ঢাকা ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

উপজেলা নির্বাচন: এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের বিষয়ে আ. লীগে নরম সুর

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ১০:২৪ এএম
আপডেট: ০৫ মে ২০২৪, ১০:২৫ এএম
উপজেলা নির্বাচন: এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের বিষয়ে আ. লীগে নরম সুর
আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগে নরম সুর দেখা যাচ্ছে।

শনিবার (৪ মে) পর্যন্ত স্বজনদের বিষয়ে করণীয় নিয়ে দলটি কিছুই স্পষ্ট করেনি। দলীয় সূত্র বলছে, এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা প্রার্থী হতে পারবেন না, প্রার্থী হলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা আগে বলা হলেও এখন দলের নেতারা বলছেন ‘প্রভাবিত করলে’ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতাদের এই নরম সুরের কারণ, গত ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সময় জানিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ওই বৈঠকে এ বিষয়ে সেদিন স্পষ্ট করে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি বরং দলের এক নেতা বৈঠকে এ প্রসঙ্গ উত্থাপন করতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী হাত তুলে তাকে বসতে বলেন। এ বিষয়ে পরে কথা হবে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

এক দিন পর, ২ মে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের অংশ নেওয়া-না নেওয়া প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীর পরিবার দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। তারা আগে নির্বাচন করেছেন। কেউ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, কেউ উপজেলা চেয়ারম্যান। তাদের তো রাজনৈতিক জীবন আছে। তাদের মানা করি কী করে? তবে এটা ঠিক, এক জায়গায় বউকে দিল, আরেক জায়গায় ছেলেকে দিল, এগুলো ঠিক না। কর্মীদের মূল্যায়ন করা উচিত। সেটাই নেতা-কর্মীদের বলতে চেয়েছি।

উপজেলা নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের দলীয় নির্দেশনাসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা আরও বলেন, পারিবারিক ফর্মুলায় কারা পড়েন? নিজের ছেলে-মেয়ে-স্ত্রী, এই তো? হিসাব করে দেখেন কয়জন ছেলে-মেয়ে, কয়জন স্ত্রী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন? এর বাইরে তো পরিবার ধরা হয় না। আমাদের কথা হচ্ছে নির্বাচন যেন প্রভাবমুক্ত হয়। মানুষ যেন স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর দলের নেতারা অনেকটা চুপসে গেছেন। তাদের বক্তব্যে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক খবরের কাগজকে বলেন, ‘এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের বিষয়ে দলে আলোচনা ছিল। নেত্রী (শেখ হাসিনা) স্বজনদের বিষয়ে পরিষ্কার করে দিয়েছেন। এর আগে কৌশলগত কারণে দলের সাধারণ সম্পাদক একটি নির্দেশনা দিয়েছেন, এখনো আবার কৌশল নিয়েছেন- আমরা সেটা মেনে চলছি।’ এ বিষয়ে দলের অবস্থান কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে বাস্তবতার আলোকে পরিস্থিত বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন। এর বাইরে আর কোনো বক্তব্য নেই।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এই মুহূর্তে শান্তিপূর্ণ, অর্থবহ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা আমাদের লক্ষ্য। নির্বাচনের পরে দলের নির্দেশ অমান্যকারীদের বিষয়ে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দলের একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, তৃণমূল পর্যায়ে বিতর্ক ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এড়াতে এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের বিষয়ে কঠোর না হয়ে এখন নরম হওয়ার পথে হাঁটছে আওয়ামী লীগ। এখন দলের নজর উপজেলা নির্বাচনকে প্রভাবমুক্ত রাখা। কারণ নির্বাচনে দলের অনেক এমপি-মন্ত্রীর স্বজনরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এমনকি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের পরিবারের সদস্যরাও আছেন। যদি এ বিষয়ে আওয়ামী প্রধান কঠোর সিদ্ধান্ত দিতেন তাহলে দলের তৃণমূলে ‘চেইন অব কমান্ড’ ভেঙে যেত। গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়, তা এখনো মেটানো যায়নি। তাই নতুন করে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন নিয়ে সরাসরি হার্ডলাইনে যাচ্ছে না আওয়ামী লীগ। তবে দল অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবে।

৩০ এপ্রিলের বৈঠকে উপজেলা নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, স্থানীয় পর্যায়ে কোনো গ্রুপিং করা যাবে না। যেখানে গ্রুপিং আছে সেখানে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দিতে হবে। না হলে দলেরই ক্ষতি। সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের শীর্ষস্থানীয় একাধিক নেতা এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তারা বলেছিলেন, উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী ও এমপিদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ২৪ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমন বক্তব্যের পাশাপাশি আরও বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনে প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তার পরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সময় শেষ হয়ে গেলে কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন না। এই বিষয়টি চূড়ান্ত হতে নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে। সময়মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এ জন্য তালিকাও তৈরি করছেন।

তবে গত শুক্রবার জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ বিষয়ে কোনো অবস্থান স্পষ্ট করেননি। তিনি বলেছেন, ‘অনেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে শুরু করেছেন। আমাদের কয়েকজন আগেই প্রত্যাহার করেছেন। আমাদের গোলাম দস্তগীরের ছেলে প্রত্যাহার করেছেন।’

ওই দিন এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন, আমার স্বজনও একজন উপজেলায় প্রার্থী হয়েছেন। সেখানে প্রশ্নটা হচ্ছে, আমাদের সমর্থন আছে কি না? আমি তার পক্ষে প্রশাসন বা নির্বাচনকে প্রভাবিত করছি কি না, সেটাই দেখার বিষয়।’ তিনি বলেন, পার্টির কারও এর সঙ্গে কোনো সংযোগ নেই, নেতৃস্থানীয় কারও এর সঙ্গে কোনো সমর্থন নেই। আমার সমর্থনের তো প্রশ্নই ওঠে না।’ প্রভাবিত করলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে বিষয়েও পরিষ্কার করেননি ওবায়দুল কাদের।

দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও ভাগনে। ছোট ভাই শাহদাত হোসেন প্রার্থী হয়েছেন চেয়ারম্যান পদে। আর ভাগনে (আপন বোনের ছেলে) মাহবুবুর রশীদ মঞ্জু প্রার্থী হয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান পদে।

এদিকে উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল চাইছে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত রাখতে। বিএনপিবিহীন ভোটে কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রশ্ন রাখতে চায় না দলটির হাইকমান্ড। দলের নেতাদের সে বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।

বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৮ পিএম
বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
ছবি: খবরের কাগজ

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর গুলশানের ফিরোজা বাসভবনে পৌঁছেন তিনি। বাসায় তাকে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। 

তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, পেসমেকার বসানোর পর এখন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা অনেকটা স্থিতিশীল। সে কারণে তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হয়। বাসায় সার্বক্ষণিক চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে তার নিয়মিত চিকিৎসা চলবে। 

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হাসপাতাল ছাড়েন খালেদা জিয়া। এ সময় খালেদা জিয়াকে একনজর দেখতে হাসপাতাল ও গুলশানে বাসভনের সামনে ভিড় করেন নেতা-কর্মীরা। এভারকেয়ার থেকে ফিরোজা পর্যন্ত দলের নেতা-কর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে তাকে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দেন। হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু,  যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ  রায় চৌধুরীসহ দলের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী।   

গত ২২ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। পরদিন ২৩ জুন তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। এর আগে গত বছরের ২৭ অক্টোবর লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিনজন চিকিৎসক। তবে আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২২ জুন তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

শফিক/এমএ/

ভারতকে এক ইঞ্চি জমিও ব্যবহার করতে দেব না : ড. রিপন

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
ভারতকে এক ইঞ্চি জমিও ব্যবহার করতে দেব না : ড. রিপন
প্রতিবাদ সভায় কথা বলছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। ছবি : খবরের কাগজ

ভারতকে বাংলাদেশের এক ইঞ্জি জমিও ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। 

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার শুধু অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে ভারতকে তোষণ করতে গিয়ে বাংলাদেশকে গোলামির জিঞ্জির পরিয়ে দিয়েছে।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি’তে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করে জিয়া শিশু কিশোর মেলা-কেন্দ্রীয় কমিটি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১০টি সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে ড. রিপন বলেন, ‘ওরা (ভারত) যেহেতু বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশে জনগণের সরকার নেই। বরং তাদের তাঁবেদার সরকার বসে আছে; তাই তারা রেল করিডোর, সড়ক করিডোর ও নৌ করিডোরের নামে বাংলাদেশকে আষ্টেপৃষ্টে বাধার ষড়যন্ত্র করছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে।’

তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়াকে শুধু নির্বাচন থেকে দূরে রাখার অসৎ অভিপ্রায় নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে দণ্ডিত করেছেন। আওয়ামী সরকারপ্রধান ও তাদের লোকজন প্রায়ই বলেন, ‘বেগম জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।’ অথচ আদালতের ফরমায়েশি রায়ে পর্যন্ত কোথাও খালেদা জিয়া টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন কথা লেখা নেই। তারা এই অসত্য বয়ান দিয়েই যাচ্ছেন। যদি দেশে আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা থাকত তাহলে শুধু এই বক্তব্যের জন্য তাদের ১০০ বছরের জেল হয়ে যেত।” 

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কে এস হোসেন টমাসের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড খান মো. রিয়াজ উদ্দিনসহ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৮ পিএম
বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
ফাইল ছবি

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওনা দেবেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার।

জাহিদ হোসেন জানান, এরই মধ্যে মেডিকেল বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়া গেছে। বিকেলেই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নেওয়া হবে।

গত ২২ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। পরদিন ২৩ জুন তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। 

এর আগে, গত বছরের ২৭ অক্টোবর লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিনজন চিকিৎসক। তবে আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২২ জুন তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

ভারতের সঙ্গে সমঝোতা-চুক্তিতে স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার পথে: ফারুক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম
ভারতের সঙ্গে সমঝোতা-চুক্তিতে স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার পথে: ফারুক
ছবি: খবরের কাগজ

ভারতের সঙ্গে নতুন করে সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব খর্ব হওয়ার পথে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। 

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারত গেলেন এক সপ্তাহে দুই বার। কি মধুর সম্পর্ক, কি প্রেম-প্রীতি-ভালবাসা। আম, লিচু, ইলিশ পাঠান কিন্তু ভারতে গিয়ে ফেরত আসেন খালি হাতে। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিসাব আনতে পারেন না বরং নতুন করে বাংলাদেশের বুকের উপর দিয়ে রেললাইন নির্মাণের সমঝোতা চুক্তি আপনি স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন দিল্লির দাসত্ব গ্রহণ করার জন্য নয়।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভারতের সঙ্গে ‘অবৈধ চুক্তি, দুর্নীতি, দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র’র প্রতিবাদে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘গান গায় শিল্পী, তলে তলে ব্যথা। আসলেই সত্যি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রীর তলে ব্যথা আছে। তিনি একেক দিন একেকটা নতুন কথা আবিষ্কার করেন। আজকে আবার আবিষ্কার করলেন পত্রিকায় দেখলাম, মমতার জন্য নাকি আমরা তিস্তার পানির শেয়ার পাচ্ছি না। হায়রে কপাল আমাদের এত মন্দ। এই মন্দের পেছনে দায়ী আওয়ামী লীগ। এই কপাল খারাপের পেছনে আওয়ামী লীগ। আজকে এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ কথা বলা শুরু করেছে।’

আওয়ামী লীগ সরকার সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, সাবেক পুলিপ্রধান বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, এনবিআর মতিউর তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেন জয়নুল আবেদিন ফারুক। 

তিনি বলেন, ‘সরকার এক এক কাণ্ড তৈরি করে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য শেষে ছাগলকাণ্ড ঘটিয়েছে। নতুন করে ফয়সাল তৈরি করেছেন। এসব কাণ্ড ঘটিয়ে কোনো লাভ হবে না। বাংলাদেশের মানুষ শহিদ জিয়ার দল, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজ অত্যান্ত সুদৃঢ় অবস্থায়।’

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বছরে ৯২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। আর হিন্দুস্তানের সঙ্গে অসম চুক্তি করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আপনারা হুমকি মুখে ফেলবেন না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সৈনিক, একজন কর্মী থাকতেও আমরা কোনদিনও এটা গ্রহণ করব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। আইনের শাসনের নামে বেআইনি শাসন করে আমাদের লক্ষ লক্ষ কর্মীকে জেলে রেখেছেন। মির্জা আলমগীর, মির্জা আব্বাসের মতো সততার পরিচয় দেওয়া নেতাদের বিচারপতিরে বাসভবনে ঢিল মারার কারণে জেল খাটতে হয়। এর চেয়ে লজ্জার কিছু হয় না।’

গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নাঈমের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজ প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

যবিপ্রবি ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:১১ এএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
যবিপ্রবি ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। এ বিষয়ে গত রবিবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে যবিপ্রবি শাখার সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদককে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও তারা উত্তর দেননি। 

ওই কমিটির সভাপতি-সম্পাদক বারবার বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের জন্য বিভিন্ন সময় নীতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। ২০২৩ সালে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি স্থগিত করে। গত ১১ নভেম্বর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় কমিটি। 

চলতি বছরের ৪ জুন রাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের ভেতর যবিপ্রবির শিক্ষার্থী শাহরীন রহমান প্রলয়কে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ছাত্রাবাসে সভাপতির উপস্থিতিতে তার কক্ষে রাতভর নির্যাতনের পর ওই শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে গত ২৫ জুন ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৯ জনকে আজীবন বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া চারজনের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। একই সঙ্গে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ করতে শাখার সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে নতুন কমিটি গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ছাত্রলীগ। কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে (প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা) ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

২০২২ সালের ৩১ জুলাই তৎকালীন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) সোহেল রানাকে সভাপতি ও তানভীর ফয়সালকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য ছাত্রলীগের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে। তবে গত ২৩ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি তারা। এ ছাড়া বিলুপ্ত এ কমিটির বিরুদ্ধে রয়েছে শিক্ষক লাঞ্ছিত, সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে আসা অনেককে নির্যাতনের অভিযোগ। প্রতিবেদন করতে গিয়ে সাংবাদিকরাও তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।