‘নেন নেন। ভালো খাসি। দাম কম।’ এভাবেই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল পার্কে হাঁকডাক দিচ্ছেন হাফেজ মিয়া। শুধু এই পার্কেই নয়, শত শত বিক্রেতা ৫ থেকে ৭টা করে ছাগল নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন অলি- গলিতে হাজির হয়েছেন। অলি-গলিতে ঢুকলেই দেখা যায় ব্যাপারীরা ছাগল নিয়ে ঘুরছেন, ক্রেতাদের ডাকছেন।
রাজধানীর বাইরের চিত্রও ব্যতিক্রম নয়। কেরানীগঞ্জের মধু হাজির বাড়ির পাশে ছোট-বড় ছাগল নিয়ে বিক্রেতারা হাজির হয়েছেন। শনিবার (১৫ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন অলি-গলিতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
অনেকে হাটে যাওয়াকে ঝামেলা মনে করছেন। এ জন্য পাড়া-মহল্লায় ব্যাপারীদের কাছ থেকে ভেড়া-ছাগল কিনছেন। তবে ক্রেতাদের অনেকে অভিযোগ করেছেন, হাটের চেয়ে বেশি দাম হাঁকছেন ব্যাপারীরা। আবার আবাসিক এলাকার রাস্তা ছাগলের বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে, গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে অস্বস্তি বাড়ছে।
তবে ব্যাপারীরা বলছেন, আমরা মহল্লায় ঘুরে ঘুরে ছাগল বিক্রি করছি, এতে অনেক খরচ হচ্ছে, কষ্ট হচ্ছে। তবে, হাটে গেলে হাসিলসহ আরও অনেক খরচ হয়, সেগুলো পথে পথে হেঁটে বিক্রি করলে হয় না। রাজধানীর জেনেভা ক্যাম্পে বসবাসকারী কসাইরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট দক্ষ।
মোহাম্মদপুরের টাউনহল এলাকায় ব্যাপারী রঞ্জু মিয়া বলেন, ‘এবার বিভিন্ন জায়গা থেকে ২৫টি ছাগল এনেছি। হেঁটে হেঁটে বিক্রি করছি। এভাবে দাম ভালো পাই। কিন্তু হাঁটতে হাঁটতে বিক্রি করা বেশ কষ্টসাধ্য। খাওয়া-গোসল ঠিক নাই। অনেকে আবার বাসার সামনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে দেয় না।’
তবে ব্যাপারীদের অনেকে বিভিন্ন জেলা থেকেও এসেছেন। তারা হাটে না গিয়ে অলি-গলিতে ঢুকে পড়েছেন। মিরপুরের টেকনিক্যাল এলাকায় মানিকগঞ্জের জসিম বলেন, ‘পাশের বাড়ির বড় ভাইয়ের সঙ্গে এসেছি ছাগল বিক্রি করতে। আমাদের নিজেদের ছয়টা ছাগল নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে এসেছি।’
ফার্মগেট রাজাবাজারে ঘুরে ঘুরে ছাগল বিক্রি করছেন জহির মিয়া। তিনি বলেন, হাটে প্রচুর ছাগল উঠছে। সেখান থেকে ৯টা ছাগল কিনে এনেছি। ইতোমধ্যে ৪টা বিক্রি করেছি। পাঁচটা আছে, একটু ভালো লাভ পেলেই বিক্রি করে দেব। এ সময় দিদার নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘পানি কাদার দিনে হাটে যাওয়া-আসা ঝামেলা। কিন্তু যাচাই করে কেনা যায়। তারপরও পাড়াতেই কেনার ইচ্ছা। কারণ হাটে যেতে অস্বস্তি লাগছে।’