ঢাকা ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪

অডিও রেকর্ড ফাঁস চোরাই গরুর টাকায় এমপিসহ মন্ত্রীর অনুসারীদের ভাগ

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৯:০৯ এএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ১১:৩০ এএম
চোরাই গরুর টাকায় এমপিসহ মন্ত্রীর অনুসারীদের ভাগ
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদের বাড়িতে হামলার ঘটনার পর আবারও আলোচনায় চোরাচালান। ভারতীয় চিনিসহ বিভিন্ন চোরাই পণ্য সরবরাহে বাধা দেওয়ায় এ হামলা হয়েছে বলে কাউন্সিলর আজাদ খবরের কাগজকে জানিয়েছেন। ঘটনার পরপর ফাঁস হওয়া এক অডিও রেকর্ড থেকে জানা গেছে আরও তথ্য। ভারত থেকে আসা চোরাই গরু বিক্রির ‘লাভের টাকার ভাগবাটোয়ারা’ নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণেই এ হামলা হয়েছে। এমনকি টাকার ভাগ পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই এলাকার বাসিন্দা একজন সংসদ সদস্যসহ এক প্রতিমন্ত্রীর অনুসারীদের বিরুদ্ধে।

আজাদুর রহমান আজাদ সিসিকের টানা পাঁচবারের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার বাসায় গত বৃহস্পতিবার রাতে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে ওই এলাকায় আরও কয়েক নেতার বাড়িতে হামলা হয়েছে। থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ জমা পড়েছে। হামলাকারী কারা- এ নিয়ে পরস্পরবিরোধী কথা থেকে বিভিন্নজনের নাম প্রকাশ পাচ্ছে। সব মিলিয়ে ঘটনাটি সিলেটে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত করে তুলেছে। 

বলা হচ্ছে, চোরাচালানির ঘটনায় বাধা দেওয়ায় রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকা চিহ্নিত অপরাধীরা ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদের বাসায় প্রথম হামলা করেছে। এরপর পাল্টাপাল্টি আরও দুটি বাসায় হামলা হয়। কিন্তু কেন হামলা হয়েছে, নেপথ্যের কারণ কী- এ নিয়ে মুখ খুলছেন না কেউ। ঠিক এ সময় একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ায় ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। মোট ১ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডের কথোপকথনে হামলার নেপথ্য কারণ নিয়ে আলাপচারিতা হয়। 

এসব হামলার কারণ জানা দুই প্রত্যক্ষদর্শীর চাপা উত্তেজনার আলাপে রয়েছে ‘বাজারের’ (টিলাগড়ে কোরবানির পশুর অস্থায়ী হাট) ‘লাভের টাকা’ ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব। সূত্রমতে, মূলত ভারত থেকে চোরাই পথে আনা গরু হাটে বিক্রি করা হতো। ওই চোরাই গরুর জন্য বিভিন্ন পক্ষকে টাকা দেওয়া লাগত। কথোপকথনে টাকার অঙ্ক উল্লেখ করে বলা হচ্ছিল, ‘৫০ লাখ টাকা লাভ অইছে!’ আর লাভের টাকা ভাগাভাগি প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘২৫ লাখ, ২৫ লাখ, ৫০ হাজার’। বণ্টনে টাকার অঙ্কের এমন বৈষম্যে বাসায় হামলা, পাল্টা হামলা প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘মাইর লাগবনানি!’

কথোপকথনের অডিও রেকর্ডটি শুক্রবার রাতে খবরের কাগজের কাছে আসে। জানা গেছে, প্রকৃত কারণ জানতে এটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তগত হয়েছে। 

‘এমপি-মন্ত্রিপাড়া’ টিলাগড়
সিলেট নগরীর উত্তরপূর্ব দিকের এলাকা টিলাগড়। কয়েকটি মহল্লা সেখানে। তবে মূল পরিচিতি টিলাগড়। এ নামে একটি গ্রুপের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সন্ত্রাস-আধিপত্যের কারণে বিভিন্ন সময় টিলাগড় আলোচিত হয়। সিলেট-তামাবিল সড়কের উপকণ্ঠের বৃহত্তর টিলাগড় এলাকায় পড়েছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, এমসি কলেজ ও সিলেট সরকারি কলেজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক এলাকা হওয়ায় ছাত্রসংগঠনের প্রভাবে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক পরিচিত। শাসকদলে টিলাগড় গ্রুপের একচ্ছত্র আধিপত্যের মূলে রয়েছে সেখানে বসবাসকারী নেতা-কর্মীরা। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ও বর্তমান সরকার আমলে রাজনৈতিক সন্ত্রাসে একাধিক খুনোখুনির ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যে শাসকদলে ছাত্রলীগের দলীয় কোন্দলে একাধিক হত্যার ঘটনাও রয়েছে। 

এলাকাবাসী জানান, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর টিলাগড়ের নতুন পরিচিতি ‘এমপি ও মন্ত্রিপাড়া’ নামে। প্রায় আধা কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে পড়েছে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রনজিত চন্দ্র সরকার, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরীর বাসভবন। এমপির বাসা গোপালটিলায়, প্রতিমন্ত্রী-ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদের বাসা শাপলাবাগ আবাসিক এলাকায়। এ বাসাতেই হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং এর জের ধরে শুক্রবার ছাত্রলীগের আরেক নেতার বাসায়ও পাল্টা হামলা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, গ্রুপিং রাজনীতির দ্বন্দ্বে এক পক্ষ আরেক পক্ষের বাসায় হামলা করেছে। কিন্তু কারণ কী? কারণ জানা নিয়ে যখন তোলপাড় চলছে, ঠিক এমনই একটি কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ফাঁস নিয়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। এতে দুজনের কথোপকথন থেকে জানা গেছে, হামলার কারণ টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে। কথোপকথনের বিষয়বস্তু হামলার কারণ নিয়ে। একজন আরেকজনকে বোঝাচ্ছিলেন। একজন বলছিলেন, ‘... ৫০ লাখ টাকা বাজারো লাভ হইছে। রনজিত দায় নিছুইন ২৫ লাখ। আজাদ ভাইয়েও ২৫ লাখ, নানি। তারারে মিনিমাম ১০-১৫ লাখ দিত। তারা দিছে না। তারা মন্ত্রী গ্রুপ, তুমি দিতায় নানি! তাইন দিরা ইনো ৫০ হাজার। মাইর লাগবনি না লাগত না? আফনে আমারে কইন!’

কথোপকথনে ‘রনজিতদা’ বলে যার কথা বলা হয়েছে তিনি সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য রনজিত সরকার। ‘আজাদ ভাই’ হচ্ছেন, সিসিক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ। আর ‘মন্ত্রী গ্রুপ’ বলতে স্পষ্ট করা না হলেও ওই এলাকায় বসবাস করা প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী নতুন একটি বলয়ের কথা ওঠে এসেছে। 

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রী গ্রুপ নামের নতুন এই গ্রুপটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন একাধিকজন। এর মধ্যে কথোপকথনে নাম আসা ছফু হচ্ছেন, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য ছফু আহমদ। বৃহস্পতিবার রাতে কাউন্সিলর আজাদের বাসায় হামলার জের ধরে একই এলাকায় বসবাসরত ছফু আহমদের বাসায়ও হামলা হয়েছে। শনিবার তিনি খবরের কাগজকে জানিয়েছেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিয়েছেন। 

কথোপকথন 
(কথোপকথন শুনে ধারণা করা হচ্ছে, তারা এক আড্ডায় বসে ঘটনার নেপথ্য কারণ নিয়ে কথা বলছিলেন। দুজনের মধ্যে একজনকেই বেশি কথা বলতে শোনা গেছে। তাদের কথাবার্তা টাকা ভাগবাটোয়ারা প্রত্যক্ষ করার মতো। নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে কথোপকথনকারী দুজনের নাম প্রকাশ করা হয়নি।)

প্রথমজন: তারার তারার বাজার করছে, তারা নিচে এর লাগি কিতা হইছে। আজাদ ভাইর (ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদুর রহমান) কথা হইল আমি এখলা খাইলাইতাম। ওই যে ...র লাখান। ... যে সময় টেকা শুরু করে যে সময় ফাইলায়নানি, ইসময় কয় ... কত দিছিল? এখন হই গেছে টেকা আমার কাছে। ... আজাদে কম নিলেও লইছইন ওলা। অখন ছফু ভাইর (ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য) বাসা কিলা কিতা করে ভাইঙা ডুইঙা। এখন তো ছফু ভাইয়েও মামলা আরেকটা করব। 

দ্বিতীয়জন: তারা ৫০ হাজার দিছে, হইছে না ইখটায়।

প্রথমজন: তারা পাইছে ২৫ লাখ। ২৫ লাখ টাকার মাঝে তারারে দিছে ৫০ হাজার। আজাদ ভাইয়ে ২৫ লাখ। ৫০ লাখ টাকা বাজারও লাভ হইছে। রনজিত দায় (সংসদ সদস্য রনজিত সরকার) নিছইন ২৫ লাখ। আজাদ ভাইয়েও ২৫ লাখ নানি। তারারে মিনিমাম ১০-১৫ লাখ দিত। তারা দিছে না। তারা মন্ত্রী গ্রুপ, তুমি দিতায়নানি। তাইন দিরা ইনো ৫০ হাজার। মাইর লাগবোনি না লাগত না, আফনে আমারে কইন। এর মাঝে তারা তিন দিন ধরি খালি বিচার বওয়াইছে। শেষ করিলাইন, শেষ করিলাইন, শেষ করিলাইন না। হিতায় কইছে তে আর মাইর কর। তে তুমি মাইর কইছতে মাইনষে কিতা বই থাকবনি। মাইনষের ইজ্জতের বিষয়। ইতায় কইছইন অখন মরলে মরি যাইমু, সমস্যা নাই। মন্ত্রী বাঁচাইলে বাঁচাওকা, না বাঁচাইলে নাই। মন্ত্রী কইছইন তোমরা আর মাইরটাইর লাগাইও না। আমি ... তো ক্লিন ইমেজ। কিন্তু ক্লিন ইমেজ হইয়া অখন যাওয়াটা আমার সমীচীন নয়। আমি যাব, মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব, কালকে আমি একটা জায়গায় গিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব...।

কথোপকথনে নাম আসা ছফু আহমদের বাসায় হামলা হয়েছে কাউন্সিলর আজাদের বাসায় হামলার পরদিন শুক্রবার দুপুরে। তবে ছফু আহমদ কথোপকথনে তার নামটি কে বা কারা, কেন বলেছে, এসব সম্পর্কে অবহিত নন বলে দাবি করেন। শনিবার যোগাযোগ করলে ছফু আহমদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘আজাদ ভাইয়ের বাসায় হামলার নিন্দা জানাই। কিন্তু এর জের ধরে আমার বাসায় হামলার বিষয়টি নানা কথার জন্ম দিচ্ছে।’ তিনি জানান, তার বাসায় হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ দেবেন। 

এদিকে, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদ কথোপকথনের বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে তার বাসায় হামলার জন্য তিনি চিনি চোরাকারবারিদের দায়ী করেন। আজাদ খবরের কাগজকে বলেছেন, ‘এই টিলাগড় দিয়ে সীমান্ত থেকে আনা চোরাই পণ্যসহ চিনি পরিবহন হয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি বাধা দিয়েছি। এর জের ধরে হামলা হয়েছে।’ 

রনজিত বললেন, ‘আমি টাকা খরচ করে এমপি হইনি’ 

কথোপকথনের বিষয়টি সংসদ সদস্য (সুনামগঞ্জ-১ আসন) রনজিত সরকারের নজরে এনে শুক্রবার রাতেই তার সঙ্গে কথা হয়। সংসদ সদস্যের দাবি, ‘মন্ত্রী গ্রুপ’ বা অন্য কোনো নামে কোনো ধরনের গ্রুপিং সিলেট আওয়ামী লীগে নেই, টিলাগড়েও নেই। কাউন্সিলর আজাদের সঙ্গে তার অনুসারীদের দ্বন্দ্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এসব এখন নেই। আজাদ আমার পুরোনো বন্ধু। অনেক পুরোনো সম্পর্ক। আর আমিও সংসদ সদস্য হওয়ায় এখন এখানকার (টিলাগড়) একজন অতিথি মাত্র। সংসদীয় আসন ও জাতীয় সংসদ ভবন ছাড়া তো যাতায়াত নেই। তার বাসায় হামলা হয়েছে শুনে আমি সব কাজ ফেলে ঢাকা থেকে প্লেনে ছুটে এসেছি। আজাদের বাসায় গিয়েছি। এ রকম হামলার ঘটনা প্রশ্রয় দেওয়ার মতো নয়।’

কারা হামলা করেছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো দিনের মতো স্পষ্ট। এখানে ছিনতাইকারী, চোরাকারবারি, হেরোইন কারবারিকে রাজনৈতিক প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। বংশগতভাবে সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটছে। এখনকার ঘটনা নিয়ে দুই-তিন দশক আগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ দেখুন। ক্রসফায়ারে কারা মরেছে দেখুন। এরপর প্রশ্ন করুন।’ 

কথোপকথনে তার নামে ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদের নামে ২৫ লাখ করে ৫০ লাখ টাকা ও কথিত মন্ত্রী গ্রুপে ৫০ হাজার টাকার ভাগবাটোয়ারা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য রনজিত কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন হন। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি কী আগের রনজিত নাকি! আর আপনারা কী আমাকে আগের মতো করে দেখছেন? আমি কিন্তু টাকা খরচ করে এমপি হইনি। রাজনীতি করে এমপি হয়েছি। টাকার পেছনে কখনো ছুটিনি। কেউ বলল, আর আপনার লুফে নিলেন, এটা হয় না। আমি টাকা রোজগার করলে রাজনীতি করতাম না, এমপি হতাম না। রাজনীতি করছি মানুষের জন্য। টাকার জন্য না।’ 

থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহ পরাণ থানায় হামলার ঘটনায় দুটি পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী। তিনি জানান, এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সবাইকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পাল্টাপাল্টি দুটি অভিযোগের একটি থানায় দাখিল করেছেন কাউন্সিলর আজাদ। এতে হামলাকারী ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা। অভিযোগে বলা হয়, হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, মাদক কারবারি, ত্রাস সৃষ্টিকারী ও জবর দখলকারী। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপকর্ম করায় স্থানীয়রা আমার কাছে বিচার চাইলে আমি তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করে বাসায় হামলা করে।

এদিকে বাসায় হামলা, চাঁদাবাজি, প্রাণনাশের হুমকি, লুটপাটের ঘটনায় থানায় পাল্টা অভিযোগ দিয়েছেন সিলেট মহানগর যুবলীগের সদস্য শমসের আলী। ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদসহ ১৮ জনের নামোল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়েছে। এতে সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির অভিযোগও করা হয়। বলা হয়, তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এসে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে অভিযুক্তরা। চাঁদা না দেওয়ায় ২৭ জুন রাত পৌনে ১২টায় হামলা করে বাসা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালপত্র লুট করে নেওয়া হয়। তারা তার স্ত্রীর বুকে পিস্তল ধরে গলা থেকে এক ভরি ওজনের সোনার চেইন নিয়ে যায়। 

১৩ কে‌জির একটি পাঙাশ ১৮ হাজারে কিন‌ল পু‌লিশ

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১০:০৬ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১০:০৭ এএম
১৩ কে‌জির একটি পাঙাশ ১৮ হাজারে কিন‌ল পু‌লিশ
ছবি : খবরের কাগজ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপু‌রে যমুনা নদী‌তে জে‌লের জা‌লে ধরা প‌ড়া ১৩ কে‌জি ওজ‌নের একটি পাঙাশ মাছ ১৮ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সোমবার বি‌কে‌লে উপ‌জেলার গো‌বিন্দাসী বাজা‌র থেকে মাছ‌টি কিনে নেন ভূঞাপুর থানার সহকা‌রী উপ‌প‌রিদর্শক (এএসআই) মঞ্জুরুল ইসলাম।  

জানা গে‌ছে, উপ‌জেলার খানুরবা‌ড়ি এলাকার বিমল হালদার বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় যমুনা নদী‌তে জাল ফে‌লেন। প‌রে তার জা‌লে বিশালাকৃ‌তির পাঙাশ মাছ‌টি আট‌কে যায়। তি‌নি মাছ‌টি বি‌ক্রির জন‌্য গো‌বিন্দাসী বাজা‌রে বাবলু হালদা‌রের মাছের আড়‌তে নি‌য়ে যান। 

মাছ ব‌্যবসায়ী হা‌লিম বলেন, ‘বিমল হালদারের কাছ থেকে মাছ‌টি ১৫ হাজার টাকায় কিনি। প‌রে মাছ‌টি এক পু‌লিশ সদস্যের কা‌ছে ১৮ হাজার টাকায় বি‌ক্রি ক‌রেছি।’

ভূঞাপুর থানার এএসআই মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘মা‌ছের পাইকার বলার পর পাঙাশ মাছ‌টি নি‌য়ে‌ছি। ত‌বে কত দি‌তে হ‌বে এখনো ব‌লে‌ননি।’

রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের শঙ্কায় মাঠে প্রশাসন

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
রাঙামাটিতে পাহাড়ধসের শঙ্কায় মাঠে প্রশাসন
ছবি : খবরের কাগজ

এখন মধ্য আষাঢ়। প্রকৃতি রং বদলে হয়ে উঠেছে সবুজ-সজীব। কিন্তু আকাশের কালো মেঘ শঙ্কা আর ভীতি বাড়াচ্ছে রাঙামাটির পাহাড়ের পাদদেশে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ বসতিতে। মাত্র ৭ বছর আগে ২০১৭ সালের ১৩ জুন ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড়ধসে পাঁচ সেনাসদস্যসহ ১২০ জন এবং ২০১৮ সালের ১২ জুন নানিয়ারচরে ১১ জনের প্রাণহানি ঘটে। সে ভয়াল স্মৃতি এখনো চোখের সামনে ভেসে উঠে রাঙামাটির মানুষের।

অথচ বৃষ্টির অভাবে গেল কয়েক মাস কাপ্তাই হ্রদে দেখা দেয় পানিস্বল্পতা। হ্রদের ওপর নির্ভরশীল বিদ্যুৎ উৎপাদন, মৎস্য উৎপাদন, নৌ-যোগাযোগ ঠেকে তলানিতে। আর এখন টানা পাঁচদিনের হালকা-ভারী সেই বৃষ্টিতেই রাঙামাটিতে যেন নেমে এসেছে স্থবিরতা। পাহাড়ধসের শঙ্কা আর হ্রদের পাহাড়ি ঢলের কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়ও ঘটছে ছন্দপতন।

তবে এবারের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে পাহাড়ধসের আশঙ্কায় শহরের ৩১টি এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিকটবর্তী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের জন্য ২৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ ছাড়া সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুম। তবে আগ্রহ নেই ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের। তাদের অনেকে বলছেন, ঘরবাড়ি-আসবাবপত্র, মূল্যবান সম্পদ ও গবাদিপশু চুরির ভয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে তারা যেতে চাইছেন না। 

শহরের শিমুলতলি, রূপনগর, ভেদভেদী, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি বেড়েছে। এসব বসতি নির্মাণ রোধে দৃশ্যত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে দুর্যোগকালীন ক্ষয়ক্ষতি কমাতে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন আর জনসচেতনতা বাড়ানোর জোর জেলা প্রশাসনের। এর বাইরে জেলার আরও ৯টি উপজেলায় পাহাড়ধসের আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন নজরদারি, মাইকিং ও অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করে পরিস্থিতিকে নজরে রাখছে। সব মিলিয়ে জেলায় ২৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

এদিকে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢলে কাসালং ও মাইনী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে দীঘিনালা-সাজেক সড়কের কবাখালী, গঙ্গারাম, মাসালং ও বাঘাইহাটে সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাজেকের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে ফিরতে না পারায় সাজেকে আটকা পড়েছেন শতাধিক পর্যটক। এ ছাড়া বাঘাইছড়ির বেশ কয়েকটি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার বারবিন্দু ঘাট, মাস্টারপাড়া, পশ্চিম মুসলিম ব্লক, উপজেলা সদর, লাইল্যা ঘোনা, এফ ব্লক, রূপকারি ও পুরাতন মারিশ্যা গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে খোলা হয়েছে ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র।

এই পরিস্থিতিতে স্থানীয়রা বাঘাইছড়িতে বন্যার আশঙ্কা করছেন। এরই মধ্যে দুর্ভোগে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, বৃদ্ধ মানুষ ও রোগীদের নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উঠতে শুরু করেছেন। বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আকতার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আর পানি সরে গেলে সাজেকে আটকাপড়া পর্যটকরা ফিরতে পারবেন।

বৃষ্টির কারণে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কের পাশে ও পাহাড়ের একাংশে ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এখন পর্যন্ত (মঙ্গলবার রাত ৯টা) কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে জেলার বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ি উপজেলায় নিম্নাঞ্চলও ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। 

চোখ রাঙাচ্ছে সাঙ্গু, বন্যা আতঙ্কে সাতকানিয়াবাসী

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৭ এএম
চোখ রাঙাচ্ছে সাঙ্গু, বন্যা আতঙ্কে সাতকানিয়াবাসী

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ইতিহাসে গত বছরের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার রেশ না কাটতেই আবার চোখ রাঙাচ্ছে বন্যা। পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু নদীর পানি ক্রমশ বাড়ছে। সাঙ্গু নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে শাখা খালগুলোর পানি উপচে প্লাবিত হচ্ছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার কেরানিহাট এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল। টানা বর্ষণ ও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। গত রবিবার রাত থেকে পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন নদী ও খালের পানি বাড়ার পাশাপাশি নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাঙ্গর খালের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকার লোকালয়ে ঢুকছে। এ ছাড়াও পাহাড়ি ঢলের পানি কেরানিহাট-বান্দরবান মহাসড়কের দস্তিদার হাট অংশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে দেখা দিতে পারে ভয়াবহ বন্যা।

সাঙ্গু নদীর বাজালিয়া অংশের চৌধুরী পাড়ার বাঁধটির কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ায় জনমনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কয়েক দফা বরাদ্দের পরও বাঁধটির কিছু অংশ অসম্পূর্ণ থেকে যাওয়ায় বন্যা আতঙ্কে দিন পার করছেন স্থানীয়রা। গত বছরগুলোতে এ বাঁধ দিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দেয়। সাঙ্গুর পানি লোকালয়ে প্রবেশ ঠেকাতে বাঁধটির কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাপস কান্তি দত্ত বলেন, ‘পাহাড়ি ঢলে সাঙ্গু নদীতে ভেসে আসা জ্বালানি কাঠ সংগ্রহে ব্যস্ত লোকজনকে সতর্ক করা হচ্ছে। এ ছাড়াও নদীর তীরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ও সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য খাবারেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, ‘সাঙ্গু নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে শাখা খালগুলোর পানি উপচে নিচু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।’

পরীক্ষায় অংশ নিতে ২২ শিক্ষার্থীর মানববন্ধন

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৩ এএম
পরীক্ষায় অংশ নিতে ২২ শিক্ষার্থীর মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের ভূঞাপু‌রে ক‌লেজ কর্তৃপ‌ক্ষের অব‌হেলায় এইচএস‌সি পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ক‌রে‌ছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দি‌কে উপ‌জেলার নিকরাইল শম‌সের ফ‌কির ডিগ্রি ক‌লে‌জের পরীক্ষা ব‌ঞ্চিত ২২ জন শিক্ষার্থী এই মানববন্ধন ক‌রে। এ সময় তারা শিক্ষক লোকমান হো‌সেনের ব‌হিষ্কারও দাবি ক‌রে। মানববন্ধন শেষে বি‌ক্ষোভ মি‌ছিল বের ক‌রে শিক্ষার্থীরা। এদি‌কে ওই ক‌লে‌জের বাংলা বিভা‌গের শিক্ষক লোকমান হোসেন‌কে সাম‌য়িক ব‌হিষ্কার করেছে ক‌লেজ কর্তৃপক্ষ।

পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারা পরীক্ষার্থীরা জানায়, ক‌লেজ কর্তৃপ‌ক্ষের চা‌হিদা অনুযায়ী ফরম পূরণের টাকা দি‌তে পারেনি তারা। প‌রে ওই ‌শিক্ষক লোকমান হোসেনের মাধ‌্যমে কম টাকায় ফরম পূরণ করে। কিন্তু পরে ক‌লে‌জের অধ‌্যক্ষ বো‌র্ডে তা‌দের ২২ জ‌নকে প্রবেশপত্র না দি‌তে অভিযোগ দেয়। এতে পরীক্ষা থে‌কে ব‌ঞ্চিত হয়েছে তারা। প‌রে শিক্ষক লোকমানও এই বিষ‌য়ে কোনো সুরাহা করেন‌নি। 

শম‌সের ফ‌কির ডিগ্রি ক‌লে‌জের ভারপ্রাপ্ত অধ‌্যক্ষ মো. আক্তারুজ্জামান জানান, শিক্ষার্থী‌রা পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার দাবি‌তে কলেজে ও পরীক্ষা কে‌ন্দ্রের সাম‌নে মানববন্ধন ক‌রে‌ছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ক‌লে‌জ শিক্ষক লোকমান হো‌সেন‌কে সাম‌য়িক ব‌হিষ্কার করা হ‌য়ে‌ছে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, অবৈধভাবে ফরম পূরণের কারণে ওই ২২ জনের আবেদন বাতিল করেছে শিক্ষাবোর্ড। তা ছাড়া জড়িত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কলেজ পরিচালনা কমিটি। তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হবে।

বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিল আইরিন

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৮ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৮ এএম
বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিল আইরিন

বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থী ফারহানা আক্তার আইরিন। লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার খিলবাইছা স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এ বছর মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে উপজেলার জাহানাবাদ গ্রামের আনোয়ার হোসেন মিলনের মেয়ে আইরিন।

এর আগে গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয় পালের হাট বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আইরিনের বাবা আনোয়ার হোসেন মিলন (৪৫) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে তার পরীক্ষা ছিল। তাই নিরুপায় হয়ে বাবার লাশ বাড়িতে রেখে স্বজনদের সহায়তায় লক্ষ্মীপুর পৌর আইডিয়াল কলেজকেন্দ্রে যথারীতি হাজির হয় আইরিন। সকাল ১০টা থেকে পৌনে ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষায় অংশ নেয় সে।

স্বজনরা জানান, আইরিনের বাবা আনোয়ার হোসেন মিলন লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারী ও সদর উপজেলার জাহানাবাদ নোয়া বাড়ির সেকান্দর মিয়ার ছেলে। সোমবার রাত সাড়ে ১০টার সময় পালের হাট থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে হার্ট অ্যাটাক করে মারা যান। এ সময় স্থানীয় লোকজন লাশ বাড়িতে নিলে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।
 
লক্ষ্মীপুর আইডিয়াল কলেজকেন্দ্রের সহকারী সচিব মো. হাবীবুর রহমান সবুজ জানান, পরীক্ষাকেন্দ্রে আইরিনকে সব রকমের মানসিক সান্ত্বনা ও সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।