![ভুট্টা চাষ : সৈয়দপুরের কৃষি অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা](uploads/2024/03/28/1711612957.nilfamari.jpg)
লাভজনক হওয়ায় গত কয়েক বছরে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপেজলায় ভুট্টা চাষ বেড়েছে, এ অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এবার ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
এ মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৪৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ মেট্রিক টন। দেশে বাণিজ্যিকভাবে মুরগির খামার, মাছচাষ ও গবাদিপশু পালন বেড়েছে। এতে খাবার তৈরিতে প্রয়োজন পড়ছে ভুট্টার। তাই বছরজুড়ে শস্যটির চাহিদা থাকছে।
সরেজমিনে বোতলাগাড়ি, বাঙালিপুর, কাশিমরাম, কামারপুকুরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এক সময় যেসব জমিতে কৃষকরা ধান, গম, তামাক চাষ করতেন, এখন সেসব জমিতে ভুট্টার চাষ করছেন।
কৃষকরা জানান, সরকারি কৃষি প্রণোদনার সার, বীজ ও পরামর্শ পেয়ে ভুট্টার চাষ করছেন। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে ৩০ থেকে ৩৫ মণ ভুট্টা উৎপাদিত হচ্ছে। গত বছর এক মণ ভুট্টার দাম ছিল ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা। এ বছর ১ হাজার টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে তারা আশাবাদী। এতে খরচ বাদে কৃষকদের প্রতি বিঘায় লাভ থাকবে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা।
বাঙালিপুরে ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের ভুট্টাচাষি দিলবার হোসেন দিলু বলেন, ‘ইরি ধান আবাদের চেয়ে ভুট্টা চাষে খরচ কম হওয়ায় এবার আমি ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। ক্রেতারা ভুট্টা থেকে তাদের নিজেদের ফিড মিল কারখানায় মুরগি, মাছ ও গরুর খাবার তৈরি করে থাকেন।’
কামারপুকুরের ইউনিয়নের ধলাগঞ্জ গ্রামের কৃষক আনারুল হক বলেন, ‘বোরো চাষে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। ভুট্টার উৎপাদন খরচ কম হলেও দামও তেমন বেশি পাওয়া যায়। এ জন্য আমরা ভুট্টার চাষ করছি।’
বোতলাগাড়ি ইউনিয়নের কৃষক আবদুল কাদের বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ভুট্টা আবাদের তেমন প্রচলন ছিল না। অন্য ফসলের চেয়ে ভুট্টার খরচ কম। গত বছর দাম ভালো পাওয়ায় এবারও ২ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। আগামীতে জমির পরিমাণ বাড়াব।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ খন্দকার খবরের কাগজকে জানান, কৃষি অফিসের সার্বিক পরামর্শে কৃষকরা যথাসময়ে কৃষি প্রণোদনার সার, বীজ পেয়ে ভুট্টার চাষাবাদ করেছেন। তারা ভালো ফলন ও দ্বিগুণ দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ বলেন, ‘উপজেলায় এ বছর ৪৩০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ দশমিক ৫ টন। বাজারে ভুট্টার চাহিদা ভালো থাকায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে অগ্রহী হচ্ছেন। তা ছাড়া ভুট্টা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। এ জন্য ভুট্টা চাষে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনার বীজ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া কৃষি বিভাগ থেকে ভুট্টা চাষে চাষিদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’