ঢাকা ১২ আষাঢ় ১৪৩১, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

১৪ দলের বৈঠকে প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর বে অব বেঙ্গলে বেইস বানিয়ে তারা কোথায় হামলা করতে চায়?

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৪, ১২:৪৪ এএম
আপডেট: ২৪ মে ২০২৪, ১২:৫০ এএম
বে অব বেঙ্গলে বেইস বানিয়ে তারা কোথায় হামলা করতে চায়?
গণভবনে ১৪ দল নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে এয়ারবেইস বানাতে দিলে কোনো নির্বাচনে জিততে সমস্যা নেই- এমন প্রস্তাব তাকে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি রাজি হননি। প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যায় গণভবনে ১৪ দল নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে এসব কথা বলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাড়ে চার মাস পর জোটসঙ্গীদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘বে অব বেঙ্গলে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) ঘাঁটি বানাবে। ভারত মহাসাগরের এই শান্তিপূর্ণ জায়গাটার ওপর তাদের নজর। এখানে বেইস বানিয়ে তারা কোথায় হামলা করতে চায়? আমি এটা করতে দিচ্ছি না বলেই খারাপ।’ তিনি বলেন, ‘তবে জনগণ সঙ্গে রয়েছে, তারাই সামনে চলার মূল শক্তি।’

বাংলাদেশের গ্যাস না বিক্রির সিদ্ধান্তের বিষয়ে শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রকে ঈঙ্গিত করে বলেন, ‘গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় বসার মতো দৈন্যে ছিলাম না কখনো। শক্তিশালী (যুক্তরাষ্ট্র) দেশটি সেই সিদ্ধান্তকে (বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত) ভালোভাবে নেয়নি। আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, দেশের স্বার্থ বিক্রি করে ক্ষমতায় যাব না। পরে কিন্তু ক্ষমতায় আসতে পারিনি।’ তিনি বলেন, “চক্রান্ত এখনো চলমান রয়েছে। ফিলিস্তিনের মতো মায়ানমার ও বাংলাদেশের একটি অংশ চট্টগ্রাম নিয়ে পূর্ব তিমুরের মতো খ্রিষ্টান স্টেট বানাবে। তারা বে অব বেঙ্গলে (বঙ্গোপসাগরে) ঘাঁটি করতে চায়, কারণ বে অব বেঙ্গল ও ভারত মহাসাগরে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। আর এ জায়গাটাতেই কোনো ‘কন্ট্রোভার্সি’ নেই। কারও কোনো দ্বন্দ্ব নেই।” 

সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, তা গেল ১৫ বছরে প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও শুনতে হয় কথা বলার স্বাধীনতা নেই। কিন্তু সরকার কারও গলা টিপে ধরেনি। সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও টেলিভিশন করে দেওয়ার পরও বলছে, কথা বলতে পারি না। সরকারের বিরুদ্ধে ফেসবুকেও সমালোচনা, মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। আমরাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এ ব্যাপারে সচেতন যে কীভাবে এ সমস্যার মোকাবিলা করা যায়।’ 

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুদ্রাস্ফীতি সব দেশের মতো বাংলাদেশেও হচ্ছে। একই কথা রিজার্ভের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। রিজার্ভ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। কেননা আপৎকালীন খাদ্য মজুত রয়েছে। এত বেশি আলোচনার (রিজার্ভসংকট নিয়ে সমালোচনা) কারণে আজ প্রায় সবাই রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন। এই সতর্কতা দেশের জন্য ভালো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজয় ও স্বাধীনতার চেতনা নস্যাৎ করতেই ২৫ আগস্টের ঘটনা ঘটানো হয়। তার পর থেকেই দেশটা শুধু পেছাতে থাকে। সরকার জনগণের জন্য কাজ করে, কেবল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মানুষ এটা বুঝতে পারে।

সমবায়ের মাধ্যমে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ধান-মাছ চাষ হচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘সেখানে ছয় বিঘা জমি দিয়েছি আমি। সুইজারল্যান্ডে যাচ্ছে এখন শরীয়তপুরের সবজি। ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রান্ত অতিক্রম করেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা।’

সব সময় সাধারণ-নির্যাতিতদের পাশে আছেন বলেও জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা কবে ফেরত যাবে জানি না। প্রতিদিন সেখানে নতুন নতুন শিশু জন্ম নিচ্ছে। অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। আলোচনা চালানো হচ্ছে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মায়ানমারের পরিস্থিতি ভালো নয়। তাদের (রোহিঙ্গা) তো আর ঠেলে দিতে পারি না। আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছি। যুদ্ধ করতে যাইনি, ঝগড়াও করতে যাইনি। কখন যে তাদের ফেরাতে পারব, জানি না। আমরা তো রিফিউজি ছিলাম, তাদের কষ্ট বুঝি। তাদের ভাসানচরে নিচ্ছি। কিছু গেছে, আরও যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে বাধাগুলো আছে, সেগুলো অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছি। ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা চলছে। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। যেখানেই যাই, এই যুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলছি। ইরানের প্রেসিডেন্ট মারা যাওয়ার ঘটনায় আমরা শোক জানিয়েছি। শোক দিবসও পালন করেছি। যেখানেই মানুষ বিপদে পড়েছে, আমরা পাশে দাঁড়িয়েছি। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয় নীতিতে কাজ করছি।’ 

উৎপাদনে কোনো সংকট নেই দেশে, তবে মুদ্রাস্ফীতি কমানো চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন শেখ হাসিনা।  ভবিষ্যতের করণীয় ঠিক করতে ১৪ দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১৪-দলীয় জোটের শরিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা এসেছেন, ভালো হয়েছে। আমি খুশি হয়েছি। সবার কথা শুনব... কীভাবে কী করা যায়।’ তিনি বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে আরও সুসংগঠিত হয়ে মানুষের কাছে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ছাড়া দেশের মানুষের কল্যাণ হবে না। গ্রেনেড হামলাকারী, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি; ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে রোজই আন্দোলন, সরকার উৎখাতসহ নানা রকম হুমকি-ধমকি দেয়। যতক্ষণ জনগণ আছে সঙ্গে, ওটা আমি কেয়ার করি না। তারপরও দেশে জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসংযোগ, এগুলো যেন না করতে পারে। এগুলো যারা করবে, তাদের কোনো ছাড় নেই... যতই মুরব্বি ধরুক, আর যা-ই ধরুক। এদের আমরা ছাড়ব না। মানুষের ক্ষতি যারা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।’

বৈঠকে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, গণতন্ত্রী পার্টির (একাংশ) সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, গণতন্ত্রী পার্টির (আরেক অংশের) সভাপতি ডা. শাহাদাৎ হোসেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের শুরুতে জোটের সমন্বয়কের নেতৃত্বে ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু কন্যা কখনো দেশ বিক্রি করেনি: শেখ সেলিম

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ১২:৩১ এএম
আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ১২:৩১ এএম
আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু কন্যা কখনো দেশ বিক্রি করেনি: শেখ সেলিম
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, যারা সুযোগ পেলে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের কাছে বিক্রি করে দিত তাদের মুখে নেত্রীর বিরুদ্ধে দেশ বিক্রির অভিযোগ শোভা পায় না। 

মঙ্গলবার (২৫ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শেখ সেলিম বলেন, ‘বিএনপির নেতারা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাকি দেশ বিক্রি করছে। তোমরা সুযোগ পেলে বাংলাদেশকে তো পাকিস্তানের কাছে বিক্রি করে দিতে, বা এমনিই দিয়ে দিতে। আওয়ামী লীগ কোনো দিন দেশ বিক্রির রাজনীতি করে না। বঙ্গবন্ধু কারও কাছে দেশ বিক্রি করে নাই, প্রধানমন্ত্রী কারও কাছে দেশ বিক্রি করা তো দূরের কথা এ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিন্দুমাত্র নস্যাৎ হবে সেটা বঙ্গবন্ধুর মেয়ে কখনো মানবে না।’

ভারত বিরোধিতাকারীদের দেশের শত্রু মন্তব্য করে শেখ সেলিম বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের দুর্দিনের বন্ধু, যা রক্তের অক্ষরে লেখা। যুদ্ধের পরে মিত্রবাহিনী এত তাড়াতাড়ি দেশ ছেড়ে চলে যায় এমন ইতিহাস পৃথিবীর কোথাও নেই। স্বাধীনতার পর থেকে যারা ভারত বিরোধিতা করে আসছে, তারা দেশের শত্রু, জনগণের শত্রু, পাকিস্তানের এজেন্ট। তাদের উচিত এ দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া।’

৪ মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম স্থগিত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আইন ও নীতিমালা অনুসারে মানসম্পন্ন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা না করায় চারটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে এবং দুটি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার সংসদে বাজেট অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত লিখিত প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এসব তথ্য জানান। 

এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সরকারি ও বেসরকারি মিলে দেশে মোট মেডিকেল কলেজ ১১০টি। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি মেডিকেল কলেজ ৩৭টি, যার আসন সংখ্যা ৫ হাজার ৩৮০টি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত সরকারি মেডিকেল কলেজ একটি, যার আসন সংখ্যা ১২৫টি। এ ছাড়া বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ৭২টি। এর মধ্যে সেনাবাহিনী পরিচালিত বেসরকারি  মেডিকেল কলেজ ৫টি, যার আসন সংখ্যা ২৬০টি। অপর ৬৭টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে আসন ৬ হাজার ২৯৭টি।

১৪ বছরে ২৬ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ: নৌ প্রতিমন্ত্রী

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, বিআইডব্লিউটিএর অভিযানে ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সারা দেশে ২৬ হাজার ১৮১টি ছোট-বড় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং প্রায় ১ হাজার ১৬০ দশমিক ৬২ একর নদীর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য খসরু চৌধুরীর প্রশ্নের উত্তরে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। 

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে নদী দখলের অপতৎপরতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বিআইডব্লিউটিএ বিভিন্ন সময় ঘোষিত নদীবন্দর সীমানার মধ্যে এবং ক্ষেত্র বিশেষে অন্যান্য নদীর তীরভূমির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রমের উদ্যোগ নেয়। ২০১০-২০২৪ সাল পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে ২৬ হাজার ১৮১টি ছোট-বড় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে এবং প্রায় ১ হাজার ১৬০.৬২ একর নদীর তীরভূমি উদ্ধার করা হয়েছে। উচ্ছেদ কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রায় শতভাগ অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে এবং এখনো বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক নিয়মিতভাবে এর কার্যক্রম অব্যাহত আছে।’

এ ছাড়া দেশের নৌ যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে গত ১৫ বছরে ভরাট হওয়া ৪৯১টি নদী খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ভরাট হওয়া ওইসব নদী খননের জন্য একটি ড্রেজিং কনসেপ্ট পেপার তৈরি হয়েছে। সেই অনুযায়ী বিআইডব্লিউটিএ ১৭৮টি নদী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩১৩টি নদী খনন করবে। ২০০৯ সাল থেকে বিআইডব্লিউটিএ খননের মাধ্যমে ৩ হাজার ৭৩৩ কিলোমিটার নৌপথে নাব্য এনেছে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে দেশের সবচেয়ে বড় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছে ১১ কোটি ৩৪ লাখ টন। আমদানি-রপ্তানির এ কার্যক্রম থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৪১০০ কোটি টাকার বেশি। 

সব উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে: সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী 

সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান জানিয়েছেন, দেশের সকল উপজেলায় ‘উপজেলা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’ নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। ১ম পর্যায়ে ২৩টি উপজেলায় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে সমীক্ষা কার্যক্রম শেষ হয়েছে। ওইসব উপজেলায় এখন ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। মঙ্গলবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।

 

পরীমনিকাণ্ডে চাকরি হারাচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েন

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ১১:৫৯ পিএম
আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ১২:২০ এএম
পরীমনিকাণ্ডে চাকরি হারাচ্ছেন পুলিশ কর্মকর্তা সাকলায়েন
ছবি: সংগৃহীত

চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে এবার চাকরি হারাচ্ছেন ঝিনাইদহ জেলার ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম সাকলায়েন। তিনি তখন ঢাকা মেট্রোপলিটন গুলশান গোয়েন্দা পুলিশের এডিসির দায়িত্বে ছিলেন। মামলার তদন্তকালে পরীমনির বাসায় নিয়মিত রাত্রিযাপন এবং স্ত্রীর অবর্তমানে তাকে রাজারবাগের বাসায় নিয়ে ১৭ ঘণ্টা অবস্থানের প্রমাণ মিলেছে সাকলায়েনের বিরুদ্ধে। এরপর গত ১৩ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের শৃঙ্খলা-২ শাখার উপসচিব পারভীন জুঁই স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ‘গুরুদণ্ড’ হিসেবে সাকলায়েনকে চাকরি থেকে ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান’ বিষয়ে সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সচিবকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, ডিবি গুলশান বিভাগের এডিসি থাকার সময় নায়িকা পরীমনির সঙ্গে সাকলায়েনের পরিচয় ও যোগাযোগ শুরু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি নায়িকা পরীমনির বাসায় নিয়মিত রাত্রিযাপন করতে শুরু করেন। পুলিশ অধিদপ্তরের এলআইসি শাখা থেকে দেওয়া তার ফোনের সিডিআর বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ২০২১ সালের ৪ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে (দিনে ও রাতে) নায়িকা পরীমনির বাসায় অবস্থান করেছেন তিনি।

ওই আদেশে বলা হয়, মোবাইলের ফরেনসিক রিপোর্ট দেখে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৯ জুন সাভার থানার বোট ক্লাবে ধর্ষণচেষ্টা ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে ১৪ জুন ক্লাব নেতা ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরীমনি। পরে রাজধানীর উত্তরার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সাকলায়েন ওই মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ছিলেন। তদন্তের জেরে পরীমনিকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। এ সময় দুজনের পরিচয় হয় ও যোগাযোগ শুরু হয়। পরীমনির বাসায় নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন সাকলায়েন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুযায়ী, পরীমনি সাকলায়েনের রাজারবাগের মধুমতি ভবনের বাসায় প্রায় ১৭ ঘণ্টা অবস্থান করেন। 

পরীমনির সঙ্গে সম্পর্কের অভিযোগ উঠায় সাকলায়েনকে বদলি করা হয়েছিল এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। 

মডেল পিয়াকেও ভুগিয়েছিলেন পরীকাণ্ডের সেই সাকলায়েন

এই ঘটনার পর এবার সাকলায়েনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনলেন মডেল ও অভিনেত্রী পিয়া জান্নাতুল। ‘চাকরি হারাচ্ছেন সাকলায়েন’ এমন খবর প্রকাশের পর গতকাল ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, এই সেই ব্যক্তি (গোলাম সাকলায়েন) যিনি আব্বার এফআর টাওয়ার মামলায় ডিবি থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। প্রায় ৬-৭ দিন আমি আর আম্মা প্রতিদিনই আব্বাকে দেখতে ডিবি অফিসে যেতাম। এই সেই ব্যক্তি, যিনি প্রতারণামূলকভাবে এবং জোরপূর্বক সিআরপিসির ১৬৪ ধারার অধীনে জবানবন্দির জন্য জোরপূর্বক আব্বার সম্মতি নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

পিয়া আরও লিখেছেন, আমি আব্বাকে সম্মতি না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম, কারণ তিনি এ ঘটনায় মোটেও জড়িত ছিলেন না। কিন্তু আমি ডিবি অফিসে পৌঁছার আগেই তিনি (সাকলায়েন) আব্বার কাছ থেকে লিখিত বক্তব্য নিয়ে পরদিন আদালতে জমা দেন। এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং আব্বাকে আর আমাকে চুপ থাকতে বলেন। অথচ তার জানা ছিল না, আমি চুপ থাকার জন্য জন্মগ্রহণ করিনি।

তিনি লিখেছেন, ‘যে দিন তিনি এফআর টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের জন্য জমির মালিক হিসেবে আব্বাকে গ্রেপ্তার করেছিলেন, আব্বা তখন এতটাই অসুস্থ ছিলেন যে তাকে হাসপাতালে যেতে হয়েছিল। তখন আব্বার বয়স ছিল ৭৭ বছরের বেশি!’ যাই হোক, তিনি আমাদের বলেছিলেন, আজকে আমার ছেলের স্কুলের অনুষ্ঠান, এমন একটা বড় দিনেও এখানে এসেছি আমার দায়িত্ব পালনের জন্য।

এই পুলিশ কর্মকর্তা সম্পর্কে পিয়া বলেন, আমার দেখা মতে, এই সাকলায়েন লোকটি অত্যন্ত তীক্ষ্ণ, প্রতিভাবান এবং ধূর্ত। কিন্তু একটা ভুল তার সবকিছু তছনছ করে দিল! যদিও আমরা মানুষের অপকর্মের জন্য তাদের ক্ষমা করে দিই, কিন্তু প্রকৃতি এবং সর্বশক্তিমান সব সময় রয়েছেন সঠিক বিচার করার জন্য।

ধর্ষণ মামলা মাওলানা মামুনুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ১১:২৮ পিএম
আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১১:২৮ পিএম
মাওলানা মামুনুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
মাওলানা মামুনুল হক। ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ রয়েল রিসোর্টে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার দায়ের করা ধর্ষণ মামলার শুনানিতে সশরীর হাজির না হওয়ায় মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালত। মঙ্গলবার (২৫ জুন) নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাকিবউদ্দিন জানান, হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক তার কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণাকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনায় জান্নাত আরা ঝর্ণা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। সম্প্রতি ওই মামলায় মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ থেকে জামিন লাভ করেন। জামিনের শর্ত ছিল আদালতের হাজিরার সময় সশরীরে উপস্থিত থাকবেন। তবে মঙ্গলবার ছিল ধর্ষণ মামলার হাজিরার ধার্য তারিখ। মামুনুল হক আদালতে উপস্থিত না হয়ে তার আইনজীবীর মাধ্যমে হাজিরার আবেদন করেন। আদালতের শর্ত ভঙ্গ করার অভিযোগে জামিন নামঞ্জুর করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

মতিউর ও স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক, বিও হিসাব জব্দ

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ১২:২০ এএম
আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ১২:২০ এএম
মতিউর ও স্ত্রী-সন্তানদের ব্যাংক, বিও হিসাব জব্দ
মতিউর রহমান। খবরের কাগজ গ্রাফিকস

এনবিআরের সাবেক সদস্য মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের ৮টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। এদিকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল)  মতিউর রহমান এবং তার পরিবারের ১৬টি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৫ জুন) বিএফআইইউ এবং বিএসইসি এ নির্দেশনা দেয়। 

বিএফআইইউয়ের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা খবরের কাগজকে জানান সন্দেহজনক ব্যাংক হিসাব তদন্তের স্বার্থে, প্রতিবারে ৩০ দিন করে সর্বোচ্চ ৭ বার জব্দ বা স্থগিত করতে পারে বিএফআইইউ। আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে এসব ব্যাংক হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি, লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি তথ্য সরবরাহের জন্য নির্দেশ দেয় বিএফআইইউ। 

অপরদিকে পুঁজিবাজারে কারসাজির অভিযোগে মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী-সন্তানদের ১৬টি বিও হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি। বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম খবরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

জব্দ করা ব্যাংক ও বিও হিসাবগুলো হলো- মতিউর রহমান, তার প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ, দ্বিতীয় স্ত্রী শাম্মী আখতার শিবলী, দ্বিতীয় স্ত্রীর মেয়ে ইফতিমা রহমান মাধুরী, দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত, প্রথম স্ত্রীর মেয়ে ফারজানা রহমান (ইপ্সিতা), প্রথম স্ত্রীর ছেলে আহাম্মেদ তৌফিকুর রহমান এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর ছেলে ইরফানুর রহমান ইরফানের। 

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত শুধু প্রাইভেট প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় ২০ কোম্পানিতে নিজ নাম ছাড়াও স্ত্রী, নিকটাত্মীয় এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানির নামে ২০১০ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত প্লেসমেন্ট শেয়ার নিয়েছেন মতিউর। 

পুঁজিবাজারে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিও হিসাব ও শেয়ার ধারণসংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করে সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএল। বিএসইসি এই প্রতিষ্ঠানকে বিও হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দেয়। 

মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে বিএসইসি ও বিএফআইইউ এ আদেশ দেয়। 

মতিউর বছরের পর বছর ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে তার উচ্চপদের অপব্যবহার করেছেন এবং আর্থিক ও রিয়েল এস্টেট সম্পদসহ কয়েক শ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ঈদুল আজহার আগে ঢাকার সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ইফাত। তবে শুরুতে ইফাতকে ছেলে হিসেবে অস্বীকার করেন মতিউর রহমান। পরে অবশ্য জানা যায়, সে তারই ছেলে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা ও খবর প্রকাশিত হতে থাকে।

এরপর মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো, জমিসহ নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির তথ্য বের হয়ে আসে।

 

 

পরোক্ষ ধূমপানের শিকার প্রায় ৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪, ১০:৩০ পিএম
পরোক্ষ ধূমপানের শিকার প্রায় ৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ
ছবি : সংগৃহীত

দেশে দেশে ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। আর এর ফলে কর্মক্ষেত্রসহ জনসমাগমস্থল ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। একই সঙ্গে তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। 

মঙ্গলবার (২৫ জুন) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে হাসপাতালের সভাকক্ষে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ‘বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকদের অংশগ্রহণ: সফলতা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান প্রতিষ্ঠানটির রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী। 

সেমিনারে সম্মানিত অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘তামাক খাত থেকে সরকার প্রতিবছর যে পরিমাণ ট্যাক্স পায়, তার থেকে কয়েকগুণ বেশি তামাকজনিত চিকিৎসায় ব্যয় হয়। তামাকে ৭ হাজার কেমিক্যাল রয়েছে, যার মধ্যে ন্যূনতম ৭-৮টি উপাদান সরাসরি ক্যানসারের জন্য দায়ী।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যমান তামাক আইন সংশোধনের ব্যাপারে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আইন সংশোধনের ব্যাপারে আগ্রহী।’ 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশই অসংক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। আর এই অসংক্রামক রোগ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার। তাই এই অকালমৃত্যু ঠেকাতে অবিলম্বে বিদ্যমান আইনটি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।’ 

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, সিটিএফকের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ডা. মাহিন মালিক, যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল টোব্যাকো ব্রাঞ্চের প্রধান ড. ইন্দু আহলুওয়ালিয়া, কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আর রশিদ প্রমুখ।

এ ছাড়াও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে বিলম্ব হওয়ায় তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তামাকবিরোধী সংগঠন প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স (আত্মা)। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানারস কনফরেন্স রুমে অনুষ্ঠিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন: অগ্রগতি, বাধা ও করণীয়’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় তামাকের ক্ষতি হ্রাসে আইনের সংশোধনী দ্রুত চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। 

কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর রিজিওনাল ডিরেক্টর সাউথ এশিয়া প্রোগ্রামস ডা. মাহিন মালিক, বাংলাদেশ লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, আত্মার কনভেনর লিটন হায়দার প্রমুখ।