![শ্বাসরোধে স্ত্রীকে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড](uploads/2024/07/04/Chattogram-1720067316.jpg)
চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া এলাকায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেরও আদেশ দিয়েছেন।
বুধবার (৩ জুলাই) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালত এ রায় দেন। চট্টগ্রাম মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবদুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ১৩ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে স্ত্রী পারভীন আক্তারকে হত্যার অভিযোগ ৩০২ ধারায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি জামাল উদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডেরও আদেশ দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম মো. জামাল (৩৭)। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাসিন্দা। তিনি চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানার বাস্তুহারা কলোনিতে বাস করতেন। অন্যদিকে খুন হওয়া স্ত্রী পারভীন আক্তারের (২৪) বাবার বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়।
মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে ভিকটিম পারভীন আক্তারের সঙ্গে জনৈক মনা মিয়ার বিয়ে হয়। ২০২০ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়। পরে ২০২১ সালে আসামি জামালের সঙ্গে পারভীন আক্তারের বিয়ে হয়। এদিকে জামালের প্রথম সংসারের স্ত্রী এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে আলাদা বাসায় থাকতেন। কিন্তু একসঙ্গে বসবাস শুরুর পর থেকে পারভীন জামালের আগের স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা নিয়ে প্রায়ই ঝগড়া করতেন। দিনে দিনে তাদের মধ্যে অশান্তি বাড়তে থাকে।
২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি নগরের বাকলিয়া থানার বাস্তুহারা দ্বিতীয় তলার মসজিদ গলিতে ওই ভাড়া বাসায় স্ত্রী পারভীন আক্তারকে ঘুমন্ত অবস্থায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে খুন করেন জামাল। হত্যার পর তিনি স্ত্রীকে বাসায় কম্বল দিয়ে পেঁচিয়ে খাটে শুইয়ে পালিয়ে যান।
ঘটনার দিন ১৭ জানুয়ারি সন্ধ্যায় বাড়িওয়ালা বিরক্ত হয়ে বাসা ছেড়ে দিতে বলার জন্য ওই বাসায় যান। কিন্তু বাড়িওয়ালা দরজা বাইরে থেকে হুক লাগানো দেখতে পান। সেটা খুলে ভেতরে গিয়ে দেখেন, খাটের ওপর লাশ পড়ে আছে। এরপর ৯৯৯-এ কল দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানান। ১৮ জানুয়ারি পারভীন আক্তারের বোন বেবি আক্তার বাদী হয়ে জামালকে আসামি করে বাকলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওই দিনই পুলিশ জামালকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনাটি তদন্ত করে বাকলিয়া থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) কারিমুজ্জামান ২০২২ সালের ২৫ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ১৩ অক্টোবর আসামি জামালের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত জামালকে মৃত্যদণ্ড দিয়েছেন।