সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ৫১ হাজার ৩৯১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা পাওনা আছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। গতকাল সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় অধিবেশনে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।
অর্থমন্ত্রী জানান, রাষ্ট্রায়ত্ত ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) কাছে। এ ছাড়া বড় অঙ্কের টাকার মধ্যে চিনিকলগুলোর কাছে পাওনা প্রায় ৭ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা। সার, রাসায়নিক ও ওষুধশিল্পের কাছে ৭ হাজার ২৫০ কোটি টাকা, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) কাছে ৫ হাজার ১৮ কোটি টাকা, বাংলাদেশ বিমানের কাছে পাওনা রয়েছে ৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম-১ আসনের এমপি মাহবুব উর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে কোনো ব্যাংকেই আর্থিকসংকট নেই। তবে কতিপয় ব্যাংকে উচ্চ খেলাপি ঋণ, মূলধন ঘাটতি ও তারল্য সমস্যা বিদ্যমান। এ সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন করে কর্মকর্তা ৯টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পর্যবেক্ষক হিসেবে এবং ৭টি ব্যাংকে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নিয়োজিত।’
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত হ্রাস পাওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হওয়ায় মানুষ আমানত তুলে বিনিয়োগ করছে। আস্থাহীনতা বা মূল্যস্ফীতির কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত কমছে না।’
১০ মাসে ১৩০ মিলিয়ন ডলার নিজ দেশে নিয়ে গেছেন বিদেশিরা। গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকরা তাদের আয় থেকে ১৩০.৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিজ নিজ দেশে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিয়েছেন ভারতীয়রা। তারা উপার্জন করে নিয়েছেন ৫০ দশমিক ৬০ মিলিয়ন ডলার।
গতকাল সংসদে ফরিদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কাদের আজাদের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের বছরে আয় তথ্য সংশ্লিষ্ট তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকে সংরক্ষিত নেই। গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকরা তাদের আয় হতে ১৩০.৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নিজ নিজ দেশে নিয়ে গেছেন।
কোন দেশের নাগরিকরা কত ডলার নিয়েছেন, সেই তথ্য জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারত ৫০.৬০ মিলিয়ন ডলার, চীন ১৪.৫৬ মিলিয়ন ডলার, শ্রীলঙ্কা ১২.৭১ মিলিয়ন ডলার, জাপান ৬.৮৯ মিলিয়ন ডলার, কোরিয়া ৬.২১ মিলিয়ন ডলার, থাইল্যান্ড ৫.৩০ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাজ্য ৩.৫৯ মিলিয়ন ডলার, পাকিস্তান ৩.২৪ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ৩.১৭ মিলিয়ন ডলার, মালয়েশিয়া ২.৪০ মিলিয়ন ডলার, অন্যান্য দেশের নাগরিকরা ২১.৯২ মিলিয়ন ডলার নিজ দেশে নিয়ে গেছেন।