![রেল চলাচলের চুক্তি সার্বভৌমত্ববিরোধী : এবি পার্টি](uploads/2024/06/24/AB_Party-1719233002.jpg)
জনগণের সম্মতি ছাড়া একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের ওপর দিয়ে অন্য একটি দেশের ট্রেন চলাচলের চুক্তিকে সার্বভৌমত্ববিরোধী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি।
অভিযোগ করে দলটি বলছে, ‘একটি ভোটারবিহীন নির্বাচনে ভারতের অনৈতিক সমর্থনের কৃতজ্ঞতা স্বরূপ প্রতিদান হিসেবে গোপন প্রতিশ্রুতি মোতাবেক দাসখত লিখে দিতে সরকার ভারতের সঙ্গে অন্যায্য চুক্তি এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। এসব চুক্তিতে দেশের মানুষের কী লাভ বা স্বার্থ তা সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে।’
সোমবার (২৪ জুন) রাজধানীর বিজয়নগরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে দলটির শীর্ষ নেতারা।
দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের জনগণকে অন্ধকারে রেখে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে গণবিরোধী চুক্তি করেছে সরকার। বাংলাদেশের সংবিধানের ১৪৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে ভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো চুক্তি হলে তা সংসদে তুলে ধরতে হবে কিন্তু আওয়ামী লীগ কখনো তা করেনি। এই সংসদ যে ডামি সংসদ তাই সরকারের কাছেও কোনো গুরুত্ব নেই। সংসদে কেউ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্নও করছে না। ব্লু ইকোনমির নামে দেশের সম্পদ ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
ভারতের সঙ্গে স্যাটেলাইট চুক্তির মাধ্যমে জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে স্পর্শকাতর তথ্য বিনিময়ের যে চুক্তি হয়েছে, সে সম্পর্ক জনগণকে অবহিত করতে হবে। বাংলাদেশ কারও পৈত্রিক সম্পত্তি নয়, দেশের স্বার্থরক্ষা হয়েছে কি না জনগণ জানতে চাই।’
লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম বলেন, ‘ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া ও ট্রেন চলাচলের সুবিধা দিয়ে দেশের মানুষের কী লাভ বা স্বার্থ তা পরিষ্কার করতে হবে। নদীর পানি প্রবাহের আন্তর্জাতিক আইন কখনোই ভারত মানেনি। আমাদের নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আমাদের অধিকার। এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, ‘এই সরকার গোপনে দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে ভারত বাংলাদেশ যত চুক্তি হয়েছে কোনোটাই ভারত বাস্তবায়ন করেনি। আমরা বেরুবাড়ি দিয়ে দিলাম কিন্তু আঙ্গোরপোতাহ পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়েছে। কাজেই ভারত কখনো বন্ধুত্বের কোনো পরিচয় রাখেনি।’
সভাপতির বক্তব্যে এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘অনির্বাচিত সরকার যে অন্যায় চুক্তি করেছে আমরা সেজন্য ধিক্কার জানাই। আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করি, নিজেদের আত্মমর্যাদা স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করি।’
সম্প্রতি কিছু পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের মতো সংগঠন বিবৃতি দিয়ে দুর্নীতিবাজদের পক্ষ নেওয়ার বিষয়টি অনৈতিক।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক, দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ কবির, সদস্যসচিব সেলিম খান প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম/সালমান/