আগামী সপ্তাহে কলকাতায় আসতে পারেন ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। এই বিষয়টি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির এক কর্মকর্তা শনিবার (২১ জুন) বলেছেন, ‘আমরা বিভিন্ন সূত্র মারফত জানতে পেরেছি ডরিন কলকাতায় আসছেন। তবে আমাদের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে ডরিনকে কলকাতায় আসার কথা বলা হয়নি। কারণ সিএফএসএল (ভারতের কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি) থেকে এখনো চূড়ান্ত রিপোর্ট আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি। সেই রিপোর্ট আসার পর পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ডরিনকে ডাকা হতে পারে।’
তবে ওই সূত্র আরও বলেছেন, ‘কিন্তু ডরিন যদি ইতোমধ্যে কলকাতায় আসেন, আমাদের তরফ থেকে তাকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে। যেহেতু এটি একটি আন্তর্জাতিক ও স্পর্শকাতর মামলা, সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে তখনই ডরিনের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে তা সংরক্ষণ করে রাখা হবে এবং সময়মতো সেটি ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হবে।’
বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, বাবার মৃত্যুর তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতেই কলকাতায় আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন ডরিন। সে কারণেই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কলকাতা আসতে পারেন তিনি। কলকাতায় ভবানীপুরের সিআইডি সদর দপ্তরে গিয়ে দেখা করবেন সিআইডির কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
এদিকে সিআইডি সূত্রের খবর, ডরিনের পাশাপাশি কলকাতায় আসছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি দলও। তদন্তে উঠে আসা বেশ কয়েকটি অসংগতি যাচাই করে দেখতে চান তারা। সেই সঙ্গে কলকাতায় ধৃত অপর অভিযুক্ত সিয়াম হোসেনকেও জেরা করতে পারেন ঢাকার গোয়েন্দা অফিসাররা।
শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসত জেলা ও দায়রা আদালত অভিযুক্ত জিহাদ হওলাদারকে আবারও ১৪ দিনের জেল-হেফাজতে পাঠিয়েছে। বর্তমানে তিনি দমদমের কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। সেখান থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অভিযুক্তের সঙ্গে কথা বলে তার বক্তব্য শোনেন এবং পরবর্তী হাজিরার দিন ধার্য করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শুভঙ্কর বিশ্বাস। আগামী ৫ জুলাই ফের তাকে আদালতে তোলা হবে।
২৪ মে প্রথমবার তাকে বারাসত আদালতে তোলা হয়। এরপর মোট ২ দফায় ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন আদালত। সিআইডি রিমান্ড শেষে গত ৭ জুন আদালতে তোলা হলে প্রথম দফায় ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক। সেই মেয়াদ শেষেই শুক্রবার ফের আদালতে তোলা হয়েছিল জিহাদকে।
এই জিহাদ আর সিয়ামকে সামনাসামনি বসিয়ে জেরা করতে চান ডিবির অফিসাররা। খুনের পর কসাই জিহাদই ধারাল অস্ত্র দিয়ে এমপি আনারের শরীর থেকে মাংস আলাদা করে সেগুলোকে ক্যারিব্যাগে ভরে রাখেন। পরে সেই লাশের টুকরোগুলোকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার ভাঙ্গড় ব্লকের কৃষ্ণমাটি খাল এলাকায় ফেলা হয়। পরে ওই খালসংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু হাড় উদ্ধার করেন সিআইডির কর্মকর্তারা। যা দেখে সিআইডি কর্মকর্তা ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান সেগুলো মানুষের হাড়।
পাশাপাশি সঞ্জিবা গার্ডেনের ওই আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় প্রায় ৪ কেজি মাংস। উদ্ধার করা ওই মাংস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে। তাদের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী ওইসব মাংসখণ্ড পুরুষ মানুষের।