![মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের আগুন, নিহত ৪](uploads/2023/12/19/1702955636.mohonganj-express-2.jpg)
রাজধানীর তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় একটি বগি থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোরে এই ঘটনা ঘটে।
সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই ফের দুর্বৃত্তদের নজরে পড়ল মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। গত ১৩ ডিসেম্বর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নে ঢাকাগামী রেললাইন কেটে ফেলায় এই ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে একজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া সেল থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানানো হয়, উদ্ধারকাজ এখনো চলছে।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন যাত্রীদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ট্রেনটি নেত্রকোনা থেকে ঢাকায় আসছিল। বিমানবন্দর স্টেশন পার হওয়ার পর যাত্রীরা পেছনের বগিতে আগুন দেখতে পান। পরে তারা চিৎকার করতে শুরু করলে চালক ট্রেনটি তেজগাঁও স্টেশনে থামান।
ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা শাহজাহান সিকদার সংবাদমাধ্যমকে জানান, আগুনের খবর ভোর ৫টা ৪ মিনিটে পাওয়া গেছে। তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট ৫টা ১২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ প্রহরায় আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে আগুন নেভানো হয়।
নিহত চার জনের মধ্যে দুই জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- নাজিরা আক্তার পপি (৩৫) এবং তার তিন বছরের শিশুসন্তান ইয়াসিন। বাকি দুই জনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। পুড়ে যাওয়া চারটি মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। অপর দুই জনের বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৪৫ বছর।
নিহত শিশু ইয়াসিনের মামা হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, তাদের বাড়ি নেত্রকোনার সদর উপজেলার বরুনা গ্রামে। ৩ ডিসেম্বর তারা বেড়ানোর উদ্দেশ্যে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই ঢাকায় ফেরার উদ্দেশ্যে গত রাত ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে রওনা দেন। ভোরে তাদের ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। সঙ্গে ছিলেন হাবিবুর, ইয়াসিন, ইয়াসিনের বড় ভাই ফাহিম (৮) ও তাদের মা নাদিরা।
তিনি জানান, তেজগাঁও রেলস্টেশন এসে ট্রেনটি থামলে তখন কিছু যাত্রী নেমে যায়। এ সময় তাদের পেছনের সিটে থাকা দুই ব্যক্তিও নেমে যান। এরপর পেছনের সিট থেকে আগুন জ্বলে ওঠে। মুহূর্তেই আগুন বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে দৌড়ে হাবিবুর ও ফাহিমসহ অন্য যাত্রীরা নামতে পারলেও ভেতরে আটকা পড়েন ইয়াসিন ও তার মা নাদিরা। তাদের আর কোনোভাবেই বের করতে পারেননি। পরে ফায়ার সার্ভিস তাদের মরদেহ বের করেন।
তিনি আরও জানান, নিহত নাদিয়ার স্বামী নাম মিজানুর রহমান মিজান। তিনি কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়ার দোকানে কাজ করেন। তেজগাঁও তেজতুরি বাজার এলাকায় পরিবার নিয়ে থাকতেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, মরদেহ চারটি সকালে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছে রেলওয়ে থানা-পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
আজিজুল/অমিয়