ঢাকা ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে প্রথম আনসার বাহিনী

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৪, ০৯:২২ পিএম
আপডেট: ২৩ জুন ২০২৪, ০৯:২২ পিএম
বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নে প্রথম আনসার বাহিনী
ছবি : খবরের কাগজ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বাস্তবায়ন মূল্যায়নে প্রথম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে এপিএ প্রবর্তনের পর আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী এই প্রথম শীর্ষস্থান লাভের গৌরব অর্জন করল।

রবিবার (২৩ জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির মূল্যায়ন এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুদ্ধাচার পুরস্কার সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হকের হাতে এই অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ সনদ ও ক্রেস্ট তুলে দেন।

এপিএ বাস্তবায়ন মূল্যায়নে প্রথম স্থান অর্জন করায় বাহিনীর সব কর্মকর্তা কর্মচারীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক। তিনি সবাইকে এই অর্জনে উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সহিত আরও পেশাদার মনোভাব নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, এপিএ মূলত একটি স্বনিয়ন্ত্রিত কৌশল যা একটি সংস্থাকে লক্ষ্য অর্জনের দিকে ধাবিত করে। এতে প্রতিফলিত হয় সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-২০৩০, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (২০২১-২৫), পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০। এই সব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতিটি দপ্তরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যম হিসেবে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। একটি প্রতিষ্ঠান আগামী এক বছর কী কার্যক্রম গ্রহণ করবে, কতটুকু করবে এবং তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি কার্যকর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) বিশেষ সহায়তা করে।

বেবিচকের নতুন চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান চৌধুরী

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:৫০ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম
বেবিচকের নতুন চেয়ারম্যান সাদিকুর রহমান চৌধুরী
বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ

বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

সাদিকুর রহমান বর্তমান চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমানের স্থলাভিষিক্ত হবেন।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমানকে বদলি করে বিমানবাহিনীতে ফেরত নেওয়া হয়েছে। তার জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন এয়ার কমডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী। বিমানবাহিনীর এই কর্মকর্তাকে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে।

তিথি/পপি

গ্যাসসংকটের এক মাস

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:১০ পিএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
গ্যাসসংকটের এক মাস
ছবি : খবরের কাগজ

ঘূর্ণিঝড় রিমালে ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভাসমান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল পুরোপুরি সচল হতে পারে আগামী ১৪ জুলাই। তারপর চলমান গ্যাসসংকট কেটে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

গত ২৭ মে ভাসমান এলএনজি টার্মিনালটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পর থেকে জাতীয় গ্রিডে অন্তত ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ করা হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের মানুষকে। 

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, টার্মিনালের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৪ জুলাই ঠিক হবে। তারপর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। 

এর আগেও ঝড়ে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল তখনো। এ কারণে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা ভাসমান টার্মিনালের পাশাপাশি ভূমিভিত্তিক টার্মিনাল স্থাপন করার পরামর্শ দিয়েছেন। 

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে কক্সবাজারের মহেশখালীতে। একটি সামিট গ্রুপের, আরেকটি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির। 

জ্বালানি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। দুটি টার্মিনাল থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় এলএনজি সরবরাহের পরও জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের চাহিদার তুলনায় ঘাটতি থাকে দৈনিক প্রায় ১০০ কোটি ঘনফুট। এ অবস্থায় কোনো কারণে একটি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ বন্ধ হলে গোটা দেশেই তীব্র গ্যাসসংকট দেখা দেয়। তখন রেশনিং করে চালানো হয়। 

সংকটের এক মাস, সিএনজি স্টেশনে দীর্ঘ লাইন
গত ২৭ মে এলএনজি টার্মিনালের অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তারপর এক মাস সংকটের সঙ্গে লড়ছে মানুষ। সিএনজি স্টেশনে দীর্ঘ লাইন থাকছে নিত্যদিন। অবস্থা এখন এমন যে, রাজধানীর অনেক সিএনজি ফিলিং স্টেশন বন্ধই করে রাখা হয়েছে। 

মগবাজার মোড়ে আনুদিপ সিএনজি ফিলিং স্টেশনে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে দেখা যায়, গাড়ির দীর্ঘ লাইন। চালকদের গ্যাস নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে বলে তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন, আগে একবার গ্যাস নিলেও হতো, এখন দুইবার নিলেও হয় না। কারণ হচ্ছে গ্যাসের চাপ কম। বাতাস ঢুকে যায়। কোয়ালিটি ভালো না। বেশির ভাগ সময় স্টেশনেই কাটাতে হয়। ফলে ভাড়ার টাকা ওঠানোই দুষ্কর হয়ে গেছে। 

একই অবস্থা দেখা যায় রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও, মিরপুর, রোকেয়া সরণি, মতিঝিল, খিলগাঁও, রামপুরা ও তেজগাঁও এলাকার বেশ কিছু সিএনজি স্টেশনেও। কয়েকটি স্টেশনে দেখা গেল, কয়েকটি ইউনিট বন্ধ রাখা হয়েছে। 

বাসাবাড়িতেও গ্যাসের চাপ কম। তাই দুপুর পর্যন্ত গ্যাস না পাওয়ার অভিযোগ নগরবাসীর। দুপুরের পর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হয় এবং মাঝরাতের দিকে আবার গ্যাস থাকে না। 

শিল্প-কারখানাতেও গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত  
গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও নরসিংদীর শিল্প কলকারখানাগুলোতে বিরাজ করছে তীব্র গ্যাসসংকট। মাঝেমধ্যেই দেখা যাচ্ছে, ব্যবসায়ীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবি করছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঞ্চালন লাইন থেকে দূরবর্তী শিল্প-কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ কম থাকছে।

এমপি আনার হত্যাকাণ্ড: আরও এক মাস্টারমাইন্ডের তথ্য

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:২৪ এএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:২৪ এএম
এমপি আনার হত্যাকাণ্ড: আরও এক মাস্টারমাইন্ডের তথ্য
আনোয়ারুল আজীম আনার

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে মোস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলী ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর মামলার তদন্ত নতুন মোড় নিয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকার ওয়ারী জোনের গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল্লাহর আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

পুলিশের দাবি অনুযায়ী, তারা সীতাকুণ্ডের একটি মন্দিরে লুকিয়ে ছিলেন। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় সোর্স ও প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা আনার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। পাশাপাশি এও জানিয়েছেন যে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড পলাতক আক্তারুজ্জামান শাহীনের পাশাপাশি আরও একজন জড়িত আছেন, যাকে তারা কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে দেখেছেন। তবে ওই ব্যক্তির বিষয়ে তারা বিস্তারিত তথ্য দিতে পারেননি। তারা দাবি করেছেন, ওই ব্যক্তিকে ভারতে আটক হওয়া কিলার সিয়াম চেনেন। ওই ব্যক্তি কে তা শনাক্তে কাজ করছেন মামলার তদন্তকারীরা। 

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল দুজনই আনার হত্যায় গ্রেপ্তার শিমুল ভূঁইয়ার ঘনিষ্ঠ। তাদের দুজনকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে শিমুলের ভূমিকা ছিল। মোস্তাফিজুর ট্রাকচালক ও ফয়সাল শ্রমিক ছিলেন। তারা খুলনায় একটি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তারা স্বীকার করেছেন যে টাকার লোভে পড়ে তারা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িয়েছিলেন। আনার হত্যার মিশন বাস্তবায়ন করার জন্য শিমুলের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তারা সেই টাকা পাননি। দেশে এসে শিমুলের কাছে তারা খুনের মিশন বাস্তবায়নের টাকা চাইতে গেলে উল্টো শিমুল তাদের হুমকি-ধমকি দেন। এতে তারা চুপসে যান। পরে শিমুল পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর দুজনই গা-ঢাকা দেন।

মামলার তদন্তকারীরা জানান, আনারকে হত্যার পর লাশ টুকরা করার ক্ষেত্রে মোস্তাফিজুর, ফয়সাল, জিহাদ ও সিয়ামের ভূমিকা ছিল। জিহাদ ও সিয়ামকে কলকাতার পুলিশ আগেই গ্রেপ্তার করেছে। মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল গ্রেপ্তার হওয়ার পর মামলার তদন্তের গতি বাড়বে। সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদে কলকাতার পুলিশ যে তথ্য পেয়েছে, তা বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের জানিয়েছে। মোস্তাফিজুর ও ফয়সালকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই তথ্যগুলো মেলানোর চেষ্টা করা হবে। তবে মামলার তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আনার হত্যার মূল মোটিভ জানা যায়নি। তবে দ্রুতই তা জানা যাবে এবং তারা তদন্তের শেষ পর্যায়ে এসেছেন। 

এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া মুস্তাফিজুর রহমান ফকির ও ফয়সাল আলীকে পুলিশ আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

গত ১৩ মে কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে খুন হন এমপি আনার। ২২ মে আনারকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ এ মামলায় গ্রেপ্তার করে শিলাস্তি রহমান, আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ও তানভীর ভূঁইয়া ওরফে ফয়সাল সাজিকে। পরে আদালত শিলাস্তিসহ মোট তিনজনকে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

প্রথম দফায় রিমান্ডে কিছু তথ্যের ঘাটতি থাকার কারণে ডিবি পুলিশ গত ৩১ মে পুনরায় আদালতে আসামিদের হাজির করে আবার রিমান্ডের আবেদন করে। শিমুল ভূঁইয়া তার জবানবন্দিতে ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক গ্যাস বাবুর কথা বলেন। গ্যাস বাবু আবার ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুর এ খুনে জড়িত হওয়ার কথা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের জানান। 

পরে গত ১১ জুন ধানমন্ডি এলাকা থেকে মিন্টুকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। অনেক জল্পনা-কল্পনার পর মিন্টুকে ১৩ জুন ডিবি পুলিশ আনার হত্যাকাণ্ডের মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তাকে আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

আনার হত্যা মামলার তদন্তের মুখ্য সমন্বয়কারী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ খবরের কাগজকে জানান, ‘মামলার তদন্ত চলছে। আমরা মূল মোটিভ উদঘাটনের জন্য কাজ করছি।’ 

মামলার তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, কলকাতার ফ্ল্যাটে যারা উপস্থিত থেকে হত্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল তাদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান ও ফয়সাল ছিলেন। এদের গ্রেপ্তার করার পর মামলার তদন্তে নতুন করে গতি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। 

সূত্র জানায়, মোস্তাফিজুর ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করার পর তাদের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কিছু নতুন তথ্যের খোঁজ পাওয়া গেছে। তারা দাবি করেছেন, মাস্টারমাইন্ড শাহীনের সঙ্গে তারা ত্রিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তিকে তারা কলকাতার ফ্ল্যাটে দেখেছেন। ওই ব্যক্তিকে চিহ্নিত করতে মাঠে কাজ করছেন মামলার তদন্তকারীরা। দরকার হলে মামলার আসামিদের পুনরায় রিমান্ডে আনা হবে। 
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, এখন পর্যন্ত এমপি আনার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী সাতজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত মোস্তাফিজুর ও ফয়সাল গত ১৯ মে ঢাকায় আসেন। ২২ মে আনার হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ে। পরে তারা সীতাকুণ্ডে চলে যান। সেখানে নাম পরিবর্তন করে পলাশ রায় ও শিমুল রায় পরিচয়ে রাতে পাতালকালী মন্দিরে অবস্থান করেন। এভাবে তারা ওই মন্দিরে ২৩ দিন কাটিয়ে দেন। পরে সীতাকুণ্ডের একটি পাহাড়ের নিচে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। 

তিনি আরও জানান, কলকাতার একটি মার্কেট থেকে ১৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি চেয়ার কিনে আনেন তারা। সঙ্গে আনেন ক্লোরোফর্ম। সেই চেয়ারে বেঁধে আনারকে বিবস্ত্র করা হয়। এই কাজগুলো করেছেন ফয়সাল। আর হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র সিয়াম এনে দিয়েছিলেন ফয়সালকে। ফয়সাল আলী তাকে পেছন থেকে গলা ধরে মুখে চেতনানাশক ক্লোরোফর্ম মিশ্রিত রুমাল দিয়ে চেপে ধরেন। এরপর অন্য আসামিদের সহযোগিতায় তাকে অজ্ঞান করে হত্যা করেন। কেন এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা সুনির্দিষ্ট মোটিভ বলতে পারছি না।’

আমের স্বাদে-গন্ধে মুগ্ধ কূটনীতিকরা

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:০৮ এএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ১০:০৮ এএম
আমের স্বাদে-গন্ধে মুগ্ধ কূটনীতিকরা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে গতকাল আমবাগান দেখে কূটনীতিকরা প্রশংসা করেন। ছবি: খবরের কাগজ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ঐতিহাসিক নাচোলে নিরাপদ আম চাষ ঘুরে দেখেছেন বিভিন্ন দেশের একদল কূটনীতিক। শুধু ঘুরে দেখাই নয়, আম খেয়ে স্বাদে-গন্ধে রীতিমতো মুগ্ধ ও বিমোহিত হয়েছেন তারা। সরেজমিনে বাগান ঘুরে দেখা বিদেশি কূটনীতিকদের মধ্যে ঢাকায় নিযুক্ত প্রায় ২০টি দেশের রাষ্ট্রদূত-মিশনপ্রধানরা ছিলেন। বাংলাদেশে নিরাপদ আম উৎপাদন কার্যক্রম দেখে তারা প্রশংসা করেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দিনভর চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার কান্দবোনা গ্রামে উত্তম কৃষি চর্চা (গ্যাপ) অনুসরণ করে পরিচালিত আমচাষি রুহুল আমিনের আমবাগান পরিদর্শন করেন তারা।

পরিদর্শনকালে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মো. আব্দুল ওয়াদুদ, স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহা. জিয়াউর রহমান, কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মো. বখতিয়ার এবং ব্রুনাই, অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, স্পেন, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ভুটান, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার ও লিবিয়ার রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিরা  ছিলেন। এ ছাড়া জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধিও এ টিমে ছিলেন।

পরিদর্শন শেষে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের আম স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় এবং বিদেশেও খুবই জনপ্রিয়। প্রতিবছর দেশ থেকে লক্ষাধিক টন আম রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আমরা মাত্র তিন হাজার টনের মতো আম রপ্তানি করতে পারি। এ ক্ষেত্রে মূল প্রতিবন্ধকতা ছিল গ্যাপ অনুসরণ না করা। সে জন্য গ্যাপ মেনে আমরা নিরাপদ আম উৎপাদন শুরু করেছি। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা এ কার্যক্রম ঘুরে দেখেছেন।’ 

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বেশি পরিমাণ আম রপ্তানির চেষ্টা করছি। এ পরিদর্শনের মাধ্যমে রাষ্ট্রদূতদের উৎসাহিত করছি, যাতে করে বেশি পরিমাণ আম রপ্তানি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। আমি মনে করি, এ ভিজিটের ফলে আম রপ্তানি বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।’

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘কৃষি, বাণিজ্য এবং পররাষ্ট্র তিন মন্ত্রণালয় মিলে আমরা আমাদের আমকে বিদেশে ব্র্যান্ডিং করব। যাতে বিদেশে রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পায়। আম রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের বহু সমস্যা আছে, থাকতে পারে। এগুলো আমরা সমাধান করব।’ 

তিনি বলেন, ‘গ্যাপ না থাকলে চাইলেই বিদেশে আম রপ্তানি করা যায় না। গ্যাপ বাস্তবায়ন আমরা শুরু করেছি। সামনে কোনো সমস্যা থাকবে না।’ 

কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, ‘আমরা উত্তম কৃষিচর্চা শুরু করেছি। এটি সারা বিশ্বের প্রতিনিধিরা দেখলেন। এটা আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।’

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমাদের  আমের কোয়ালিটি নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে প্রতিটি দেশেই ফাইটোস্যানিটারি ইস্যু আছে, এর একটা নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড আছে। গ্যাপ মেনে আম উৎপাদন করতে পারলে বিশ্বের সব দেশেই আম রপ্তানি করা যাবে।’

বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৩৮টি দেশে আম রপ্তনি হচ্ছে; যদিও এর পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। ২০২১ সালে বিশ্বে প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের আম রপ্তানি হয়। আর বাংলাদেশ থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ হাজার ৭৫৭ মেট্রিক টন আম রপ্তানি এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ হাজার ১০০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি হয়েছে।

আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি ছাড়, রিজার্ভ বেড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলার

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম
আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪, ০৯:৫৬ এএম
আইএমএফের তৃতীয় কিস্তি ছাড়, রিজার্ভ বেড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলার
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি মার্কিন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, যা বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে এ অর্থ যোগ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গত রাতে খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, কিস্তির অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে যোগ হয়েছে। তাতে রিজার্ভের পরিমাণও বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখমাত্র আরও বলেন, আইএমএফের পাশাপাশি কোরিয়া, ইসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও ৯০ কোটি ডলার যোগ হয়েছে। এর ফলে রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের কিছু বেশি। 

এর আগে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আইএমএফের পর্ষদ সভায় তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার অনুমোদন হয়। এর মধ্যে এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) ও এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটির (ইএফএফ) ৯২ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির ২২ কোটি ডলার রয়েছে। 

গত ২৪ এপ্রিল ঋণ কর্মসূচির আওতায় তৃতীয় কিস্তির জন্য গত ডিসেম্বরভিত্তিক শর্ত বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণে আসে আইএমএফ মিশন। সংস্থাটির ডেভেলপমেন্ট মাইক্রোইকনোমিকস ডিভিশনের প্রধান ক্রিস পাপাগেওর্জিউর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল দুই সপ্তাহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক ও পর্যালোচনা কার্যক্রম শেষে গত ৮ মে এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশ সরকার এবং আইএমএফ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন।

বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কমতে থাকার মধ্যে গত বছরের ৩০ জানুয়ারি আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বাংলাদেশ। এর তিন দিন পর প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করে সংস্থাটি। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ২০ লাখ ডলার ছাড় করা হয়। ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট ৭টি কিস্তিতে ঋণের পুরো অর্থ ছাড় করার কথা রয়েছে। 

দ্বিতীয় কিস্তির পরেরগুলোতে সমান অর্থ থাকার কথা ছিল। কিন্তু রিজার্ভ আরও কমে যাওয়ায় তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিতে বেশি অর্থ চায় বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কঠিন শর্তের বাস্তবায়ন ও আগামীতে আরও বড় সংস্কার কার্যক্রমের প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় সংস্থাটি তৃতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ডলারের পরিবর্তে ১১৫ কোটি ডলার দিতে সম্মত হয়। তবে মোট ঋণের পরিমাণ এবং মেয়াদ একই থাকবে।