মাদারীপুরে আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে উত্তপ্ত মাঠ। মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ১৫টি অভিযোগ তুলেছেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তার চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান। এরই মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা না পেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এই প্রার্থী।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) মাদারীপুর শহরের ডিসি ব্রিজ এলাকায় নিজ বাসভবনে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খান অভিযোগ করেন, আসন্ন সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের ছেলে, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আসিবুর রহমান আসিব খান। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শাজাহান খানের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে পাভেলুর রহমান শফিক খান। তিনি লড়ছেন মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে। এই নির্বাচনকে ঘিরে ছেলের পক্ষে কাজ শুরু করেন শাজাহান খান।
শফিক খান বলেন, এর মধ্যে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো, প্রশাসনের ওপর চাপ প্রয়োগ, কালো টাকা ছড়ানোর কারণে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের আইনে স্থানীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনি এলাকায় প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু সেই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন সংসদ সদস্য। এমন ১৫টি অভিযোগ তুলে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা পাওয়া যায়নি। এমতাবস্থায় আগামী ৮ মে হতে যাওয়া নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে এখনই সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি মোতায়েনের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের দাবি জানান শফিক খান। এ ছাড়া শাজাহান খানকে এলাকা ত্যাগ করানোর ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর কবির, সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে, পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ প্রমুখ।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান বলেন, ‘আমি মাদারীপুরে থাকলেও আমার ছেলে আসিবুর রহমান আসিব খানের নির্বাচনি কোনো প্রচারে অংশ নিচ্ছি না। আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা। আমি মাদারীপুরের নিজ বাসায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে এলাকার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে আলাপ-আলোচনা করি, এগুলো নির্বাচনি কোনো বিষয় না।’ এরপর তিনি সরকারি গাড়িতে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দেন।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর উপজেলার পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আহম্মেদ আলী মুঠোফোনে বলেন, মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খানের অভিযোগগুলো আমলে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শফিক খানের অভিযোগ সব কটিই গ্রহণ করা হয়েছে। সেই অভিযোগ নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন।