ঢাকা ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

মন্দায় রাষ্ট্রের বিপুল ক্ষতি হচ্ছে : সিপিডি

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪, ১০:২৮ পিএম
মন্দায় রাষ্ট্রের বিপুল ক্ষতি হচ্ছে : সিপিডি
ছবি : খবরের কাগজ

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে দেশে চাহিদার তুলনায় ৪৬ শতাংশ উদ্বৃত্ত সক্ষমতা রয়েছে। বাড়তি এ সক্ষমতার জন্য ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ পরিশোধ করতে বাধ্যবাধকতা থাকায় রাষ্ট্রের বিপুল ক্ষতি হচ্ছে। চলমান সামষ্টিক অর্থনীতির মন্দাজনিত পরিস্থিতিতে এ ধরনের বাড়তি অর্থ ব্যয় কেবলই অপচয়।

রবিবার (২৩ জুন) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক ইন সেন্টারে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে এক আলোচনা সভায় এসব তথ্য তুলে ধরে সিপিডি।

সিপিডি জানায়, দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা ৩০ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট। সেখানে বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। অর্থাৎ চাহিদার চেয়ে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। এর ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করেও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে টাকা যাচ্ছে সরকারের তহবিল থেকে।

বক্তারা বলেন, সক্ষমতা চাহিদার তুলনায় বেশি থাকলেও দেশের মানুষ ঘরবাড়ি ও শিল্পে বিদ্যুৎ পায় না। অথচ বাড়তি সক্ষমতার জন্য অর্থ পরিশোধ করতে হয় সরকারকে। যে বিদ্যুৎ আমরা পাই না, তার জন্য রাষ্ট্রকে অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এ অর্থ জনগণের দেওয়া কর থেকে ব্যয় করা হয়। সুতরাং এ ধরনের চুক্তিসমূহ সংশোধন করার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন না হলেও ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুতের জন্য বাড়তি খরচ (ক্যাপাসিটি চার্জ) বহন করছে সরকার। এই সক্ষমতা দেশের অর্থনীতির মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ উৎপাদন না করলেও দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে দিতে হয় ক্যাপাসিটি চার্জ। এই চার্জের নামে এখন হাজার হাজার কোটি টাকা চলে যাচ্ছে সরকারের তহবিল থেকে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম তার উপস্থাপনায় বলেন, দেশে এখন বিদ্যুতের উৎপাদনক্ষমতা ৩০ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ব্যবহার করা না গেলেও কেন উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে? 

তিনি বলেন, সরকার এখন যে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা তৈরি করেছে, তা ২০৩০ সালেও প্রয়োজন হবে না। আজ থেকে ছয় বছরে চাহিদা দাঁড়াতে পারে ১৯ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট। ২৫ শতাংশ রিজার্ভ ধরলে তখন ২৩ হাজার ২৫২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ হলেই হয়।

গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, সক্ষমতা বাড়লেও এখনো দেশে হচ্ছে লোডশেডিং। গরমে গড়ে ১ হাজার ১০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং হচ্ছে। ময়মনসিংহ, খুলনা ও সিলেটে লোডশেড করা হয়। বাজেটে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত নিয়ে স্পষ্ট কিছু নেই। সরকার এই খাত নিয়ে কী করবে, সে ব্যাপারেও অন্ধকারে সবাই। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য ও হামিম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদ বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ-গ্যাসের কথা বলে দাম বাড়ানো হলো, কিন্তু লোডশেডিং কমেনি। ৭-৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। ডিজেল দিয়ে, সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস এনে কারখানা চালাতে হচ্ছে। এতে খরচ বেড়ে গেছে। অনেক কারখানা বন্ধ হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ না থাকায় দেশে বিনিয়োগ আসছে না। প্রায় ২৫ শতাংশ কমেছে ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি। শিল্পের কাঁচামাল আমদানি কমেছে ২২ শতাংশ। 

বাজেটের অধিকাংশ ব্যয় অনুন্নয়ন খাতে হয় দাবি করে তিনি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য হাজার কোটি টাকা খরচ করে দামি গাড়ি কেনা হচ্ছে, যেখানে ভারতের মন্ত্রীরা নিজেদের দেশের গাড়িতে চড়েন। 

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার মাত্র চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিয়ে ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে এখন উৎপাদনক্ষমতা ২৮ হাজার মেগাওয়াট পার করেছে। এতে জিডিপি বেড়েছে। মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে বাংলাদেশ। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে ধন্যবাদ দিতেই হবে। কাজ করতে গেলে কিছু ভুলত্রুটি হবে, তা সংশোধন হচ্ছে, ভবিষ্যতে আরও হবে।

ভারতের বিনিয়োগ পলিসির কথা তুলে ধরে এ কে আজাদ বলেন, তাদের জমি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাবিসিডাইজড, পাঁচ বছরের জন্য কর্মীদের বেতন দেয় সরকার, বিনিয়োগ তো সে দেশেই হবে। তিনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না হলে কর্মসংস্থান হবে না। 

পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমলেও দেশে সুবিধা মিলছে না। কারণ ডলারের দাম বেশি। আজ প্রাইমারি এনার্জি থাকলে বিদ্যুৎ খাতের যেসব বিষয় নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে তা হতো না।

অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, সবার আগে একটি আধুনিক জ্বালানি নীতিমালা প্রয়োজন। তা না করে শুধু জোড়াতালি দিয়ে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এ জন্য একের পর এক মাস্টারপ্ল্যান ফেল করছে। বিদ্যুৎ খাতের বিশেষ বিধান বাতিল করতে হবে। টেন্ডার ছাড়া প্রকল্প নেওয়ায় প্রতিযোগিতামূলক দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এখনো ১২-১৩ টাকায় সৌরবিদ্যুতের চুক্তি হচ্ছে। যেটা ৮-৯ টাকায় করা সম্ভব দরপ্রক্রিয়ায় গেলে। 

ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, বিপিসি (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন) পুরোপুরি দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ের নামে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতি সমন্বয় করা হয়েছে। বিপিসির দুর্নীতি প্রমাণিত হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরকার বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা ছাড়াই বিদ্যুৎ কিনছে। আবার কমিশনকে পাশ কাটিয়ে গণশুনানি ছাড়াই নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করছে।

আগামী বছর চালু হবে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:২৫ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৪:৪৮ পিএম
আগামী বছর চালু হবে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে
ছবি : সংগৃহীত

আগামী বছরের মধ্যে ঢাকা বাইপাস রোডের অবকাঠামোর কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছে সড়ক নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এখন পর্যন্ত সড়কটির ৬০ শতাংশের বেশি নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাইপাসটির কাজ শেষ হলে ঢাকায় প্রবেশ না করে জয়দেবপুর থেকে মদনপুর পর্যন্ত ৪৮ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে যাওয়া যাবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) গাজীপুরের মিরের বাজার এলাকায় সিক্লাব রিসোর্টে মিডিয়া পাবলিক ডেতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে বাইপাসটির বিভিন্ন অংশের চলমান কার্যক্রম সরেজমিনে দেখানো হয় গণমাধ্যমকর্মীদের। ওই সময় প্রকল্পটির কে-১২ রেলওয়ে ওভারপাস (মিরের বাজার ফ্লাইওভার) ও ফুটপাত নির্মাণকাজ পরিদর্শন করানো হয়। পরে চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ (সিইএবি) এবং চীন ও বাংলাদেশি মিডিয়ার আগ্রহের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে এ এক্সপেসওয়ে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সিচুয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ (গ্রুপ) করপোরেশন লিমিটেড (এসআরবিজি), শামীম এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড (এসইএল) এবং ইউডিসি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের (ইউডিসি) কনসোর্টিয়াম নামের তিন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এই প্রকল্পের আর্থিক পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক (ঢাকা বাইপাস) পিপিপি প্রকল্পটিতে আগের দুই লেনের সড়ক নতুন করে চার লেন করা হচ্ছে। এ ছাড়া পাশে দুটি সার্ভিস লেন থাকবে ওইসব এলাকার যানবাহন চলাচলের জন্য। এ পুরো সড়কে আগে যেখানে দুই ঘণ্টা সময় লাগতো, সেটা আধাঘণ্টায় নেমে আসবে।  

প্রকল্পের ব্যয় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুলাইয়ের মধ্যে সড়কটি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হবে। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা শহরে প্রবেশ না করেই বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন সহজেই দেশের উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে চলাচল করতে পারবে।

মিডিয়া ডেতে ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) সিইও জিয়াও ঝিমিং বলেন, ‘এ এক্সপ্রেসওয়ে বাংলাদেশের মহাসড়কে একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। এটি নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেবে। পাশাপাশি এ সড়ক ঢাকার ট্রাফিক নেটওয়ার্কের উন্নতি, যানজট নিরসন এবং প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ার পরে স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।’

জিয়াও বলেন, ‘প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক সহযোগিতার জন্য তৃতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড ফোরামে একটি বাস্তব সহযোগিতা প্রকল্প হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। যা চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চমানের সহযোগিতার উদাহরণ।’

অনুষ্ঠানে সিইএবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াং জিয়ানশি বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এবং চীন-বাংলাদেশ-ভারত-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরের আওতায় চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে এমন সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রেখে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা জোরদার করতে থাকবে। দুই দেশের এই প্রচেষ্টার বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে এবং পারস্পরিক সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে মনে করি।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিইএবির আরেক ভাইস প্রেসিডেন্ট উ কিডং, ডিপিডিসির সিওও মো. শফিকুল ইসলাম আকন্দ এবং প্রতিষ্ঠানটির জেনারেল ম্যানেজার শি বো এবং ইয়াং জু।

সালমান/

বেবিচকের নতুন চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান চৌধুরী

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম
বেবিচকের নতুন চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান চৌধুরী
বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ

বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

সাদিকুর রহমান বর্তমান চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমানকে বদলি করে বিমানবাহিনীতে ফেরত নেওয়া হয়েছে। তার জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী। বিমানবাহিনীর এই কর্মকর্তাকে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে।

তিথি/পপি

গ্যাসসংকটের এক মাস

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:১০ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
গ্যাসসংকটের এক মাস
ছবি : খবরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল পুরোপুরি সচল হতে পারে আগামী ১৪ জুলাই। তারপর চলমান গ্যাসসংকট কেটে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

গত ২৭ মে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পর থেকে জাতীয় গ্রিডে অন্তত ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের মানুষকে। 

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টার্মিনালের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই ঠিক হবে। তারপর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। 

এর আগেও ঝড়ে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল তখনো। এ কারণে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা ভাসমান টার্মিনালের পাশাপাশি ভূমিভিত্তিক টার্মিনাল স্থাপন করার পরামর্শ দিয়েছেন। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালীতে। একটি সামিট গ্রুপের, আরেকটি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির। 

জ্বালানি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। দুটি টার্মিনাল থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় এলএনজি সরবরাহের পরও জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থাকে দৈনিক প্রায় ১০০ কোটি ঘনফুট। এ অবস্থায় কোনো কারণে একটি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ বন্ধ হলে গোটা দেশেই তীব্র গ্যাসসংকট দেখা দেয়। তখন রেশনিং করে চালানো হয়। 

সংকটের এক মাস, সিএনজি স্টেশনে দীর্ঘ লাইন
গত ২৭ মে এলএনজি টার্মিনালের অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপর এক মাস সংকটের সঙ্গে লড়ছে মানুষ। সিএনজি স্টেশনে দীর্ঘ লাইন থাকছে নিত্যদিন। অবস্থা এখন এমন যে, রাজধানীর অনেক সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধই করে রাখা হয়েছে। 

মগবাজার মোড়ে আনুদিপ সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেখা যায়, গাড়ির দীর্ঘ লাইন। চালকদের গ্যাস নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, আগে একবার গ্যাস নিলেও হতো, এখন দুইবার নিলেও হয় না। কারণ হচ্ছে গ্যাসের চাপ কম। বাতাস ঢুকে যায়। কোয়ালিটি ভালো না। বেশির ভাগ সময় স্টেশনেই কাটাতে হয়। ফলে ভাড়ার টাকা ওঠানোই দুষ্কর হয়ে গেছে। 

একই অবস্থা দেখা যায় রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও, মিরপুর, রোকেয়া সরণি, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা ও তেজগাঁও এলাকার বেশ কিছু সিএনজি স্টেশনেও। কয়েকটি স্টেশনে দেখা গেল, কয়েকটি ইউনিট বন্ধ রাখা হয়েছে। 

বাসাবাড়িতেও গ্যাসের চাপ কম। তাই দুপুর পর্যন্ত গ্যাস না পাওয়ার অভিযোগ নগরবাসীর। দুপুরের পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয় এবং মাঝরাতের দিকে আবার গ্যাস থাকে না। 

শিল্প-কারখানাতেও গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত  
গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও নরসিংদীর শিল্প কলকারখানাগুলোতে বিরাজ করছে তীব্র গ্যাসসংকট। মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে, ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবি করছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঞ্চালন লাইন থেকে দূরবর্তী শিল্প-কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ কম থাকছে।

এমপি আনার হত্যাকাণ্ড: আরও এক মাস্টারমাইন্ডের তথ্য

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:২৪ এএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:২৪ এএম
এমপি আনার হত্যাকাণ্ড: আরও এক মাস্টারমাইন্ডের তথ্য
আনোয়ারুল আজীম আনার

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলী ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মামলার তদন্ত নতুন মোড় নিয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার ওয়ারী জোনের গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহর আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

পুলিশের দাবি অনুযায়ী, তারা সীতাকুণ্ডের একটি মন্দিরে লুকিয়ে ছিলেন। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় সোর্স ও প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা আনার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি এও জানিয়েছেন যে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড পলাতক আক্তারুজ্জামান শাহীনের পাশাপাশি আরও একজন জড়িত আছেন, যাকে তারা কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে দেখেছেন। তবে ওই ব্যক্তির বিষয়ে তারা বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি। তারা দাবি করেছেন, ওই ব্যক্তিকে ভারতে আটক হওয়া কিলার সিয়াম চেনেন। ওই ব্যক্তি কে তা শনাক্তে কাজ করছেন মামলার তদন্তকারীরা। 

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল দুজনই আনার হত্যায় গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ। তাদের দুজনকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিমুলের ভূমিকা ছিল। মোস্তাফিজুর ট্রাকচালক ও ফয়সাল শ্রমিক ছিলেন। তারা খুলনায় একটি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারা স্বীকার করেছেন যে টাকার লোভে পড়ে তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িয়েছিলেন। আনার হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করার জন্য শিমুলের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা সেই টাকা পাননি। দেশে এসে শিমুলের কাছে তারা খুনের মিশন বাস্তবায়নের টাকা চাইতে গেলে উল্টো শিমুল তাদের হুমকি-ধমকি দেন। এতে তারা চুপসে যান। পরে শিমুল পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর দুজনই গা-ঢাকা দেন।

মামলার তদন্তকারীরা জানান, আনারকে হত্যার পর লাশ টুকরা করার ক্ষেত্রে মোস্তাফিজুর, ফয়সাল, জিহাদ ও সিয়ামের ভূমিকা ছিল। জিহাদ ও সিয়ামকে কলকাতার পুলিশ আগেই গ্রেপ্তার করেছে। মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল গ্রেপ্তার হওয়ার পর মামলার তদন্তের গতি বাড়বে। সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদে কলকাতার পুলিশ যে তথ্য পেয়েছে, তা বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের জানিয়েছে। মোস্তাফিজুর ও ফয়সালকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই তথ্যগুলো মেলানোর চেষ্টা করা হবে। তবে মামলার তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আনার হত্যার মূল মোটিভ জানা যায়নি। তবে দ্রুতই তা জানা যাবে এবং তারা তদন্তের শেষ পর্যায়ে এসেছেন। 

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া মুস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলীকে পুলিশ আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

গত ১৩ মে কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে খুন হন এমপি আনার। ২২ মে আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ এ মামলায় গ্রেপ্তার করে শিলাস্তি রহমান, আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ও তানভীর ভূঁইয়া ওরফে ফয়সাল সাজিকে। পরে আদালত শিলাস্তিসহ মোট তিনজনকে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

প্রথম দফায় রিমান্ডে কিছু তথ্যের ঘাটতি থাকার কারণে ডিবি পুলিশ গত ৩১ মে পুনরায় আদালতে আসামিদের হাজির করে আবার রিমান্ডের আবেদন করে। শিমুল ভূঁইয়া তার জবানবন্দিতে ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক গ্যাস বাবুর কথা বলেন। গ্যাস বাবু আবার ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর এ খুনে জড়িত হওয়ার কথা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের জানান। 

পরে গত ১১ জুন ধানমন্ডি এলাকা থেকে মিন্টুকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অনেক জল্পনা-কল্পনার পর মিন্টুকে ১৩ জুন ডিবি পুলিশ আনার হত্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তাকে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

আনার হত্যা মামলার তদন্তের মুখ্য সমন্বয়কারী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ খবরের কাগজকে জানান, ‘মামলার তদন্ত চলছে। আমরা মূল মোটিভ উদঘাটনের জন্য কাজ করছি।’ 

মামলার তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, কলকাতার ফ্ল্যাটে যারা উপস্থিত থেকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল তাদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল ছিলেন। এদের গ্রেপ্তার করার পর মামলার তদন্তে নতুন করে গতি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

সূত্র জানায়, মোস্তাফিজুর ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করার পর তাদের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু নতুন তথ্যের খোঁজ পাওয়া গেছে। তারা দাবি করেছেন, মাস্টারমাইন্ড শাহীনের সঙ্গে তারা ত্রিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে তারা কলকাতার ফ্ল্যাটে দেখেছেন। ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে মাঠে কাজ করছেন মামলার তদন্তকারীরা। দরকার হলে মামলার আসামিদের পুনরায় রিমান্ডে আনা হবে। 
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, এখন পর্যন্ত এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী সাতজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল গত ১৯ মে ঢাকায় আসেন। ২২ মে আনার হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা সীতাকুণ্ডে চলে যান। সেখানে নাম পরিবর্তন করে পলাশ রায় ও শিমুল রায় পরিচয়ে রাতে পাতালকালী মন্দিরে অবস্থান করেন। এভাবে তারা ওই মন্দিরে ২৩ দিন কাটিয়ে দেন। পরে সীতাকুণ্ডের একটি পাহাড়ের নিচে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

তিনি আরও জানান, কলকাতার একটি মার্কেট থেকে ১৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি চেয়ার কিনে আনেন তারা। সঙ্গে আনেন ক্লোরোফর্ম। সেই চেয়ারে বেঁধে আনারকে বিবস্ত্র করা হয়। এই কাজগুলো করেছেন ফয়সাল। আর হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র সিয়াম এনে দিয়েছিলেন ফয়সালকে। ফয়সাল আলী তাকে পেছন থেকে গলা ধরে মুখে চেতনানাশক ক্লোরোফর্ম মিশ্রিত রুমাল দিয়ে চেপে ধরেন। এরপর অন্য আসামিদের সহযোগিতায় তাকে অজ্ঞান করে হত্যা করেন। কেন এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা সুনির্দিষ্ট মোটিভ বলতে পারছি না।’

আমের স্বাদে-গন্ধে মুগ্ধ কূটনীতিকরা

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:০৮ এএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:০৮ এএম
আমের স্বাদে-গন্ধে মুগ্ধ কূটনীতিকরা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে গতকাল আমবাগান দেখে কূটনীতিকরা প্রশংসা করেন। ছবি: খবরের কাগজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক নাচোলে নিরাপদ আম চাষ ঘুরে দেখেছেন বিভিন্ন দেশের একদল কূটনীতিক। শুধু ঘুরে দেখাই নয়, আম খেয়ে স্বাদে-গন্ধে রীতিমতো মুগ্ধ ও বিমোহিত হয়েছেন তারা। সরেজমিনে বাগান ঘুরে দেখা বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত প্রায় ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূত-মিশনপ্রধানরা ছিলেন। বাংলাদেশে নিরাপদ আম উৎপাদন কার্যক্রম দেখে তারা প্রশংসা করেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দিনভর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কান্দবোনা গ্রামে উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে পরিচালিত আমচাষি রুহুল আমিনের আমবাগান পরিদর্শন করেন তারা।

পরিদর্শনকালে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহা. জিয়াউর রহমান, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার এবং ব্রুনাই, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, স্পেন, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভুটান, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার ও লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা  ছিলেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধিও এ টিমে ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের আম স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এবং বিদেশেও খুবই জনপ্রিয়। প্রতিবছর দেশ থেকে লক্ষাধিক টন আম রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আমরা মাত্র তিন হাজার টনের মতো আম রপ্তানি করতে পারি। এ ক্ষেত্রে মূল প্রতিবন্ধকতা ছিল গ্যাপ অনুসরণ না করা। সে জন্য গ্যাপ মেনে আমরা নিরাপদ আম উৎপাদন শুরু করেছি। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা এ কার্যক্রম ঘুরে দেখেছেন।’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বেশি পরিমাণ আম রপ্তানির চেষ্টা করছি। এ পরিদর্শনের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূতদের উৎসাহিত করছি, যাতে করে বেশি পরিমাণ আম রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। আমি মনে করি, এ ভিজিটের ফলে আম রপ্তানি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।’

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘কৃষি, বাণিজ্য এবং পররাষ্ট্র তিন মন্ত্রণালয় মিলে আমরা আমাদের আমকে বিদেশে ব্র্যান্ডিং করব। যাতে বিদেশে রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পায়। আম রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের বহু সমস্যা আছে, থাকতে পারে। এগুলো আমরা সমাধান করব।’ 

তিনি বলেন, ‘গ্যাপ না থাকলে চাইলেই বিদেশে আম রপ্তানি করা যায় না। গ্যাপ বাস্তবায়ন আমরা শুরু করেছি। সামনে কোনো সমস্যা থাকবে না।’ 

কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, ‘আমরা উত্তম কৃষিচর্চা শুরু করেছি। এটি সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা দেখলেন। এটা আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।’

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমাদের  আমের কোয়ালিটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে প্রতিটি দেশেই ফাইটোস্যানিটারি ইস্যু আছে, এর একটা নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড আছে। গ্যাপ মেনে আম উৎপাদন করতে পারলে বিশ্বের সব দেশেই আম রপ্তানি করা যাবে।’

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৩৮টি দেশে আম রপ্তনি হচ্ছে; যদিও এর পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ২০২১ সালে বিশ্বে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের আম রপ্তানি হয়। আর বাংলাদেশ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৫৭ মেট্রিক টন আম রপ্তানি এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ হাজার ১০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে।