ঢাকা ১১ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ২৫ জুন ২০২৪

ঘুমের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে গবেষণার উদ্যোগ বিএসএমএমইউর

প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৬ পিএম
আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:৩১ এএম
ঘুমের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব নিয়ে গবেষণার উদ্যোগ বিএসএমএমইউর
ছবি : সংগৃহীত

দেশে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে ঘুমের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব অর্থাৎ অনিদ্রা, নিদ্রাকালীন শ্বাসরোগ যেমন- নাক ডাকা, অতিনিদ্রা, ঘুম সজাগ চক্রের ব্যাধি, ঘুমসংক্রান্ত চলাফেরা ও নড়াচড়া ব্যাধি, নিদ্রাকালীন অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ইত্যাদি রোগ বাড়ছে।

এসব রোগের কারণে ডায়াবেটিস, স্ট্রোক, হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে ঠিকমতো ঘুম না হওয়ায় অফিসের কাজে অমনোযোগী থাকেন, মেজাজ খিটখিটে থাকে, কলিগদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে বিস্তৃত গবেষণার উদ্যোগ নিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। 

 সোমবার (২৭ নভেম্বর) ওই গবেষণা নিয়ে এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।

বিএসএমএমইউর হলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের যুগ্ম সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা অধিশাখা) মল্লিকা খাতুন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. এ কে এম মোশাররফ হোসেন।

ভারতকে রেল যোগাযোগ সুবিধা দিলে ক্ষতি কোথায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ১১:৫৪ এএম
আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১২:০৯ পিএম
ভারতকে রেল যোগাযোগ সুবিধা দিলে ক্ষতি কোথায়, প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর

ট্রানজিট দিলেই দেশ বিক্রি হয় না, আর ট্রানজিট দিলে ক্ষতিটা কী? সদ্যসমাপ্ত ভারত সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ প্রশ্ন রাখলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। ট্রানজিট দিলেই দেশ বিক্রি হয় না। যারা এসব কথা বলে তারাই দেশ বিক্রি করার জন্য বসে থাকে। শেখ হাসিনা এই দেশ কখনো বিক্রি করে না। আর ট্রানজিট দিলে ক্ষতিটা কী?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট দিলে ক্ষতি। ইউরোপে কোনো বর্ডারই নাই। তারা কি একে অন্যের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে? দক্ষিণ এশিয়ায় কেন বাধা দিয়ে রাখব। মানুষ কি দরজা-জানালা বন্ধ রাখবে? এ কানেক্টিভিটির ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হবে। দেশের মানুষই লাভবান হবে।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকাল ১১টায় গণভবনে ভারত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ওপরে ভারতবিরোধিতা করলেও গোপনে ভারতে গিয়ে পা ধরে বসে ছিল। শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না, কারণ আমরাই এই দেশ স্বাধীন করেছি। যারা বিক্রির কথা বলে, তারাই ৭১ এ পাকিস্তানের দালালি করেছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ভারতের সহযোগিতায় বাংলাদেশে তিস্তা প্রকল্প করব। এ বিষয়ে নয়াদিল্লি আমাদের আশ্বাস দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশ ও ভারত এবং জনগণের কল্যাণের জন্য আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছি। আমরা পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্পৃক্ততার পথ এবং কার্যপন্থা নিয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, ২১ ও ২২ জুন আমি রাষ্ট্রীয় দ্বিপাক্ষিক সফর করেছি। একই মাসে সরকার প্রধান হিসেবে দুইবার দিল্লি সফর আমার জন্য এক অভূতপূর্ব ঘটনা। এসবই আমাদের দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠভাবে একে অপরের সঙ্গে কাজ করার প্রমাণ বহন করে।

প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুরু

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ১১:২২ এএম
আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন শুরু
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

সাম্প্রতিক ভারত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকাল ১১টায় গণভবনে এ সংবাদ সম্মেলনে শুরু হয়।

গত শুক্রবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে গত শনিবার তিনি দেশে ফেরেন। 

ভারতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোটের টানা তৃতীয় দফায় সরকার গঠনের পর দেশটিতে এটিই (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর) ছিল কোনো বিদেশি প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় রাষ্ট্রীয় সফর। 

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নয়াদিল্লি গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গত শুক্র ও শনিবারের সফরে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে (ভারত সফরকালীন চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর) বিস্তারিত গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরছেন প্রধানমন্ত্রী।

অমিয়/

সুচিকিৎসা পাচ্ছেন বলেই খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন: আইনমন্ত্রী

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ১২:১৫ এএম
আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১২:১৫ এএম
সুচিকিৎসা পাচ্ছেন বলেই খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ফাইল ছবি

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাংলাদেশে উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে যারা অভিযোগ করছেন, তারা নিজেদের হাস্যকর বস্তুতে পরিণত করছেন। তিনি সুচিকিৎসা পাচ্ছেন বলেই এখন পর্যন্ত সুস্থ আছেন।’

সোমবার (২৪ জুন) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। 

মন্ত্রী বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়ার) যেসব অসুখ আছে, তার কয়েকটা সেরে ওঠার মতো না। এগুলোর চিকিৎসা করে কমিয়ে রাখতে হবে। সেটা করা হচ্ছে। গত রবিবার বিকেল ৪টার দিকে তার শরীরে পেসমেকার লাগানো হয়েছে। সেই পেসমেকারে তিনি এখন যথেষ্ট সুস্থ আছেন। তাই বলা যায়, তিনি সেখানে সুচিকিৎসা পাচ্ছেন। যখন আমাদের চিকিৎসকরা মনে করেছিলেন, দেশের বাইরে থেকে চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করতে হবে, তখন সরকার সেই অনুমতি দিতে কার্পণ্য করেনি।’

আছাদুজ্জামানের দুর্নীতির অনুসন্ধান হবে কি না, সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ১১:৩০ পিএম
আছাদুজ্জামানের দুর্নীতির অনুসন্ধান হবে কি না, সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিমএপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিমএপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৫ জুন)। কাল সকাল ১০টায় কমিশনের নিয়মিত বৈঠক নির্ধারিত আছে। এ বৈঠকে তার দুর্নীতির অনুসন্ধান হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন ও দুদকে আসা অভিযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ইতোমধ্যে কমিশনে মতামত দাখিল করেছে দুদকের যাচাই-বাছাই কমিটি। এতে অনুসন্ধান করার অভিমত ব্যক্ত করা হয়েছে। কমিশনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হলে অনুসন্ধান শুরু হবে। তবে কমিশন চাইলে আছাদুজ্জামানের দুর্নীতি বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য গোয়েন্দা টিমকেও কাজে লাগাতে পারে। সেক্ষেত্রে কমিশনের পরবর্তী বৈঠক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। 

যদিও গতকাল রবিবার দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেছেন, ‘তার (আছাদুজ্জামান) বিষয়ে আসা অবৈধ সম্পদের অভিযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। অনুসন্ধান করা হবে কি না, সেটা কমিশনের পরবর্তী বৈঠকের পর জানানো যাবে।’ 

অস্বাভাবিক অর্থ-সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে কিছুদিন ধরেই ব্যাপক আলোচনায় আছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। এখন বিপুল সম্পদ অর্জন নিয়ে এলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিমএপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তার অবৈধ সম্পদ নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয় ঈদুল আজহার আগের দিন গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রীর নামে ঢাকায় একটি বাড়ি ও দুটি ফ্ল্যাট, ছেলের নামে একটি বাড়ি এবং মেয়ের নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জে তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে ৬৭ শতক জমি রয়েছে। এই তিন জেলায় তার পরিবারের সদস্যদের নামে রয়েছে আরও ১৬৬ শতক জমি। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এল ব্লকের লেন-১-এ ১৬৬ এবং ১৬৭ নম্বরে ১০ কাঠা জমির ওপর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আছাদুজ্জামান মিয়ার স্ত্রী আফরোজা জামানের মালিকানায় ছয়তলা একটি বাড়ি রয়েছে। 

রাজধানীর ইস্কাটনেও তার স্ত্রীর নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। আরও একটি ফ্ল্যাট রয়েছে ধানমন্ডিতে। এর বাইরে সিদ্ধেশ্বরীতে মেয়ের নামে একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। গাজীপুরের কালীগঞ্জের চাঁদখোলা মৌজায় ২০১৭ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে সর্বমোট ১০৬ শতক জমি কেনা হয় স্ত্রী আফরোজা জামানের নামে। এ ছাড়া ২০১৮ সালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কৈয়ামসাইল-কায়েতপাড়া মৌজায় আফরোজার নামে ২৮ শতক জমি কেনা হয়। একই বছর একই মৌজায় আরও ৩২ শতক জমি কেনা হয় তার নামে। পূর্বাচলে ১০ কাঠা জমি রয়েছে আছাদুজ্জামান মিয়ার নামে। এ ছাড়া তার পরিবারের সদস্যদের নামে রাজধানীর আফতাবনগরে ২১ কাঠা জমি রয়েছে। নিকুঞ্জ-১-এ ছোট ছেলের নামেও একটি বাড়ি রয়েছে।

এই প্রতিবেদন নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা শুরু হওয়ায় এখন দুদকের পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে আছে দেশবাসী।

সংসদে রাশেদ খান মেনন আজিজ-বেনজিরের দুর্নীতির চিত্র হিমশৈলের ক্ষুদ্র উপরিভাগমাত্র

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম
আপডেট: ২৪ জুন ২০২৪, ১০:৪৫ পিএম
আজিজ-বেনজিরের দুর্নীতির চিত্র হিমশৈলের ক্ষুদ্র উপরিভাগমাত্র
ফাইল ছবি

প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান ও সাবেক পুলিশপ্রধানের দুর্নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেছেন, ‘সাবেক পুলিশপ্রধান (বেনজীর আহমেদ) ও সাবেক সেনাপ্রধানের (আজিজ আহমেদ) দুর্নীতির চিত্র হিমশৈলের ক্ষুদ্র উপরিভাগমাত্র, এ কথা এখন আর অস্বীকার করার উপায় নেই। এখনই বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে দুর্নীতির এই বিস্তার রোধ করা না গেলে হিমশৈলের ধাক্কায় দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির সলিলসমাধি হবে’।

সোমবার (২৪ জুন) সংসদ অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। 

এসময় ‘দুর্নীতির মচ্ছব’ বন্ধ করতে এখনই বিশেষ কমিশন গঠন, দুর্নীতিবাজদের অর্থসম্পদ বাজেয়াপ্ত করা এবং ঋণখেলাপি, অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিচারে ট্রাইব্যুনাল গঠন করার দাবি জানান রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, বিএনপি আমলে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পাঁচ-পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দেশ এখন সে কলঙ্ক থেকে মুক্ত হলেও এখনো শীর্ষ দশের মধ্যে রয়েছে। বরং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির যে চিত্র সম্প্রতি বেরিয়ে আসছে, তা দেশের ভাবমূর্তি কেবল নয়, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জনমনে অনাস্থা সৃষ্টি করছে। দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়শনের দেওয়া বিবৃতিরও সমালোচনা করেন এই প্রবীণ রাজনীতিক। তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য, আমরা এখানে দেখলাম, পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন থেকে দুর্নীতির খবর প্রকাশ করার জন্য সাংবাদিকদের ধমক দেওয়া হয়েছে।’ 

ঝালকাঠির সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে মেনন বলেন, এই দুঃখজনক ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের স্বর্ণ-মাদক চোরাচালানি ও অপরাধজগতের যে চিত্র বেরিয়ে আসছে, তাতে সংসদ সদস্য ও সংসদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখে সরকারকে আত্মসমালোচনার পরামর্শও দেন তিনি।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর প্রসঙ্গে মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে তিস্তার পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি কোথায় গেল, আমরা জানি না। তিস্তার পানি চুক্তি না করে এই সহযোগিতা গাছের গোড়া কেটে ওপর দিয়ে পানি ঢালার শামিল। এই সফরে গঙ্গা চুক্তির নবায়নের কথা এসেছে। কিন্তু গঙ্গার পানিপ্রবাহ বৃদ্ধির জন্য সংকোশ নদী থেকে খাল কেটে গঙ্গার পানিপ্রবাহ বৃদ্ধির যে বিষয়টি ছিল, তা ৩০ বছরেও বাস্তবায়িত হয়নি; বরং এখন ফারাক্কার ওপরে আরেকটি ব্যারেজ তৈরির কথা এসেছে। তিস্তা নিয়ে যেন আমরা ভূ-রাজনীতির দ্বৈরথের শিকার না হই। প্রয়োজনে পদ্মা সেতুর মতো নিজেদের অর্থায়নে তিস্তা কর্তৃপক্ষ গঠন করে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের পরামর্শও দেন তিনি। 

কালো টাকা সাদা করা প্রসঙ্গে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘নিষ্ঠুর অলিগার্কিরা দেশের অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। লুটের টাকাকে যখন সাদা করার জন্য সৎ উপায়ে অর্জিত অর্থের চেয়ে অর্ধেক কর দিয়ে সাদা করার প্রস্তাব করা হয়, তখন সেটা সততার জন্য তিরস্কার ও অসততার জন্য পুরস্কারের শামিল হয়ে দাঁড়ায়। এ সম্পর্কে যেসব যুক্তি দেওয়া হচ্ছে, তা কেবল অসারই নয়, এ প্রসঙ্গে সরকারের অতীত অবস্থানের বিপরীত। খালেদা জিয়ার জন্য যেটা অনৈতিক, বর্তমানেও সেটা অনৈতিক।’ বলেও মন্তব্য করেন রাশেদ খান মেনন। 

তিনি বলেন, সেই অলিগার্কির স্বার্থ রক্ষার্থে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনা যায়নি। দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, ব্যাংকিং খাতে লুট ও নৈরাজ্য, খেলাপি ঋণের বিশাল পাহাড় দেশের অর্থনীতিকে ভঙ্গুর অবস্থায় উপনীত করেছে’।  

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি ইনস্টিটিউশনের তথ্য অনুযায়ী বছরে ৭ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এই অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে কানাডার বেগমপাড়ায়, মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোমে, সিঙ্গাপুর, দুবাইয়ের আধুনিক শপিং মল, রিয়েল এস্টেট ও হুন্ডি ব্যবসায়। ব্যাংকিং ক্ষেত্রে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে ‘ব্যাংক কমিশন’ গঠন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পরের অর্থমন্ত্রী তাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন। আর এখন ব্যাংক নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক তুঘলকি কাণ্ড করছে। 

সরকারি দলের সংসদ সদস্য শ ম রেজাউল করিম মামলা–জট নিরসনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। ঝিনাইদহ-৩ আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিন মিয়াজী বলেন, তার নির্বাচনি এলাকা সীমান্তবর্তী। তারকাঁটাবিহীন প্রায় ১৭ কিলোমিটার সীমান্ত দিয়ে সোনা চোরাচালান, নারী-শিশু পাচার ও মাদকদ্রব্যের চোরাচালানের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে। এসব তৎপরতা বন্ধে তিনি জনগণকে সম্পৃক্ত করে প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনীকে সমন্বয় করে একটি স্পেশাল টাস্কফোর্স গঠন এবং রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে সরকারে প্রতি আহ্বান জানান। 

এলিস/এমএ/