বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যাওয়ার অনুমতি দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী; একমাত্র আপনিই পারেন খালেদা জিয়ার শেষ সময়টুকু একটু আনন্দ ও সুখে কাটাতে দিতে। আপনার কাছে জনগণের এই আকুল আবেদন। উনাকে পূর্ণ মুক্তি দিন এবং যুক্তরাজ্যে যাওয়ার অনুমতি দিন; যাতে অন্তত জীবনের শেষ কয়টা দিন বেঁচে থাকা একমাত্র পুত্র ও নাতনিদের সঙ্গে সময়টা পার করতে পারেন।’
রবিবার (২৩ জুন) আখতারুজ্জামান তার ফেসবুকের ভেরিফায়েড আইডিতে দেওয়া স্টাটাসে এ আহ্বান জানান।
ফেসবুক স্টাটাসে মেজর আখতার বলেন, ‘আমাদের দেশীয় প্রচলিত রীতি; আপনজন কেউ গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হলে নিকটজনেরা হাসপাতালে ছুটে যায়। কিন্তু দেখা গেল দেশমাতাকে রাত ৩টায় গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করার পরে সকাল সাড়ে ৯টার গেলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী। এখন পর্যন্ত স্থায়ী কমিটির অন্য কোনো সদস্য গিয়েছেন কিনা তা জানা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘দেশমাতা খালেদা জিয়া দলের চেয়ারপারসন। উনার কিছু হলে সবাই দৌঁড়ে উনার কাছে যাবে- এটা শুধু স্বাভাবিক নয়- দলের সবার জন্য বিশেষ করে নেতা-নেত্রীদের অতি আবশ্যিক একটি কর্ম। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য; গুরুতর অসুস্থ দেশমাতার শয্যা পাশে কয়েকজন ডাক্তার ছাড়া তেমন কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা দল বেধে ভোরের মধ্যে হাসপাতালে ভিড় করতো তাহলে সরকার চাপে পড়ে যেত। হয় জনগণকে লাঠিপেটা করে সেখান থেকে সড়িয়ে দিতে হতো অথবা দেশমাতা খালেদা জিয়াকে অন্য কোনো হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হতো! আমাদেরকে কিছু বলতে হতো না। কিন্তু কোনভাবেই আমরা সরকারকে চাপে ফেলতে পারছি না। দেশমাতাকে নিয়ে রাজনীতি তো আমরা করছি, তাহলে চূড়ান্ত রাজনীতি করতে আমাদের ভয় কোথায়?’
মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান বলেন, ‘যদি স্থায়ী কমিটির নেতৃত্বে হাসপাতালে ছুটে যাই তাহলে সরকার কি করবে? সরকার কি করে তা দেখে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারব! আমরা গুরুতর অসুস্থ দেশমাতার পাশে থাকবই থাকব। গুলি, গ্রেপ্তার, হামলা, মামলা, নির্যাতন কোন কিছুই মানব না।’
বিএনপি বহিষ্কৃত সাবেক এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি আন্দোলন করতে জানে না এবং কোনো দিন জানবেও না। তাই বিএনপিকে গুরুত্ব দিয়ে কোনো লাভ নেই। খালেদা জিয়া তার কর্মের যথেষ্ট প্রতিফলন পেয়েছে। মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী, আপনি ইতোমধ্যে বহুবার প্রমাণ করেছেন একজন মমতাময়ী কন্যা, বোন ও মা হিসাবে। আপনি আল্লাহর ওয়াস্তে দেশমাতা খালেদা জিয়া আপনার সঙ্গে যে আচরণ করেছিল তা দয়া করে ভুলে যান। সবাই জানে আপনার মনে কষ্ট আছে। সবাই এটাও জানে সকল কষ্ট সহ্য করার অসীম ক্ষমতাও আল্লাহ আপনাকে দিয়েছে। খালেদা জিয়াকে ক্ষমা করে দিন। উনিতো অনেক কষ্ট ভোগ করলেন। উনাকে পূর্ণ মুক্তি দিন এবং যুক্তরাজ্যে যাওয়ার অনুমতি দিন যাতে অনন্ত জীবনের শেষ কয়টা দিন বেঁচে থাকা একমাত্র পুত্র ও নাতনিদের সঙ্গে সময়টা পার করতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘গত নির্বাচনে ভোট চাইতে গিয়ে দেখেছি দেশমাতার জন্য জনগণের কি ব্যকুলতা। সবাই আশা করে একমাত্র আপনিই- প্রধানমন্ত্রী পারেন খালেদা জিয়াকে একটু সুখ দিতে। তাই আপনার কাছে আমার করজোড়ে আকুল আবেদন- খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে যুক্তরাজ্যে যেতে দিন।’
শফিকুল ইসলাম/ইসরাত চৈতী/অমিয়/