![গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি চায় সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম](uploads/2023/12/16/1702744578.muktijodda s c fkk.jpg)
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার ও তাদের ঘাতক দোসরদের হাতে সংঘটিত নারী নির্যাতনসহ গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ ৭১। এ ছাড়া সংগঠনটি ১ ডিসেম্বরকে ‘মুক্তিযোদ্ধা দিবস’ ঘোষণা এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনসহ আট দফা দাবি জানিয়েছে।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা চত্বরে আয়োজিত পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও ৫৩তম বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এবং ঘোষণাপত্রে এসব দাবি উত্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সংগঠনটির কার্যনির্বাহী সভাপতি মো. নূরুল আলম ও মহাসচিব হারুন হাবীব তাদের বক্তব্যে ১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে পালনের দাবি জানান। তারা বলেন, ‘সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম প্রতি বছর ১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। দিবসটি জাতীয়ভাবে পালন করা প্রয়োজন।’
সহসভাপতি ম. হামিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল মাবুদ সংগঠনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এতে অন্য দাবিগুলো উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো-
জাতিসংঘ কর্তৃক গণহত্যার স্বীকৃতি: ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের দখলদার বাহিনী ও তাদের দোসররা যে নিষ্ঠুরতম গণহত্যা চালিয়েছে, তা বিংশ শতাব্দীর অন্যতম বৃহৎ নিষ্ঠুরতম গণহত্যা হওয়া সত্ত্বেও জাতিসংঘ আজ পর্যন্ত তার স্বীকৃতি দেয়নি। এই গণহত্যার স্বীকৃতি দিতে বিশ্বের সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু হত্যার তদন্ত কমিশন গঠন: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কুশীলবদের চিহ্নিত করতে অবিলম্বে একটি জাতীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা হোক এবং তদন্তের ফলাফল শ্বেতপত্র আকারে প্রকাশ করা হোক।
বদ্ধভূমি চিহ্নিত ও স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন: মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে যুগ যুগ ধরে নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশের সব অঞ্চল এবং প্রধান প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র ও বদ্ধভূমিতে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভ এবং ভারতীয় মিত্র বাহিনীর যেসব সৈনিক রণাঙ্গনে জীবন দিয়েছেন তাদের সম্মানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হোক।
‘মহান মুক্তিযুদ্ধ’ ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দগুলোর সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও ভিআইপি মর্যাদা প্রদান: বাংলাদেশের পবিত্র সংবিধানে ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ’ ও ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দগুলোর সংযোজন হওয়া অত্যন্ত জরুরি। এই সাংবিধানিক স্বীকৃতির পাশাপাশি সব মুক্তিযোদ্ধার জন্য ভিআইপি মর্যাদা নিশ্চিত করা হোক এবং দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সরকারি খরচে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করা হোক।
সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি: বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতার অঙ্ক ঊর্ধ্বতন প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণ করা হোক।
শহরের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি নির্মাণ: শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে নবপ্রজন্মের মানুষের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে সব বড় বড় মহানগরের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সমাধিক্ষেত্র নির্মাণ করা হোক।
৭২ সালের সংবিধান পুনরুদ্ধার: জাতির পিতার হাতে তৈরি ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের পুনরুদ্ধার এবং দেশের গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক অগ্রযাত্রার স্বার্থে সংবিধানের মূলনীতি বিরোধী দলকে নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি সবপর্যায়ের শিক্ষার্থীর হাতে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সরবরাহ করা হোক।