দরজায় কড়া নাড়ছে নির্বাচন। ভোটের বাকি মাত্র কয়েকদিন। এরই মধ্যে কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ-৪ ও ৬ আসনে ভোটের মাঠে আছেন দেশের সাবেক দুই রাষ্ট্রপতির সন্তান। এই দুই আসনে শক্তিশালী কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় দুজনই ভাবনাহীন নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অস্টগ্রাম) আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে ভোটের মাঠে আছেন রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের জ্যেষ্ঠ পুত্র। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে নৌকার মাঝি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের একমাত্র সন্তান।
প্রকৌশলী রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিক বছরের বেশির ভাগ সময় নির্বাচনি এলাকায় থাকেন। প্রয়োজন ছাড়া তিনি নিজ এলাকা থেকে অন্য কোথাও যান না। সারা বছর ভোটারদের খোঁজ-খবর রাখেন। তাই এলাকায় তার যথেষ্ট গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে এই আসন থেকে মো. আব্দুল হামিদ সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে সময় থেকেই যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন করে হাওরাঞ্চলের পুরো চিত্রই পাল্টে দিয়েছেন। এ জন্য তৌফিকের পক্ষে আওয়ামী লীগসহ সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের অন্য দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা এখনো এলাকায় আসেননি। এ ছাড়াও প্রতিদ্বন্দ্বীদের কোনো পোস্টারও টানানো হয়নি। তাদের দলীয় অফিসগুলোও বন্ধ রয়েছে।
নির্বাচনি কার্যক্রম চলছে ঢিমেতালে। রেজওয়ান আহম্মেদ তৌফিকের বিপরীতে নির্বাচনে লড়বেন পাঁচজন। তারা হলেন- জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ আবু ওয়াহাব, এনপিপি প্রার্থী মো. জয়নাল আবদিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী মো. নাছিম খান, বাংলাদেশ কংগ্রেস প্রার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ প্রার্থী মো. শরীফুল আহসান।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৮২ হাজার ২৪৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯৬ হাজার ৮৪৮ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৮৫ হাজার ৩৯৮ জন।
অন্যদিকে কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনেও ভোটারদের মধ্যে নির্বাচনের আমেজ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিদিনই নিজ এলাকায় গণসংযোগ, পথসভা, উঠান বৈঠক ও লিফলেট বিতরণ করছেন নাজমুল হাসান। প্রথমদিকে তিনি নির্বাচনি প্রচারে না থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে ভৈরব-কুলিয়ারচরের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে গিয়ে ভোট চাইছেন। এবারও এই আসন থেকে জয়লাভ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই আসনের মোট ভোটার ৩ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৫ হাজার ৫০৭ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৯৩ হাজার ৬৯২ জন।
পাপনের বিপরীতে লড়বেন ছয় প্রার্থী। তবে শক্তিশালী কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় নাজমুল হাসান পাপন ফুরফুরে মেজাজে নির্বাচনি মাঠে নেমেছেন। আসনটিতে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ পাঁচজন দলীয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তাদের মধ্যে আছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট আব্দুছ ছাত্তার খোকন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী নূরুল কাদের সোহেল, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট প্রার্থী রুবেল হোসেন, এনপিপি প্রার্থী তারেক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী হেলাল উদ্দিন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী মোহাম্মদ আয়ূব হোসেন।