![রাবিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন](uploads/2024/06/30/kota-1719742016.jpg)
সরকারি চাকরিতে বর্তমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করে তা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (৩০ জুন) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা কোটা পুনর্বহাল বাতিল, সব কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশের নিচে কমিয়ে আনা এবং কোটা সুবিধা ভোগকারীদের জীবনে যেকোনো ক্ষেত্রে কেবল একবার কোটার সুবিধা ভোগ করারসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
এ সময় পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আমানুল্লাহ খান বলেন, ‘কোটা থাকা কোনো দেশের জন্য শুভ লক্ষণ নয়। কিন্তু আমাদের দেশটা যারা রক্ত দিয়ে স্বাধীন করেছেন সাংবিধানিকভাবেই তাদেরকে সেটার প্রতিদান দেওয়া হয়েছে এবং সেটার ফল তাদের বর্তমান প্রজন্মও এখন অবধি ভোগ করছে। কিন্তু সেই প্রতিদানের পরিমাণই বা কতটুকু হওয়া দরকার ছিল। তারা সংখ্যায় দেশের মোট জনসংখ্যার ২ শতাংশেরও কম এবং তাদের জন্য কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৬ শতাংশ। যেটা একেবারেই অযৌক্তিক। রেলওয়েতে তাদের জন্য কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮২ শতাংশ। যেটা বলা যায়, সম্পূর্ণ কোটার দখলেই। আমরা কোটা বাতিল চাই না, কোটা পদ্ধতির সংস্কার চাই। আমাদের দাবি, এই কোটা শতাংশের পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ করা হোক। সেইসঙ্গে কোটা সুবিধা ভোগকারীদের জীবনে যেকোনো ক্ষেত্রে একবার কোটার সুবিধা নিতে পারবেন, তা করা হোক।’
সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী সজীব বলেন, ‘আমাদের পূর্বসূরীরাও এই কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেছেন। তারপর সংসদে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার আবারও সেটা প্রবর্তন করা হলো। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে সাম্য, ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এসেও সাম্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আমাদের দেশের কোটা পদ্ধতিতে একজন শিক্ষার্থী কোটা ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পরবর্তীতে আবার এই কোটা ব্যবহার করছে। তারা এক জীবদ্দশায় কয়েকবার ব্যবহার করে। এই পদ্ধতি বাতিল করতে হবে। একজন মানুষ তার জীবদ্দশায় একবারই কোটা ব্যবহার করতে পারবে এমন নিয়ম করা হোক।’
সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে আসেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই কৃষক-শ্রমিকের সন্তান। তবে এ ছাড়া বাকি যারা আসেন তারা সবাই প্রায় প্রতিষ্ঠিত পরিবার থেকেই আসেন। দেখা যায়, কোটার সুবিধাও কিন্তু তারা পেয়ে থাকেন। একজন কৃষক হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে তার সন্তানকে পড়াশোনা করান কিন্তু তারা কোটা সুবিধা পান না। অন্যদিকে যাদের বাবা-মা সরকারি চাকরি করেন, প্রতিষ্ঠিত পরিবারের সন্তান তারা ঠিকই কোটার সুবিধা লুফে নিচ্ছেন। কোটা থাকলে তো কৃষকের সন্তানের জন্য থাকা দরকার ছিল, মজুর শ্রমিকের সন্তানদের জন্যও থাকা দরকার ছিল। কিন্তু সেটা না হয়ে যারা সুবিধা পাচ্ছেন, তারা আরও বেশি পাচ্ছেন। আর যারা পাচ্ছেন না, তারা মোটেই পাচ্ছেন না।’
আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুল্লাহ মহিবের সঞ্চালনায় প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এ আন্দোলনে অংশ নেন।
সুমন/পপি/অমিয়/