![বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন](uploads/2024/07/01/DU1-1719842344.jpg)
‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০৪তম দিবস উদযাপিত হয়েছে।
সোমবার (১ জুলাই) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) পায়রা চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলোর পতাকা উত্তোলন, পায়রা উড়ানো, বেলুন উড্ডয়ন, থিম সং পরিবেশন এবং কেক কাটার মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
সকাল সাড়ে ১০টায় রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় টিএসসি মিলনায়তনে ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চশিক্ষা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
স্পিকার বলেন, ‘জ্ঞান অর্জনের অন্যতম মাধ্যম উচ্চশিক্ষা। উচ্চশিক্ষা গ্রহণের একটি লক্ষ্য ট্রানজেকশনাল এবং অপরটি ট্রান্সফরমেশনাল। প্রথম লক্ষ্যটির ক্ষেত্রে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা দানের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত করা হয়। উচ্চশিক্ষার দ্বিতীয় লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শুধু ভালো চাকরি পাওয়া নয়, বরং এক্ষেত্রে জ্ঞান আহরণের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ মানবিক বিকাশ ঘটানো যেন সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষমতা অর্জন করা যায়।’
এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের সময়ের সদ্ব্যবহার, নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন এবং উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানান।
ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ এফ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান বিতরণ করেছে, জ্ঞান সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয় একটি বড় দায়িত্ব পালন করেছে, তা হলো পূর্ববঙ্গের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীকে পথ দেখিয়েছে। এ অবদান ঐতিহাসিক। আমি মনে করি এমন অবদান বিশ্বে বিরল।’
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘২০৩৫ সালের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চতর গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০৪৫ সালের মধ্যে গবেষণা-প্রধান ‘আর আই’ (RI) ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করতে ইতোমধ্যে একাডেমিক মাস্টার প্ল্যান এবং একাডেমিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল শোভাযাত্রায় নেতৃত্বে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও অ্যালামনাইয়ের সদস্যরা অংশ নেন।
অংশ নেয়নি শিক্ষক সমিতি
সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেননি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক জিনাত হুদা। যদিও বেশ কয়েকজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক জিনাত হুদা বলেন, ‘১ জুলাই আমাদের প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। কিন্তু সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলমান থাকাতে প্রতীকীভাবে শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেনি। তবে যারা যেতে ইচ্ছুক, তাদের আমরা বারণ করিনি।’