![আবারও খান ইউনিসে হামলা](uploads/2024/07/03/Khan-unis-1719974262.jpg)
গাজার খান ইউনিস থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যেতে বলেছে ইসরায়েল। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেছে তারা। গত সোমবার রাতভর ও মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে খান ইউনিসের ভেতরে আশপাশে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এ রকম পরিস্থিতিতে ফিলিস্তিনিদের আশপাশের অঞ্চলগুলোতে সরে যেতে দেখা গেছে। এক চিকিৎসাসূত্র ও ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট জানায়, ইসরায়েলি আট ব্যক্তি মারা গেছেন ও আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন।
খান ইউনিস থেকে শুধু জনসাধারণ নয়, হাসপাতালের রোগী, চিকিৎসক ও সেবাকর্মীদেরও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। হামাসশাসিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ইউরোপিয়ান গাজা হাসপাতালের রোগী, চিকিৎসাকর্মীদের সরে যেতে বলা হয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সরাসরি হাসপাতাল থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়নি। তবে অতীতে হাসপাতাল ও সেবাকর্মীদের লক্ষ্য করে হামলা চালানোর রেকর্ড রয়েছে তাদের। রেডক্রস রোগীদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরে সহায়তা করেছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর কর্মকর্তা লুইস ওয়াটারিজ বলেছেন, মানুষকে আবারও ঘর ছাড়তে বাধ্য করা হলো। তারা এখন কোথায় যাবে?
তিনি বলেন, ‘এই এলাকায় মানুষ আগে থেকেই অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ও অবকাঠামোগতভাবে অনিরাপদ ভবনে বসবাস করছিল। রাফায় সামরিক অভিযানের পর এ অবস্থা তৈরি হয়েছিল।’
ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, গত সোমবার খান ইউনিস থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে প্রায় ২০টি রকেট ছোড়া হয়েছে। রাতভর আইডিএফ সেসব হামলার জবাব দিয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে। আইডিএফ আরও দাবি করে, ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অস্ত্রের মজুদ, পরিচালনা কেন্দ্র ও সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
আইডিএফের দাবি, হামাস বেসামরিক স্থাপনা ব্যবহার ও বেসামরিক মানুষকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পদ্ধতিগতভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে। তবে হামাস বরাবরই সে দাবি অস্বীকার করে আসছে। বরং আইডিএফের কর্মকাণ্ড নিয়ে জাতিসংঘসহ ও বিভিন্ন মানবিক সংস্থা প্রশ্ন তুলে আসছে শুরু থেকে।
গত সোমবার ইসরায়েলে যে হামলা হয়েছে, সেটি ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ চালিয়েছে বলে জানা গেছে। গাজা থেকে চালানো হামলাগুলোর মধ্যে সেটি বৃহত্তম।
চলতি বছরের শুরুতেই খান ইউনিসকে লক্ষ্য করে বড়মাপের অভিযান চালায় ইসরায়েল। সে সময়ই প্রায় গোটা খান ইউনিস ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে বাসিন্দারা ফিরে আসে। কিন্তু এখন আবারও ঘর ছাড়তে হলো তাদের।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় অন্তত ৩৭ হাজার ৯০০ মানুষ মারা গেছেন, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক মানুষ। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৮০ হাজার ৬০ জন। এখনো নিখোঁজ বহু মানুষ। ইসরায়েলি হামলায় শুধু খান ইউনিস নয়, গোটা গাজা পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। ধারণা করা হচ্ছে, অনেক নিখোঁজ বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা