![আজিজ ও ভাইদের দুর্নীতির অনুসন্ধানে রিটের প্রস্তুতি](uploads/2024/06/30/aziz-ahamed-1719721973.jpg)
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও তার ভাইদের দুর্নীতির অনুসন্ধান শুরুর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন রিট করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান এই রিট করবেন বলে জানা গেছে।
অ্যাডভোকেট রিগ্যান শনিবার (২৯ জুন) খবরের কাগজকে জানান, সাবেক সেনাপ্রধান ও তার ভাইদের দুর্নীতি অনুসন্ধান করতে গত ৯ জুন আইনি নোটিশ জারি করা হয়। নোটিশে তিন দিনের মধ্যে অনুসন্ধান শুরু করার অনুরোধ জানানো হয়। এরপর দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে ১১ জুন আরেকটি আবেদন করা হয়। কিন্তু আইনি নোটিশের নির্ধারিত সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এদিকে ঈদ ও অন্যান্য ছুটিতে (অবকাশ) হাইকোর্ট এতদিন বন্ধ। আজ রবিবার হাইকোর্ট খুলবে। ফলে এ সপ্তাহের যেকোনো দিন এই রিট করা হবে।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও তার ভাইদের দুর্নীতির বিষয়ে পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছে দুদক। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও অর্থ পাচারের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহে এখনো মাঠে কাজ করছে দুদকের নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট। ইসি ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রতিবেদন পাওয়ার পর অনুসন্ধান হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।
আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগগুলো যাচাই করেছে অভিযোগ যাচাই-বাছাই কমিটি (যাবাক)। যাবাকের সুপারিশে পাসপোর্ট ও এনআইডি জালিয়াতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে তদন্তের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী দুদক থেকে ইসি ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ইসি ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর তদন্তও শুরু করেছে। তদন্ত শেষ করতে আরও অন্তত সপ্তাহখানেক লাগবে বলে জানিয়েছে ইসি।
২০১৮-এর জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছর সেনাপ্রধান ছিলেন আজিজ আহমেদ। ২০১২ সাল থেকে চার বছর সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির মহাপরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সেনাপ্রধান থাকাকালে তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে আল-জাজিরায় ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শিরোনামে দুর্নীতিসংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে। এদিকে অবসরের পর গত ২০ মে ‘তাৎপর্যপূর্ণ দুর্নীতি’তে জড়িত থাকার অভিযোগে আজিজ আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
আজিজ আহমেদের ভাই হারিছ দুটি এবং আরেক ভাই আনিস একটি খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে মোহাম্মদপুরের ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান হত্যা মামলার আসামি ছিলেন আরেক ভাই তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফ। এ মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এই রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগ সাজা কমিয়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফকে ক্ষমা করেন রাষ্ট্রপতি। ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ সাজা মওকুফের প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।