ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

সাবেক অতিরিক্ত আইজিপির বিপুল সম্পদের সন্ধান

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:২৩ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১১:২৩ এএম
সাবেক অতিরিক্ত আইজিপির বিপুল সম্পদের সন্ধান
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ও বিআইডব্লিউটিএর সাবেক চেয়ারম্যান ড. শামসুদ্দোহা খন্দকার এবং তার স্ত্রীর নামে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের দুজনের অবৈধ সম্পদ অন্তত ৩০ কোটি টাকার। এর মধ্যে শামসুদ্দোহার ২ কোটি ও তার স্ত্রী ফেরদৌসী সুলতানা খন্দকারের প্রায় ২৮ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে। 

এ-সংক্রান্ত দুটি মামলার তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে। কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালতে পৃথক দুটি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। শামসুদ্দোহা দুই চার্জশিটেই আসামির তালিকায় আছেন। একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও হুলিয়া জারির আবেদন জানানো হয়েছে। গতকাল দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

২০১৯ সালের ২১ নভেম্বর দুদকের উপপরিচালক (বর্তমানে পিআরএল ভোগরত) শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ পৃথক দুটি মামলা করেন। তিনি মামলার তদন্ত শেষে ২০২২ চার্জশিট দাখিলের অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করেন। 

এরপর গত বছর মে মাসে কমিশন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করে দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলমকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। খোরশেদ আলম পুনরায় তদন্ত করে সম্প্রতি চার্জশিট দাখিলের অনুমতি চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কমিশন এই প্রতিবেদন অনুমোদন করলে গতকাল আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এদিকে শামসুদ্দোহা গুলশানে সরকারি বিলাসবহুল বাড়ি অবৈধভাবে দখলে রেখে ৮ বছর ধরে বসবাস করছেন বলে জানা গেছে। 

একটি চার্জশিটে শামসুদ্দোহার বিরুদ্ধে রাজধানীর খিলক্ষেত ও ঢাকার নবাবগঞ্জে ৩৫টি দলিলে ৫৬৩ শতক জমির মালিকানার তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া এক্সিম ব্যাংক করপোরেট শাখায় ০৩৯১২১০০২০৫৭০১ অ্যাকাউন্টে জমা ১৪ কোটি ১৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৫৫ টাকা পাওয়া যায়। তিনি অর্গানিক অ্যাগ্রো ফার্মস নামে একটি অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের মালিকানা দেখিয়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে অন্তত ৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা ঋণ নেন। 

এ ছাড়া তার নামে ২৫ লাখ টাকা করে তিনটি অ্যাকাউন্টে মোট ৭৫ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া যায়। এভাবে তার নামে ২১ কোটি ৫ লাখ ৯ হাজার ৭৩৭ টাকার সম্পদ রয়েছে। তিনি দুদকে দাখিল করা সম্পদবিবরণীতে ১২ কোটি ৬০ লাখ ৯৯ হাজার ৫১৬ টাকার সম্পদের মালিকানা দাবি করেন। ফলে তিনি ৮ কোটি ৪৪ লাখ ১০ হাজার ২২১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। এর মধ্যে অবৈধ সম্পদের পরিমাণ ২ কোটি ৫৭ লাখ ৩ হাজার ৩৭৮ টাকা। 

শামসুদ্দোহার বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিটে ৩৪টি নথি ও দালিলিক তথ্যপ্রমাণ দাখিল করা হয়েছে এবং তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। 

অপর চার্জশিটে শামসুদ্দোহার গৃহিণী স্ত্রী ফেরদৌসীর নামে রাজধানীর নিকুঞ্জে ৫ শতক, খিলক্ষেতে ৩৭ শতক, গুলশানের বিভিন্ন মৌজায় ৮৮ শতক, গাজীপুরের বিভিন্ন মৌজায় ৪.৬৪ একর ও নবাবগঞ্জে ১২.৮৭ একর জমিতে ওয়ান্ডারেলা গ্রিন পার্ক জমির বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। তার নামে এক্সিম ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া ও প্রাইম ব্যাংকসহ বিভিন্ন অ্যাকেউন্টে বিপুল পরিমাণ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। 

সব মিলে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট ৪১ কোটি ২৯ লাখ ১২ হাজার ৩১ টাকা জমা ও উঠানো হয়েছে। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংক করপোরেট শাখায় ০৩৯১২১০০০৭৯৭৯১ অ্যাকাউন্টে জমা ৩৫ কোটি ২৭ লাখ ১২ হাজার ২৪৮ টাকা পাওয়া যায়, যা ২০২২ সালের ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনি উত্তোলন করেন। 

তার নামে মোট ৩১ কোটি ৪৯ লাখ ১ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুদকে দাখিল করা সম্পদবিবরণীতে তিনি ৩ কোটি ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকার সম্পদের মালিকানা দাবি করেন। ফলে তিনি ২৮ কোটি ৪৭ লাখ ৩ হাজার ৮৯১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন। এর মধ্যে ২৭ কোটি ৪৮ লাখ ৮২ হাজার ৪৯১ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জিত বলে দুদকের তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে। 

ফেরদৌসীর বিরুদ্ধে দেওয়া চার্জশিটে ৩৪টি নথি ও দালিলিক তথ্যপ্রমাণ দাখিল করা হয়েছে এবং তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। 

সরকারি বাড়ি দখল: গুলশান ১৩৫ নম্বর রোডের এসইএস (এ)৬ নম্বর প্লট। এক বিঘা জমির ওপর নির্মিত সরকারি ডুপ্লেক্স বাড়ি। গত আট বছর এই সরকারি বাড়িতে আছেন শামসুদ্দোহা। এ সময়ে তিনি কোনো ভাড়া দেননি। উল্টো বাড়িটি এককালীন বরাদ্দ চেয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। তবে পূর্বাচলে আরেকটি প্লট পাওয়ায় আবেদন নাকচ হয়। 

তবু তিনি বাড়িটি ছাড়েননি। তাকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতে একবার ম্যাজিস্ট্রেটও নিয়োগ দেয় আবাসন পরিদপ্তর। তবে পুলিশের প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় সে প্রক্রিয়া থেমে যায়। এর পর আবাসন পরিদপ্তর আর কখনো তাকে উচ্ছেদের চেষ্টা করেনি।

বিলাসবহুল ওই বাড়িতে একসময় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নূর মোহাম্মদ থাকতেন। তিনি অবসরে যাওয়ার পর ২০০৮ সালে আবাসন পরিদপ্তর পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শামসুদ্দোহা খন্দকারকে বসবাসের জন্য ওই বাড়ি বরাদ্দ দেয়। ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর শামসুদ্দোহা খন্দকার প্রেষণে বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান। বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। 

ওই বছরের ৪ মার্চ তিনি অবসর-উত্তর (পিআরএল) ছুটিতে যান। পিআরএলে থেকেও তিনি বাড়িটির দখলে থাকেন। এরপরও তিনি বাসাটি ছাড়েননি। ঢাকায় থাকার মতো তার কোনো বাড়ি বা ফ্ল্যাট না থাকার কারণ উল্লেখ করে ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বাড়িটি এককালীন বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেন। পূর্ত মন্ত্রণালয় আবেদনটি নাকচ করলে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন। 

মালয়েশিয়ার হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সঙ্গে স্পিকারের বৈঠক

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:১৯ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:২৫ পিএম
মালয়েশিয়ার হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সঙ্গে স্পিকারের বৈঠক
ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টে দেশটির হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার তান সেরি দাতো ড. জোহারি বিন আব্দুলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বৈঠকে তারা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্পর্ক, আসিয়ানে বাংলাদেশের সদস্যপদ, রোহিঙ্গা ইস্যু, সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপসহ শ্রমবাজার, শিক্ষা ও পর্যটন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করেন। 

স্পিকার ড. শিরীন বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পরপরই স্বীকৃতি দিয়েছিলো এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়া সফর করেছিলেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন অভিযাত্রার মাধ্যমে দারিদ্য বিমোচন, শিক্ষা, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, ডিজিটালাইজেশন, তথ্য-প্রযুক্তি, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের প্রশংসনীয় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। 

স্পিকার বলেন, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া পারস্পারিক সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তি, ব্লু ইকোনোমি, জলবায়ু পরিবর্তন, এনার্জি সেক্টর, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করতে পারে। এসময় তিনি বাংলাদেশের ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য মালয়েশিয়ার প্রতি আহ্বান জানান এবং  দু'দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গতিশীল করার বিষয়ে জোর দেন।   

মালয়েশিয়া প্রায় ৫ লাখ বাংলাদেশি জনশক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ায় স্পিকার মালয়েশিয়ার সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে যে বিপুল সংখ্যায় মানবসম্পদ তাদের উন্নয়ন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করেছে তা উভয় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।

এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী মালয়েশিয়ার সংসদে পৌঁছালে তাকে অভ্যর্থনা জানিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এসময় তিনি স্পিকারের কার্যালয় ঘুরে দেখেন, পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন এবং শুভেচ্ছা স্মারক বিনিময় করেন। 

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আসিয়ান এর সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার জন্য মালয়েশিয়াকে অভিনন্দন জানান এবং আসিয়ানের ‘সেক্টরাল  ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়টি বিবেচনার জন্য মালয়েশিয়ার ঐকান্তিক সহযোগিতা কামনা করেন। আসিয়ান এর সভাপতি হিসেবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মালয়েশিয়া দৃঢ় ভূমিকা পালন করবে বলেও স্পিকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। 

মালয়েশিয়ার হাউজ অফ রিপ্রেজেনটেটিভের স্পিকার তান সেরি দাতো ড. জোহারি বিন আব্দুল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়শী প্রশংসা করেন। বাংলাদেশি কর্মীদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, তারা অত্যন্ত পরিশ্রমী এবং মেধাবী। মালয়েশিয়ায় আসতে না পারা শ্রমিক সংকট নিরসনে তিনি মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দেন। এছাড়াও ড. জোহারি বিন আব্দুল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্পর্কে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে সংলাপ অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন এবং মালয়েশিয়া আসিয়ান সভাপতি হিসেবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

স্পিকার ড. শিরীন বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ গঠনের কার্যক্রমকে চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ এর স্পিকারকে অনুরোধ জানান এবং মালয়েশিয়ার সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।  

গতকাল স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে পৌঁছালে মালয়েশিয়ার জাতীয় সংসদের স্পিকারের পক্ষে হেড অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হাজী মুহাম্মদ জামানী বিন মো. আলী তাকে স্বাগত জানান।

বৈঠকে মালয়েশিয়ার পার্লামেন্টের প্রধান প্রশাসক দাতো মোহাম্মদ জামানি বিন মো. আলী, পার্লামেন্টের ব্যবস্থাপনা বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি রেদোয়ান বিন রহমত, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান, ডেপুটি হাইকমিশনার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খাস্তগীরসহ হাইকমিশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এলিস/এমএ/

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ বাড়ল

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:০৪ পিএম
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ বাড়ল
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) হিসেবে আরও এক বছর মেয়াদ বাড়ল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের।

শুক্রবার (৫ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক শাখার উপ-সচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি স্বক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তার চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়।  

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে তার পূর্বের চুক্তির ধারাবাহিকতায় ও অনুরূপ শর্তে আগামী ১২ জুলাই অথবা যোগ দেওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ১ বছর মেয়াদে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক পদে পুনরায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলো।

খাজা/সালমান/

গণপূর্তের প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অবৈধ আয়ের অভিযোগ স্ত্রীর

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:২০ পিএম
গণপূর্তের প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অবৈধ আয়ের অভিযোগ স্ত্রীর
নীলফামারী জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান

নীলফামারী জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের অবৈধ আয় নিয়ে অভিযোগ করেছেন স্ত্রী রিজওয়ানা হাসান খুশবু। মডেল মসজিদ প্রকল্পে স্বামীর দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এসেছেন সচিবালয়ে। 

খুশবুর অভিযোগ, স্বামীর অবৈধ আয়ের প্রতিবাদ করায় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। খুশবু সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগে থেকেই চাইতাম না যে এ রকম একটা পবিত্র স্থান থেকে ঘুষ নিক। আমি তাকে আগেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। নিষেধ করতাম। তখন সে আমাকে অনেক মারধর করত। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন  করত।’ 

লিখিত অভিযোগে স্ত্রী খুশবু বলেন, দুই বছর আগে একটি গুদামঘর নির্মাণ করেন তার স্বামী। তারপর ভুট্টা কিনে গুদামজাত করা হয়। তারপর সেখান থেকে বিপুল টাকা লাভ দেখানো হয়েছে। এভাবে ঘুষের টাকা সাদা করেন তিনি। 

খুশবু আরও বলেন, ‘আমি তাকে ব্যবসা নিয়ে কথা বলি। কিন্তু সে আমাকে বলে যে একটা প্রতিষ্ঠান থাকলে তো সমস্যা নেই। সেখানে অনেক ধরনের লেনদেন হয়। আমি তখনই অভিযোগ দিতে পারতাম, কিন্তু করিনি কারণ তখন আমি প্রেগনেন্ট ছিলাম। ভেবেছিলাম হয়তোবা সন্তান হওয়ার পর সে ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু সন্তান হওয়ার পরও সে পরিবর্তন হয়নি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগকারী আমার সাবেক স্ত্রী। বিপদে ফেলার জন্যই সত্য গোপন করে গণমাধ্যমে এমন খবর দিচ্ছেন। আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেছেন তিনি। আমাকে হত্যারও হুমকি দিয়েছেন।’

আইসিডিডিআরবি কলেরা হাসপাতালে প্রতিদিন ৬০০ রোগী ভর্তি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:১০ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:২১ এএম
আইসিডিডিআরবি কলেরা হাসপাতালে প্রতিদিন ৬০০ রোগী ভর্তি
ছবি: খবরের কাগজ

শিশু আব্দুল্লাহ্‌র বয়স ছয় মাস দশদিন। ক্লান্ত চাহনি আর দুর্বল শরীর নিয়ে মা সুরাইয়া বেগমের কোলে জড়সড়ো হয়ে বসে আছে। সামনে রাখা লাল রঙের বাটিতে খাবার স্যালাইন। সুরাইয়া বেগমের দিশেহারা অবস্থা। টলটলে চোখ, যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে ছুটবে অশ্রুধারা। সারাক্ষণ উশখুশ করে যেন খুঁজছে কিছু, বা কাউকে।

দৃশ্যটি বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) মহাখালী আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র বা আইসিডিডিআরবি কলেরা হাসপাতালের। 

সুরাইয়া বেগম জানান, গত পরশু রাত থেকে বমি আর পাতলা পায়খানা শুরু হয় আব্দুল্লাহ্‌র। সঙ্গে রয়েছে জ্বর। এত ছোট বাচ্চার ঘন ঘন পাতলা পায়খানা আর বমি হওয়ায় শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছে। দিশা না পেয়ে সকালেই ছেলেকে নিয়ে ছুটে এসেছেন এখানে। ডাক্তার দেখার পর বারবার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু শুধু স্যালাইন খাওয়ালেই ঠিক হয়ে যাবে, ব্যাপারটিতে ঠিক ভরসা পাচ্ছেন না সুরাইয়া।

রিসেপশন এরিয়ার বিপরীত দিকের একটি কক্ষে সারি দেওয়া চেয়ার-টেবিল রাখা। সেখানেই মায়েদের কোলে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুরা। প্রতিটি শিশু রোগীর সামনে একটি বাটিতে রাখা আছে খাবার স্যালাইন। মায়েরা সেখান থেকে চামচে তুলে কোলের শিশুদের স্যালাইন খাওয়াচ্ছেন। 

হাসপাতালের রিসেপশন পেরিয়ে ওয়ার্ডে গেলে দেখা মেলে সত্তরোর্ধ্ব ভর্তি রোগী আক্তার নাজনীনের। নারায়ণগঞ্জের দেউলী চৌড়াপাড়ার বাসিন্দা। বয়সের ভারে ন্যুব্জ। গত তিন দিন ধরে পাতলা পায়খানা আর বমি হচ্ছে। এই বয়সে শরীরে এত ধকল কাবু করে ফেলেছে বৃদ্ধাকে। গত দুদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি তিনি। বললেন, ‘আমি তো ভাবছি মইরাই যামু। উইঠ্যা বহার শক্তি আছিল না। এইহানে আহার পর সুই দিয়া স্যালাইন দিল হাতের মইধ্যে। আস্তে আস্তে এহন অবস্থা ঠিক অইছে। সকালে স্যালাইন খুইল্যা দিছে।’ সঙ্গে থাকা পুত্রবধূ পপি আক্তার কিছুক্ষণ পরপর বাটি থেকে চামচ ভর্তি স্যালাইন তুলে দিচ্ছেন শাশুড়ির মুখে। 

হাসপাতাল ঘুরে প্রতিটি কোণেই দেখা যায় ডায়রিয়া আর কলেরা আক্রান্ত রোগীর হাহাকার। একই সঙ্গে দেখা যায় সাদা অ্যাপ্রোন পরা ডাক্তার আর নার্সদের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে অক্লান্ত ছুটে চলা। এত কর্মব্যস্ততা আর ছুটোছুটির ভেতরেও সবকিছু যেন সিস্টেমেটিক। ডায়রিয়া রোগীতে ঠাসা হাসপাতালে কোথাও নেই একটু কটু গন্ধ, না আছে কোথাও এতটুকু ময়লার চিহ্ন। রোগীদের ভাষ্যানুযায়ী আইসিডিডিআরবির ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা ও সংশ্লিষ্ট সব কর্মীর ব্যবহার ও সেবা তাদের মন ছুঁয়ে গেছে। 

আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, ডায়রিয়া ও কলেরার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) কলেরা হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের কাছে এক আস্থার জায়গা। এখানে সেবা নিতে আসা সিংহভাগ মানুষই অতি দরিদ্র পরিবার থেকে আসেন। আমরা রোগীদের শুধুমাত্র রোগী নয়, বরং সহমর্মিতার দৃষ্টিতে দেখি। এখান থেকে বছরে আড়াই লাখের মতো রোগী বিনা খরচে চিকিৎসা নেয়। গত ছয় দশকের বেশি সময় ধরে বিজ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবন, চিকিৎসা, রোগী ব্যবস্থাপনা ও রোগ প্রতিরোধে অগণিত সাফল্য অর্জন করে চলেছে আইসিডিডিআরবি। ওরস্যালাইন আবিষ্কার, মুখে খাওয়া কলেরার টিকা আবিষ্কার, ডায়রিয়া চিকিৎসায় জিংকের ব্যবহার, শিশুদের তীব্র অপুষ্টির চিকিৎসাপদ্ধতিসহ দেশের স্বাস্থ্য খাতের অর্জনে এই প্রতিষ্ঠান ভূমিকা রেখে চলেছে।

হাসপাতাল শাখার প্রধান ডা. বাহারুল আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘যেসব রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন, তাদের ৬০ শতাংশ রোগীই পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশু। যারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন, তাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণ পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব রোগীর ফ্লুইড রিপ্লেসমেন্টের প্রয়োজন হয়। সাধারণ খাবার স্যালাইনই রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য যথেষ্ট।’ 

তিনি জানান, হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারশ জন রোগীর সেবা দেওয়া হয়। তবে মে থেকে জুন এবং নভেম্বর থেকে জানুয়ারি, বছরের এই দুই সময় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি থেকে। প্রতি বছরই এই সময়টাতে দিনে প্রায় ১২শ থেকে ১৩শ রোগীর সেবা দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এ ছাড়া গত দুই মাসে হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী মে মাসে সেবা পেয়েছেন মোট ১৮ হাজার ১৪১ এবং জুন মাসে মোট ১৮ হাজার ৬৩৪ জন রোগী। সে হিসাবে দুই মাসে দিনে ৬শ জনেরও বেশি ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন এই হাসপাতাল থেকে। 

হাসপাতালের নার্সিং অফিসার ক্যাথরিন কস্তা বলেন, ‘আগের দিন রাতের হিসাব অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২১২। এদের মধ্যে অনেকেই যাদের অবস্থা আজ শঙ্কামুক্ত, তাদের ডিসচার্জ করে দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, এখানে চিকিৎসা নিতে আসা বেশির ভাগ রোগীকেই আমরা শুধু খাবার স্যালাইন খেতে বলি। বেশির ভাগ রোগীই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যেতে পারেন। যাদের অবস্থা একটু বেশি খারাপ, তাদেরকেই শুধু ভর্তি রাখা হয়। এসব রোগীও সর্বোচ্চ তিন দিনের ভেতর সুস্থ হয়ে যায়। তিন দিনের বেশি ভর্তি রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম।’ 

ডা. বাহারুল আলম জানান, এখানে শুধু ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসাই হয় না, গবেষণাও হয়। আমাদের সেবা এখন শুধুমাত্র দেশের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে গেছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশসমূহে, এই প্রতিষ্ঠানের গবেষণালব্ধ ফলাফল কাজে লাগিয়ে আর্তমানবতার সেবার জন্য গৃহীত নানা কার্যক্রম ক্রমাগত সমৃদ্ধ হয়ে চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুরোধে হাইতি, ইয়েমেন, ইরাক, সিরিয়াসহ পৃথিবীর যে দেশেই কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, সেখানেই আইসিডিডিআরবির চিকিৎসক ও গবেষকরা ছুটে গিয়েছেন এবং স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মীদের কার্যকরভাবে কলেরা চিকিৎসা এবং নিয়ন্ত্রণে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। 

পরিপত্র জারি সরকারি অর্থে সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:৩২ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:৩৩ এএম
সরকারি অর্থে সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

নতুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে ৩০ জুন। বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে ১ জুলাই থেকে। অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও অর্থবছরের শুরুতে সরকারি ব্যয়ে লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। 

বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) নতুন এক পরিপত্র জারি করেছে। এতে বিদেশ ভ্রমণ থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ করা অর্থের ব্যয়সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়, সরকারের নিজস্ব অর্থে সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। তবে প্রয়োজন মনে করলে কিংবা অত্যাবশ্যকীয় হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে বিদেশে ভ্রমণ করা যাবে। তবে ওয়ার্কশপ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে।

নতুন অর্থবছরে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের কয়েকটি খাতে টাকা খরচে মিতব্যয়ী হতে হবে। 

পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, চলতি অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন বাজেটের আওতায় সব ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে খরচ বন্ধ থাকবে। বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরা হয়। বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ-গ্যাস-জ্বালানি খাতে বরাদ্দ দেওয়ার টাকার সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ খরচ করা যাবে। কোনো মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থা এর চেয়ে বেশি খরচ করতে পারবে না। বরাদ্দের বেশি অর্থ খরচ করলে জবাবদিহি করতে হবে। 

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এবার ব্যয় সংকোচনমুখী বাজেট করা হয়েছে। নতুন বাজেটের যাত্রা শুরু হয়েছে সংকটের মধ্যে। ফলে সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। এ জন্য কিছু কিছু খাতে ব্যয়ের ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, নতুন বাজেট স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। 

পরিপত্রে বলা হয়েছে, পরিচালন বাজেটের আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি মন্ত্রণালয়ের স্থাপনা ছাড়া নতুন আবাসিক-অনাবাসিক ও অন্যান্য ভবন তৈরি বন্ধ থাকবে। তবে চলমান নির্মাণকাজ অন্তত ৭০ শতাংশ শেষ হয়ে থাকলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে খরচ চালানো যাবে।

সব ধরনের যানবাহন কেনায় বরাদ্দ দেওয়া টাকার খরচ বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনা যানবাহন বদলানোর ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমতি নিয়ে খরচ করা যাবে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দ দেওয়া টাকার খরচ বন্ধ থাকবে।

ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে অধিগ্রহণ কার্যক্রমের সব আনুষ্ঠানিকতা মেনে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে খরচ করা যাবে। সব ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে ব্যয় বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, পেট্রল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট এবং গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে।

কোথায় ব্যয় করা যাবে: চলতি অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে যেভাবে ব্যয় করা যাবে, পরিপত্রে সে বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সব আনুষ্ঠানিকতা অনুসরণ করে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে। এ ছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের অনুকূলে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে ‘জিওবি (বাংলাদেশ সরকার) বাবদ’ সংরক্ষিত এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুকূলে ‘থোক বরাদ্দ’ হিসেবে সংরক্ষিত জিওবির সম্পূর্ণ অংশ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে।

সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন ও রাষ্ট্রমালিকানাধীন কোম্পানির পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকার এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে ২০২২ সালের ১২ মে এক পরিপত্রে বলা হয়েছিল, করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও বৈশ্বিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষা সফর, এপিএ ও ইনোভেশনের আওতাভুক্ত ভ্রমণ, কর্মশালা বা সেমিনারে অংশগ্রহণসহ সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। যদিও সে বছরের সেপ্টেম্বরে সেই নির্দেশনা শিথিল করা হয়।