উপাচার্য মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে এসে এক অফিস-আদেশকে ঘিরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) উপাচার্য ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদারকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার (২৪ জুন) বিকেলে উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের দাবি, কর্মচারী ও কর্মকর্তা নীতিমালা-২০১৫ পুনর্বহাল না করা হলে, তাদের অবস্থান থেকে সরবেন না। সেই সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও হুশিয়ারী দেন তারা। দাবি পূরণে উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন প্রায় তিন শতাধিক কর্মচারী।
বুয়েটের সহকারী লাইব্রেরিয়ান মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘গত বছরের একটি আদেশ হঠাৎ করে আজকে জানানো হলো, যা সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর স্বার্থবিরোধী। এতদিন নীতিমালা বাতিলের বিষয়টি কর্তৃপক্ষ লুকিয়ে রেখেছিল। আমরা নীতিমালা বহাল চাই। অন্যথায় আন্দোলন চলমান থাকবে।’ আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করতে উপাচার্যকে আহ্বান জানান তিনি।
সোমবার (২৪ জুন) রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রাসাদ মজুমদার তার কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন।
বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তর পরিচালক (ডিএসডাব্লিউ) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল আমিন সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এখনও অবস্থানে রয়েছেন। উপচার্য অফিসেই রয়েছেন, যদিও এটিকে বিক্ষোভ বলা ঠিক হবে না।’ তিনি আরো জানান, ‘উপাচার্যের অফিস এবং বাসভবনে লাগোয়া। তাই তিনি চাইলেই অফিস থেকে যেকোন সময় বাসভবনে যেতে পারবেন।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চেয়ে মুঠোফোনে একাধিকবার বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রাসাদ মজুমদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
এর আগে গত রবিবার প্রকাশিত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিনের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরেই মূলত ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ১৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত ফিন্যান্স কমিটির ৫৫তম অধিবেশনের কার্যবিবরণীর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে একই বছরের ২৭ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৫৪০তম সভায় নতুন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়, গত ২৭ ডিসেম্বরের পরবর্তী সময়ে নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে বুয়েটের কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল প্রাপ্যতার জন্য বিবেচিত হবেন না; এবং এরইমধ্যে যাদের পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড সেল দেওয়া হয়েছে তা অপরিবর্তিত থাকবে। আর যাদের পদোন্নতি, পদোন্নয়ন, সিলেকশন গ্রেড, সিনিয়র গ্রেড স্কেল দেওয়া হয়েছে, তাদের চাকরি শেষ হলে বা পদত্যাগ করলে বা অপসারণ বা পদচ্যুত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাদের অর্গানোগ্রাম বহির্ভূত পদ বিলুপ্ত হবে এবং অর্গানোগ্রামভুক্ত মূল পদ শূন্য হবে। পরবর্তী সময়ে কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী যদি সরকারি নীতিমালায় এরইমধ্যে বুয়েট প্রণীত নীতিমালা-২০১৫ এর মাধ্যমে প্রাপ্ত গ্রেডের চেয়ে উচ্চতর গ্রেড অথবা পদপ্রাপ্ত হন, তাহলে তা প্রদান করা হবে।
আরিফ জাওয়াদ/এমএ/