ঢাকা ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪

আ.লীগের বৈঠক : এমপি-মন্ত্রী ও স্বজনদের ভাগ্য নির্ধারণ আজ

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৩ এএম
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৭ এএম
আ.লীগের বৈঠক :  এমপি-মন্ত্রী ও স্বজনদের ভাগ্য নির্ধারণ আজ
খবরের কাগজ গ্রাফিক্স

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক আজ মঙ্গলবার গণভবনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৈঠকে দলের নির্দেশ অমান্য করে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের যেসব স্বজন প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশ আসতে পারে। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও বহিষ্কারের মতো সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা খবরে কাগজকে আভাস দিয়েছেন।

তবে আওয়ামী লীগেরই কিছু নেতা দলের কঠোর অবস্থানের বিরোধী। তারা উপজেলা নির্বাচনে স্বজনদের প্রার্থী হওয়ার পক্ষে নানা যুক্তি দিচ্ছেন। দলের ওই অংশের বিশেষ করে সিদ্ধান্ত অমান্যকারী এমপি-মন্ত্রীদের মধ্যে ভয় রয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী যদি তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সিদ্ধান্ত নেন তা হলে আগামীতে তারা দলের পদ-পদবি এবং নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নাও পেতে পারেন বলে আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনা রয়েছে।

উল্লেখ্য, দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিজের শ্যালককে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশনা দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মন্ত্রীর শ্যালক লুৎফুল হাবিব রুবেল।

অন্যদিকে বিপরীত অবস্থান নিতেও দেখা গেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাসহ একাধিক এমপি-মন্ত্রীকে। দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান ও চাচাতো ভাই পাভেলুর রহমান শফিক খান মাদারীপুর সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। শাজাহান খান একাধিকবার সাংবাদিকদের বলেছেন, আত্মীয়দের প্রার্থী হওয়া দোষের নয়। আত্মীয় প্রার্থীরা যদি আওয়ামী লীগের স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘ সময় জড়িত থাকেন, তাদের যদি জনপ্রিয়তা থাকে, তাহলে তারা কেন ভোট করতে পারবেন না? তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির আজকের বৈঠকে এ বিষয়ে নিজের যুক্তি তুলে ধরবেন বলেও জানিয়েছেন।

আজকের বৈঠকে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের তালিকা তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক আজ সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বৈঠক শুরু হবে। সভায় সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এবারের সভায় ১৬টি আলোচ্য সূচি নির্ধারণ করেছে দলটি। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ হচ্ছে শোক প্রস্তাব পাঠ, মহান মে দিবস, ১৭ মে আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, ২৫ মে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী, ৭ জুন ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস, শোকের মাস আগস্টের কর্মসূচি, সমসাময়িক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং দলীয় সাংগঠনিক বিষয়। এর আগে সর্বশেষ ২২ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হয়।

দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, আগে দলীয় সিদ্ধান্ত যারা অমান্য করেছেন তাদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিয়েছে, যদিও তা সবার ক্ষেত্রে সমান হয়নি। অর্থাৎ সবাইকে বহিষ্কার কিংবা অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। তবে কোনো না কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের যারা শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি তাদের বিষয়ে দল অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। তবে কার ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তার সিদ্ধান্ত নেবেন দলীয়প্রধান শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, ‘দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে দল। এ বিষয়ে কড়া বার্তা দেবে আওয়ামী লীগ।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম খবরের কাগজকে বলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে দেশি-বিদেশি অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতি আলোচনায় গুরুত্ব পায়। উপজেলা নির্বাচন নিয়েও কথা হবে। বিশেষ করে এমপি-মন্ত্রী যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বজনদের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন এবং যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শাস্তি সব সময় সমান হয় না। সামনে দলের সম্মেলন রয়েছে, থানা-জেলায় কমিটি হবে, নির্বাচন রয়েছে, নেতাদের কার্যক্রমের ওপর দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এমপি-মন্ত্রী ও তাদের স্বজনদের তালিকা তৈরি করেছেন। দলের দপ্তরে তা জমা দেওয়া হবে। দলের কেন্দ্রীয় বৈঠকে তালিকা অনুযায়ী কথা হবে।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন খবরের কাগজকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে অন্তর্ভুক্ত সমসাময়িক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি, সাংগঠনিক ও বিবিধ শিরোনামে প্রায় সব সমসাময়িক বিষয় ও সাংগঠনিক বিষয়ে আলোচনা হয়। সাম্প্রতিক ইস্যুর পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত করতে সহায়তা করা এবং মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের নিকটাত্মীয়দের প্রার্থিতার বিষয়ে আলোচনা হবে বলে আমি মনে করি। আশা করছি, আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় সভানেত্রী তার প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্ত দেবেন।’

এদিকে প্রথম ধাপের নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের বিষয়ে দলের অবস্থান পরিষ্কার না হওয়ায় উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপেও ১১ জন স্বজনের প্রার্থী হওয়ার খবর পেয়েছে খবরের কাগজ।

তৃণমূলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপে কুমিল্লা সদর দক্ষিণে প্রার্থী হয়েছেন গোলাম সারোয়ার। তিনি কুমিল্লা-১০ আসনের এমপি সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সহোদর। এ উপজেলায় সুষ্ঠু ভোট হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন অন্য প্রার্থীরা। এ জেলার বরুড়া উপজেলায় প্রার্থী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের শ্যালক হামিদ লতিফ ভূঁইয়া। যদিও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকার এমপি।

নিজের ভগ্নিপতিকে প্রার্থী করায় লক্ষ্মীপুর-২ আসনের এমপি নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। রায়পুর উপজেলায় নিজের ভগ্নিপতি অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদকে প্রার্থী করতে প্রভাব খাটিয়েছেন এমপি নয়ন। ওই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া আলতাফ হোসেন হাওলাদার বলেন, ‘দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্যদের প্রার্থী না হওয়ার দলীয় সিদ্ধান্ত থাকলেও আমাদের এমপি মহোদয় নির্বাচনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন।’

নরসিংদীর পলাশ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খানের স্ত্রীর বড় ভাই মো. শরীফুল হক। নরসিংদীর শিবপুরের এমপি সিরাজুল ইসলাম মোল্লার স্ত্রী ফেরদৌসি ইসলাম শিবপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন। নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন নজরুল মজিদ মাহমুদ স্বপন। তিনি শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের ছোট ভাই।

নাটোর-১ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদের ভাতিজা শামীম আহমেদ সাগর লালপুর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভোট করছেন লালমনিরহাট-২ আসনের এমপি সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ ও ভাই মাহবুবুজ্জামান আহমেদ।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন জামিল হাসান দুর্জয়। তিনি গাজীপুর-৩ আসনের এমপি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলীর বড় ভাই। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন নঈম হাসান জোয়ার্দার। তিনি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুনের ভাতিজা। বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আবদুল সালাম মল্লিক। তিনি বরিশাল-৬ আসনের এমপি মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিকের আপন ভাই।

বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৮ পিএম
বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
ছবি: খবরের কাগজ

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (২ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে রাজধানীর গুলশানের ফিরোজা বাসভবনে পৌঁছেন তিনি। বাসায় তাকে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। 

তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, পেসমেকার বসানোর পর এখন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা অনেকটা স্থিতিশীল। সে কারণে তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হয়। বাসায় সার্বক্ষণিক চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে তার নিয়মিত চিকিৎসা চলবে। 

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হাসপাতাল ছাড়েন খালেদা জিয়া। এ সময় খালেদা জিয়াকে একনজর দেখতে হাসপাতাল ও গুলশানে বাসভনের সামনে ভিড় করেন নেতা-কর্মীরা। এভারকেয়ার থেকে ফিরোজা পর্যন্ত দলের নেতা-কর্মীরা গাড়িবহর নিয়ে তাকে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দেন। হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু,  যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ  রায় চৌধুরীসহ দলের সহস্রাধিক নেতা-কর্মী।   

গত ২২ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। পরদিন ২৩ জুন তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। এর আগে গত বছরের ২৭ অক্টোবর লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিনজন চিকিৎসক। তবে আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২২ জুন তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

শফিক/এমএ/

ভারতকে এক ইঞ্চি জমিও ব্যবহার করতে দেব না : ড. রিপন

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৫:০০ পিএম
ভারতকে এক ইঞ্চি জমিও ব্যবহার করতে দেব না : ড. রিপন
প্রতিবাদ সভায় কথা বলছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। ছবি : খবরের কাগজ

ভারতকে বাংলাদেশের এক ইঞ্জি জমিও ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। 

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার শুধু অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে ভারতকে তোষণ করতে গিয়ে বাংলাদেশকে গোলামির জিঞ্জির পরিয়ে দিয়েছে।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি’তে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভাটি আয়োজন করে জিয়া শিশু কিশোর মেলা-কেন্দ্রীয় কমিটি।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১০টি সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে ড. রিপন বলেন, ‘ওরা (ভারত) যেহেতু বুঝতে পেরেছে বাংলাদেশে জনগণের সরকার নেই। বরং তাদের তাঁবেদার সরকার বসে আছে; তাই তারা রেল করিডোর, সড়ক করিডোর ও নৌ করিডোরের নামে বাংলাদেশকে আষ্টেপৃষ্টে বাধার ষড়যন্ত্র করছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে পারে।’

তিনি আরও বলেন, “খালেদা জিয়াকে শুধু নির্বাচন থেকে দূরে রাখার অসৎ অভিপ্রায় নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে দণ্ডিত করেছেন। আওয়ামী সরকারপ্রধান ও তাদের লোকজন প্রায়ই বলেন, ‘বেগম জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।’ অথচ আদালতের ফরমায়েশি রায়ে পর্যন্ত কোথাও খালেদা জিয়া টাকা আত্মসাৎ করেছেন এমন কথা লেখা নেই। তারা এই অসত্য বয়ান দিয়েই যাচ্ছেন। যদি দেশে আইনের শাসন ও জবাবদিহিতা থাকত তাহলে শুধু এই বক্তব্যের জন্য তাদের ১০০ বছরের জেল হয়ে যেত।” 

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর শিকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কে এস হোসেন টমাসের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জেড খান মো. রিয়াজ উদ্দিনসহ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৮ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৮ পিএম
বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
ফাইল ছবি

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজার উদ্দেশে রওনা দেবেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার।

জাহিদ হোসেন জানান, এরই মধ্যে মেডিকেল বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়া গেছে। বিকেলেই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে বাসায় নেওয়া হবে।

গত ২২ জুন রাত সাড়ে ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। পরদিন ২৩ জুন তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। 

এর আগে, গত বছরের ২৭ অক্টোবর লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিনজন চিকিৎসক। তবে আবারও তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২২ জুন তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনিসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন।

শফিকুল ইসলাম/সালমান/

ভারতের সঙ্গে সমঝোতা-চুক্তিতে স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার পথে: ফারুক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৫ পিএম
ভারতের সঙ্গে সমঝোতা-চুক্তিতে স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার পথে: ফারুক
ছবি: খবরের কাগজ

ভারতের সঙ্গে নতুন করে সমঝোতা ও চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব খর্ব হওয়ার পথে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক। 

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারত গেলেন এক সপ্তাহে দুই বার। কি মধুর সম্পর্ক, কি প্রেম-প্রীতি-ভালবাসা। আম, লিচু, ইলিশ পাঠান কিন্তু ভারতে গিয়ে ফেরত আসেন খালি হাতে। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিসাব আনতে পারেন না বরং নতুন করে বাংলাদেশের বুকের উপর দিয়ে রেললাইন নির্মাণের সমঝোতা চুক্তি আপনি স্বাক্ষর করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন দিল্লির দাসত্ব গ্রহণ করার জন্য নয়।’

মঙ্গলবার (২ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভারতের সঙ্গে ‘অবৈধ চুক্তি, দুর্নীতি, দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র’র প্রতিবাদে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

এই অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে গণতন্ত্র ফোরাম।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘গান গায় শিল্পী, তলে তলে ব্যথা। আসলেই সত্যি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রীর তলে ব্যথা আছে। তিনি একেক দিন একেকটা নতুন কথা আবিষ্কার করেন। আজকে আবার আবিষ্কার করলেন পত্রিকায় দেখলাম, মমতার জন্য নাকি আমরা তিস্তার পানির শেয়ার পাচ্ছি না। হায়রে কপাল আমাদের এত মন্দ। এই মন্দের পেছনে দায়ী আওয়ামী লীগ। এই কপাল খারাপের পেছনে আওয়ামী লীগ। আজকে এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণ কথা বলা শুরু করেছে।’

আওয়ামী লীগ সরকার সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, সাবেক পুলিপ্রধান বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, এনবিআর মতিউর তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেন জয়নুল আবেদিন ফারুক। 

তিনি বলেন, ‘সরকার এক এক কাণ্ড তৈরি করে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরানোর জন্য শেষে ছাগলকাণ্ড ঘটিয়েছে। নতুন করে ফয়সাল তৈরি করেছেন। এসব কাণ্ড ঘটিয়ে কোনো লাভ হবে না। বাংলাদেশের মানুষ শহিদ জিয়ার দল, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আজ অত্যান্ত সুদৃঢ় অবস্থায়।’

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বছরে ৯২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে। আর হিন্দুস্তানের সঙ্গে অসম চুক্তি করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে আপনারা হুমকি মুখে ফেলবেন না। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সৈনিক, একজন কর্মী থাকতেও আমরা কোনদিনও এটা গ্রহণ করব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। আইনের শাসনের নামে বেআইনি শাসন করে আমাদের লক্ষ লক্ষ কর্মীকে জেলে রেখেছেন। মির্জা আলমগীর, মির্জা আব্বাসের মতো সততার পরিচয় দেওয়া নেতাদের বিচারপতিরে বাসভবনে ঢিল মারার কারণে জেল খাটতে হয়। এর চেয়ে লজ্জার কিছু হয় না।’

গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নাঈমের সঞ্চালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আব্দুস সালাম আজাদ, বিএনপির শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজ প্রমুখ।

শফিকুল ইসলাম/অমিয়/

যবিপ্রবি ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:১১ এএম
আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৯:২৪ এএম
যবিপ্রবি ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। এ বিষয়ে গত রবিবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ ব্যাপারে যবিপ্রবি শাখার সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সম্পাদককে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও তারা উত্তর দেননি। 

ওই কমিটির সভাপতি-সম্পাদক বারবার বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের জন্য বিভিন্ন সময় নীতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। ২০২৩ সালে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি স্থগিত করে। গত ১১ নভেম্বর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে কেন্দ্রীয় কমিটি। 

চলতি বছরের ৪ জুন রাতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্যাম্পাসের ভেতর যবিপ্রবির শিক্ষার্থী শাহরীন রহমান প্রলয়কে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ছাত্রাবাসে সভাপতির উপস্থিতিতে তার কক্ষে রাতভর নির্যাতনের পর ওই শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। তদন্তে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে গত ২৫ জুন ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ৯ জনকে আজীবন বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া চারজনের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো। একই সঙ্গে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার লক্ষ্যে ছাত্রসমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে ঐক্যবদ্ধ করতে শাখার সাংগঠনিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে নতুন কমিটি গঠন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ছাত্রলীগ। কমিটিতে পদপ্রত্যাশীদের আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে (প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা) ছাত্রলীগের দপ্তর সেলে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।

২০২২ সালের ৩১ জুলাই তৎকালীন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) সোহেল রানাকে সভাপতি ও তানভীর ফয়সালকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য ছাত্রলীগের ১১ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে। তবে গত ২৩ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি তারা। এ ছাড়া বিলুপ্ত এ কমিটির বিরুদ্ধে রয়েছে শিক্ষক লাঞ্ছিত, সাধারণ শিক্ষার্থী ও চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে আসা অনেককে নির্যাতনের অভিযোগ। প্রতিবেদন করতে গিয়ে সাংবাদিকরাও তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।