![কামিন্সের হ্যাটট্রিক ম্লান করেন আফগানিস্তানের ঐতিহাসিক জয়](uploads/2024/06/23/Afghanistan-1719114983.jpg)
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর বিকল্প ছিল না আফগানিস্তানের সামনে। প্যাট কামিন্সের ইতিহাস গড়া হ্যাটট্রিককে ম্লান করে সেটাই করে দেখিয়েছে আফগানিস্তান। অস্ট্রেলিয়াকে ২১ রানে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয়ে টিকে থাকলো সেমিফাইনালের আশা।
রবিবার (২৩ জুন) আফগানিস্তানের দেওয়া ১৪৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়নরা থেমেছে ১২৭ রানে। ফলে ২১ রানের ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে রশিদ খানরা। এই জয়ে কিছুটা হলেও ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে অজিদের কাছে হারের ক্ষতে প্রলেপ দিতে পেরেছে আফগানরা।
আফগানদের বোলিং তোপে শুরুতেই দিশেহারা ছিল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপ। ইনিংসের তৃতীয় বলেই ট্রাভিস হেডকে বোল্ড করেন নভীন উল হক। দলীয় ও ব্যক্তিগত ০ রানে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার। মাঠে থিতু হতে পারেননি মিচেল মার্শ ও ডেভিড ওয়ার্নারও। মার্শকেও ফেরান নভীন, দলীয় ১৬ এবং ব্যক্তিগত ১২ রানে ফেরেন তিনি। ওয়ার্নারকে ৩ রানে আউট করেন মোহাম্মদ নবী। তার বিদায়ে ৩২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে মাঝারি এই লক্ষ্য বৃহৎ হয়ে যায় অজিদের কাছে।
সেখান থেকে মার্কাস স্টয়নিস ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৩৯ রানের জুটি গড়ে চাপ সামাল দিচ্ছিলেন, তখনই আবারও আফগানদের আক্রমণে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার সেরা পারফর্মার সটয়নিস সাজঘরে ফেরেন ১১ রান করে গুলবেদীন নাইবের বলে গুরবাজকে ক্যাচ দিয়ে। টিম ডেভিডকেও হতাশ করেন গুলবেদিন। তিনি করেন মাত্র ২ রান। ৮৫ রানে অস্ট্রেলিয়া হারায় ৫ উইকেট। একপ্রান্ত আগলে রাখেন ম্যাক্সওয়েল। আদায় করে নেন অর্ধশতক। তার গুরুত্বপূর্ণ উইকেটও তুলে নেন গুলবেদিন। আউট হওয়ার আগে ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটে আসে ৪১ বলে সর্বোচ্চ ৫৯ রান।
রশিদ খানের বলে সুইপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ম্যাথু ওয়েড ক্যাচ দিলে তা লুফে নিতে ভুল করেননি করিম জান্নাত। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাটে আসে মাত্র ৫ রান। বিশ্বকাপের দাবিদার দলটা হারের কাছাকাছি চলে আসে ওয়েডের আউটে। ১১১ রানে অষ্টম উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া হ্যাটট্রিকম্যান প্যাট কামিন্সের বিদায়ে। তাকে বোল্ড করে চতুর্থ উইকেট নেন গুলবেদিন নাইব।
অ্যাস্টন অ্যাগারকে আউট করে তৃতীয় উইকেট শিকার করেন নভীন উল হক। তিনিও পারেননি দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিতে। অ্যাডাম জাম্পাকে দলীয় ১২৭ শেষ উইকেট হিসেবে ক্যাচ আউট করে ২১ রানে দলের জয় নিশ্চিত করেন আজমতউল্লাহ ওমরাজাই।
গুলবেদিন নাইব ৪টি, নভীন উল হক ৩টি, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই নেন সমান ১টি করে উইকেট।
এর আগে, টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সেন্ট ভিনসেন্টের ব্যাটিং করা কঠিন এমন পিচে আরেকবার দুর্দান্ত জুটি গড়েন রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহীম জাদরান। দুই ব্যাটারের অর্ধশতকে ১১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি পায় আফগানরা। গুরবাজ করেন ৪৯ বলে ৬০, ইব্রাহীমের ব্যাটে আসে ৪৮ বলে ৫১। স্টয়নিসের বলে গুরবাজ আর জাম্পার বলে আউট হন ইব্রাহিম।
শেষদিকে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো দুই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন প্যাট কামিন্স। ১৮ ওভারের শেষ বলে রশিদ খান আরশেষ ওভারের প্রথম দুই বলে করিম জান্নাত ও গুলবেদিন নাইবকে আউট করে এই রেকর্ড গড়েন তিনি। সবশেষ আফগানিস্তানরা দাঁড় করায় ১৪৮ রানের দলীয় সংগ্রহ। যদিও, সেই লক্ষ্য অস্ট্রেলিয়াকে আর টপকাতে দেয়নি আফগানিস্তানের বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে। ফলে ম্লান হয়ে গেছে কামিন্সের রেকর্ড গড়া হ্যাটট্রিক।
কামিন্স ৩, জাম্পা ২ ও স্টয়নিসের ১ উইকেট নেন। তবে, অজিদের ব্যাটিং ইনিংসে ২০ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন গুলবেদিন নাইব।