ঢাকা ১০ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

ইংল্যান্ডকে সুপার এইটে তুলল অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৪, ১০:৩৫ এএম
আপডেট: ১৬ জুন ২০২৪, ১০:৩৫ এএম
ইংল্যান্ডকে সুপার এইটে তুলল অস্ট্রেলিয়া
সংগৃহীত

অঘটনের বিশ্বকাপে টিকে গেল ইংল্যান্ড। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের সুপার এইটে তুলেছে অস্ট্রেলিয়া। আজ রবিবার (১৬ জুন) স্কটল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে অজিরা। তাদের এই জয়েই বাদ পড়েছে স্কটিশরা এবং টিকে গেছে ইংলিশরা। ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে পরের রাউন্ডে খেলবে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড হয়েছে গ্রুপ রানার্সআপ।

আজ জিতলেই সুপার এইটে নিশ্চিত হতো স্কটল্যান্ড। হারলে বিদায়। ডু-অর-ডাই ম্যাচে তারা পেয়েছিল বড় সংগ্রহ। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে করে ১৮০ রান। কিন্তু ট্রাভিস হেড এবং মার্কাস স্টয়নিসের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয় তাদের। দুজনের হাফ সেঞ্চুরিতে ১৯.৪ ওভারে জয়ের নাগাল পায় অস্ট্রেলিয়া।

সেন্ট লুসিয়ায় ড্যারেন সামি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রান তাড়ায় পাওয়ারপ্লেতে দুই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসে দ্বিতীয় ওভারে ব্র্যাড হুইলের বলে ক্যাচ তুলে ফিরেন ডেভিড ওয়ার্নার (১)। অধিনায়ক মিচের মার্শ আউট হন পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে। মাত্র ৮ রান করে। দলের বিপদ আরও বাড়ে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১১) মাঠ ছাড়লে।

এরপর অস্ট্রেলিয়ার হাল ধরেন হেড-স্টয়নিস। ৪৪ বলে ৮০ রানের জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে চালকের আসনে বসান তারা। দুজনেই থামেন ৫০ পেরিয়ে। ৪৯ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৮ রান করেন হেড। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটা তার দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। ম্যাচসেরা স্টয়নিস থামেন ৫৯ রানে। তার ২৯ বলের ইনিংসে ছিল ৯ চার ও ২ ছক্কার মার।

হেড-স্টয়নিস বিদায় নেওয়ার পর বাকি কাজটুকু সারেন টিম ডেভিড এবং ম্যাথু ওয়েড। দুজনের ৩১ রানের (১৬ বলে) অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপপর্বে অপরাজেয় থাকার রেকর্ড নিয়েই সুপার এইটে খেলবে তারা। ৪ ম্যাচে তাদের অর্জন ৮ পয়েন্ট। সমান ৫ পয়েন্ট ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ডের। নেট রানরেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে পরের রাউন্ডে খেলবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।

নতুন সমীকরণ শুধুই সান্ত্বনার!

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৫:৪২ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ০৫:৪২ পিএম
নতুন সমীকরণ
শুধুই সান্ত্বনার!
ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে সস্ত্রীক বাংলাদেশের খেলা দেখতে অ্যান্টিগা গিয়েছেন কাজী আজিজ মামুন। দুটি খেলাতেই বাংলাদেশ বাজেভাবে হেরে আসর থেকে বিদায়ের পথে। কিন্তু আফগানিস্তানের কাছে অস্ট্রেলিয়ার পরাজয়ে আবার নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ। সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে সেমিতে খেলার। কিন্তু সেখানে আছে যদি-কিন্তুর হিসাব। কাজী আজিজ মামুন তাই ভেবে পাচ্ছেন না বাংলাদেশের খেলা দেখতে সেন্ট ভিনসেন্ট যাবেন কি না? তার মাঝেও যদি-কিন্তুর হিসাব বিরাজ করছে?

বাংলাদেশের জন্য যদি আর কিন্তুর হিসাবটা কী? হিসাবটা কিন্তু সহজ নয়। আফগানিস্তানকে হারাতে হবে বাংলাদেশকে আবার অস্ট্রেলিয়াকে হারতে হবে ভারতের কাছে। যদি এই সমীকরণ মিলে যায়, তাহলে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তানের পয়েন্ট সমান ২ করে হয়ে যাবে। তখন বিবেচনায় আসবে নিট রাট রেট। এখানে কিন্তু বাংলাদেশ আবার বেশ পিছিয়ে। নিজ নিজ শেষ খেলায় নামার আগে নিট রান রেট বাংলাদেশের -২.৪৮৯, আফগানিস্তানের -০.৬৫০, অস্ট্রেলিয়ার ০.২২৩। কাজেই বাংলাদেশকে জিততে হবে বড় ব্যবধানেই!

এই জয়টা কাদের কাছে প্রত্যাশা করা হচ্ছে? এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যে খেলা খেলছে, তা তাদের নিয়ে গেছে ২০ বছর আগের জমানায়। যখন হারকে মেনে নিয়েই খেলতে নামত। মাঝে মাঝে পাওয়া জয় ছিল আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো। সুপার এইটে উঠতে পারাটাই যাদের কাছে সুখ নিবাস। যাদের কোনো লক্ষ্যই নেই সেমিতে খেলার, স্বয়ং কোচের কথায় কোনো কিছু পাওয়া বোনাস, এমন একটি দলের কাছে সেমিফাইনাল খেলার প্রত্যাশা করাটা কতটা যুক্তিসংগত?

যদি লক্ষ্য অটুট থাকে, তাহলে অর্জন সম্ভব। কিন্তু লক্ষ্যই যদি না থাকে, তাহলে যাবে কত দূর? কোচ জানিয়েছেন সুপার এইট নিয়ে তাদের কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। যা পাওয়া যাবে তাই বোনাস। তাওহীদ হৃদয় আবার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পর বলেছিলেন, এই দল নিয়ে তারা ফাইনাল পর্যন্ত খেলার প্রত্যাশা করেন।

নেপাল আর নেদারল্যান্ডস দলের বিপক্ষে জয়ে সাকিবের মতো বিশ্বসেরা ক্রিকেটারের কণ্ঠ থেকে সুখের আওয়াজ বের হয়েছে। অধিনায়ক নাজমুল দেশ ছাড়ার আগে জানিয়ে এসেছেন তাদের কাছে কোনো কিছু প্রত্যাশা না করতে? তাহলে এমন একটি দল কি আফগানিস্তানকে হারিয়ে যদি আর কিন্তুর হিসাবে নিজেদের দাঁড় করাতে পারবে?
বাংলাদেশ কি আসলেই আফগানিস্তানকে হারানোর মতো পর্যায়ে আছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আফগানিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে ঢের শক্তিশালী। এই বিশ্বকাপে তারা খেলছে দুর্দান্ত। গ্রুপ পর্বে নেপাল-নেদারল্যান্ডসকে হারানোর মাঝে সুখ পাওয়া বাংলাদেশ দল সেমিতে যাওয়ার সমীকরণে শামিল হয়েছে সুপার এইটের কোনো ম্যাচ না জিতেই। 

আফগানিস্তান গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করে সুপার এইটে আসার পর সেখানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেমিতে যাওয়ার লড়াইয়ে শামিল হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে এমন আফগানিস্তানকে হারানো সম্ভব? বাজি ধরতে গেলে বাংলাদেশের পক্ষে লোক খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়বে।

সুপার এইটে দুই দলের সর্বশেষ ম্যাচের কথাই ধরা যাক। ভারতের ৫ উইকেটে করা ১৯৬ রান তাড়া করে জেতার মনমানসিকতা কখনোই ছিল না বাংলাদেশ দলের মাঝে। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান করে বল হাতে প্রতিটি ক্ষণেই ছিল আফগানদের জয়ের অদম্য স্পৃহা। এবারের আসরে তারাই প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে অলআউট করেছে। আফগানদের লড়াকু খেলা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাব্য তালিকায় অনেকেই তাদের নাম লিখে রেখে দিয়েছেন।

আগামীকাল বাংলাদেশ সময় ভোরে দুই দল যখন খেলতে নামবে, তখন ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ শেষ হয়ে যাবে। অস্ট্রেলিয়া জিতে গেলে বাংলাদেশের সামনে তখন আর কোনো সমীকরণ থাকবে না। শুধু আফগানদের সমীকরণ মেলাতে হবে। আর যদি অস্ট্রেলিয়া হেরে যায়, তখন বাংলাদেশও সমীকরণ মেলানোর সুযোগ পাবে। নতুন যে সমীকরণ তৈরি হয়েছে, বাংলাদেশের জন্য আসলে এটা শুধুই একটা সমীকরণ। এর কোনো ফায়দাই তারা নিতে পারবে না বা নেওয়ার মতো দলও নয়। টেস্ট বা ওয়ানডে ক্রিকেটে আফগানদের তুলনায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে থাকলেও টি-টোয়েন্টিতে বিপরীত। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ভগ্ন অবস্থা, আফগানরা লড়াকু। দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়েও আফগানদের কাছে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ১১ বারের মোকাবিলায় আফগানদের জয় ৬টিতে, বাংলাদেশের জয় ৫টিতে।

বাংলাদেশ সুপার এইটে এসেছে বোলারদের একতরফা সাফল্যে। ব্যাটারদের ভয়াবহ ব্যর্থতায় নিজেদের নিংড়ে দিয়ে এক একটি জয় দলকে এনে দিয়েছেন বোলাররা। সুপার এইটে এসেও ব্যাটাররা নিজেদের ফিরে পাননি। কিন্তু বোলাররা আর নিজেদের গ্রুপ পর্বের মতো ধরে রাখতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার পর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে তাদের সে অবস্থা ফুটে উঠেছিল। অস্ট্রেলিয়া ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে জয়ী হলেও বাংলাদেশের ৮ উইকেটে করা ১৪০ রান বৃষ্টির আগ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১১.২ ওভারে ১০০ রান। অর্থাৎ ওভারপ্রতি রান ছিল ৯-এর কাছকাছি। আর ভারত আগে ব্যাট করে রান করেছিল ওভার দশের কাছাকাছি। বোলাররা যদি নিজেদের গ্রুপ পর্বের মতো ফিরে পান আর আফগান ব্যাটারদের অল্প রানে আটকে রাখতে পারেন, তখন হয়তো ব্যাটাররা একটা কিছু করার সুযোগ পাবেন? কিন্তু সেখানেও কথা আছে। বোলাররা কত রানের টার্গেট দিলে, ব্যাটারদের জন্য ভালো হবে? এরও কোনো সঠিক জবাব কিন্তু নেই। কারণ বাংলাদেশের ব্যাটারদের লিমিট যে ১২০-১৩০ থেকে ১৪০ পর্যন্ত। আবার আফগানদের পেস ও স্পিন মিলিয়ে যে দুর্ধর্ষ বোলিং আক্রমণ। এমন আক্রমণের সামনে বাংলাদেশের নড়বড়ে ব্যাটিংলাইন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে কি না, সেটাই বিরাট প্রশ্ন?
তাই বলা যায়, নতুন এই সমীকরণ বাংলাদেশ দলের জন্য শুধুই সান্ত্বনার!

বাংলাদেশের পশ্চাৎপদ ব্যাটিং

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ০৪:৫১ পিএম
বাংলাদেশের পশ্চাৎপদ ব্যাটিং
ছবি : সংগৃহীত

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ‘টাইমড আউট’-র ঘটনার পর দুই দেশের ম্যাচকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু এর আগে তা ছিল ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে। ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে শুরু। এরপর থেকে যখনই যেখানে হোক, দুই দল খেলতে নামার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উত্তপ্ত হয়ে উঠত। যার রেশ খেলোয়াড়দের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ত বেশ। কিন্তু টাইমড আউটের ঘটনার পর বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের সেই উত্তেজনা প্রশমিত হয়ে গেছে। সেটা এমনই যে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল জেতার মানসিকতাই ভুলে গেছে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থা এমনিতেই রুগ্ণ। সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেই অবস্থার আরও অবনতি ঘটেছে। এই অবনতি আবার সর্বজনীন নয়, শুধুই ব্যাটারদের ক্ষেত্রে। বর্তমান ব্যাটিং লাইন একটা বিষয় পরিষ্কার করে দিয়েছে তাদের সীমাদ্ধতা নিয়ে। তাদের কাছে বড় কোনো কিছু প্রত্যাশা না করতে। তাদের লিমিট ১২০-১৩০ থেকে ১৪০ পর্যন্ত। তা আগে-পরে যখনই ব্যাটিং করা হোক না কেন। পরে ব্যাট করে এর থেকে বেশি টার্গেট থাকলে তারা তাদের লিমিট ক্রস করবেন না। লিমিট মেনেই ব্যাটিং করবেন। সেখানে থাকবে না জয়ের কোনো মানসিকতা। বোলাররা যদি দয়াপরবশ হয়ে ১২০-১৩০ রানের টার্গেট দেন, সে ক্ষেত্রে তারা চেষ্টা করতে পারেন। যেমনটি তারা গ্রুপ পর্বে শ্রীলঙ্কার ১২৪ রান কোনো রকমে পাড়ি দিয়েছেন। আবার দক্ষিণ আফ্রিকার ১১৩ রান পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়নি। অবশ্য তাদের চেষ্টার কমতি ছিল না।

ব্যাটারদের সেই চেষ্টা আবার দেখা যায়নি ভারতের বিপক্ষে। সুপার এইটে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৫ উইকেট করেছিল ১৯৬ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই রান অতিক্রম করা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে এই রান খুবই নিরাপদ। বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে আরও বেশি করে নিরাপদ, আরামদায়ক। বোলাররা আরামসে বোলিং করে যেতে পারেন। এভাবে শেষ হয়ে যাবে ২০ ওভার। পরে দেখা যাবে তাদের জয়ের ব্যবধান বেশ।

এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উইকেট আর বাংলাদেশ দলের সীমাবদ্ধ ব্যাটিং এই দুইয়ে মিলে ভারতের ইনিংস শেষ হওয়ার পরই যেন ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয়ে যায়। আর এই ধারণার বাস্তবায়ন হতে খুব বেশি সময় লাগেনি। বাংলাদেশ দল ব্যাটিং করতে নামার পরপরই স্পষ্ট হয়ে যায় রান তাড়ায় কোনো ইচ্ছেই নেই তাদের। বাংলাদেশ দলের মনমানসিকতা ছিল ২০ ওভার খেলে দলের রান বাড়িয়ে নেওয়ার পাশাপাশি হারের ব্যবধান যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। ৮ উইকেটে ১৪৬ রান করে হার মেনেছিল ৫০ রানে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৫০ রানের হার কিন্তু অনেক বড় ব্যবধান।

গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং ছিল এক রকম। যেখানে ফুটে উঠেছিল ব্যাটিং ব্যর্থতা। আর ভারতের বিপক্ষে ফুটে উঠেছে সীমাবদ্ধতা। এত রান তাড়া করে জয়ের সক্ষমতা নেই এই দলের। ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে কিন্তু মড়ক লাগেনি। উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৩৫ রান। দলীয় শতরান আসে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৪ ওভারের মাঝে। কিন্তু কখনই কারও মাঝেই জয়ের অদম্য ইচ্ছে দেখা যায়নি। এ যেন পশ্চাৎপদ ব্যাটিং। এমন নেগেটিভ ব্যাটিং সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ কবে করেছে, তার জন্য পরিসংখ্যানে চোখ বুলাতে হবে। বোলাররা যখন নিজেদের মেলে ধরে সেরা দশে ঢুকে গেছেন। ১১টি করে উইকেট নিয়ে নাম আছে তানজিম সাকিব ও রিশাদ হোসেনের, সেখানে ব্যাটারদের অবস্থান তলানির দিকে। ৬ ম্যাচ খেলে শতরানের ওপরে করেছেন মাত্র তিনজন নাজমুল (১০৭), তাওহীদ হৃদয় ( ১৩৯) সাকিব আল হাসান (১১১)।

এমন নেগেটিভ ব্যাটিং নিয়েই বাংলাদেশ দল সেমি ফাইনালে যাওয়ার সমীকরণ মেলাতে দুর্ধর্ষ আফগান বোলারদের সামনে নামবে। আফগানরা যদি আগে ব্যাট করে ১৫০ এর ওপরে রান করে, তাহলে বাংলাদেশের খেলা শেষ। আর বোলাররা যদি আফগানদের অল্প রানে আটকে রাখতে পারেন, সে ক্ষেত্রে ব্যাটাররা একটু চেষ্টা করতে পারেন?

এমন জটিল অবস্থায় আর পড়তে চান না মার্করাম

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৪:৩৪ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ০৪:৩৪ পিএম
এমন জটিল অবস্থায় আর পড়তে চান না মার্করাম
ছবি : সংগৃহীত

চলমান বিশ্বকাপে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে পা দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ চারে পা দেওয়ার পথে সাত ম্যাচ অপরাজেয় ছিল দলটি। এবারের আসরে তাদের জেতা প্রায় সব ম্যাচই ছিল স্নায়ুক্ষয়ী লড়াই। বরাবরই স্নায়ুর পরীক্ষায় দুর্বল আফ্রিকানরাই এবার স্নায়ুচাপ ধরে রেখে জিতেছে প্রতিটি ম্যাচ। যদিও এমন ম্যাচ আর খেলতে চান না প্রোটিয়াদের অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। এমনকি এমন জটিল অবস্থায়ও আর পড়তে চান না তিনি।

গ্রুপ পর্বে নিউইয়র্কে শ্রীলঙ্কাকে ৭৭ রানে অলআউট করে সেই ম্যাচ সহজেই জিতেছিল মার্করামরা ৬ উইকেটে। কিন্তু, এরপর প্রায় সব ম্যাচই তারা জিতেছে কষ্ট করে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ ও নেপালের বিপক্ষে গ্রুপের বাকি দুই ম্যাচ তারা জিতেছিল। এরপর সুপার এইটে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ১৮ রানে জেতার পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়টি ছিল ৭ রানে। ম্যাচ জিতলেও এমন ক্লোজ ম্যাচ খেলে নেট রানরেটে পিছিয়ে পড়েছিল দলটি। এমন অবস্থায় স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটি রূপ নেয় নকআউটে। বৃষ্টইবিঘ্নিত সেই ম্যাচও তারা জিতেছে শেষ ওভারে ৩ উইকেট হাতে রেখে।

উইন্ডিজদের হারিয়ে শেষ চারে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করলেও এমন ম্যাচ আর খেলতে চান না বলে জানিয়েছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক মার্করাম, ‘সেমিফাইনালে যাওয়াটা অনেক স্বস্তির, তবে আমরা এটিকে মাথায় চড়তে দেব না। ব্যাট হাতে আমরা আরও দাপুটে হতে চাই। বৃষ্টি–বিরতির পর উইকেট ভালো আচরণ করছিল, সেখানেই ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার মতো জুটি পাইনি। ম্যাচ বেশি আগেভাগে শেষ করতে চেয়েছি।’

উইন্ডিজের স্পিনার রস্টন চেজকে মারতে গিয়ে আউট হন প্রোটিয়ার তিন ব্যাটার ডেভিড মিলার, ট্রিস্টান স্টাবস ও কেশব মহারাজ। সে প্রসঙ্গে মার্করাম বলেন, ‘এই জয় আমাদের জন্য বিশাল, ড্রেসিংরুমের জন্যও দারুণ। তবে আশা করি আমরা এমন জটিল অবস্থায় পড়ব না। আমরা দারুণ বোলিং করেছি বলে মনে হয়, কন্ডিশন বুঝেছি, তাদের গড়পড়তার চেয়ে কম সংগ্রহে রাখতে পেরেছি। জুটি গড়ার ব্যাপারটি বুঝতে হবে। ম্যাচ আগেভাগে শেষ করার ভক্ত আমি, তবে আজ সেটি একটু বেশিই আগে করে ফেলতে চেয়েছি। এখানে শেখার ব্যাপার আছে। আশা করি (ভুলের) পুনরাবৃত্তি করব না।’

এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচ হারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বাগতিকদের বিপক্ষে নামার আগে ছয় ম্যাচ অপরাজেয় ছিলেন মার্করামরা। সবগুলো ম্যাচ অল্প ব্যবধানে জেতায় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল ছিটকে পড়ার। সেই শঙ্কাকে উড়িয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ৩ উইকেটের জয়ে।

সেমিফাইনালে কাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে পেতে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা তা নিয়ে ভাবতে চান না তাদের অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। প্রতিপক্ষ যেই হোক নিজেদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার বার্তা দিয়ে রেখেছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক, ‘আমরা নিজেদের সেরা ক্রিকেট ম্যাচটি এখনো খেলিনি। সেমিফাইনালে সেটি করার চেষ্টা করব।’

ক্ষুধার্ত সাকিবই এখন তৃপ্ত!

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৩:৩৯ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ০৩:৩৯ পিএম
ক্ষুধার্ত সাকিবই এখন তৃপ্ত!
ছবি : সংগৃহীত

দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সেরা সাকিব আল হাসান। দূরদর্শী ক্রিকেটারও বটে। এ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। নিজের দূরদর্শী চিন্তা-ভাবনা এবং ক্ষুধার্ত মনোভাব দেখিয়েই তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেটে ‘পোস্টার বয়’। সময়ের স্রোতে এই সাকিবই যেন তৃপ্ত অল্পতে!

চলমান বিশ্বকাপে সুপার এইটে দুই ম্যাচ হেরেও আফগানিস্তানের জয়ে সমীকরণের মারপ্যাঁচে সুতোয় টিকে আছে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল ভাগ্য। সেই সমীকরণ নিয়ে বাংলাদেশ কতটুকু ভাবছে তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও ফর্মের সঙ্গে লড়াই করা সাকিব এবারের আসরকে উল্লেখ করলেন ‘খারাপ নয়’ বলে। তার কথায়, ‘আমরা ৩টা জিতেছি, ৩টা হেরেছি। ৫০ শতাংশ সফল। সেদিক থেকে খুব একটা খারাপ নয়।’

সাকিবের এমন সন্তুষ্টি অবশ্য প্রথম নয়। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে এশিয়া কাপের পারফরম্যান্স নিয়েও সাকিব জানিয়েছিলেন নিজের সন্তুষ্টির কথা। বেসরকারি এক চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটা (সুপার ফোর) জিততাম তাহলে আর কোনো অভিযোগ থাকত না কারো।’

এশিয়া কাপের সুপার ফোরে পাকিস্তানের বিপক্ষেও ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। যাদের বিপক্ষে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি সাকিবরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে হওয়া সেই গলদঘর্ম অবস্থাকে খুব একটা আমলে নেননি সাকিব। খুব সম্ভবত ফাইনালে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ভারতের বিপক্ষে মূল্যহীন জয়ে।

দিন কয়েক আগে ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের ক্যারিয়ারের অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সাকিব কথা বলেছিলেন বাংলাদেশ দলের ২০১৯ বিশ্বকাপ নিয়েও। যে বিশ্বকাপে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত ছিলেন তিনি। সেই বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগ পর্যন্ত লড়াইয়ে টিকে থাকায় বড় স্বপ্ন নিয়ে বিশ্বকাপে পাড়ি দেওয়া সাকিবই সেই আসরকে আখ্যায়িত করেছেন এক হিসেবে ভালো আসর হিসেবে। বলেছিলেন, ‘একভাবে বললে ভালো বিশ্বকাপ, আমরা ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলেছি। ধারাবাহিক ছিলাম ব্যাটিং ও বোলিংয়ে। দুয়েকটা ম্যাচে ভালো করতে পারিনি। কিন্তু সবমিলিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে ভালো পারফর্ম করেছি।’

অথচ সেই বিশ্বকাপ খেলে এসে সেসময় অন্য আরেক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছিলেন, ‘আমি সব সময়ই বিশ্বাস করেছি যে এবার অনেক দূরে যাওয়া সম্ভব। হয়তো সবার সাহায্য পেলে আমরা সেমিফাইনালেও চলে যেতাম।’ ২০১৯ বিশ্বকাপ নিয়ে ২০২৪ সালে এসে সাকিবের মন্তব্যে কমে গেছে ধার। যেই ধারের ঘাটতি দেখা গেছে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে করা মন্তব্যেও। ভুলেভরা আসর নিয়ে নিজের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তিনি ‘খারাপ নয়’ বলে।

ধারণা করা হয় পেশাগত জীবনের পারফরম্যান্স প্রভাব ফেলে ব্যক্তির মানসিকতা থেকে ব্যক্তিগত জীবনেও। ২০২৩ বিশ্বকাপ থেকেই ব্যাটে-বলে হতশ্রী সাকিব যেন হারিয়ে খুঁজছেন নিজেকে। সবসময় মাঠের ক্রিকেটে দাপুটে দেশের ক্রিকেটের আকাশে ১৮ বছর ধরে সবচেয়ে জ্বলজ্বল করা তারাটার এমন অল্পতে তৃপ্ত হয়ে যাওয়াটা খুব সম্ভবত পারফরম্যান্সে পিছিয়ে থাকার প্রভাবেই। ব্যাপারটা খানিকটা ‘নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়’ চরণের মতোই।

শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে উইন্ডিজকে হারিয়ে সেমিতে দক্ষিণ আফ্রিকা

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১১:১৫ এএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ১১:১৯ এএম
শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে উইন্ডিজকে হারিয়ে সেমিতে দক্ষিণ আফ্রিকা
ছবি : সংগৃহীত

বৃষ্টিবিঘ্নিত শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ উইকেটে হারিয়ে সুপার এইটে তিন ম্যাচের তিনটিতে জিতে সেমিফাইনালে পা রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের এই জয়ে আসরজুড়ে দাপুটে ক্রিকেট খেলা স্বাগতিকদের বিদায় নিতে হয়েছে শূন্য হাতে। 

সোমবার (২৪ জুন) অ্যান্টিগার ব্যাটিং উইকেটে উইন্ডিজের দেওয়া ১৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২ ওভারে ১৫ রান তুলে ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপরই বাঁধা আসে বৃষ্টির। বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর খেলাম কমিয়ে আনা হয় ১৭ ওভারে এবং নতুন টার্গেট নির্ধারণ করা হয় ১২৩ রান। এই লক্ষ্য টপকাতেই অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে শেষ ওভারের প্রথম বলে মার্কো ইয়ানসেন ম্যাকয়কে ছয় হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি দশ বছর পর এই সংস্করণের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করে নেয়।

এই ক্ষুদ্র লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দ্রুত ৩ উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। ৪২ রানেই রেজা হেনড্রিকস, কুইন্টন ডি কক ও এইডেন মার্করামের উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে আফ্রিকানরা। সেই চাপ সামাল দেন ১০ বলে ২২ করা হেনরিখ ক্লাসেন ও ২৭ বলে ২৯ রান করা ট্রিস্টান স্টাবস। শেষদিকে চাপের মধ্যেও মার্কো ইয়ানসেনের অপরাজিত ১২ রানে জয় নিশ্চিত হয়ে যায় এইডেন মার্করামদের

উইন্ডিজের হয়ে রস্টন চেইজ ৩টি, আন্দ্রে রাসেল ও আলজারি জোসেফ নেন ২টি করে উইকেট।

এর আগে, দক্ষিণ আফ্রিকার আমন্ত্রণে ব্যাটিং করতে নেমে ৫ রানেই দুই উইকেট হারানো উইন্ডিজ।,। সবশেষ ২০ ওভার শেষে রান করে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রান। সর্বোচ্চ ৪২ বলে ৫২ রান আসে রস্টন চেইজের বলে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন কাইল মায়ার্স। 

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে তাব্রাইজ শামসি ৩টি উইকেট পান। আনরিখ নরকিয়া ছাড়া বাকি বোলাররা পান ১টি করে উইকেট। ম্যাচসেরা হন শামসি।