ঢাকা ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

মধ্যরাতে বুয়েটে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামের অভিযোগ, ৬ দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
আপডেট: ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৭:৩০ পিএম
মধ্যরাতে বুয়েটে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামের অভিযোগ, ৬ দফা দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন
বুয়েট ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের প্রবেশের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি : খবরের কাগজ

মধ্যরাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাদের প্রোগ্রামের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ছয় দফা দাবিতে ৩০ ও ৩১ মার্চ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বুয়েট শহিদ মিনারের পাদদেশে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে এ দাবি জানান বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষার্থীরা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিসমূহ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলমানের ঘোষণা দেন।

এসময় লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সবচেয়ে সমাদৃত এবং শীর্ষস্থানীয় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর এ আবরার ফাহাদ ভাই এর নৃশংস মৃত্যুর মাধ্যমে বুয়েট বাংলাদেশের সবচেয়ে নিরাপদ ক্যাম্পাসে রূপ নেয়। বুয়েটে সর্বশেষ ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে যে নিরাপদ এবং সুন্দর একটি ক্যাম্পাস আমরা উপহার হিসেবে পেয়েছি, তা দেশব্যাপী সকলের কাছে প্রশংসিত এবং অনুকরণীয়। দেশের সকল মানুষ, নানা প্রান্তের নানা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থী দেখেছে একটি রাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসের রোল মডেল, তার সুফল, তার সৌন্দর্য, তার উৎকর্ষের যত সমূহ সম্ভাবনা। তবে যে কলুষিত হাতগুলোর কারণেই ঝরে গিয়েছিল আমাদেরই নিষ্পাপ মেধাবী প্রাণ, সে কলুষিত হাতগুলো পরবর্তীতে বারে বারে ভিন্ন ভিন্নভাবে পুনরায় সে অপরাজনীতির অনুপ্রবেশের অপচেষ্টা চালিয়েছে, ক্যাম্পাসের এই সুন্দরতম ভিত্তিকে পুনরায় ধ্বংস করে দিতে চেয়েছে। তবে ২০১৯ এর সেই সময়টির পর থেকে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে উদ্যম, সৎ সাহস আর প্রেরণা পেয়েছিল সেটিই প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ছাত্ররাজনীতি অনুপ্রবেশ এর সকল অপচেষ্টাকে রুখে দিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট ঐক্য গড়ে তুলতে ভূমিকা রেখেছিল। তবে এখনও বারে বারে পড়াশোনা কিংবা একাডেমিকস এর চূড়ান্ত চাপ থাকার পরেও আমাদের এই নিরাপদ ক্যাম্পাসটিকে রক্ষা করতে আমাদের সর্বদা সজাগ থাকতে হয়।

ন্যাক্কারজনক ঘটনা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ২৮ মার্চ মধ্যরাত ১টার দিকে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানতে পারি, বুয়েটে একটি বিশেষ রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের বেশ কজন শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এসেছেন এবং তারা ক্যাম্পাসের মেইন গেইট দিয়েই প্রবেশ করে ভেতরে ঢুকেছেন। রাত সাড়ে ১০টার পরে যেখানে নিরাপত্তাজনিত কারণে আমাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদেরই ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি নেই সেখানে রাজনৈতিকভাবে সংশ্লিষ্ট বহিরাগত ব্যক্তিদের মধ্যরাতেই আমাদের প্রাণের ক্যাম্পাসে অনুপ্রবেশ ঘটে। ঘটনার তীব্রতা বাড়তে থাকে রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, একের পর এক বহিরাগত রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার ক্যাম্পাসের মেইন গেইটের সামনে আসতে থাকে। বিপুল সংখ্যক বহিরাগত ক্যাম্পাসে অনায়াসে প্রবেশ করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে সেখানে উপস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা দেখতে পায়, মিছিল এর মতন করে বিশাল একটি জনবহর হাতে ফুলের তোড়া নিয়ে আমাদের ক্যাম্পাসে রাত ২টার পর প্রবেশ করতে থাকে।

বহিরাগত উল্লেখ করা লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশাল জনবহর এর সকলেই বহিরাগত ছিল এবং তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ছিল। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভেতরে প্রবেশ করে মধ্যরাতের সেই সময়টাই বিশেষ ঐ ছাত্র সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দদের চিনতে পারে যা সুস্পষ্ট জানান দেয় এত বিপুল জনসমাগম রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ এমন একটি ক্যাম্পাসে রাতের আঁধারে ঘটে যাওয়া এত বড় একটি রাজনৈতিক সমাগম এবং বহিরাগতদের আগমন ক্যাম্পাসের মর্যাদার প্রতি তীব্র অপমানজনক। একই সঙ্গে এটি একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস এবং শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠ স্বাভাবিক শিক্ষা পরিবেশের নিরাপত্তার ব্যাপারকে গুরুতরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এবং ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর কোনভাবেই উক্ত ন্যাক্কারজনক ঘটনা ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়ার দায় এড়িয়ে যেতে পারে না।

বক্তারা আরও বলেন, ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে তারা প্রবেশের অনুমতি কীভাবে কর্তৃপক্ষ থেকে পেয়েছিল এই সম্পূর্ণ ব্যাপারটি এখনও ধোঁয়াশাপূর্ণ এবং সন্দেহের সঞ্চার করে যে কীভাবে এবং কোন মদদে তারা প্রবেশ করতে পারল। এর সমস্তই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করে।

এসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ছাত্ররাজনীতি প্রতিরোধে ৬ দফা দাবি জানান। তাদের দাবিগুলো হলো—

১. বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘনের দায়ে আমরা বুয়েটের সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২৮ মার্চের মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগমের মূল সংগঠক ইমতিয়াজ রাব্বি এর বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং হল বাতিলের দাবি।

২. উক্ত ঘটনায় ইমতিয়াজ রাব্বির সঙ্গে বুয়েটের বাকি যেসকল শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিল তাদের বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম বহিষ্কার।

৩. বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ যারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলো তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে কী না, তারা কেন কীভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেল এই ব্যাপারে সুস্পষ্ট সদুত্তর এবং জবাবদিহিতা বুয়েট প্রশাসন কর্তৃক আসতে হবে।

৪. উপরোক্ত ১নং এবং ২নং দাবি আগামীকাল সকাল ৯টার মধ্যে বাস্তবায়ন করা না হলে আমরা সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ডিএসডাব্লিউ এর পদত্যাগ চাই।

৫. ক্যাম্পাসে মধ্যরাতে বহিরাগতদের প্রবেশের কারণে আমরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এর প্রতিবাদ হিসেবে আগামী ৩০ ও ৩১ মার্চের টার্ম ফাইনালসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করছি।

 ৬. আন্দোলনরত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনরকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না- এই মর্মে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। 

এসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীর ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এই বুয়েটে হবে না’, ‘আবরার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেবো না’, ‘পলিটিক্সে যুক্ত যারা, হল থেকে করবো ছাড়া’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে জবিতে মানববন্ধন

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১০:৩৪ পিএম
মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে জবিতে মানববন্ধন
ছবি: খবরের কাগজ

কোটা পদ্ধতিতে পুনর্বহালের প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে বিভিন্ন বক্তব্যে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারকে অবমাননা ও কটুক্তি করা হচ্ছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখার আয়োজনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়ে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে দেওয়া বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্ম কমান্ড, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখার সভাপতি রাকিবুল হাফিজ অন্তর বলেন, আমরা লক্ষ্য করছি সম্প্রতি কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, কটুক্তি করা হচ্ছে। কোটা বাতিল নাকি সংস্কার সেটা নিয়ে আমাদের কোনো মাথা ব্যাথা নেই। এই দেশে বাকস্বাধীনতা আছে, সবাই নিজেদের দাবি জানাতে পারে, কথা বলতে পারে। আমাদের বাপ-দাদারা মুক্তিযুদ্ধ করেই আপনাদের এই বাক স্বাধীনতা এনে দিয়েছে৷ আর সেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করা হচ্ছে, কটুক্তি করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা এসব শিক্ষার্থীদের বহিস্কারের দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটুক্তিকারীদের বিচার দাবি করছি।

সাধারণ সম্পাদক তানিম ফারহান বলেন, এই দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন যে বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাদেরকে নিয়েই কটুক্তি করা হচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্য নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া হবে না। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা এমন কাজ করছে, তাদের বহিষ্কারের দাবিতে আমরা উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিবো। তাদের বিরুদ্ধে যাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেই দাবি জানাচ্ছি।

মুজাহিদ/এমএ/ 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের সংঘর্ষ, আহত ৭

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:০৭ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:০৮ পিএম
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের সংঘর্ষ, আহত ৭
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের দুই পক্ষে মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি : খবরের কাগজ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) পেনশন স্ক্রিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের সাতজন আহত হয়েছেন। 

সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক বদরুজ্জামান ভূঁইয়া।

সংঘর্ষে আহত পাঁচজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও সহকারী রেজিস্ট্রার তৌছিক আহমেদ রাহাত, সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তানজিল হোসেন, সেকশন অফিসার মো. সায়েম, মিজানুর রহমান খান ও মাহামুদুল হাসান। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসারদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’ বাস্তবায়নসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অননুমোদিত ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য একটি ব্যানার টাঙান। তখন বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ওই ব্যানারটি সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করেন। ব্যানারটি না সরানোয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ব্যানার সরিয়ে ফেলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ের হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় উভয় পক্ষ চেয়ার ছোড়াছুড়ি করে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বন্দর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয় পক্ষের সাতজন আহত হন। 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাহাউদ্দিন গোলাপ বলেন, ‘চলমান আন্দোলনকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করার জন্যই ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের নামে ভুয়া সংগঠনটি পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেছে।’

এদিকে ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুব্রত কুমার বাহাদুর বলেন, ‘কর্মসূচি চলাকালে বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের লোকজন। আমাদের দুই সদস্যকে মেরে আহত করা হয়েছে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘অফিসারদের দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল জন্য নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেয়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনেও আন্দোলনে জবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৫ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৫ পিএম
কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনেও আন্দোলনে জবি শিক্ষার্থীরা
ছবি: খবরের কাগজ

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। ২০১৮ সালে সরকার ঘোষিত পরিপত্রের পুনর্বহালসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বেলা ১২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। 

প্রতিবাদ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে থেকে বের হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মূল ফটকের সামনে এসে কিছুক্ষণ অবস্থান করে। এরপর বাহাদুর শাহ পার্ক হয়ে প্রতিবাদ মিছিলটি রায়সয়াহেব বাজার মোড়, তাতীবাজার মোড় প্রদক্ষিণ করে এসে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্ত্বরের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলা বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন মুন্না বলেন, কোটা প্রথার মাধ্যমে মেধাবীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। আমাদের দাবি মেনে নিয়ে ২০১৮ সালে কোটা প্রথা বাতিল করে যে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল সেটা পুনর্বহাল করতে হবে। আমরা যে চারটি দাবি জানিয়েছি তা মেনে নিতে হবে। আগামীকাল সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে প্রতিবাদ আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হবে। আমাদের দাবি মানা না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

শিক্ষার্থীদের চারটি দাবি হলো-

১। ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। 

২। ১৮' এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

৩। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।  

 ৪। দূর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

মুজাহিদ বিল্লাহ/এমএ/ 

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে পদযাত্রা, শাহবাগ অবরোধ

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৪ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৪ পিএম
কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে পদযাত্রা, শাহবাগ অবরোধ
ছবি: খবরের কাগজ

সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলের ২২ দিনের আল্টিমেটাম শেষে ফের আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এবার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অংশ হিসেবে গণপদযাত্রা করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর পৌনে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। পরে সেখান থেকে নীলক্ষেত-নিউমার্কেট হয়ে সাইন্সল্যাব দিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেয়। গণপদযাত্রায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের ফলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় রাস্তার দুই পাশের যানচলাচল।

এর আগে গতকাল সোমববার চার দফা দাবি ঘোষণা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে (সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে), সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

শিক্ষার্থীদের লাভের জন্যই প্রত্যয় স্কিম বাতিলের আন্দোলন: জবি শিক্ষক সমিতি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৭ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৭ পিএম
শিক্ষার্থীদের লাভের জন্যই প্রত্যয় স্কিম বাতিলের আন্দোলন: জবি শিক্ষক সমিতি
ছবি: খবরের কাগজ

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও আন্দোলন কর্মসূচি শিক্ষার্থী ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে বৈষম্যের শিকার না হয় সেই লাভের জন্যই আন্দোলন বলে জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতি।

সোমবার (১ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের সামনে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে দেওয়া বক্তব্যে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসাম এসব কথা তুলে ধরেন।

ড. শেখ মাশরিক হাসান তার বক্তব্যে বলেন, প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে আমরা শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছি, সেটা শুধু আমাদের আন্দোলন নয়। এটা আমাদের শিক্ষার্থী ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আন্দোলন। আমরা যারা ১ জুলাইয়ের আগে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগদান করেছি তারা এই প্রত্যয় স্কিমের কারণে ভুক্তভোগী হবো না। ১ জুলাইয়ের পর যেসব শিক্ষার্থীরা এই পেশায় আসবে তারা এই বৈষম্যের শিকার হবে। আমরা আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই আন্দোলনে নেমেছি। যাতে আমাদের সঙ্গে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আকাশ পাতাল বৈষম্য তৈরি না হয়।

এসময় শেখ মাশরিক আরও বলেন, একটি মহল এ আন্দোলনকে বিতর্কিত করার জন্য, শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছানোর জন্য গুজব ছড়াচ্ছে যে এই আন্দোলন আমাদের স্বার্থে। কিন্তু আসলে এ আন্দোলন ভবিষ্যতে যারা শিক্ষকতায় যোগদান করবে তাদের জন্য।

এদিকে আজ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি। এদিন সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনে শিক্ষক, কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে আসলেও কোনো ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী দাপ্তরিক কাজ করেননি।

মুজাহিদ বিল্লাহ/এমএ/