ঢাকা ২১ আষাঢ় ১৪৩১, শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪

লিফটের ফাঁকা দিয়ে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:০১ এএম
লিফটের ফাঁকা দিয়ে পড়ে প্রাণ গেল যুবকের
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর শনির আখড়ার পাটেরবাগ এলাকায় একটি চারতলা ভবনের ছাদের লিফটের ফাঁকা দিয়ে পড়ে মো. রবিউল হাসান ওসমান (২২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। 

সোমবার (২ জুন) রাত সাড়ে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা নিহতের বন্ধু ইসমাইল জানান, ওসমান পাশের আরেকটি বাসায় থাকতেন। রাতে বন্ধু সৈকতের বাসার ছাদে ওঠার সময় তিনি ছাদের লিফটের ফাঁকা জায়গা দিয়ে নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতলে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত ওসমানের বড় ভাই রাকিবুল বলেন, ‘বাসার পাশেই সে সন্ধ্যার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে বের হয়েছিল। পরে খবর পাই ওসমান ছাদ থেকে পড়ে গেছে। পরে আমরা ঢামেক হাসপাতালে এসে তাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পাই।’

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, নিহতের লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।

নিহত ওসমান পেশায় দর্জি। যশোর কোতোয়ালি থানার হুসতলা গ্রামের থাই অ্যালুমিনিয়াম দোকানের ব্যবসায়ী হাফিজ মোল্লার ছেলে।  তিনি শনির আখড়ার পাটেরবাগ এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন। 

আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ বাড়ল

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫৭ পিএম
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের মেয়াদ বাড়ল
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন

বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) হিসেবে আরও এক বছর মেয়াদ বাড়ল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের।

শুক্রবার (৫ জুলাই) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক শাখার উপ-সচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পি স্বক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তার চুক্তির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়।  

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৯ ধারা অনুযায়ী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে তার পূর্বের চুক্তির ধারাবাহিকতায় ও অনুরূপ শর্তে আগামী ১২ জুলাই অথবা যোগ দেওয়ার তারিখ থেকে পরবর্তী ১ বছর মেয়াদে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক পদে পুনরায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হলো।

খাজা/সালমান/

গণপূর্তের প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অবৈধ আয়ের অভিযোগ স্ত্রীর

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:১৭ পিএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:২০ পিএম
গণপূর্তের প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অবৈধ আয়ের অভিযোগ স্ত্রীর
নীলফামারী জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান

নীলফামারী জেলা গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের অবৈধ আয় নিয়ে অভিযোগ করেছেন স্ত্রী রিজওয়ানা হাসান খুশবু। মডেল মসজিদ প্রকল্পে স্বামীর দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এসেছেন সচিবালয়ে। 

খুশবুর অভিযোগ, স্বামীর অবৈধ আয়ের প্রতিবাদ করায় তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। খুশবু সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগে থেকেই চাইতাম না যে এ রকম একটা পবিত্র স্থান থেকে ঘুষ নিক। আমি তাকে আগেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। নিষেধ করতাম। তখন সে আমাকে অনেক মারধর করত। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন  করত।’ 

লিখিত অভিযোগে স্ত্রী খুশবু বলেন, দুই বছর আগে একটি গুদামঘর নির্মাণ করেন তার স্বামী। তারপর ভুট্টা কিনে গুদামজাত করা হয়। তারপর সেখান থেকে বিপুল টাকা লাভ দেখানো হয়েছে। এভাবে ঘুষের টাকা সাদা করেন তিনি। 

খুশবু আরও বলেন, ‘আমি তাকে ব্যবসা নিয়ে কথা বলি। কিন্তু সে আমাকে বলে যে একটা প্রতিষ্ঠান থাকলে তো সমস্যা নেই। সেখানে অনেক ধরনের লেনদেন হয়। আমি তখনই অভিযোগ দিতে পারতাম, কিন্তু করিনি কারণ তখন আমি প্রেগনেন্ট ছিলাম। ভেবেছিলাম হয়তোবা সন্তান হওয়ার পর সে ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু সন্তান হওয়ার পরও সে পরিবর্তন হয়নি।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘অভিযোগকারী আমার সাবেক স্ত্রী। বিপদে ফেলার জন্যই সত্য গোপন করে গণমাধ্যমে এমন খবর দিচ্ছেন। আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেছেন তিনি। আমাকে হত্যারও হুমকি দিয়েছেন।’

আইসিডিডিআরবি কলেরা হাসপাতালে প্রতিদিন ৬০০ রোগী ভর্তি

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:১০ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১১:২১ এএম
আইসিডিডিআরবি কলেরা হাসপাতালে প্রতিদিন ৬০০ রোগী ভর্তি
ছবি: খবরের কাগজ

শিশু আব্দুল্লাহ্‌র বয়স ছয় মাস দশদিন। ক্লান্ত চাহনি আর দুর্বল শরীর নিয়ে মা সুরাইয়া বেগমের কোলে জড়সড়ো হয়ে বসে আছে। সামনে রাখা লাল রঙের বাটিতে খাবার স্যালাইন। সুরাইয়া বেগমের দিশেহারা অবস্থা। টলটলে চোখ, যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে ছুটবে অশ্রুধারা। সারাক্ষণ উশখুশ করে যেন খুঁজছে কিছু, বা কাউকে।

দৃশ্যটি বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) মহাখালী আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা কেন্দ্র বা আইসিডিডিআরবি কলেরা হাসপাতালের। 

সুরাইয়া বেগম জানান, গত পরশু রাত থেকে বমি আর পাতলা পায়খানা শুরু হয় আব্দুল্লাহ্‌র। সঙ্গে রয়েছে জ্বর। এত ছোট বাচ্চার ঘন ঘন পাতলা পায়খানা আর বমি হওয়ায় শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছে। দিশা না পেয়ে সকালেই ছেলেকে নিয়ে ছুটে এসেছেন এখানে। ডাক্তার দেখার পর বারবার স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু শুধু স্যালাইন খাওয়ালেই ঠিক হয়ে যাবে, ব্যাপারটিতে ঠিক ভরসা পাচ্ছেন না সুরাইয়া।

রিসেপশন এরিয়ার বিপরীত দিকের একটি কক্ষে সারি দেওয়া চেয়ার-টেবিল রাখা। সেখানেই মায়েদের কোলে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুরা। প্রতিটি শিশু রোগীর সামনে একটি বাটিতে রাখা আছে খাবার স্যালাইন। মায়েরা সেখান থেকে চামচে তুলে কোলের শিশুদের স্যালাইন খাওয়াচ্ছেন। 

হাসপাতালের রিসেপশন পেরিয়ে ওয়ার্ডে গেলে দেখা মেলে সত্তরোর্ধ্ব ভর্তি রোগী আক্তার নাজনীনের। নারায়ণগঞ্জের দেউলী চৌড়াপাড়ার বাসিন্দা। বয়সের ভারে ন্যুব্জ। গত তিন দিন ধরে পাতলা পায়খানা আর বমি হচ্ছে। এই বয়সে শরীরে এত ধকল কাবু করে ফেলেছে বৃদ্ধাকে। গত দুদিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি তিনি। বললেন, ‘আমি তো ভাবছি মইরাই যামু। উইঠ্যা বহার শক্তি আছিল না। এইহানে আহার পর সুই দিয়া স্যালাইন দিল হাতের মইধ্যে। আস্তে আস্তে এহন অবস্থা ঠিক অইছে। সকালে স্যালাইন খুইল্যা দিছে।’ সঙ্গে থাকা পুত্রবধূ পপি আক্তার কিছুক্ষণ পরপর বাটি থেকে চামচ ভর্তি স্যালাইন তুলে দিচ্ছেন শাশুড়ির মুখে। 

হাসপাতাল ঘুরে প্রতিটি কোণেই দেখা যায় ডায়রিয়া আর কলেরা আক্রান্ত রোগীর হাহাকার। একই সঙ্গে দেখা যায় সাদা অ্যাপ্রোন পরা ডাক্তার আর নার্সদের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে অক্লান্ত ছুটে চলা। এত কর্মব্যস্ততা আর ছুটোছুটির ভেতরেও সবকিছু যেন সিস্টেমেটিক। ডায়রিয়া রোগীতে ঠাসা হাসপাতালে কোথাও নেই একটু কটু গন্ধ, না আছে কোথাও এতটুকু ময়লার চিহ্ন। রোগীদের ভাষ্যানুযায়ী আইসিডিডিআরবির ব্যবস্থাপনা, চিকিৎসা ও সংশ্লিষ্ট সব কর্মীর ব্যবহার ও সেবা তাদের মন ছুঁয়ে গেছে। 

আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, ডায়রিয়া ও কলেরার চিকিৎসায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি) কলেরা হাসপাতালে রোগী ও স্বজনদের কাছে এক আস্থার জায়গা। এখানে সেবা নিতে আসা সিংহভাগ মানুষই অতি দরিদ্র পরিবার থেকে আসেন। আমরা রোগীদের শুধুমাত্র রোগী নয়, বরং সহমর্মিতার দৃষ্টিতে দেখি। এখান থেকে বছরে আড়াই লাখের মতো রোগী বিনা খরচে চিকিৎসা নেয়। গত ছয় দশকের বেশি সময় ধরে বিজ্ঞানভিত্তিক উদ্ভাবন, চিকিৎসা, রোগী ব্যবস্থাপনা ও রোগ প্রতিরোধে অগণিত সাফল্য অর্জন করে চলেছে আইসিডিডিআরবি। ওরস্যালাইন আবিষ্কার, মুখে খাওয়া কলেরার টিকা আবিষ্কার, ডায়রিয়া চিকিৎসায় জিংকের ব্যবহার, শিশুদের তীব্র অপুষ্টির চিকিৎসাপদ্ধতিসহ দেশের স্বাস্থ্য খাতের অর্জনে এই প্রতিষ্ঠান ভূমিকা রেখে চলেছে।

হাসপাতাল শাখার প্রধান ডা. বাহারুল আলম খবরের কাগজকে বলেন, ‘যেসব রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন, তাদের ৬০ শতাংশ রোগীই পাঁচ বছরের কমবয়সী শিশু। যারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন, তাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণ পানিশূন্যতা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব রোগীর ফ্লুইড রিপ্লেসমেন্টের প্রয়োজন হয়। সাধারণ খাবার স্যালাইনই রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য যথেষ্ট।’ 

তিনি জানান, হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারশ জন রোগীর সেবা দেওয়া হয়। তবে মে থেকে জুন এবং নভেম্বর থেকে জানুয়ারি, বছরের এই দুই সময় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি থেকে। প্রতি বছরই এই সময়টাতে দিনে প্রায় ১২শ থেকে ১৩শ রোগীর সেবা দেওয়ার রেকর্ড রয়েছে। এ ছাড়া গত দুই মাসে হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী মে মাসে সেবা পেয়েছেন মোট ১৮ হাজার ১৪১ এবং জুন মাসে মোট ১৮ হাজার ৬৩৪ জন রোগী। সে হিসাবে দুই মাসে দিনে ৬শ জনেরও বেশি ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন এই হাসপাতাল থেকে। 

হাসপাতালের নার্সিং অফিসার ক্যাথরিন কস্তা বলেন, ‘আগের দিন রাতের হিসাব অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২১২। এদের মধ্যে অনেকেই যাদের অবস্থা আজ শঙ্কামুক্ত, তাদের ডিসচার্জ করে দেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, এখানে চিকিৎসা নিতে আসা বেশির ভাগ রোগীকেই আমরা শুধু খাবার স্যালাইন খেতে বলি। বেশির ভাগ রোগীই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যেতে পারেন। যাদের অবস্থা একটু বেশি খারাপ, তাদেরকেই শুধু ভর্তি রাখা হয়। এসব রোগীও সর্বোচ্চ তিন দিনের ভেতর সুস্থ হয়ে যায়। তিন দিনের বেশি ভর্তি রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম।’ 

ডা. বাহারুল আলম জানান, এখানে শুধু ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসাই হয় না, গবেষণাও হয়। আমাদের সেবা এখন শুধুমাত্র দেশের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে গেছে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশসমূহে, এই প্রতিষ্ঠানের গবেষণালব্ধ ফলাফল কাজে লাগিয়ে আর্তমানবতার সেবার জন্য গৃহীত নানা কার্যক্রম ক্রমাগত সমৃদ্ধ হয়ে চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুরোধে হাইতি, ইয়েমেন, ইরাক, সিরিয়াসহ পৃথিবীর যে দেশেই কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে, সেখানেই আইসিডিডিআরবির চিকিৎসক ও গবেষকরা ছুটে গিয়েছেন এবং স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মীদের কার্যকরভাবে কলেরা চিকিৎসা এবং নিয়ন্ত্রণে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। 

পরিপত্র জারি সরকারি অর্থে সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:৩২ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ০১:৩৩ এএম
সরকারি অর্থে সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

নতুন ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস হয়েছে ৩০ জুন। বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে ১ জুলাই থেকে। অতীতের ধারাবাহিকতায় এবারও অর্থবছরের শুরুতে সরকারি ব্যয়ে লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। 

বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) নতুন এক পরিপত্র জারি করেছে। এতে বিদেশ ভ্রমণ থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ করা অর্থের ব্যয়সংক্রান্ত দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়, সরকারের নিজস্ব অর্থে সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। তবে প্রয়োজন মনে করলে কিংবা অত্যাবশ্যকীয় হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে বিদেশে ভ্রমণ করা যাবে। তবে ওয়ার্কশপ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে।

নতুন অর্থবছরে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের কয়েকটি খাতে টাকা খরচে মিতব্যয়ী হতে হবে। 

পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, চলতি অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন বাজেটের আওতায় সব ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে খরচ বন্ধ থাকবে। বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরা হয়। বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ-গ্যাস-জ্বালানি খাতে বরাদ্দ দেওয়ার টাকার সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ খরচ করা যাবে। কোনো মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা সংস্থা এর চেয়ে বেশি খরচ করতে পারবে না। বরাদ্দের বেশি অর্থ খরচ করলে জবাবদিহি করতে হবে। 

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এবার ব্যয় সংকোচনমুখী বাজেট করা হয়েছে। নতুন বাজেটের যাত্রা শুরু হয়েছে সংকটের মধ্যে। ফলে সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। এ জন্য কিছু কিছু খাতে ব্যয়ের ক্ষেত্রে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

উল্লেখ্য, নতুন বাজেট স্বচ্ছতার সঙ্গে বাস্তবায়নের জন্য এরই মধ্যে প্রত্যেক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। 

পরিপত্রে বলা হয়েছে, পরিচালন বাজেটের আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি মন্ত্রণালয়ের স্থাপনা ছাড়া নতুন আবাসিক-অনাবাসিক ও অন্যান্য ভবন তৈরি বন্ধ থাকবে। তবে চলমান নির্মাণকাজ অন্তত ৭০ শতাংশ শেষ হয়ে থাকলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে খরচ চালানো যাবে।

সব ধরনের যানবাহন কেনায় বরাদ্দ দেওয়া টাকার খরচ বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের বেশি পুরোনা যানবাহন বদলানোর ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমতি নিয়ে খরচ করা যাবে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতে বরাদ্দ দেওয়া টাকার খরচ বন্ধ থাকবে।

ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে অধিগ্রহণ কার্যক্রমের সব আনুষ্ঠানিকতা মেনে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে খরচ করা যাবে। সব ধরনের থোক বরাদ্দ থেকে ব্যয় বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ, পেট্রল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট এবং গ্যাস ও জ্বালানি খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে।

কোথায় ব্যয় করা যাবে: চলতি অর্থবছরের উন্নয়ন বাজেটে যেভাবে ব্যয় করা যাবে, পরিপত্রে সে বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে সব আনুষ্ঠানিকতা অনুসরণ করে অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে। এ ছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের অনুকূলে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে ‘জিওবি (বাংলাদেশ সরকার) বাবদ’ সংরক্ষিত এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুকূলে ‘থোক বরাদ্দ’ হিসেবে সংরক্ষিত জিওবির সম্পূর্ণ অংশ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন নিয়ে ব্যয় করা যাবে।

সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন ও রাষ্ট্রমালিকানাধীন কোম্পানির পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে সরকার এসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে ২০২২ সালের ১২ মে এক পরিপত্রে বলা হয়েছিল, করোনা-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও বৈশ্বিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষা সফর, এপিএ ও ইনোভেশনের আওতাভুক্ত ভ্রমণ, কর্মশালা বা সেমিনারে অংশগ্রহণসহ সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। যদিও সে বছরের সেপ্টেম্বরে সেই নির্দেশনা শিথিল করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন শুক্রবার

প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৬ এএম
আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১২:৩৬ এএম
প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন শুক্রবার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

দুই দিনের ব্যক্তিগত সফরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে জাতির পিতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়সহ নানা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। তার এ আগমন উপলক্ষে জেলায় নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।

প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি অনুযায়ী জানা গেছে, শুক্রবার (৫ জুলাই) বেলা ৩টায় গণভবন থেকে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তের উদ্দেশে যাত্রা করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী উপলক্ষে এক সুধী সমাবেশে অংশ নেবেন। বিকেল ৫টায় সুধী সমাবেশ শেষে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। পরে ফাতিহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেবেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি টুঙ্গিপাড়ার নিজ বাড়িতে রাত্রিযাপন করবেন।

দ্বিতীয় দিন শনিবার বেলা ১১টায় গিমাডাঙ্গা-টুঙ্গিপাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন এবং ‘এসো বঙ্গবন্ধুকে জানি’ শীর্ষক অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করবেন। এরপর বেলা ১২টায় টুঙ্গিপাড়া মাল্টিপারপাস পৌর সুপার মার্কেট পরিদর্শন করবেন এবং টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা রয়েছে।

দুই দিনের ব্যক্তিগত সফর শেষে শনিবার বিকেল ৪টায় সড়কপথে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জাতির পিতার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স এলাকার ধোয়ামোছাসহ শোভাবর্ধনের কাজও ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়া পৌরসভার মেয়র শেখ তোজাম্মেল হক টুটুল বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স ধুয়েমুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করাসহ সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। 

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দুই দিনের সফরকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। 

গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবু আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জি এম সাহাব উদ্দিন আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর টুঙ্গিপাড়ায় আগমন উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। নেতা-কর্মীদের মাঝে আনন্দের সৃষ্টি হয়েছে।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বলেন, ‘টুঙ্গিপাড়ায় দুই দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী আসবেন। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরকে উৎসবমুখর ও নিরাপদ করার লক্ষ্যে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নিরাপত্তা সমন্বয় সভা করেছি। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।’