ঢাকা ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

জাতীয় স্মৃতিসৌধে নবনিযুক্ত সেনাপ্রধানের শ্রদ্ধা

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ০৪:৪০ পিএম
জাতীয় স্মৃতিসৌধে নবনিযুক্ত সেনাপ্রধানের শ্রদ্ধা
জাতীয় স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করছেন নতুন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন নতুন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সোমবার (২৪ জুন) দুপুর ১২টা ২ মিনিটে স্মৃতিসৌধের শহিদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তিনি। সেই সঙ্গে বীর শহিদদের সম্মানে সালাম প্রদান করেন তিনি।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ওয়াকার-উজ-জামান স্মৃতিসৌধ এলাকায় প্রবেশ করেন। এ সময় তাকে অভ্যর্থনা জানান ৯ পদাতিক ডিভিশন জিওসি মেজর জেনারেল মঈন খান। শ্রদ্ধা জানিয়ে ১২টা ৫ মিনিটে  স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন সেনাপ্রধান। পরে ১২টা ১০ মি‌নি‌টে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।

নবনিযুক্ত সেনাপ্রধানের সফরসঙ্গী ছিলেন লে. জেনারেল মাজিবুর রহমান, মেজর জেনারেল যুবায়ের সালেহীন (এজি), মেজর জেনারেল সারোয়ার হোসেন, ব্রি. জেনারেল মুনিরুল ইসলাম (ডিপিএস) ও তার নিরাপত্তা অফিসার।

সাভার গণপূর্ত বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী ও জাতীয় স্মৃতিসৌধের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘সেনাপ্রধান দুপুরে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহিদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেনাপ্রধানের আগমন উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। সকাল থেকে দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে দুপুরের পর থেকে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ।’

ইমতিয়াজ/সালমান/

হঠাৎ অসুস্থ ডেপুটি স্পিকার, হেলিকপ্টারে আনা হলো ঢাকায়

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৫:১৬ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৫:২০ পিএম
হঠাৎ অসুস্থ ডেপুটি স্পিকার, হেলিকপ্টারে আনা হলো ঢাকায়
ছবি : খবরের কাগজ

হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু। জরুরি চিকিৎসার জন্য তাকে হেলিকপ্টারযোগে রাজধানী ঢাকায় আনা হয়েছে।

শুক্রবার (২৮ জুন) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বেড়া আব্দুল খালেক স্টেডিয়াম থেকে নৌবাহিনীর হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকায় আনা হয়।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে বেড়া বিপিন বিহারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন শামসুল হক টুকু। উদ্বোধন শেষে নিজ বাড়ি সংলগ্ন নৌকা চত্বরে বৃক্ষরোপণের জন্য প্রস্তুত নিচ্ছিলেন। এ সময় হঠাৎ তিনি অসুস্থবোধ করেন‌ এবং হেলে পড়েন।

তাৎক্ষণিকভাবে তাকে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কিছুটা সুস্থ বোধ করায় নিজ বাসায় নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নৌবাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় আনা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোরশেদুল ইসলাম বলেন, ‘দুপুরে একটি অনুষ্ঠান শেষে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এখন তিনি মোটামুটি সুস্থ আছেন। কিন্তু উনার হার্টের অবস্থা তত ভালো নয়, এজন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।’

পার্থ হাসান/সালমান/

আগামী বছর চালু হবে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:২৫ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:৪৮ পিএম
আগামী বছর চালু হবে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে
ছবি : সংগৃহীত

আগামী বছরের মধ্যে ঢাকা বাইপাস রোডের অবকাঠামোর কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে সড়ক নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এখন পর্যন্ত সড়কটির ৬০ শতাংশের বেশি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাইপাসটির কাজ শেষ হলে ঢাকায় প্রবেশ না করে জয়দেবপুর থেকে মদনপুর পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে যাওয়া যাবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) গাজীপুরের মিরের বাজার এলাকায় সিক্লাব রিসোর্টে মিডিয়া পাবলিক ডেতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে বাইপাসটির বিভিন্ন অংশের চলমান কার্যক্রম সরেজমিনে দেখানো হয় গণমাধ্যমকর্মীদের। ওই সময় প্রকল্পটির কে-১২ রেলওয়ে ওভারপাস (মিরের বাজার ফ্লাইওভার) ও ফুটপাত নির্মাণকাজ পরিদর্শন করানো হয়। পরে চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) এবং চীন ও বাংলাদেশি মিডিয়ার আগ্রহের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে এ এক্সপেসওয়ে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সিচুয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ (গ্রুপ) করপোরেশন লিমিটেড (এসআরবিজি), শামীম এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড (এসইএল) এবং ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের (ইউডিসি) কনসোর্টিয়াম নামের তিন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এই প্রকল্পের আর্থিক পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক (ঢাকা বাইপাস) পিপিপি প্রকল্পটিতে আগের দুই লেনের সড়ক নতুন করে চার লেন করা হচ্ছে। এ ছাড়া পাশে দুটি সার্ভিস লেন থাকবে ওইসব এলাকার যানবাহন চলাচলের জন্য। এ পুরো সড়কে আগে যেখানে দুই ঘণ্টা সময় লাগতো, সেটা আধাঘণ্টায় নেমে আসবে।  

প্রকল্পের ব্যয় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুলাইয়ের মধ্যে সড়কটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা শহরে প্রবেশ না করেই বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন সহজেই দেশের উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে চলাচল করতে পারবে।

মিডিয়া ডেতে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) সিইও জিয়াও ঝিমিং বলেন, ‘এ এক্সপ্রেসওয়ে বাংলাদেশের মহাসড়কে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। এটি নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেবে। পাশাপাশি এ সড়ক ঢাকার ট্রাফিক নেটওয়ার্কের উন্নতি, যানজট নিরসন এবং প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার পরে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।’

জিয়াও বলেন, ‘প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য তৃতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে একটি বাস্তব সহযোগিতা প্রকল্প হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। যা চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চমানের সহযোগিতার উদাহরণ।’

অনুষ্ঠানে সিইএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং জিয়ানশি বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এবং চীন-বাংলাদেশ-ভারত-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরের আওতায় চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে এমন সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রেখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করতে থাকবে। দুই দেশের এই প্রচেষ্টার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে এবং পারস্পরিক সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে মনে করি।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিইএবির আরেক ভাইস প্রেসিডেন্ট উ কিডং, ডিপিডিসির সিওও মো. শফিকুল ইসলাম আকন্দ এবং প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার শি বো এবং ইয়াং জু।

সালমান/

বেবিচকের নতুন চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান চৌধুরী

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম
বেবিচকের নতুন চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান চৌধুরী
বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ

বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

সাদিকুর রহমান বর্তমান চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমানকে বদলি করে বিমানবাহিনীতে ফেরত নেওয়া হয়েছে। তার জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী। বিমানবাহিনীর এই কর্মকর্তাকে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে।

তিথি/পপি

গ্যাসসংকটের এক মাস

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:১০ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
গ্যাসসংকটের এক মাস
ছবি : খবরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল পুরোপুরি সচল হতে পারে আগামী ১৪ জুলাই। তারপর চলমান গ্যাসসংকট কেটে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

গত ২৭ মে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পর থেকে জাতীয় গ্রিডে অন্তত ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের মানুষকে। 

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টার্মিনালের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই ঠিক হবে। তারপর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। 

এর আগেও ঝড়ে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল তখনো। এ কারণে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা ভাসমান টার্মিনালের পাশাপাশি ভূমিভিত্তিক টার্মিনাল স্থাপন করার পরামর্শ দিয়েছেন। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালীতে। একটি সামিট গ্রুপের, আরেকটি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির। 

জ্বালানি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। দুটি টার্মিনাল থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় এলএনজি সরবরাহের পরও জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থাকে দৈনিক প্রায় ১০০ কোটি ঘনফুট। এ অবস্থায় কোনো কারণে একটি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ বন্ধ হলে গোটা দেশেই তীব্র গ্যাসসংকট দেখা দেয়। তখন রেশনিং করে চালানো হয়। 

সংকটের এক মাস, সিএনজি স্টেশনে দীর্ঘ লাইন
গত ২৭ মে এলএনজি টার্মিনালের অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপর এক মাস সংকটের সঙ্গে লড়ছে মানুষ। সিএনজি স্টেশনে দীর্ঘ লাইন থাকছে নিত্যদিন। অবস্থা এখন এমন যে, রাজধানীর অনেক সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধই করে রাখা হয়েছে। 

মগবাজার মোড়ে আনুদিপ সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেখা যায়, গাড়ির দীর্ঘ লাইন। চালকদের গ্যাস নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, আগে একবার গ্যাস নিলেও হতো, এখন দুইবার নিলেও হয় না। কারণ হচ্ছে গ্যাসের চাপ কম। বাতাস ঢুকে যায়। কোয়ালিটি ভালো না। বেশির ভাগ সময় স্টেশনেই কাটাতে হয়। ফলে ভাড়ার টাকা ওঠানোই দুষ্কর হয়ে গেছে। 

একই অবস্থা দেখা যায় রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও, মিরপুর, রোকেয়া সরণি, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা ও তেজগাঁও এলাকার বেশ কিছু সিএনজি স্টেশনেও। কয়েকটি স্টেশনে দেখা গেল, কয়েকটি ইউনিট বন্ধ রাখা হয়েছে। 

বাসাবাড়িতেও গ্যাসের চাপ কম। তাই দুপুর পর্যন্ত গ্যাস না পাওয়ার অভিযোগ নগরবাসীর। দুপুরের পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয় এবং মাঝরাতের দিকে আবার গ্যাস থাকে না। 

শিল্প-কারখানাতেও গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত  
গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও নরসিংদীর শিল্প কলকারখানাগুলোতে বিরাজ করছে তীব্র গ্যাসসংকট। মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে, ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবি করছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঞ্চালন লাইন থেকে দূরবর্তী শিল্প-কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ কম থাকছে।

এমপি আনার হত্যাকাণ্ড: আরও এক মাস্টারমাইন্ডের তথ্য

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:২৪ এএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:২৪ এএম
এমপি আনার হত্যাকাণ্ড: আরও এক মাস্টারমাইন্ডের তথ্য
আনোয়ারুল আজীম আনার

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলী ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মামলার তদন্ত নতুন মোড় নিয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার ওয়ারী জোনের গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহর আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

পুলিশের দাবি অনুযায়ী, তারা সীতাকুণ্ডের একটি মন্দিরে লুকিয়ে ছিলেন। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় সোর্স ও প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা আনার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি এও জানিয়েছেন যে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড পলাতক আক্তারুজ্জামান শাহীনের পাশাপাশি আরও একজন জড়িত আছেন, যাকে তারা কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে দেখেছেন। তবে ওই ব্যক্তির বিষয়ে তারা বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি। তারা দাবি করেছেন, ওই ব্যক্তিকে ভারতে আটক হওয়া কিলার সিয়াম চেনেন। ওই ব্যক্তি কে তা শনাক্তে কাজ করছেন মামলার তদন্তকারীরা। 

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল দুজনই আনার হত্যায় গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ। তাদের দুজনকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিমুলের ভূমিকা ছিল। মোস্তাফিজুর ট্রাকচালক ও ফয়সাল শ্রমিক ছিলেন। তারা খুলনায় একটি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারা স্বীকার করেছেন যে টাকার লোভে পড়ে তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িয়েছিলেন। আনার হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করার জন্য শিমুলের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা সেই টাকা পাননি। দেশে এসে শিমুলের কাছে তারা খুনের মিশন বাস্তবায়নের টাকা চাইতে গেলে উল্টো শিমুল তাদের হুমকি-ধমকি দেন। এতে তারা চুপসে যান। পরে শিমুল পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর দুজনই গা-ঢাকা দেন।

মামলার তদন্তকারীরা জানান, আনারকে হত্যার পর লাশ টুকরা করার ক্ষেত্রে মোস্তাফিজুর, ফয়সাল, জিহাদ ও সিয়ামের ভূমিকা ছিল। জিহাদ ও সিয়ামকে কলকাতার পুলিশ আগেই গ্রেপ্তার করেছে। মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল গ্রেপ্তার হওয়ার পর মামলার তদন্তের গতি বাড়বে। সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদে কলকাতার পুলিশ যে তথ্য পেয়েছে, তা বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের জানিয়েছে। মোস্তাফিজুর ও ফয়সালকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই তথ্যগুলো মেলানোর চেষ্টা করা হবে। তবে মামলার তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আনার হত্যার মূল মোটিভ জানা যায়নি। তবে দ্রুতই তা জানা যাবে এবং তারা তদন্তের শেষ পর্যায়ে এসেছেন। 

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া মুস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলীকে পুলিশ আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

গত ১৩ মে কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে খুন হন এমপি আনার। ২২ মে আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ এ মামলায় গ্রেপ্তার করে শিলাস্তি রহমান, আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ও তানভীর ভূঁইয়া ওরফে ফয়সাল সাজিকে। পরে আদালত শিলাস্তিসহ মোট তিনজনকে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

প্রথম দফায় রিমান্ডে কিছু তথ্যের ঘাটতি থাকার কারণে ডিবি পুলিশ গত ৩১ মে পুনরায় আদালতে আসামিদের হাজির করে আবার রিমান্ডের আবেদন করে। শিমুল ভূঁইয়া তার জবানবন্দিতে ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক গ্যাস বাবুর কথা বলেন। গ্যাস বাবু আবার ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর এ খুনে জড়িত হওয়ার কথা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের জানান। 

পরে গত ১১ জুন ধানমন্ডি এলাকা থেকে মিন্টুকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অনেক জল্পনা-কল্পনার পর মিন্টুকে ১৩ জুন ডিবি পুলিশ আনার হত্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তাকে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

আনার হত্যা মামলার তদন্তের মুখ্য সমন্বয়কারী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ খবরের কাগজকে জানান, ‘মামলার তদন্ত চলছে। আমরা মূল মোটিভ উদঘাটনের জন্য কাজ করছি।’ 

মামলার তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, কলকাতার ফ্ল্যাটে যারা উপস্থিত থেকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল তাদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল ছিলেন। এদের গ্রেপ্তার করার পর মামলার তদন্তে নতুন করে গতি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

সূত্র জানায়, মোস্তাফিজুর ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করার পর তাদের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু নতুন তথ্যের খোঁজ পাওয়া গেছে। তারা দাবি করেছেন, মাস্টারমাইন্ড শাহীনের সঙ্গে তারা ত্রিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে তারা কলকাতার ফ্ল্যাটে দেখেছেন। ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে মাঠে কাজ করছেন মামলার তদন্তকারীরা। দরকার হলে মামলার আসামিদের পুনরায় রিমান্ডে আনা হবে। 
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, এখন পর্যন্ত এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী সাতজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল গত ১৯ মে ঢাকায় আসেন। ২২ মে আনার হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা সীতাকুণ্ডে চলে যান। সেখানে নাম পরিবর্তন করে পলাশ রায় ও শিমুল রায় পরিচয়ে রাতে পাতালকালী মন্দিরে অবস্থান করেন। এভাবে তারা ওই মন্দিরে ২৩ দিন কাটিয়ে দেন। পরে সীতাকুণ্ডের একটি পাহাড়ের নিচে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

তিনি আরও জানান, কলকাতার একটি মার্কেট থেকে ১৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি চেয়ার কিনে আনেন তারা। সঙ্গে আনেন ক্লোরোফর্ম। সেই চেয়ারে বেঁধে আনারকে বিবস্ত্র করা হয়। এই কাজগুলো করেছেন ফয়সাল। আর হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র সিয়াম এনে দিয়েছিলেন ফয়সালকে। ফয়সাল আলী তাকে পেছন থেকে গলা ধরে মুখে চেতনানাশক ক্লোরোফর্ম মিশ্রিত রুমাল দিয়ে চেপে ধরেন। এরপর অন্য আসামিদের সহযোগিতায় তাকে অজ্ঞান করে হত্যা করেন। কেন এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা সুনির্দিষ্ট মোটিভ বলতে পারছি না।’