![আন্দোলনে সহিংসতা যুক্ত হলে খবর আছে, হুঁশিয়ারি ওবায়দুল কাদেরের](uploads/2024/06/29/alkk-1719676536.jpg)
বিএনপি নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘পরিষ্কার বলে দিতে চাই, আন্দোলন করছেন, করেন। তবে আন্দোলনে সহিংসতার উপাদান যুক্ত হলে খবর আছে।’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামা দলটির নেতাদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, আবারও খেলা হবে। খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, খেলা হবে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে, লুটপাট, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে।
দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (২৯ জুন) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শূন্য সহিষ্ণুতা (জিরো টলারেন্স) নীতি স্মরণ করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের কারও ছাড় নেই। সবার উদ্দেশে বলছি, বাড়াবাড়ি করবেন না। ক্ষমতার দাপট কেউ দেখাবেন না। কাউকে ক্ষমা করা হবে না। এটা শেখের বেটি। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দেখিয়ে দেবেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি কতটা কঠোর হতে পারেন।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপির নেতারা বড় বড় কথা বলেন। তাদের আন্দোলন ভুয়া। বিএনপিতে এখন আতঙ্কের নাম তারেক রহমান। মধ্যরাতে টেমস নদীর পাড় থেকে ফরমান আসে। একজন গেল, আরেকজন এল, মধ্যরাতের ফরমান। তারেক রহমানের এ ফরমানে ফখরুল ইসলাম, গয়েশ্বর বাবু কোথায় যান? কেউ জানেন না।
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্নীতিবাজরাই এই দেশে বেশি দুর্নীতি দুর্নীতি করে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদের মধ্যে কত যে দুর্নীতিবাজ একটু খুঁজে দেখেন, পেয়ে যাবেন। দুর্নীতিবাজ আছে আশপাশে। এই দুর্নীতিবাজের ক্ষমা নেই। বিএনপির দুর্নীতি নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিএনপির দুর্নীতির বিরুদ্ধে কোনো কথা বলার থাকে না। কারণ বিএনপি মানেই দুর্নীতিবাজ। জাতীয়তাবাদী দুর্নীতিবাজ দল, আমরা শক্তি আমরা বল।’
বিএনপি নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনাদের এক নম্বর নেতাই তো দুর্নীতিবাজ, হাজার হাজার টাকা পাচার করে আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছে। সব তদন্ত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বৈধ নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ওই দুর্নীতিবাজকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে হবে, বিচার করতে হবে। সব তদন্ত হবে, কে কত টাকা বানিয়েছেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি নেতাদের অভিনন্দন জানানোর কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, ‘দালালি করতে চেয়েছিলেন পারেননি, পাত্তা পাননি। যত দোষ নন্দ ঘোষ আওয়ামী লীগের। আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব। আর আপনারা দাস হয়েও ভারতের সমর্থন চান। ক্ষমতার জন্য আপনাদের যে কারও দাসত্ব মেনে নিতে কোনো আপত্তি নেই। আমরা বন্ধু আছি, বন্ধু থাকব।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, আগস্ট মাসের পরে জেলা পর্যায়ে সমাবেশ হবে। সে সমাবেশে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কয়েক দিন আগে নির্বাচন হয়েছে, উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশে এখন শান্তি দরকার। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য নতুন সরকারের সময় দরকার।
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যতদিন থাকবে, শেখ হাসিনা যতদিন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, বাংলাদেশ নিরাপদে থাকবে। আমরা পেট ভরে খেতে পারব। শান্তিতে ঘুমাতে পারব। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হলো ফিনিক্স পাখি। যার কোনো ধ্বংস নেই। আঘাত এলে আমরা পাল্টা আঘাত দিতে পারি। আমরা সরকারে আছি, রাজপথে আছি, মানুষের সঙ্গে আছি।’
শনিবার বেলা সোয়া ৩টায় আলোচনা শুরু হলেও দুপুর থেকে দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে আলোচনা সভাস্থল ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আসতে থাকেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সদস্য সাঈদ খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ। সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও নগরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা উপস্থিত ছিলেন।