ্রামের হিফজুর রহমান ২০২১ সালের ১৫ জুন রাতে ঘুমন্ত স্ত্রী আলেয়া বেগম (৩০), ছেলে মিজানুর রহমান (৮) ও মেয়ে আনিসা বেগমকে (৫) কুপিয়ে হত্যা করেন। সকালে স্থানীয়দের তিনি নিজেই ঘটনাটি জানান। পুলিশ তাকে আটক করলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার উদ্ভট কারণ উপস্থাপন করেন তিনি।
আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে হিফজুর রহমান জানান, ঘটনার দিন রাতে তিনি কিছুটা অসুস্থ ছিলেন। তার মাথা টিপে দেন স্ত্রী। আর পা টিপে দিচ্ছিল দুই সন্তান। এভাবে ঘুমিয়ে পড়ার একপর্যায়ে স্বপ্নে দেখেন, তার পাশে ‘কালা কালা সাপ’ ও ‘বড় বড় রুই মাছ’। সাপ ও রুই মাছ স্ত্রী-সন্তানদের খেয়ে ফেলছে। তিনি জেগে ওঠে সাপ ও রুই মাছ মারতে বটি (দা) দিয়ে কোপাতে থাকেন। কোপানোর একপর্যায়ে ঘরে আলো জ্বালিয়ে দেখেন সাপ ও রুই মাছ ভেবে কোপাচ্ছিলেন তার স্ত্রী-সন্তানদের। বটির আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। এ সময় হিফজুর নিজঘরে অবস্থান করে প্রতিবেশী একজনকে ডেকে এনে ঘটনার বর্ণনা দেন।
প্রতিবেশীর মাধ্যমে পুলিশ খবর পেয়ে হিফজুরকে আটক করে। হিফজুরের শ্বশুর আয়ুব আলী বাদী হয়ে পরদিন ১৬ জুন গোয়াইনঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। স্বপ্নকাণ্ডে হত্যার ঘটনাটি সিলেটজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হওয়ায় পুলিশ ও সিআইডির দুই দফা তদন্ত চলে। তদন্ত শেষে হিফজুরকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। মামলার মোট ৩১ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতে গত ১৩ নভেম্বর যুক্তিতর্ক সম্পন্নের পর এ রায় ঘোষণা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, আদালতের আদেশে হিফজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সালমান/