পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের দল নয়, কর্মীদের দল। এখানে দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র আছে। এখানেই অন্য দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের পার্থক্য। বিএনপি মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু তাদের নিজের দলেই গণতন্ত্র নেই। সেই কারণে যখনই শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সাধারণ কর্মীরা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (২৪ জুন) বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বিএনপির জন্মটাই অগণতান্ত্রিকভাবে। বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলে, সেখানে সিদ্ধান্ত আসে দেশের বাইরে থেকে, পদায়ন-মনোনয়ন হয় রাতের আঁধারে। আর পত্রিকায় ‘মহাসচিবের খোঁজে বিএনপি’ শিরোনাম আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কান্নার ছবি ছাপা হয়। যদিও তারা বলে, মির্জা ফখরুল সাহেবের কান্না বেগম জিয়ার অসুস্থতার জন্য, কিন্তু আমরা জানি, বেগম জিয়া তো দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ।”
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের ৭৫ বছরের পথচলায় যেসব নেতা বেসুরে কথা বলেছেন, দল ছেড়ে চলে গেছেন, তারা রাজনীতি থেকেও হারিয়ে গেছেন। ১৯৭৫ সালের পর জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগকে বিভক্ত করার অপচেষ্টা করেছেন। শেখ হাসিনা সেই দ্বিধাবিভক্তি থেকে আওয়ামী লীগকে রক্ষা করে সুসংযত করেছেন। গত ৪৩ বছর ধরে দলকে অসামান্য নেতৃত্ব দিয়ে পরপর চারবারসহ মোট পাঁচবার রাষ্ট্রক্ষমতায় গেছেন। দেশকে বিশ্বের বুকে অনন্য উচ্চতায় আসীন করেছেন।
এ সময় দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে কাউকে যেন ‘ইনোসেন্ট ভিক্টিম’ বা কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করা না হয়, সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই গণমাধ্যমে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হবে। আমাদের সরকারের নীতি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াস হিসেবে যদি ধারাবাহিকভাবে সংবাদ পরিবেশিত হয়, তাহলে বুঝতে হবে সেটি ষড়যন্ত্রের অংশ। ইনভেস্টিগেশনের আগেই গণমাধ্যমের সামনে কাউকে দুর্নীতিবাজ বলাও সমীচীন নয়।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, অবশ্যই দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হবে এবং সেটি দুর্নীতি দমনে সহায়ক। কিন্তু কেউ যেন ‘ইনোসেন্ট ভিক্টিম’ না হয় এবং কোনো প্রতিষ্ঠানকে যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না করা হয়, সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন।
বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ডা. অরূপ রতন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানার সঞ্চালনায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার প্রমুখ আলোচনায় অংশ নেন।