ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

যারা স্বপ্ন দেখে না তারা কিসের নায়ক

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১১:৪২ এএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ১১:৪২ এএম
যারা স্বপ্ন দেখে না তারা কিসের নায়ক

সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য ক্রিকেটাররা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি না বদলালেও দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা কিন্তু তাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ফেলেছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে হঠাৎ করে সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ চলে আসার পর তার পেছনে ছোটার কোনো চেষ্টা দেখা যায়নি শান্তদের মাঝে। এমনটি যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশিরা যেন কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। ক্রিকেটারদের প্রতি ভালোবাসা আর আন্তরিকতার পরিবর্তে সেখানে জায়গা পেয়েছে তীব্র ক্ষোভ আর ঘৃণা।

ম্যাচের এক দিন আগেও যেখানে ছিল উপচে পড়া ভালোবাসা আর দুর্নিবার আকর্ষণ। তবে আফগানিস্তানের কাছে নতজানু হার তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে এনেছে ব্যাপক পরিবর্তন। ক্রিকেটারদের নামও মুখে আনতে যেন তাদের ইচ্ছা হচ্ছে না। কুইন্সের জ্যাকসন হাইটস, ব্রোঞ্চের স্টালিং নামক স্থানে সব সময় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ব্যাপক উপস্থিতি থাকে। কাজের পাশাপাশি অবসর সময়ে তারা এসব জায়গায় বসে সময় কাটান। যেখানে স্থান পায় বাংলাদেশের বিদ্যমান সামাজিক অবস্থা বা ঘটনা। সেখানে গত কয়েক দিন ছিল শুধুই বাংলাদেশের ক্রিকেট। প্রথমে ছিল আগ্রহ, পরে সমালোচনা আর ক্ষোভের আগুন!

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ দল খুব একটা ভালো করতে পারেনি। বলা যায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে তারা এক একটি ম্যাচ জিতে সুপার এইটে জায়গা করে নিয়েছিল। সুপার এইটে প্রতিপক্ষ দেখে বাংলাদেশ দল যে ভালো কিছু করতে পারবে না, এটা প্রবাসীরা ধরেই নিয়েছিলেন। তাই তো প্রথমে অস্ট্রেলিয়া, পরে ভারতের কাছে হারে তাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। খেলার দৃষ্টিভঙ্গি তাদের ব্যথিত করেছে। তার পরও হালকা-পাতলা সমালোচনা করে তারা নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তারা ধরেই নিয়েছেন দলের সীমাবদ্ধতা। এর থেকে ভালো কিছু করা সম্ভব না। আশা করাও ঠিক না। কিন্তু হঠাৎ করে সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ চলে এলে এসব দর্শকই আবার গা ঝাড়া দিয়ে ওঠেন। প্রথমে অনেকেই বিশ্বাসই করতে পারেননি। তাদের এই বিশ্বাস না করার পেছনে অনেক যুক্তিসংগত কারণও ছিল। কারণ বাংলাদেশ কোনো ম্যাচই জেতেনি। কোনো ম্যাচ না জিতেও সেমিফাইনালে খেলার লড়াইয়ে শামিল হওয়া যায়, এটা যেন এবারই তারা প্রথম দেখছেন। 

তিন কাঠির খেলা ক্রিকেটকে বলা হয়ে থাকে গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। এর প্রতিটি বাঁকে আছে রহস্য আর উত্তেজনার ঝাঁজ। তাই বলে এভাবেও সেমির লড়াইয়ে থাকা যায়! কর্মব্যস্ত প্রবাসী জীবনে নিজেদের আবার ফিরিয়ে নিয়ে যান ক্রিকেটের প্রতি নিখাদ ভালোবাসায়। মেলাতে থাকেন বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ। চলে নানা কথাবার্তা। এমন সুযোগ কি বাংলাদেশ কাজে লাগাতে পারবে? এ নিয়ে আশার চেয়ে শঙ্কাবাদীর সংখ্যাই বেশি ছিল। এই শঙ্কাবাদীর সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণ সেমিতে খেলতে হলে শুধু জিতলেই হবে না, একটা নির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে জিততে হবে। তবেই যদি সম্ভব হয়। এই সমীকরণই প্রবাসীদের বেশি শঙ্কিত করে তোলে। কারণ তারা জানতেন বাংলাদেশ দলের সীমাবদ্ধতা।

বুকভরা আশা নিয়ে অনেকেই দল বেঁধে বসেছিলেন টিভির সামনে। আবেগপ্রবণ বাঙালি জাতি। তাদের অনেকেই দুইয়ে দুইয়ে চার মেলাতে থাকেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা ছিল সেন্ট ভিনসেন্টে। এই সেন্ট ভিনসেন্টেই বাংলাদেশ দল গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারিয়ে সুপার এইটের টিকিট পেয়েছিল। নেপালের বিপক্ষে জয় ছিল ভাবনারও অতীত। মাত্র ১০৬ রানের পুঁজি নিয়ে বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছিল ২১ রানে। অনেকেই লাকি গ্রাউন্ড বলেও মন্তব্য করেন। এবার যদি সেই সেন্ট ভিনসেন্টে আবার নতুন করে কিছু হয়। কিন্তু সবই ছিল অন্তরে লালিত স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন যে আবার ক্রিকেটারদের মাঝে ছিল না। নিজেদের যোগ্যতায় নয়, অন্য দলের বদান্যতায় কুড়িয়ে পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে যে ক্রিকেটারদের মাঝে ন্যূনতম কোনো আগ্রহ ছিল না। কারণ তারা শুধু খেলে যান। কোনো স্বপ্ন দেখেন না। তাই তো স্টারলিংয়ে কয়েকজন মিলে খেলা দেখা একজন নোয়াখালীর রইসউদ্দিন বলেন, ‘যাদের আমরা স্বপ্নের নায়ক ভাবি, তারা তো স্বপ্নই দেখেন না। তাহলে তারা কিসের স্বপ্নের নায়ক। শুধু শুধু তাদের মাথায় তুলে নাচি। তারা খেলছেন আর নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন। আমাদের আবেগের কোনো মূল্যই নেই তাদের কাছে।’ পাশে থাকা চট্টগ্রামের তরুণ হায়দার যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না সেমিতে যাওয়ার সুযোগটা কাজে লাগানোর চেষ্টা না করাটাকে। তিনি নিজেও একসময় টুকটাক ক্রিকেট খেলতেন। পড়াশোনার জন্য চলে এসেছেন মার্কিন মুলুকে। বলেন, ‘আমরা সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য খেলিনি, জেতার জন্য খেলছি। কিন্তু জিততেও তো পরিনি। ম্যাচ জিতলেও না হয় একটা সান্ত্বনা পেতাম। আর এ কেমন খেলা। আমরা নতুন করে তো আর ক্রিকেট খেলছি না। এতদিন থেকে ক্রিকেট খেলছি। এ রকম বাজে দল আমি আগে আর দেখিনি। দলের ব্যাটিং দেখেও লজ্জা পেয়েছি। পাড়া-মহল্লার ব্যাটিং।’ হায়দারের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে সিলেটের হাসান বলেন, ‘আরে ভাই ওরা তো দেশের জন্য খেলে না। নিজেদের জন্য খেলে। সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য খেলতে গিয়ে হেরে গেলে কোনো লাভই হতো না। তার চেয়ে ম্যাচ জিততে পারলে জেতার জন্য বাড়তি টাকা পেত, আবার ম্যাচ জেতার জন্য পরিসংখ্যানও বাড়ত। এক বিশ্বকাপে চারটি জয়। আগে কখনো এত জয় ছিল না। দেখতেন এটিকেই তখন অনেক বড় করে প্রচার করা হচ্ছে।’

জ্যাকসন হাইটসে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বকাপ কাভার করতে এসেছি জানার পর প্রবাসীদের ক্ষোভ যেন আরও বেশি উগলে পড়ে। ঢাকার কামাল বলেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা দেখার পর মনে হচ্ছে কেন ডালাস আর নিউইয়র্কে গিয়ে খেলা দেখেছি। দেশের টানে ছুটি নিয়ে শত শত ডলার খরচ করে খেলা দেখতে গিয়েছি, ক্রিকেটারদের মাঝে তো সেই টান দেখলাম না। যদি তাদের মাঝে সেই টান থাকত, তাহলে সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য তারা অলআউট খেলত। এরপর না হয় হেরে যেত। তখন তাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসাটা আগের মতোই থাকত।’ কামালের সঙ্গে থাকা নারায়ণগঞ্জের মাকসুদ যোগ করে বলেন, ‘ধরেন, বাংলাদেশ ২০ ওভার খেলে জিতে গেল। তাতে কী লাভ হতো। এটা তো শুধুই একটা জয় হয়ে থাকত। সেখানে সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য চেষ্টা করাটা ভালো হতো না? আমরা সাধারণ দর্শক হয়ে এটা বুঝি, ক্রিকেটাররা বোঝেন না!’ তিনি কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সুপার এইটে খেলাটাকে বোনাস হিসেবে বলা কথারও প্রচণ্ড সমালোচনা করেন। এখানেই বাংলাদেশের সুপার এইটে খেলার সব অর্জন বিসর্জন হয়েছে বলে জানান।

রোহিত-কোহলির পর থামলেন জাদেজাও

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৮:৩৯ পিএম
রোহিত-কোহলির পর থামলেন জাদেজাও
ছবি : সংগৃহীত

বিশ্বকাপ জেতার পর ম্যান অব দ্যা ফাইনালের পুরস্কার গ্রহণ করতে এসে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দেন বিরাট কোহলি। শিরোপা উদযাপন শেষে সংবাদ সম্মেলনে রোহিত শর্মাও জানান অবসরের সিদ্ধান্তের কথা। পুরোপুরি একদিন না পেরোতেই এবার অবসরের ঘোষণা দিলেন ভারতের আরেক ক্রিকেটার। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা।

রবিবার (৩০ জুন) ইনস্টাগ্রামে অবসরের ঘোষণা দেন জাদেজা। ভারতের হয়ে ৩৫ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার খেলেছেন ৭৪ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।

অবসর বার্তায় জাদেজা লিখেছেন, ‘কৃতজ্ঞ হৃদয়ে আমি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানাচ্ছি। গৌরবের সঙ্গে দ্রুতবেগে ছুটে চলা ঘোড়ার মতো আমি সব সময়ই দেশের জন্য সেরাটা দিয়েছি এবং অন্যান্য সংস্করণে সেটা করে যাব। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ অর্জন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, যেটা জয়ের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। সব স্মৃতি, উল্লাস আর বিরামহীন সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।’

নিজের শেষ বিশ্বকাপটায় খুব একটা ভালো করতে পারেননি জাদেজা। সবমিলিয়ে ৫ ইনিংসে ব্যাট হাতে করেন ৩৫ রান। বল হাতেও ছিলেন সাদামাটা। শিকার করেছেন মাত্র ১টি উইকেট।

ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৭৪ ম্যাচে ৪১ ইনিংসে ব্যাট করে ১২৭.১৬ স্ট্রাইক রেটে ৫১৫ রান করেছেন জাদেজা। আর ৭১ ইনিংসে বল হাতে নিয়ে ৭.১৩ ইকোনমিতে নিয়েছেন ৫৪ উইকেট।

উইকেটের বালু খেয়ে রোহিতের অন্যরকম উদযাপন

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৫:৩০ পিএম
উইকেটের বালু খেয়ে রোহিতের অন্যরকম উদযাপন
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১১ বছর পর আইসিসি শিরোপার খরা কাটানো এবং ১৭ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর বাঁধাভাঙা আবেগের জোয়ার দেখা গিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের উল্লাসে। আনন্দের দিনে অশ্রুসিক্ত হয়েছিলেন দলের ক্রিকেটাররা। এসবের মাঝে ভিন্ন এক উদযাপন করতে দেখা গেছে অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে। পিচের মাটি আঙুল দিয়ে খুঁচিয়ে পুরে নিয়েছিলেন মুখে।

এখন পর্যন্ত সবগুলো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা রোহিত শর্মা ২০০৭ সালের আসরের পর জিতলেন ২০২৪ আসরও। এর আগেরবার ছিলেন দলের সাধারণ সদস্য আর এবার জিতলেন অধিনায়ক হিসেবে। জেতার পর সংবাদ সম্মেলনে দিলেন এই ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণাও।

পিচের ওপর বসে বালু মুখে নিয়ে রোহিতের এমন উদযাপন সম্ভবত এটাই প্রমাণ করে যে এই শিরোপা ঠিক কতটা আরাধ্য ছিল ভারতের অধিনায়কের কাছে। যেই উইকেটে খেলে শিরোপা ধরা দিয়েছে সেই উইকেটকে যেন পরম মমতায় নিজের ভেতর পুষে রাখলেন তিনি।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে রোহিতকে কেউ এমন উদযাপন নিয়ে প্রশ্ন না করলেও আইসিসির প্রকাশিত ভিডিও নজর করেছে ভারত তথা সকল ক্রিকেট সমর্থকদের। 

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া রোহিত শিরোপা জয় নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি এটা খুব করে চেয়েছি। ওই মুহূর্তটার কথা ভাষায় প্রকাশ করা খুব কঠিন। আমি তখন কী ভাবছিলাম, সেটা বলতে চাই না। আমি বলতে চাই না, তখন আমার মনের মধ্যে কী চলছিল। কিন্তু আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এটা খুব আবেগের মুহূর্ত ছিল।’

‘আগামী সপ্তাহ থেকে আমি বেকার’

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৪:৪৫ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৫:১৪ পিএম
‘আগামী সপ্তাহ থেকে আমি বেকার’
ছবি : সংগৃহীত

ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন ১৬ বছর। কিন্তু কখনোই বিশ্বকাপ জেতা হয়নি রাহুল দ্রাবিড়ের। খেলোয়াড়ি জীবনে একমাত্র অর্জন ছিল ২০০২ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়। সেটিও আবার একক শিরোপা ছিল না। বৃষ্টিতে ফাইনাল নির্ধারিত দিনে শেষ হতে পারেনি। রিজার্ভ ডেতেও খেলা সম্পন্ন না হওয়ায় পরিত্যক্ত হয়। যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয় ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে।

কোচ হিসেবে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ২০১৮ আসরের শিরোপা জেতাতে পারলেও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে তার অধীনেই অস্ট্রেলিয়ার কাছে ঘরের মাঠে হেরেছিল ভারত। এবার তার অধীনেই ১১ বছর ধরে চলা আইসিসি শিরোপার খরা কাটাল ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুলেছে রোহিত শর্মারা। এই সংস্করণের শিরোপা আবার ভারতের ঘরে এসেছে ১৭ বছর পর। কোচ হিসেবে শেষ অ্যাসাইনমেন্টে ভারতকে শিরোপা জিতিয়ে গর্বিত রাহুল অনুভূতি জানাতে গিয়ে মজা করে বলেন, ‘আগামী সপ্তাহ থেকে আমি বেকার।’

রাহুল আরও বলেন, ‘শেষ কয়েক ঘণ্টায় আমি শব্দ সংকটে পড়ে গেছি। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আমরা যেভাবে লড়াই করেছি, দল নিয়ে আমার এরচেয়ে বেশি গর্বিত হওয়ার নেই। এমনকি আজ এটা দারুণ প্রমাণ। দলের প্রথম ছয় ওভারে তিন উইকেট পড়ে যাওয়ার পরও, এরপরও এমন একটা অবস্থানে যাওয়া, ছেলেরা লড়াই চালিয়ে গেছে, বিশ্বাস করে গেছে।’

এই দ্রাবিড়ই অধিনায়ক হিসেবে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজে হওয়া ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। যেখানে বাংলাদেশের কাছে হেরে তাদেরকে বাদ পড়তে হয়েছিল আসরের শিরোপা অন্যতম দাবিদার হওয়া সত্ত্বেও। সেই ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জেই দ্রাবিড় আইসিসির বৈশ্বিক আসরের শিরোপা জেতার স্বাদ পেলেন কোচ হিসেবে। অতীতের ব্যর্থতার চেয়ে ভবিষ্যৎ সাফল্যে বেশি নজর রাহুলের, ‘দায়মোচনের কিছুই নেই। আমি এমন ব্যক্তি নই যে কিনা এসবে বিশ্বাস করে। আরও অনেক খেলোয়াড় ছিলেন যারা শিরোপা জিততে সমর্থ হননি।’

সেপ্টেম্বর ২০২১ ভারতের ক্রিকেটে কোচ হিসেবে শুরু হওয়া দ্রাবিড়ের যাত্রার সমাপ্তি হলো বার্বাডোসে দলকে বিশ্বকাপ শিরোপা জেতানোর প্রচেষ্টায় সফল হয়ে। এ নিয়ে ভারতের কোচ বলেন, ‘এটি দুই বছরেরও অধিক সময় ধরে চলা একটি সফর, এটি শুধুমাত্র ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সফর নয়। দলকে তৈরি করা, যে ধরণের দক্ষতা ও খেলোয়াড় আমরা চাচ্ছিলাম তার আলোচনা শুরু হয়েছিল যখন আমি যাত্রা শুরু করেছিলাম কোচ হিসেবে।’

কোচের দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়া দ্রাবিড় কোচিং ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ অংশসমূহ উল্লেখ করে বলেন, ‘এটা অভূতপূর্ব, এই ড্রেসিংরুমের অংশ হতে পারা খুবই দারুণ ব্যাপার। সারাজীবনে মনে রাখার মতো স্মৃতি আমার জন্য। তাই আমি দলের সকল খেলোয়াড় ও স্টাফদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই যারা এটিকে সম্ভব করে তুলেছে।’

কোহলির পর বিদায় বললেন রোহিতও

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৩:৪১ পিএম
কোহলির পর বিদায় বললেন রোহিতও
ছবি : সংগৃহীত

ম্যান অব দ্যা ফাইনালের পুরস্কার নিতে এসে বিরাট কোহলি জানালেন তিনি অবসর নিচ্ছেন এই ফরম্যাট থেকে। এর কিছুক্ষণ বাদে সংবাদ সম্মেলনে রোহিত শর্মাও জানালেন কোহলির পথে হেঁটে তিনিও বিদায় জানাচ্ছেন এই ফরম্যাটকে।

সংবাদ সম্মেলনে অবসরের ঘোষণায় রোহিত বলেন, ‘এটা আমারও শেষ টি-টোয়েন্টি ছিল। এই সংস্করণ থেকে বিদায় নেওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না। প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। এই সংস্করণ দিয়েই ভারতের হয়ে খেলা শুরু করেছিলাম। এটাই চেয়েছিলাম, ট্রফিটা জিততে চেয়েছিলাম।’

ভারতকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা জেতানো রোহিত শর্মা নিজেকে আগেই অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন এই সংস্করণে। ৪২৩১ রান নিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। এই সংস্করণে সর্বোচ্চ ৫টি সেঞ্চুরিও করেছেন রোহিত।

সদ্যসমাপ্ত বিশ্বকাপে ২৫৭ রান করে হয়েছেন দ্বিতীয় সর্বোচ রান সংগ্রাহকও। এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সব সংস্করণেই তিনি খেলেছেন। ১২২০ রান করে বিশ্বকাপ ইতিহাসেও সর্বাধিক রান তারই নামের পাশে। আর সর্বোচ্চ ১২৯২ রান করেছেন বিরাট কোহলি।

বিরাট ও রোহিত ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এই ফরম্যাটের কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে মাঠে নামেননি। এই বিশ্বকাপে দলে ফিরে দলকে শিরোপা জিতলেন এবং নিজেদেরও পরিপূর্ণ করে অনন্য উচ্চতায় অবস্থান করে জানিয়ে দিলেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে বিদায়।

মার্টিনেজের জোড়া গোলে আর্জেন্টিনার জয়

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৩:০২ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৩:০২ পিএম
মার্টিনেজের জোড়া গোলে আর্জেন্টিনার জয়
ছবি : সংগৃহীত

ঊরুর চোটে মেসির বিশ্রাম কোনো বাঁধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি আর্জেন্টিনার জয়ে। নিষেধাজ্ঞার কারণে ডাগআউটে ছিলেন না কোচ লিওনেল স্কালোনিও। এরপরও লাউতারো মার্টিনেজের জোড়া গোলে পেরুরু বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ২-০ গোলে জয় পেয়েছে আর্জেন্টিনা।

আগেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করা বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের এই জয়ে ৩ ম্যাচে পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে ৯

রবিবার (৩০ জুন) ভোরে ফ্লোরিডার হার্ড রক স্টেডিয়ামে একাদশে একাধিক পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামলেও জয় পেতে কষ্ট হয়নি আর্জেন্টিনার। ম্যাচের প্রথম মিনিটেই দলটির হয়ে আক্রমণে যান আলেহান্দ্রো গারনাচো।

গোলের দেখা পেতে মরিয়া আর্জেন্টিনা বারবার পেরুরু আক্রমণভাগে প্রবেশ করলেও তাদের ঠিকই রুখে দিচ্ছিল দলটির রক্ষণভাগ।

এসবের মাঝেই ২৬ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু লিয়ান্দ্রো পারাদেসের ফ্রি কিক দারুণ দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন পেরুর গোলরক্ষক পেদ্রো গায়াসি। রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলা পেরুও পায়নি গোলের দেখা। দুয়েকটি সুযোগ প্রতি আক্রমণ থেকে তৈরি করলেও ব্যর্থ হয় গোল আদায় করতে। আরেকবার গোলের সুযোগ পেয়েও আদায় করতে ব্যর্থ হয় আর্জেন্টিনা। ৪৪ মিনিটে জিওভানি লো সেলসোর নেওয়া শট অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ঠেকিয়ে দেন পেরু গোলরক্ষক গায়াসি।

প্রথমার্ধ গোলশূন্য ড্র থাকার পর বিরতির পর মাঠে নেমেই আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন মার্টিনেজ। এরপর ৬৯ মিনিটে আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে বক্সের ভেতর হ্যান্ডবল করে আর্জেন্টিনাকে পেনাল্টি উপহার দেয় পেরু। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন পারেদেস। গোলরক্ষক ভুল দিকে ঝাঁপ দিলেও পারেদেসের শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে। 

ম্যাচের শেষদিকে ৮৬ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এবারও গোল করেন মার্টিনেজ। এ নিয়ে আর্জেন্টিনার জার্সিতে শেষ ৬ ম্যাচে ৭ গোল করলেন তিনি। ম্যাচের বাকি সময়ে আর কোনো দল গোল না পেলে ২–০ ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা।