ঢাকা ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

চট্টগ্রামের এমপিদের বিরুদ্ধে জামায়াতকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫১ এএম
আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫২ এএম
চট্টগ্রামের এমপিদের বিরুদ্ধে জামায়াতকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ

গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর থেকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলের জামায়াতের তৎপরতা বেড়েছে। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে তা স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে স্থানীয় এমপিদের প্রশ্রয়ে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা এখন প্রকাশ্যে দলে প্রভাব বিস্তার করছেন বলে অভিযোগ খোদ আওয়ামী লীগ নেতাদের। তাই দলীয় নেতাদের উপজেলা চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী করতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তৃণমূলের নেতারা। 

রবিবার (৩১ মার্চ) চট্টগ্রামের নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্তদের অভ্যন্তরীণ সভায় এসব বিষয় উঠে আসে। তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় এই বিভাগের সংসদ সদস্য, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ। 

সভা সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারে জামায়াতের তৎপরতা বেড়েছে দাবি করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী কেন্দ্রীয় নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নৌকার প্রতীক ও দলীয় প্রার্থী দেবে না- ঠিক আছে। তবে আমার কক্সবাজার জেলায় সংসদ নির্বাচনের পর জামায়াতের যেভাবে তৎপরতা বেড়েছে, আওয়ামী লীগ যদি দলের একক প্রার্থী না দেয় তাহলে উপজেলাগুলো তাদের প্রার্থীদের হাতে চলে যাবে। তাই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে আমি এর সমাধান চাইছি।’ 

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেছেন, তৃণমূলে দলের কোথায় কী সমস্যা রয়েছে, তা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিলে কেন্দ্র দেখবে। জানতে চাইলে ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি আমাদের দলের অভ্যন্তরীণ সভা। সভায় অনেক কথাই হবে, সব তো বাইরে বলা যাবে না। আপনি আমাদের কেন্দ্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের কাছে জানতে পারেন।’ 

চট্টগ্রামে জামায়াতের ইস্যুটি নিয়ে গত সংসদ নির্বাচনের পর থেকে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এই আলোচনায় ‘ঘি’ ঢেলে দেন সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম-১৫ আসন) আসনের দুবারের সাবেক এমপি আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। 

গত মার্চের ২১ তারিখে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম-১৫ আসনের বর্তমান এমপি এম এ মোতালেবকে একহাত নেন ওই আসনের সাবেক এমপি নেজামুদ্দিন নদভী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমপি এম এ মোতালেবের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সমঝোতার অভিযোগ তোলেন। 

আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে সাবেক এমপি নদভী বলেন, ‘হয়তো তাদের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে ভোটে আমাকে ঠেকালে উপজেলার নির্বাচনে তাদের (জামায়াত) সুযোগ দেওয়া হবে। কারণ এখন উপজেলা নির্বাচন ঘিরে তাদের সক্রিয় দেখা যাচ্ছে কেন? আমার সময়ে তো জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা এলাকায় ছিল না। এখন হাজার হাজার ক্যাডার সবাই মাঠে কেন? তিনি (এম এ মোতালেব) আওয়ামী লীগের না, স্বতন্ত্র এমপি। তার ছোট ভাই মাওলানা মাহমুদুল হক জামায়াতের সিনিয়র নেতা।’

নদভী বলেন, ‘নির্বাচনের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত এমপির প্রত্যক্ষ মদদে তার উগ্র সমর্থকরা সাতকানিয়া-লোহাগাড়ায় নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার অপরাধে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর নগ্ন হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর ও মিথ্য মামলা করেছে।’

বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে নিজ বক্তব্যে তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা দলের মধ্যে বলয় সৃষ্টি হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন। বৈঠকে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম পাটোয়ারী দুলাল আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতার (মন্ত্রণালয়েও রয়েছেন) দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর সংগঠন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সংগঠনে কেন বলয় তৈরি হবে? বলয় মেনে নেওয়া হবে না। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ যেন এ বিষয়টি দেখে। দলের চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনতে হবে।

ঈদের পর চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন দেওয়ার প্রস্তুতি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের বলয় থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যারা বলয় সৃষ্টি করেন তারা দলের দুঃসময়ের ত্যাগী এবং সিনিয়র নেতাদের সম্মান দিতে জানেন না। যার ফলে অভিমানে তারা সংগঠন থেকে দূরে সরে গেছেন। তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।’

এ সময় চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে আবু নাঈম পাটোয়ারী দুলাল বলেন, ‘খেতে একটি জিনিসের দাম কত? আর সেটা বাজারে আসতে আসতে দাম কেন বেড়ে যায়? আমাদের দায়িত্বশীল মন্ত্রীদের উচিত সেদিকে নজর দেওয়ার। আমরা রাজনীতি করি সাধারণ মানুষের জন্য। আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে মানুষের দুঃখ-কষ্টে পাশে দাঁড়ানোর। আমরা তৃণমূলের রাজনীতি করি, তাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য মানুষ সরাসরি আমাদের কাছে দাম বেশি হওয়ায় অভিযোগ করেন। এতে দলেরই ক্ষতি হচ্ছে, আমাদের ক্ষতি হচ্ছে। দু-এক দিনের ব্যবধানে জিনিসপত্রের দাম কেন এত বেড়ে যায়? এর পেছনে কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে হবে। আমরা সবাই জানি এর মূল কারণ কোথায়- কেন তাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না?’ 

বৈঠকের আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে আবু নাঈম পাটোয়ারী বলেন, ‘দলের মধ্যে বলয় যাতে না হয়, সে বিষয়টি বলেছি। এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর বাইরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কারা ভূমিকা রাখছে তাদের খুঁজে বের করার বিষয়ে কথা বলেছি।’ 

বৈঠকে নেতাদের উদ্দেশে কুমিল্লা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা এমপি হতে পারিনি। যারা স্বতন্ত্র এমপি হয়েছেন, তাদের স্বতন্ত্রভাবে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া উচিত। তাদের সংগঠনের বড় পদে রাখার দরকার নেই। স্বতন্ত্র এমপিরা দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন। তাদের নৈতিক দায়িত্ব পালন করবেন। মানুষের সেবা করবেন। সংগঠনের জন্য নেতা-কর্মীরা আছেন। সবাইকে পদে রাখতে চাইলে সংগঠন দুর্বল হয়ে যায়।’ 

বৈঠকে উপস্থিত চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা জানান, সভায় চট্টগ্রাম জেলা ও চট্টগ্রাম মহানগরের নেতাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও দ্বন্দ্ব দ্রুত নিষ্পত্তি করার নির্দেশনা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। মহানগর নেতাদের মধ্যকার কোন্দল মিটিয়ে দলের মধ্যে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন তিনি। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর ও চাঁদপুরের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করতে বললেন। তখন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘কেন্দ্র যখন বলবে, তখনই আমরা সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করতে পারব। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে।’ 

চট্টগ্রাম বিভাগের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, ‘নির্বাচনে প্রশাসন কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। আমরা এমপি-মন্ত্রী সাহেবরা যদি হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকি, তাহলে বিনা প্রতীকে নির্বাচন করার যে উদ্দেশ্য নেত্রী স্থির করেছেন তা সার্থক হবে। কেউ ক্ষমতার দাপট ও ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। যার নির্বাচন করার ইচ্ছা আছে করবেন। সে স্বাধীনতা আছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। জনগণ যাকে ইচ্ছা নির্বাচিত করবে। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, যদি কোনো অনিয়ম হয় তারা ব্যবস্থা নেবে।’

দ্রব্যমূল্যের বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু জিনিসের দাম বেশি, আবার কিছু জিনিসের দাম কম থাকবে। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।

ভারতকে এক ইঞ্চি জমিও ব্যবহার করতে দেব না : ড. রিপন

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
ভারতকে এক ইঞ্চি জমিও ব্যবহার করতে দেব না : ড. রিপন
প্রতিবাদ সভায় কথা বলছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। ছবি : খবরের কাগজ

ভারতকে বাংলাদেশের এক ইঞ্জি জমিও ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। 

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার শুধু অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে ভারতকে তোষণ করতে গিয়ে বাংলাদেশকে গোলামির জিঞ্জির পরিয়ে দিয়েছে।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি’তে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করে জিয়া শিশু কিশোর মেলা-কেন্দ্রীয় কমিটি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১০টি সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে ড. রিপন বলেন, ‘ওরা (ভারত) যেহেতু বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশে জনগণের সরকার নেই। বরং তাদের তাঁবেদার সরকার বসে আছে; তাই তারা রেল করিডোর, সড়ক করিডোর ও নৌ করিডোরের নামে বাংলাদেশকে আষ্টেপৃষ্টে বাধার ষড়যন্ত্র করছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে।’

তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়াকে শুধু নির্বাচন থেকে দূরে রাখার অসৎ অভিপ্রায় নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে দণ্ডিত করেছেন। আওয়ামী সরকারপ্রধান ও তাদের লোকজন প্রায়ই বলেন, ‘বেগম জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।’ অথচ আদালতের ফরমায়েশি রায়ে পর্যন্ত কোথাও খালেদা জিয়া টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন কথা লেখা নেই। তারা এই অসত্য বয়ান দিয়েই যাচ্ছেন। যদি দেশে আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা থাকত তাহলে শুধু এই বক্তব্যের জন্য তাদের ১০০ বছরের জেল হয়ে যেত।” 

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কে এস হোসেন টমাসের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড খান মো. রিয়াজ উদ্দিনসহ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৮ পিএম
বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
ফাইল ছবি

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওনা দেবেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার।

জাহিদ হোসেন জানান, এরই মধ্যে মেডিকেল বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়া গেছে। বিকেলেই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নেওয়া হবে।

গত ২২ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। পরদিন ২৩ জুন তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। 

এর আগে, গত বছরের ২৭ অক্টোবর লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিনজন চিকিৎসক। তবে আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২২ জুন তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

ভারতের সঙ্গে সমঝোতা-চুক্তিতে স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার পথে: ফারুক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম
ভারতের সঙ্গে সমঝোতা-চুক্তিতে স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার পথে: ফারুক
ছবি: খবরের কাগজ

ভারতের সঙ্গে নতুন করে সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব খর্ব হওয়ার পথে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। 

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারত গেলেন এক সপ্তাহে দুই বার। কি মধুর সম্পর্ক, কি প্রেম-প্রীতি-ভালবাসা। আম, লিচু, ইলিশ পাঠান কিন্তু ভারতে গিয়ে ফেরত আসেন খালি হাতে। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিসাব আনতে পারেন না বরং নতুন করে বাংলাদেশের বুকের উপর দিয়ে রেললাইন নির্মাণের সমঝোতা চুক্তি আপনি স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন দিল্লির দাসত্ব গ্রহণ করার জন্য নয়।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভারতের সঙ্গে ‘অবৈধ চুক্তি, দুর্নীতি, দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র’র প্রতিবাদে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘গান গায় শিল্পী, তলে তলে ব্যথা। আসলেই সত্যি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রীর তলে ব্যথা আছে। তিনি একেক দিন একেকটা নতুন কথা আবিষ্কার করেন। আজকে আবার আবিষ্কার করলেন পত্রিকায় দেখলাম, মমতার জন্য নাকি আমরা তিস্তার পানির শেয়ার পাচ্ছি না। হায়রে কপাল আমাদের এত মন্দ। এই মন্দের পেছনে দায়ী আওয়ামী লীগ। এই কপাল খারাপের পেছনে আওয়ামী লীগ। আজকে এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ কথা বলা শুরু করেছে।’

আওয়ামী লীগ সরকার সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, সাবেক পুলিপ্রধান বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, এনবিআর মতিউর তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেন জয়নুল আবেদিন ফারুক। 

তিনি বলেন, ‘সরকার এক এক কাণ্ড তৈরি করে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য শেষে ছাগলকাণ্ড ঘটিয়েছে। নতুন করে ফয়সাল তৈরি করেছেন। এসব কাণ্ড ঘটিয়ে কোনো লাভ হবে না। বাংলাদেশের মানুষ শহিদ জিয়ার দল, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজ অত্যান্ত সুদৃঢ় অবস্থায়।’

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বছরে ৯২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। আর হিন্দুস্তানের সঙ্গে অসম চুক্তি করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আপনারা হুমকি মুখে ফেলবেন না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সৈনিক, একজন কর্মী থাকতেও আমরা কোনদিনও এটা গ্রহণ করব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। আইনের শাসনের নামে বেআইনি শাসন করে আমাদের লক্ষ লক্ষ কর্মীকে জেলে রেখেছেন। মির্জা আলমগীর, মির্জা আব্বাসের মতো সততার পরিচয় দেওয়া নেতাদের বিচারপতিরে বাসভবনে ঢিল মারার কারণে জেল খাটতে হয়। এর চেয়ে লজ্জার কিছু হয় না।’

গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নাঈমের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজ প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

যবিপ্রবি ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:১১ এএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
যবিপ্রবি ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। এ বিষয়ে গত রবিবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে যবিপ্রবি শাখার সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদককে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও তারা উত্তর দেননি। 

ওই কমিটির সভাপতি-সম্পাদক বারবার বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের জন্য বিভিন্ন সময় নীতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। ২০২৩ সালে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি স্থগিত করে। গত ১১ নভেম্বর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় কমিটি। 

চলতি বছরের ৪ জুন রাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের ভেতর যবিপ্রবির শিক্ষার্থী শাহরীন রহমান প্রলয়কে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ছাত্রাবাসে সভাপতির উপস্থিতিতে তার কক্ষে রাতভর নির্যাতনের পর ওই শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে গত ২৫ জুন ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৯ জনকে আজীবন বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া চারজনের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। একই সঙ্গে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ করতে শাখার সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে নতুন কমিটি গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ছাত্রলীগ। কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে (প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা) ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

২০২২ সালের ৩১ জুলাই তৎকালীন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) সোহেল রানাকে সভাপতি ও তানভীর ফয়সালকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য ছাত্রলীগের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে। তবে গত ২৩ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি তারা। এ ছাড়া বিলুপ্ত এ কমিটির বিরুদ্ধে রয়েছে শিক্ষক লাঞ্ছিত, সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে আসা অনেককে নির্যাতনের অভিযোগ। প্রতিবেদন করতে গিয়ে সাংবাদিকরাও তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।

কেবিনে খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:০৩ এএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ১২:০৪ এএম
কেবিনে খালেদা জিয়া
ফাইল ছবি

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানোর স্থানে কিছুটা জটিলতা দেখা দিয়েছে। গত রবিবার থেকে এই জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। প্যারামিটারগুলো ওঠানামা করছে। প্রতিদিনই নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। 

সোমবার (১ জুলাই) রাতে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য এ সব তথ্য জানান।

তিনি জানান, খালেদা জিয়া অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছেন। চিকিৎসকের ভাষায় তিনি পালসের (হৃৎস্পন্দন) যে সমস্যা ছিল তার ৮০ ভাগ রিকোভারি হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে বিএনপি চেয়ারপারসন আগামী সপ্তাহে বাসায় ফিরতে পারবেন।

মেডিকেল বোর্ডের ওই চিকিৎসক বলেন, ‘ম্যাডামের অবস্থা আলহামদুলিল্লাহ স্থিতিশীল রয়েছে। ধীরে-ধীরে উন্নতি করছিল। কিন্তু হঠাৎ কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন টেস্ট চলছে। প্যারামিটারগুলো সন্তোষজনক পর্যায়ে নেই। কিছুটা ঝুঁকি তো আছে। আর যে সমস্যা তা হুট করেই সেরে ওঠা কঠিন। এমনিতেই তিনি মাল্টিপল ডিজিসে ভুগছেন। একটু সময় তো লাগবেই। তার যে অবস্থা এই মুহূর্তে বাসায় যাওয়া নিরাপদ নয়। বয়স এখানে বড় ফ্যাক্টর।’

তিনি জানান, অধিকতর সুবিধার্থে সিসিইউর ফ্যাসিলিটিজগুলো কেবিনে শিফট করা হয়েছে। অর্থাৎ কেবিনে জরুরি ভিত্তিতে যা প্রয়োজন সবই সেখানে রয়েছে। মেডিকেল বোর্ড প্রায় প্রতিদিনই বৈঠক করে চিকিৎসার ফলোআপ করছেন। স্থায়ী চিকিৎসার জন্য লিভার ট্রান্সপ্লান্ট জরুরি। এটা বাংলাদেশে সম্ভব নয়।

গত শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বিএনপি চেয়ারপারসনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত রবিবার অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।

এদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। সোমবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করেন নেতা-কর্মীরা। ঢাকায়ও শনিবার বড় সমাবেশ করেছে বিএনপি। 

শফিক/এমএ/