অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড থেকে গায়ানার প্রভিডেন্স। দুটি দেশে দুটি ভিন্ন আসর। তবে মঞ্চ একই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। প্রতিপক্ষ ভারত-ইংল্যান্ড। অধিনায়কও অপরিবর্তনীয়। রোহিত শর্মা আর জস বাটলার। দুটি ম্যাচেই টসে জিতে শুরুতে ফিল্ডিং বেছে নেন ইংলিশ ক্যাপ্টেন বাটলার। খেলার কৌশলেও আনেননি পরিবর্তন। তবে ফলাফল হয়েছে ভিন্ন। অ্যাডিলেডের মাটিতে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে যায় ইংল্যান্ড। সেখানে জয় পেয়ে হয় চ্যাম্পিয়ন। আর এবার সেমিতে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে। আর এজন্য নিজের কৌশলের ভুলের কথা স্বীকার করলেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার।
গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে প্রথমে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠায় ইংল্যান্ড। রোহিত শর্মারা ব্যাট হাতে ৭ উইকেটে ১৭১ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২০ বল বাকি থাকতে ১০৩ রানে অল আউট হয়ে যায় বাটলাররা।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বল হাতে পেসারদের ওপর বেশি নির্ভর করেন বাটলার। তাদের স্পিনার থাকলেও কাজে লাগাননি। মঈন আলীকে এক ওভারও বল করতে দেননি। কিন্তু রোহিত শর্মা যেন মাঠের গতি বুঝতে পেরেছেন। তাই তো তিনি পেসারদের চেয়ে স্পিনারদের বেশি কাজে লাগিয়েছেন। তাতে ফলও পেয়েছেন। অক্ষর পাটেল ও কুলদীপ যাদব চুরমার করে দিয়েছেন ইংলিশদের ব্যাটিং লাইন আপ।
মঈন আলীকে কাজে না লাগানোকে ভুল সিদ্ধান্ত বলে স্বীকার করেছেন ইংলিশ অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘এখানে কম-বেশি উভয় বিষয় রয়েছে। আমি মনে করি, তারা আমাদের চেয়ে ভালোও খেলেছে। অবশ্য আমি মঈন আলীকে কাজে লাগাতে পারতাম। এখানে কিছুটা এলোমেলো হয়েছে।’
ভারতের কাছে লজ্জাজনক হারের ফলে হতাশা ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘হ্যাঁ, এটা হতাশাজনক। আমি মনে করি, ভারত আমাদের চেয়ে ভালো খেলেছে। আমি প্রত্যাশা করছিলাম যে তাদের স্কোর ১৪০-১৪৫ এর মধ্যে হবে। তবে তারা যে লক্ষ্য দিয়েছে সেটা তাড়া করা সব সময়ের জন্যই কঠিন।’
ইংল্যান্ডের দুই স্পিনার আদিল রশিদ ও লিয়াম লিভিংস্টোন ৮ ওভার বল করে ১ উইকেট নিয়ে ৪৯ রান দিয়েছেন। সেখানে তাদের পেসাররা ১২ ওভারে ১২০ রান দিয়েছেন। বিপরীতে ভারতের স্পিনাররা ১১ ওভারে মাত্র ৫৮ রান দিয়ে ৬ উইকেট নিয়েছেন।
স্পিনারদের নিয়ে বাটলার বলেন, ‘তারা চমৎকারভাবে স্পিনারদের কাজে লাগিয়েছেন। আমাদের দুজন স্পিনার ছিলেন। তারাও ভালো করেছে। তবে স্পিন যেভাবে ভালো ফল নিয়ে এসেছে তাতে মঈন আলীকে সুযোগ দেওয়া আমার উচিত ছিল। তবে এমন বৃষ্টিভেজা মাঠে এটা কাজে দিবে তেমনটা আমি ভাবিনি।
ভারতের কাছে হারের পর ইংল্যান্ড দলের দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এবারের বিশ্বকাপে টেস্ট খেলুড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়া আর কোনো দলের বিপক্ষে জিততে পারেনি। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর সুপার এইটে হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে। নামিবিয়া ও ওমানের কাছে বড় ব্যবধানে জয়ে রানরেটে এগিয়ে থেকে উঠেছিল সুপার এইটে। সেখানে দ্বিতীয় দল হিসেবে খেলার সুযোগ পায় সেমিফাইনালে। তবে এটাকেই নিজেদের বড় অর্জন বলে মনে করেন গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। বাটলার বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি মনে করি, একটা বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা একটা অর্জন। আমরা অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলাম এবং ভালো খেলে এই পর্যায়ে এসেছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা এখানে হেরে গেলাম।’