ঢাকা ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

উদ্যোগের অভাব, সংকটে পর্যটন

প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:৪৭ পিএম
আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৫৩ পিএম
উদ্যোগের অভাব, সংকটে পর্যটন
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের লক্ষ্মীবাউর জলাবন। খবরের কাগজ

প্রকৃতির রম্য নিকেতন বৃহত্তর সিলেটের প্রবেশদ্বার হবিগঞ্জ। হাওর-পাহাড়-অরণ্যে ঘেরা এই জেলাকে প্রকৃতি সাজিয়েছে অকৃপণভাবে। এখানে রয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বনাঞ্চল রেমা-কালেঙ্গা, লক্ষ্মীবাউর জলাবন, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজরিত তেলিয়াপাড়া স্মৃতিস্তম্ভ, সবুজ চা বাগানে গালিছা বিছানো উঁচু-নিচু টিলা আর মনোরম রাবার বাগান। রয়েছে বর্ষায় বিস্তীর্ণ হাওরের মনভোলানো রূপ, কমলাবতীর সাগরদিঘি, রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ, মোঘল আমলের স্থাপত্য উচাইল শাহী মসজিদ, ৭০০ বছরের বিথঙ্গল আখড়াসহ নানা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। সেই সঙ্গে রয়েছে খাসিয়া, টিপরা এবং মণিপুরী আদিবাসী সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্যময় জীবনধারার সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ। ভ্রমণপিপাসুদের আকৃষ্ট করার মতো এতসব দর্শনীয় স্থান থাকার পরও শুধু সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ছাড়া জেলার অন্য কোনো স্থানে পর্যটকের খুব একটা দেখা মেলে না।

জেলার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন স্পট সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। চুনারুঘাট উপজেলার রঘুনন্দন পাহাড়ে অবস্থিত এই উদ্যানে রয়েছে প্রায় ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তু। এর মধ্যে প্রায় ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর। রয়েছে প্রায় ২০০ প্রজাতির পাখি এবং সমপরিমাণ গাছপালা। বিলুপ্তপ্রায় পাখি, জীবজন্তু আর গাছপালার সমারোহ এই উদ্যানে।

উদ্যানের অভ্যন্তরভাগে টিপরাপাড়ায় একটি পাহাড়ি আদিবাসীর ২৪টি পরিবার বসবাস করে। উদ্যানের কাছাকাছি আছে ৯টি চা বাগান। এই সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে প্রতি বছর সমাগম ঘটে কয়েক লাখ দর্শনার্থীর। তবে উদ্যানের ভেতরে নানা অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ রয়েছে দর্শনার্থীদের। সেই সঙ্গে উদ্যানের কাছাকাছি রাত কাটানোর মতো কোনো হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট না থাকায় দূর-দূরান্তের পর্যটকদের পড়তে হয় বিপাকে। যে কারণে এই উদ্যানটিও কাঙ্ক্ষিত পর্যটক টানতে পারছে না। একই উপজেলায় রয়েছে রেমা-কালেঙ্গা বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। আয়তনের দিক থেকে সুন্দরবনের পর দেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বনভূমি এটি। এর আয়তন ১৭৯৫ দশমিক ৫৪ হেক্টর। এই বনে প্রায় ১৬৭ প্রজাতির পাখি, ৩৭ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ এবং সাত প্রজাতির উভচর রয়েছে। সেই সঙ্গে রয়েছে ৬৩৮ প্রজাতির গাছপালা।

চুনারুঘাট শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসীমান্তঘেঁষা এই বনে যেতে হলে প্রায় ৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। এ কারণে একমাত্র মোটরসাইকেল ছাড়া বনের ভেতরে যাতায়াত সম্ভব নয়। বৃষ্টি হলে মোটরসাইকেল দিয়েও যাওয়া অসম্ভব হয়ে যায়। শুধুমাত্র যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটালে পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ হবে এ বনাঞ্চলটি।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থাপনা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সাতছড়ি এবং রেমা কালেঙ্গাকে ঘিরে বড় ধরনের পর্যটনের সম্ভাবনা রয়েছে এখানে। কিন্তু শুধু উদ্যোগ এবং প্রচারের অভাবে সেটিকে আমরা তুলে ধরতে পারছি না। বিশেষ করে বনের চারপাশে শুধু চা বাগান। আইন অনুযায়ী চা বাগানে কোনো স্থাপনা গড়ে তোলা যায় না। যে কারণে কোনো হোটেল-মোটেল-রিসোর্ট গড়ে উঠছে না। এ ক্ষেত্রে সরকার যদি পর্যটন নিয়ে প্রচার বাড়ায় এবং স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে যে আইনি জটিলতা রয়েছে, সেখানে সহযোগিতা করে, তাহলে বেসরকারি পর্যায়েও অনেক উদ্যোক্তা এগিয়ে আসবেন।’

প্রবীণ সাংবাদিক, আইনজীবী ও পরিবেশকর্মী মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল বলেন, ‘মূলত অরণ্য, পাহাড়, হাওর এবং ঐতিহাসিক আর প্রাচীন স্থাপত্য, সবকিছু একসঙ্গে দেখার অন্যতম জেলা হবিগঞ্জ। ধরা যাক, বানিয়াচং উপজেলার কথা। এই উপজেলায় রয়েছে আয়তনের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ জলাবন লক্ষ্মীবাউর। স্থানীয়ভাবে এটি খরতির জঙ্গল হিসেবে পরিচিত। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পুকুর ‘কমলাবতীর সাগরদিঘি’, ৭০০ বছরের পুরনো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান বিথঙ্গল আখড়া, রাজবাড়ির ধ্বংসাবশেষ, প্রথম ভূ-পর্যটক রামনাথ বিশ্বাসের বাড়িসহ অসংখ্য দর্শনীয় স্থান রয়েছে এখানে।’ তিনি বলেন, ‘এসব দর্শনীয় স্থানের কথা এখনো মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। মানুষকে জানাতে হবে হবিগঞ্জে এগুলো আছে। পাশাপাশি প্রতিটি দর্শনীয় স্থানকে পর্যটকবান্ধব করে তুলতে হবে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। তাহলে প্রতি বছর লাখ লাখ দর্শনার্থীর পা পড়বে এ জেলায়।’

চুনারুঘাটে খাসিয়া, টিপরা এবং মণিপুরী আদিবাসী সম্প্রদায়ের গ্রাম রয়েছে। এই আদিবাসীদের গ্রামগুলোকে ঘিরে কমিউনিটি বেইজড ট্যুরিজমেরও সম্ভাবনা রয়েছে এই জেলায়।’

ব্যবসায়ী নেতারা মনে করেন, প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা দর্শনীয় স্থানগুলোকে ঢেলে সাজালে শুধু দেশি নয়, বিদেশি পর্যটকের চোখ আটকাবে এ জেলায়। আর এই পর্যটনকে ঘিরে প্রতি বছর অন্তত কয়েক শ কোটি টাকার ব্যবসা সম্ভব। এতে কর্মসংস্থান হবে কয়েক হাজার মানুষের।

হবিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্টির সভাপতি মিজানুর রহমান শামীম বলেন, ‘হবিগঞ্জের পর্যটনকে উন্নত করতে হলে প্রথমে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। সরকার এখানে কয়েক শ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে যদি পর্যটন স্পটগুলোকে ঢেলে সাজায়, তাহলে বেশি-বিদেশি পর্যটক আসবে।’

তিনি বলেন, ‘অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা হবিগঞ্জের পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করতে চান। কিন্তু পর্যটনের অব্যবস্থাপনার কারণে অনেকে বিনিয়োগ করতে ভয় পান।’

এ বিষয়ে বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘করোনার কারণে পর্যটন খাতে তেমন উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। তবে সারা দেশের পর্যটন নিয়ে বড় একটি মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে। যেখানে অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক। এই মাস্টার প্ল্যানে হবিগঞ্জকেও রাখা আছে। নির্বাচনের পরই এর কাজ শুরু হবে।’

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে ২ জনের মৃত্যু

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:৫০ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:৫৩ এএম
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে ২ জনের মৃত্যু
ফাইল ফটো

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক পাহাড়ধসে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (৩ জুলাই) ভোরে উখিয়ার ৮ ও ১১নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে। 

বিষয়টি খবরের কাগজকে নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন।

বিস্তারিত আসছে..

১৩ কে‌জির একটি পাঙাশ ১৮ হাজারে কিন‌ল পু‌লিশ

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১০:০৬ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১০:০৭ এএম
১৩ কে‌জির একটি পাঙাশ ১৮ হাজারে কিন‌ল পু‌লিশ
ছবি : খবরের কাগজ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপু‌রে যমুনা নদী‌তে জে‌লের জা‌লে ধরা প‌ড়া ১৩ কে‌জি ওজ‌নের একটি পাঙাশ মাছ ১৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সোমবার বি‌কে‌লে উপ‌জেলার গো‌বিন্দাসী বাজা‌র থেকে মাছ‌টি কিনে নেন ভূঞাপুর থানার সহকা‌রী উপ‌প‌রিদর্শক (এএসআই) মঞ্জুরুল ইসলাম।  

জানা গে‌ছে, উপ‌জেলার খানুরবা‌ড়ি এলাকার বিমল হালদার বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় যমুনা নদী‌তে জাল ফে‌লেন। প‌রে তার জা‌লে বিশালাকৃ‌তির পাঙাশ মাছ‌টি আট‌কে যায়। তি‌নি মাছ‌টি বি‌ক্রির জন‌্য গো‌বিন্দাসী বাজা‌রে বাবলু হালদা‌রের মাছের আড়‌তে নি‌য়ে যান। 

মাছ ব‌্যবসায়ী হা‌লিম বলেন, ‘বিমল হালদারের কাছ থেকে মাছ‌টি ১৫ হাজার টাকায় কিনি। প‌রে মাছ‌টি এক পু‌লিশ সদস্যের কা‌ছে ১৮ হাজার টাকায় বি‌ক্রি ক‌রেছি।’

ভূঞাপুর থানার এএসআই মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘মা‌ছের পাইকার বলার পর পাঙাশ মাছ‌টি নি‌য়ে‌ছি। ত‌বে কত দি‌তে হ‌বে এখনো ব‌লে‌ননি।’

রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের শঙ্কায় মাঠে প্রশাসন

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের শঙ্কায় মাঠে প্রশাসন
ছবি : খবরের কাগজ

এখন মধ্য আষাঢ়। প্রকৃতি রং বদলে হয়ে উঠেছে সবুজ-সজীব। কিন্তু আকাশের কালো মেঘ শঙ্কা আর ভীতি বাড়াচ্ছে রাঙামাটির পাহাড়ের পাদদেশে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ বসতিতে। মাত্র ৭ বছর আগে ২০১৭ সালের ১৩ জুন ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড়ধসে পাঁচ সেনাসদস্যসহ ১২০ জন এবং ২০১৮ সালের ১২ জুন নানিয়ারচরে ১১ জনের প্রাণহানি ঘটে। সে ভয়াল স্মৃতি এখনো চোখের সামনে ভেসে উঠে রাঙামাটির মানুষের।

অথচ বৃষ্টির অভাবে গেল কয়েক মাস কাপ্তাই হ্রদে দেখা দেয় পানিস্বল্পতা। হ্রদের ওপর নির্ভরশীল বিদ্যুৎ উৎপাদন, মৎস্য উৎপাদন, নৌ-যোগাযোগ ঠেকে তলানিতে। আর এখন টানা পাঁচদিনের হালকা-ভারী সেই বৃষ্টিতেই রাঙামাটিতে যেন নেমে এসেছে স্থবিরতা। পাহাড়ধসের শঙ্কা আর হ্রদের পাহাড়ি ঢলের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়ও ঘটছে ছন্দপতন।

তবে এবারের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পাহাড়ধসের আশঙ্কায় শহরের ৩১টি এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের জন্য ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়া সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুম। তবে আগ্রহ নেই ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের। তাদের অনেকে বলছেন, ঘরবাড়ি-আসবাবপত্র, মূল্যবান সম্পদ ও গবাদিপশু চুরির ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে তারা যেতে চাইছেন না। 

শহরের শিমুলতলি, রূপনগর, ভেদভেদী, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি বেড়েছে। এসব বসতি নির্মাণ রোধে দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে দুর্যোগকালীন ক্ষয়ক্ষতি কমাতে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন আর জনসচেতনতা বাড়ানোর জোর জেলা প্রশাসনের। এর বাইরে জেলার আরও ৯টি উপজেলায় পাহাড়ধসের আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন নজরদারি, মাইকিং ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করে পরিস্থিতিকে নজরে রাখছে। সব মিলিয়ে জেলায় ২৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এদিকে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢলে কাসালং ও মাইনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দীঘিনালা-সাজেক সড়কের কবাখালী, গঙ্গারাম, মাসালং ও বাঘাইহাটে সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাজেকের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে ফিরতে না পারায় সাজেকে আটকা পড়েছেন শতাধিক পর্যটক। এ ছাড়া বাঘাইছড়ির বেশ কয়েকটি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার বারবিন্দু ঘাট, মাস্টারপাড়া, পশ্চিম মুসলিম ব্লক, উপজেলা সদর, লাইল্যা ঘোনা, এফ ব্লক, রূপকারি ও পুরাতন মারিশ্যা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে খোলা হয়েছে ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র।

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা বাঘাইছড়িতে বন্যার আশঙ্কা করছেন। এরই মধ্যে দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, বৃদ্ধ মানুষ ও রোগীদের নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উঠতে শুরু করেছেন। বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আকতার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আর পানি সরে গেলে সাজেকে আটকাপড়া পর্যটকরা ফিরতে পারবেন।

বৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে ও পাহাড়ের একাংশে ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত (মঙ্গলবার রাত ৯টা) কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে জেলার বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলায় নিম্নাঞ্চলও ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। 

চোখ রাঙাচ্ছে সাঙ্গু, বন্যা আতঙ্কে সাতকানিয়াবাসী

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
চোখ রাঙাচ্ছে সাঙ্গু, বন্যা আতঙ্কে সাতকানিয়াবাসী

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ইতিহাসে গত বছরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার রেশ না কাটতেই আবার চোখ রাঙাচ্ছে বন্যা। পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু নদীর পানি ক্রমশ বাড়ছে। সাঙ্গু নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে শাখা খালগুলোর পানি উপচে প্লাবিত হচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার কেরানিহাট এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল। টানা বর্ষণ ও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত রবিবার রাত থেকে পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন নদী ও খালের পানি বাড়ার পাশাপাশি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাঙ্গর খালের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকার লোকালয়ে ঢুকছে। এ ছাড়াও পাহাড়ি ঢলের পানি কেরানিহাট-বান্দরবান মহাসড়কের দস্তিদার হাট অংশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ বন্যা।

সাঙ্গু নদীর বাজালিয়া অংশের চৌধুরী পাড়ার বাঁধটির কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ায় জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কয়েক দফা বরাদ্দের পরও বাঁধটির কিছু অংশ অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ায় বন্যা আতঙ্কে দিন পার করছেন স্থানীয়রা। গত বছরগুলোতে এ বাঁধ দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দেয়। সাঙ্গুর পানি লোকালয়ে প্রবেশ ঠেকাতে বাঁধটির কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাপস কান্তি দত্ত বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু নদীতে ভেসে আসা জ্বালানি কাঠ সংগ্রহে ব্যস্ত লোকজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। এ ছাড়াও নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ও সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য খাবারেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, ‘সাঙ্গু নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে শাখা খালগুলোর পানি উপচে নিচু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।’

পরীক্ষায় অংশ নিতে ২২ শিক্ষার্থীর মানববন্ধন

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
পরীক্ষায় অংশ নিতে ২২ শিক্ষার্থীর মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের ভূঞাপু‌রে ক‌লেজ কর্তৃপ‌ক্ষের অব‌হেলায় এইচএস‌সি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ক‌রে‌ছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দি‌কে উপ‌জেলার নিকরাইল শম‌সের ফ‌কির ডিগ্রি ক‌লে‌জের পরীক্ষা ব‌ঞ্চিত ২২ জন শিক্ষার্থী এই মানববন্ধন ক‌রে। এ সময় তারা শিক্ষক লোকমান হো‌সেনের ব‌হিষ্কারও দাবি ক‌রে। মানববন্ধন শেষে বি‌ক্ষোভ মি‌ছিল বের ক‌রে শিক্ষার্থীরা। এদি‌কে ওই ক‌লে‌জের বাংলা বিভা‌গের শিক্ষক লোকমান হোসেন‌কে সাম‌য়িক ব‌হিষ্কার করেছে ক‌লেজ কর্তৃপক্ষ।

পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা পরীক্ষার্থীরা জানায়, ক‌লেজ কর্তৃপ‌ক্ষের চা‌হিদা অনুযায়ী ফরম পূরণের টাকা দি‌তে পারেনি তারা। প‌রে ওই ‌শিক্ষক লোকমান হোসেনের মাধ‌্যমে কম টাকায় ফরম পূরণ করে। কিন্তু পরে ক‌লে‌জের অধ‌্যক্ষ বো‌র্ডে তা‌দের ২২ জ‌নকে প্রবেশপত্র না দি‌তে অভিযোগ দেয়। এতে পরীক্ষা থে‌কে ব‌ঞ্চিত হয়েছে তারা। প‌রে শিক্ষক লোকমানও এই বিষ‌য়ে কোনো সুরাহা করেন‌নি। 

শম‌সের ফ‌কির ডিগ্রি ক‌লে‌জের ভারপ্রাপ্ত অধ‌্যক্ষ মো. আক্তারুজ্জামান জানান, শিক্ষার্থী‌রা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার দাবি‌তে কলেজে ও পরীক্ষা কে‌ন্দ্রের সাম‌নে মানববন্ধন ক‌রে‌ছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ক‌লে‌জ শিক্ষক লোকমান হো‌সেন‌কে সাম‌য়িক ব‌হিষ্কার করা হ‌য়ে‌ছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, অবৈধভাবে ফরম পূরণের কারণে ওই ২২ জনের আবেদন বাতিল করেছে শিক্ষাবোর্ড। তা ছাড়া জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কলেজ পরিচালনা কমিটি। তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।