![ফসফরাসের অভাব হতে পারে যে কারও](uploads/2024/06/06/Unt-1717669196.jpg)
ফসফরাস আমাদের শরীরে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আমাদের শরীরে এর প্রচুর চাহিদা আছে। খাদ্যে এই মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টটির অভাবের ফলে নানারকম শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাই উপচার অবলম্বনে জানাচ্ছেন ফারজানা আলম
শরীরে ডিএনএর মতো বিভিন্ন আনবিক উপাদানগুলোর মধ্যে ফসফরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। আবার আমাদের শরীরে যে শক্তির আনবিক এককগুলো উৎপন্ন হয়, তাতেও ফসফরাস থাকে। তবে শরীরে বেশির ভাগ ফসফরাস থাকে হাড়ের মধ্যে, বাকি ফসফরাস শরীরের নরম টিসু বা কলার মধ্যে থাকে। আমাদের শরীরে কোষের বিকাশ এবং খাদ্যকে ভেঙে শক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য ফসফরাসের প্রয়োজন হয়।
রোগের লক্ষণ
ফসফরাসের অভাবের ফলে নানা রকম উপসর্গ দেখা যায়। এর মধ্যে আছে হাড়ের উন্নয়নে বা গঠনে সমস্যা। এ ছাড়া হাঁটাচলায় অসুবিধা, দুর্বলতা, অ্যানিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা, দ্রুত ওজন কমে যাওয়া ও মুখের ভিতরে সংক্রমণ। পাশাপাশি হাড়ের সন্ধিস্থলে ব্যথা ও খিদে কমে যেতে পারে। শিশু এবং বেড়ে ওঠা বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ফসফরাসের অভাব হাড়ের বিকৃতি এবং দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার মতো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
কারণ
প্রাথমিকভাবে জাঙ্ক ফুডের মতো স্বল্প পুষ্টির খাবার বা নিম্নমানের খাদ্য খাওয়ার ফলে ফসফরাসের ঘাটতি দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক খাদ্য উপাদানের মধ্যে ফসফরাস থাকায় এর অভাব খুব একটা দেখা যায় না। নিয়মিত নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ খেলে ফসফরাস শরীরে শোষিত হতে সমস্যা দেখা দেয়। এই ওষুধগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টাসিড বা অম্লনাশক ওষুধ।
তবে, ম্যাগনেজিয়ামের অভাবের ফলেও শরীরে ফসফরাস শোষিত হতে সমস্যা হয়, ফলে ফসফরাসের অভাব দেখা যায় (আরডিআই অনুসারে)। প্রাপ্তবয়স্কদের নিয়মিত ১ হাজার এমজি ফসফরাস গ্রহন করা জরুরি।
রোগ নির্ণয়
রক্ত পরীক্ষা করে ও বর্তমান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো দেখে চিকিৎসক ফসফরাসের ঘাটতি সম্পর্কে নিশ্চিত হন। ফসফরাসের অভাব কাটিয়ে উঠতে, চিকিৎসক খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেন। স্বাভাবিকভাবে খাদ্যাভাস পরিবর্তনের মাধ্যমে ফসফরাস অভাব নিয়ন্ত্রণ সবচেয়ে ভালো উপায়। তবে, প্রয়োজন অনুসারে চিকিৎসক মাল্টিভিটামিন সম্পূরক গ্রহণের পরামর্শও দিতে পারেন।
দৈনিক ফসফরাস গ্রহণের পরিমাণ
শূন্য থেকে ছয় মাস বয়সে ১০০ মিলিগ্রাম।
৭ থেকে ১২ মাস বয়সে ২৭৫ মিলিগ্রাম।
এক থেকে তিন বছর বয়সে ৪৬০ মিলিগ্রাম।
চার থেকে আট বছর বয়সে ৫০০ মিলিগ্রাম।
৯ থেকে ১৮ বছর বয়সে ১২৫০ মিলিগ্রাম।
১৯ বছরের পর থেকে ৭০০ মিলিগ্রাম।
ফসফরাস রয়েছে যেসব খাবারে
খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম থাকা মানে আপনি ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবার ঠিকঠাক মতোই গ্রহণ করছেন। সাধারণত যেসব খাবারে প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে, সেগুলো ফসফরাসের ভালো উৎস। যেমন মাছ, মাংস, মুরগির মাংস, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার, ডিম, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবার। প্রোটিন ছাড়া ফসফরাস সমৃদ্ধ খাবারগুলো হলো ভূসি ও ভূসিসমেত খাদ্য, আলু, শুকনো ফল এবং রসুন।
কলি