ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচার চালানোর জন্য প্রার্থীদের হাতে আর সময় থাকছে সপ্তাহখানেক। প্রতীক বরাদ্দের পর পোস্টার, লিফলেট ও ডিজিটাল ব্যানারের মাধ্যমে প্রচার চালালেও এর সঙ্গে এবার যোগ হয়েছে নির্বাচনি গান। এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তৈরি এসব গান বাজছে ঢাকা-১৮ আসনের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে খিলক্ষেত এলাকায় দেখা গেছে, বাজারের মোড়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে মাইক টানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী উত্তর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এসএম তোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে নির্বাচনি গান বাজছে। যেখানে নির্বাচনি এলাকার বিভিন্ন স্থান ও নানান পেশার লোকজনকে সম্বোধন করে ট্রাক প্রতীকে ভোট চাওয়া হয়েছে।
দশ ফুট দূরত্বে বিপরীত পাশেই দোকানের দ্বিতীয় তলায় মাইক টানিয়ে নির্বাচনি গানের মাধ্যমে প্রচার চলছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক খসরু চৌধুরীর। কেটলি প্রতীকের এ প্রার্থীর গান তৈরি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি গানের আদলে। ‘জয় বাংলা, এসেছে এসেছে আবার ইলেকশান, জিতবে খসরু ভাইয়া, জয় বাংলা, জিতবে কেটলি মার্কা, খসরু ভাইয়ের সালাম নিন, কেটলি মার্কায় ভোট দিন, উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে দেশটাই, কেটলি মার্কায় ভোট চাই।’ এভাবেই গান ও স্লোগানের মাধ্যমে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে সকাল থেকে থেমে থেমে দুই প্রার্থীর গান বাজানোতে বিরক্ত ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী খবরের কাগজকে বলেন, খিলক্ষেত এলাকায় প্রার্থীরা কম আসেন। উত্তরার দিকে বেশি গণসংযোগ করেন। এখানে মাইকিং আর গানের মাধ্যমে প্রচার চলছে। এতে আমাদের ব্যবসায়িক ক্ষতি হচ্ছে। মাইকের আওয়াজে কাস্টমারদের কথা বোঝা যায় না। প্রার্থীদের আমাদের বিষয়টা লক্ষ্য রাখা উচিত।
ভোটের বিষয়ে কথা হয় খিলক্ষেতের স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। কুর্মিটোলা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের এ ভোটার খবরের কাগজকে বলেন, ‘উপ-নির্বাচনে (২০২০ সালে সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের মৃত্যুর কারণে) পর তো সেভাবে মানুষ ভোট দেয়নি। এবারের পরিস্থিতি এখনো বোঝা যাচ্ছে না। তবে কেটলি আর ট্রাকের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে। কারণ নৌকার লোকজন দুই ভাগ হয়ে গেছে। লাঙ্গলের অবস্থান সেভাবে দেখা যাচ্ছে না।
এ এলাকায় নতুন করে পোস্টার দৃশ্যমান হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নাজিম উদ্দীনের। তিনি মোড়া মার্কায় জনগণের কাছে ভোট চেয়েছেন।
গণসংযোগ অব্যাহত প্রার্থীদের
গতকাল জাতীয় পার্টির প্রার্থী শেরীফা কাদের ধোবাদিয়া, কাচকুড়া বাজার, চামুরখান, মাউসাইত, মৈনারটেক, মাস্টারবাড়ী, মধ্যপাড়া ও শাহের টেক এলাকায় প্রচার চালান। সন্ধ্যায় উত্তরখান মাজার সংলগ্ন আশেকিন ফাউন্ডেশনে উঠান বৈঠকে তিনি যোগ দেন।
ভোটারদের উদ্দেশে ১৪ দলীয় জোট সমর্থিত এ প্রার্থী বলেন, নির্বাচিত হলে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য কাজ করব আমরা। জ্ঞানসমৃদ্ধ জাতি গড়তে সরকারের সহায়তায় স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়তে কাজ করব। মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতেই আমাদের রাজনীতি। আমরা সবাইকে ভালো রাখতে চেষ্টা করব।
অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা খসরু চৌধুরী তুরাগ থানাধীন দলিপাড়া পাকার মাথা, বাদশারটেক, বটতলা, উলিদাহ মার্কেট, উত্তরটেক, তাফালিয়া, পাকুরিয়া, নয়ানগর ও রানাভোলা এলাকায় প্রচার চালান। এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মো. মহিবুল হাসানসহ স্থানীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কেটলি প্রতীকের এ প্রার্থী ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ঢাকা-১৮ আসনের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ তৈরি করা হবে। শিশু, কিশোর ও যুবকদের মাঝে ক্রীড়াসামগ্রী বিতরণ করা হবে। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা হবে।
ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক এসএম তোফাজ্জল হোসেন গতকাল কুড়িল এলাকায় প্রচার চালিয়েছেন।