ঢাকা ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

জেনে নিন স্কলারশিপের খুঁটিনাটি

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০১:১০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০১:১০ পিএম
জেনে নিন স্কলারশিপের খুঁটিনাটি

স্কলারশিপ অনেকের কাছে একটি স্বপ্নের নাম। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে স্কলারশিপ নিয়ে পড়াশোনা করার। তাই বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ভালো শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ সুবিধা দিয়ে থাকে। স্কুল থেকে শুরু করে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে নানারকম স্কলারশিপের ব্যবস্থা। কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক বা তারপর থেকে স্কলারশিপ নিয়ে থাকে।

এদিকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পর অনেকেরই স্বপ্ন হয়ে যায় স্কলারশিপ নিয়ে বিদেশে পড়তে যাওয়া। কিন্তু আমাদের দেশের অনেক শিক্ষার্থীই সঠিক সময়ে স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানে না। ফলে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অনেকেই আবেদন করতে পারে না। তাই প্রত্যেকের এই বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা রাখা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেওয়া যাক স্কলারশিপ সম্পর্কিত সাধারণ বিষয়াবলি।

স্কলারশিপের ধরণ
সাধারণত কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের উন্নত সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয় কিছু মেধাভিত্তিক স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে স্কলারশিপ দাতা প্রতিষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট কিছু শর্ত থাকে। শিক্ষার্থীকে তাদের নির্ধারিত শর্ত ও যোগ্যতার মান পূরণ করে সেই স্কলারশিপে অংশগ্রহণ করতে হবে। যেমন শিক্ষাগত অর্জন বা যোগ্যতা, অথবা বিশেষ কোনো প্রতিভা, বৈশিষ্ট্য বা আগ্রহের সংমিশ্রণের ভিত্তিতে মেধাভিত্তিক স্কলারশিপ দেওয়া হয়। এ ছাড়া স্কলারশিপগুলো আর্থিক প্রয়োজনের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়ে থাকে।

এদিকে কিছু কিছু স্কলারশিপ নির্দিষ্ট কোনো সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়। যেমন শুধু নারী বা স্নাতক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কিছু স্কলারশিপ রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে স্কলারশিপ দাতা প্রতিষ্ঠানে আপনি অথবা আপনার বাবা-মা কাজ করলেও স্কলারশিপ পাওয়া যায়। তাছাড়া কিছু স্কলারশিপ পারিবারিক পটভূমির ওপর ভিত্তি করেও দেওয়া হয়। উদাহরণস্বরূপ- সামরিক পরিবারগুলোর জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা রয়েছে।
স্কলারশিপের মাধ্যমে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়। সেটা হতে পারে শিক্ষার্থীর পড়ালেখার পুরো খরচ অথবা কয়েক শ ডলার এককালীন অনুদান। তবে যেভাবেই হোক না কেন, স্কলারশিপের জন্য আবেদন করার বিশেষ কারণ হলো, এটি শিক্ষার্থীর শিক্ষার ব্যয় হ্রাস করতে সহায়তা করবে।

যেভাবে স্কলারশিপ পাওয়া যাবে
স্কলারশিপ পেতে হলে সর্বপ্রথম এটি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখা প্রয়োজন। এর জন্য শিক্ষার্থী যেই প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পরিকল্পনা করছেন, সেখানকার আর্থিক সহায়তা বিভাগে যোগাযোগ করা এবং পাবলিক লাইব্রেরি বা অনলাইনে তথ্য যাচাই করাসহ বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে পারেন। কিন্তু এক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত জরুরি। কেননা আজকাল কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান স্কলারশিপের নামে বিভ্রান্ত করে সাধারণ মানুষকে নানা রকম ফাঁদে ফেলছে। তাই স্কলারশিপের সামগ্রিক তথ্য এবং প্রস্তাবগুলো বৈধ কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।

অবশ্যই মনে রাখতে হবে, স্কলারশিপ বা অন্যান্য আর্থিক সহায়তার জন্য শিক্ষার্থীর কোনো অর্থ দিতে হয় না। স্কলারশিপ অনুসন্ধানের জন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নেওয়া যায়। তবে Scholarships.com ও একটি ভালো মাধ্যম।

কখন আবেদন করবেন
প্রতিটি স্কলারশিপ নির্ধারিত সময়সীমার ওপর নির্ভর করে। সাধারণত কলেজের প্রথম বর্ষের শুরু থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা চলাকালীন শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ দেওয়া হয়। সুতরাং শিক্ষার্থীকে শিক্ষাগত অবস্থান বিবেচনা করে এবং স্কলারশিপের যাবতীয় বিষয়াদি গবেষণা করে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করা উচিত। যদি শিক্ষার্থী কোনো স্কলারশিপ সুবিধা মিস করে থাকেন, তবে হাল ছেড়ে দেবেন না। বরং এখন কোনটিতে আবেদন করার যোগ্যতা বা সুযোগ আছে তা খুঁজে দেখুন।

যেভাবে আবেদন করবেন
প্রতিটি স্কলারশিপের একটি নিজস্ব আবেদন প্রক্রিয়া থাকে। শিক্ষার্থী যে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে চান, সেটির ওয়েবসাইট থেকেই ওই স্কলারশিপের জন্য যোগ্যতা এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। কিছু স্থানীয় সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান আপনাকে আবেদনপত্র পূরণ করতে বলবে। তবে বেশির ভাগ আবেদনপত্র অনলাইনেই ফাইল করা হয়।

সাধারণ একাডেমিকভিত্তিক স্কলারশিপগুলোর জন্য প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণের প্রয়োজন হয়, পাশাপাশি কোনো প্রদত্ত বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে একটি প্রবন্ধও প্রয়োজন হয়।

তাছাড়া ক্রীড়াবিষয়ক এবং প্রতিভাভিত্তিক স্কলারশিপের ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীকে দক্ষতার প্রমাণ সরবরাহ করতে বলবে। যেমন একটি লাইভ পারফরম্যান্স, একটি পোর্টফোলিও বা শিক্ষার্থীর ক্রীড়াবিষয়ক সাফল্যের চলচ্চিত্র ইত্যাদি হতে পারে।

তাই আবেদনপত্রটি মনোযোগসহকারে পড়ুন, তা পুরোপুরি পূরণ করুন এবং নিশ্চিত করুন যে আবেদনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেই আবেদনপত্রটি স্কলারশিপ দাতার কাছে পৌঁছাবে।

স্কলারশিপের অর্থ যেভাবে পাওয়া যায়
এটি সম্পূর্ণভাবে স্কলারশিপ দাতা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে। কিছু প্রতিষ্ঠান এই অর্থটি সরাসরি শিক্ষার্থীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিতে পারে। যেখানে এটি কোনো ফি বা অন্যান্য পরিমাণে দেওয়া হবে এবং তারপর অবশিষ্ট কোনো তহবিলের জন্য দেওয়া হবে। আবার কিছু প্রতিষ্ঠান সরাসরি চেকের মাধ্যমে অর্থটি প্রেরণ করতে পারে। তবে শিক্ষার্থীর উচিত স্কলারশিপ পাওয়ার পর তাদের জানানো যে, আপনি কোন মাধ্যমে অর্থটি গ্রহণ করতে চান। তাহলে পরবর্তী সময়ে আর কোনো সমস্যায় পড়তে হবে না।

স্কলারশিপ যেভাবে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করে

স্কলারশিপ পেতে হলে প্রয়োজন যোগ্যতা ও প্রতিভা। কারণ যেকোনো স্কলারশিপ দাতা প্রতিষ্ঠান একজন ভালো শিক্ষার্থীকেই স্কলারশিপ দিয়ে থাকে, যেন সে পড়াশোনা করে ভালো কিছু করতে পারে। তার প্রতিভার আলো যেন অর্থ বা অবস্থানের অভাবে নিভে না যায়। যখন একজন ভালো শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ দেওয়া হবে, তখন স্বাভাবিকভাবেই অন্যরা অনুপ্রাণিত হবে। তারাও চাইবে স্কলারশিপের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে। অর্থাৎ স্কলারশিপ তাদের উৎসাহকে প্রভাবিত করার মাধ্যমে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বৃদ্ধি করবে।

 কলি

 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের সংঘর্ষ, আহত ৭

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:০৭ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৭:০৮ পিএম
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের সংঘর্ষ, আহত ৭
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের দুই পক্ষে মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ছবি : খবরের কাগজ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার (২ জুলাই) পেনশন স্ক্রিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের সাতজন আহত হয়েছেন। 

সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক বদরুজ্জামান ভূঁইয়া।

সংঘর্ষে আহত পাঁচজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও সহকারী রেজিস্ট্রার তৌছিক আহমেদ রাহাত, সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মো. তানজিল হোসেন, সেকশন অফিসার মো. সায়েম, মিজানুর রহমান খান ও মাহামুদুল হাসান। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসারদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি ‘প্রত্যয়’ বাস্তবায়নসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অননুমোদিত ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য একটি ব্যানার টাঙান। তখন বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ওই ব্যানারটি সরিয়ে ফেলার অনুরোধ করেন। ব্যানারটি না সরানোয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা ব্যানার সরিয়ে ফেলেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ের হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় উভয় পক্ষ চেয়ার ছোড়াছুড়ি করে। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বন্দর থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে উভয় পক্ষের সাতজন আহত হন। 

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাহাউদ্দিন গোলাপ বলেন, ‘চলমান আন্দোলনকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করার জন্যই ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের নামে ভুয়া সংগঠনটি পরিকল্পিতভাবে এ কাজ করেছে।’

এদিকে ডিরেক্ট অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুব্রত কুমার বাহাদুর বলেন, ‘কর্মসূচি চলাকালে বিনা উসকানিতে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের লোকজন। আমাদের দুই সদস্যকে মেরে আহত করা হয়েছে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘অফিসারদের দুই পক্ষের মধ্যে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল জন্য নিদের্শ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেয়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনেও আন্দোলনে জবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৫ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৫ পিএম
কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনেও আন্দোলনে জবি শিক্ষার্থীরা
ছবি: খবরের কাগজ

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। ২০১৮ সালে সরকার ঘোষিত পরিপত্রের পুনর্বহালসহ চার দফা দাবি জানিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বেলা ১২টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। 

প্রতিবাদ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে থেকে বের হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মূল ফটকের সামনে এসে কিছুক্ষণ অবস্থান করে। এরপর বাহাদুর শাহ পার্ক হয়ে প্রতিবাদ মিছিলটি রায়সয়াহেব বাজার মোড়, তাতীবাজার মোড় প্রদক্ষিণ করে এসে পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্ত্বরের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা।

প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলা বিভাগের ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন মুন্না বলেন, কোটা প্রথার মাধ্যমে মেধাবীরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। আমাদের দাবি মেনে নিয়ে ২০১৮ সালে কোটা প্রথা বাতিল করে যে পরিপত্র জারি করা হয়েছিল সেটা পুনর্বহাল করতে হবে। আমরা যে চারটি দাবি জানিয়েছি তা মেনে নিতে হবে। আগামীকাল সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে প্রতিবাদ আন্দোলন কর্মসূচি পালিত হবে। আমাদের দাবি মানা না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

শিক্ষার্থীদের চারটি দাবি হলো-

১। ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। 

২। ১৮' এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।

৩। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে।  

 ৪। দূর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

মুজাহিদ বিল্লাহ/এমএ/ 

কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে পদযাত্রা, শাহবাগ অবরোধ

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৪ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৪ পিএম
কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে পদযাত্রা, শাহবাগ অবরোধ
ছবি: খবরের কাগজ

সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলের ২২ দিনের আল্টিমেটাম শেষে ফের আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এবার পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অংশ হিসেবে গণপদযাত্রা করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) দুপুর পৌনে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। পরে সেখান থেকে নীলক্ষেত-নিউমার্কেট হয়ে সাইন্সল্যাব দিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেয়। গণপদযাত্রায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের ফলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় রাস্তার দুই পাশের যানচলাচল।

এর আগে গতকাল সোমববার চার দফা দাবি ঘোষণা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে (সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে), সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে; দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরিফ জাওয়াদ/এমএ/

শিক্ষার্থীদের লাভের জন্যই প্রত্যয় স্কিম বাতিলের আন্দোলন: জবি শিক্ষক সমিতি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৭ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৮:৩৭ পিএম
শিক্ষার্থীদের লাভের জন্যই প্রত্যয় স্কিম বাতিলের আন্দোলন: জবি শিক্ষক সমিতি
ছবি: খবরের কাগজ

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চলমান সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও আন্দোলন কর্মসূচি শিক্ষার্থী ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে বৈষম্যের শিকার না হয় সেই লাভের জন্যই আন্দোলন বলে জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষক সমিতি।

সোমবার (১ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনারের সামনে সর্বাত্মক কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে দেওয়া বক্তব্যে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হাসাম এসব কথা তুলে ধরেন।

ড. শেখ মাশরিক হাসান তার বক্তব্যে বলেন, প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে আমরা শিক্ষকরা যে আন্দোলন করছি, সেটা শুধু আমাদের আন্দোলন নয়। এটা আমাদের শিক্ষার্থী ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আন্দোলন। আমরা যারা ১ জুলাইয়ের আগে শিক্ষকতার চাকরিতে যোগদান করেছি তারা এই প্রত্যয় স্কিমের কারণে ভুক্তভোগী হবো না। ১ জুলাইয়ের পর যেসব শিক্ষার্থীরা এই পেশায় আসবে তারা এই বৈষম্যের শিকার হবে। আমরা আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই আন্দোলনে নেমেছি। যাতে আমাদের সঙ্গে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আকাশ পাতাল বৈষম্য তৈরি না হয়।

এসময় শেখ মাশরিক আরও বলেন, একটি মহল এ আন্দোলনকে বিতর্কিত করার জন্য, শিক্ষার্থীদের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছানোর জন্য গুজব ছড়াচ্ছে যে এই আন্দোলন আমাদের স্বার্থে। কিন্তু আসলে এ আন্দোলন ভবিষ্যতে যারা শিক্ষকতায় যোগদান করবে তাদের জন্য।

এদিকে আজ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি। এদিন সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনে শিক্ষক, কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে আসলেও কোনো ক্লাস-পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী দাপ্তরিক কাজ করেননি।

মুজাহিদ বিল্লাহ/এমএ/

বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৯ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৭:৫৯ পিএম
বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন
ছবি : খবরের কাগজ

‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০৪তম দিবস উদযাপিত হয়েছে।

সোমবার (১ জুলাই) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পায়রা চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, বেলুন উড্ডয়ন, থিম সং পরিবেশন এবং কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

সকাল সাড়ে ১০টায় রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় টিএসসি মিলনায়তনে ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

স্পিকার বলেন, ‘জ্ঞান অর্জনের অন্যতম মাধ্যম উচ্চশিক্ষা। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের একটি লক্ষ্য ট্রানজেকশনাল এবং অপরটি ট্রান্সফরমেশনাল। প্রথম লক্ষ্যটির ক্ষেত্রে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা দানের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত করা হয়। উচ্চশিক্ষার দ্বিতীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শুধু ভালো চাকরি পাওয়া নয়, বরং এক্ষেত্রে জ্ঞান আহরণের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ মানবিক বিকাশ ঘটানো যেন সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষমতা অর্জন করা যায়।’

এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের সময়ের সদ্ব্যবহার, নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানান।

ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান বিতরণ করেছে, জ্ঞান সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয় একটি বড় দায়িত্ব পালন করেছে, তা হলো পূর্ববঙ্গের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীকে পথ দেখিয়েছে। এ অবদান ঐতিহাসিক। আমি মনে করি এমন অবদান বিশ্বে বিরল।’

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘২০৩৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চতর গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০৪৫ সালের মধ্যে গবেষণা-প্রধান ‘আর আই’ (RI) ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করতে ইতোমধ্যে একাডেমিক মাস্টার প্ল্যান এবং একাডেমিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে।’

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল শোভাযাত্রায় নেতৃত্বে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অ্যালামনাইয়ের সদস্যরা অংশ নেন।

অংশ নেয়নি শিক্ষক সমিতি

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেননি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা। যদিও বেশ কয়েকজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘১ জুলাই আমাদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। কিন্তু সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলমান থাকাতে প্রতীকীভাবে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। তবে যারা যেতে ইচ্ছুক, তাদের আমরা বারণ করিনি।’