![শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বিসিআই প্রতিনিধিদের সৌজন্য সাক্ষাৎ](uploads/2024/02/17/1708157528.corporet-1.jpg)
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সঙ্গে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরীর (পারভেজ) নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
এ সময় মন্ত্রীকে বিসিআই পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং বিসিআইয়ের ‘আমার পণ্য আমার দেশ’ লোগো সংবলিত একটি ফ্রেম উপহার দেওয়া হয়।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টায় শিল্প ভবনে এ সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বিসিআই সভাপতি বলেন, ‘টানা দ্বিতীয় মেয়াদে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় বিসিআইয়ের পক্ষ থেকে আমরা আপনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। বিসিআই সমগ্র বাংলাদেশভিত্তিক একক এবং একমাত্র জাতীয় শিল্প চেম্বার, যা স্থানীয় সব শিল্পের উন্নয়নের পথে সব প্রতিবন্ধকতা নিরসনে কাজ করে চলেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের শিল্প খাত একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশে কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান তার পূর্ণ সক্ষমতায় চলতে পারছে না। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে সব প্রতিষ্ঠানের সেলস ড্রপ করেছে। গ্যাসের প্রেসার কম। ঋণের উচ্চ সুদের হার এবং সবকিছু মিলিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে দেশীয় শিল্প। নিরবচ্ছিন্ন জালানি সরবরাহের আশ্বাসে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্য বৃদ্ধির অজুহাতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছিল। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারের জ্বালানির দাম অনেক কমে এসেছে তার পরও শুনছি আবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা হবে। জ্বালানি সমস্যার একটা টেকসই সমাধান হওয়া জরুরি এবং জ্বালানির ক্ষেত্রে শিল্প খাতকে একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা স্পষ্ট পরিকল্পনা দেওয়া গেলে শিল্প খাতও সে অনুসারে আগাতে পারবে।’
আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দেশের এসব সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বসেছিলাম বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতি সম্পর্কে জানতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এখন প্রধান লক্ষ্য মুদ্রাস্ফীতি ৬ শতাংশে নিয়ে আসা। তারা ব্যাংকের ঋণের সুদের হার একটা নির্দিষ্ট পর্যায়ে রাখতে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু পলিসির কারণে ব্যাংকগুলো বন্ডে বিনিয়োগের দিকে উৎসাহিত হচ্ছে। এর ফলে ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দেবে। নতুন বিনিয়োগ আসবে না। সেই সঙ্গে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাবে। আমাদের এখন বর্তমান শিল্পগুলো বাঁচিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি। দেশের শিল্প খাত রাজস্ব বোর্ডের বিভিন্ন নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে নতুন নতুন নীতির কারণে ব্যবসা পরিচালনা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমরা এনবিআরের চেয়ারম্যানকে নিয়ে একটি সভা আহ্বানের জন্য মন্ত্রীকে অনুরোধ করছি।’
বিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি বলেন, ‘দেশে সেবাশিল্পগুলো এখনো ইউটিলিটি বিল দিচ্ছে কমার্শিয়াল রেটে। আমরা ইউটিলিটি বিলগুলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেটে করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।’
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের শিল্পগুলোর অবস্থা সম্পর্কে আমরা অবগত রয়েছি। আমরা চাই দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাক, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাক। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে অর্থমন্ত্রী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, এনবিআর চেয়ারম্যান, অর্থসচিব এবং দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি সভা আয়োজন করতে যাচ্ছি। যেখানে সব পক্ষ মিলে দেশীয় শিল্প যাতে টিকে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে।’
সভায় বিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি প্রীতি চক্রবর্তী, সহসভাপতি মোহাম্মদ ইউনুস, পরিচালক শহীদুল ইসলাম নিরু, ড. দেলোয়ার হোসেন রাজা, জিয়া হায়দার মিঠু, মিজানুর রহমান, খায়ের মিয়া, নাজমুল আনোয়ার, সোহানা রউফ চৌধুরী, মো. সেলিম জাহান, মো. মাহফুজুর রহমান এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।
জোবাইদা/অমিয়/