সেবার মাধ্যমে বন্ধুত্ব’ এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সবুজ চত্বরে প্রতিষ্ঠিত হয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রোটার্যাক্ট ক্লাব। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ক্লাবের সদস্যরা বিভিন্ন সেবামূলক সামাজিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে আসছেন। কেবলমাত্র বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রোটার্যাক্ট ক্লাবের প্রাক্তন সদস্যরা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্স-রোটার্যাক্টর্স ফোরাম গঠন করেন। মূলত সেবামূলক সামাজিক দায়িত্ব পালন এবং সদস্যদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে এই ফরম গঠিত হয়।
এক্স-রোটার্যাক্টর্স ফোরামের বৃত্তি কার্যক্রম
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যায়নরত মেধাবী এবং অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার মাধ্যমে অধ্যায়ন কার্যক্রম নির্বিঘ্ন ও সহজ করতে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ফোরাম শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বৃত্তির পরিমাণ মাসিক ২ হাজার টাকা এবং প্রথম বছরে (২ সেমিস্টারে) ১৭টি বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বৃত্তির জন্য যেসব শর্ত
১. অন্য কোনো উৎস থেকে বৃত্তিপ্রাপ্ত হলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্স-রোটার্যাক্টর্স ফোরামের বৃত্তির জন্য আবেদন করা যাবে না।
২. বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্স-রোটার্যাক্টর্স ফোরামের বৃত্তিপ্রাপ্ত হলে অন্য কোনো উৎস থেকে বৃত্তি নেওয়া যাবে না। অন্য কোনো উৎস থেকে বৃত্তি নিতে চাইলে প্রাপ্তবৃত্তি বাতিলের জন্য ফোরামের সভাপতির কাছে আবেদন করতে হবে।
৩. কোনো অসামাজিক কিংবা বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত কোনো শিক্ষার্থী বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন না। বৃত্তিপ্রাপ্ত কোনো ছাত্র এসব কাজে লিপ্ত হলে তার বৃত্তি বাতিল করা হবে।
৪. আবেদনপত্রে কোনো ধরনের মিথ্যা তথ্য দেওয়া যাবে না। মিথ্যা তথ্য প্রমাণিত হলে আবেদনপত্র/বৃত্তি বাতিল করা হবে।
৫. অসম্পূর্ণ আবেদনপত্র এবং যেকোনো ধরনের সুপারিশ আবেদনকারীর অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে বৃত্তির জন্য আবেদনপত্র নেওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬ জন শিক্ষার্থী বৃত্তির জন্য আবেদন করেন। প্রাপ্ত আবেদন যাচাই-বাছাই এবং বৃত্তি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্স-রোটার্যাক্টর্স ফোরামের ৯ সদস্যের একটি কমিটি কাজ করে। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর ড. মো. রুহুল আমিন এবং সদস্য সচিব ছিলেন গোপালগঞ্জের দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম মিলন।
প্রথমে মেধাভিত্তিক ৪১ জন শিক্ষার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রণয়ন করা হয় এবং পরে তাদের মৌখিক সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের মেধা, অর্থনৈতিক অবস্থা ইত্যাদির ভিত্তিতে এবং প্রদত্ত তথ্য যাচাইবাছাই করে বৃত্তির জন্য ১৭ জন শিক্ষার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। বাছাই প্রক্রিয়ার সময় কমিটি মনে করে, তিন-চারজন আবেদনকারী ছাড়া সবাই এই বৃত্তি পাওয়ার যোগ্য, কিন্তু আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে সবাইকে বৃত্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সমাজের সামর্থ্যবান ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান যদি এগিয়ে আসে তাহলে এই কার্যক্রমকে ভবিষ্যতে আরও বেগবান করা যাবে। এতে মেধাবী ও অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন।
সালমান/