আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেছেন, ‘ভোট জালিয়াত ও দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারী সরকারের জনগণের ট্যাক্স খরচ করার এবং বাজেট দেওয়ার নৈতিক কোন বৈধতা নেই। জনগণ একদিন এই ডামি সরকারের বিচার করবে।’
সোমবার (১ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য অর্থবিল পাসের প্রতিবাদে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে এবি পার্টি। এটি সঞ্চালনা করেন দলের যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু।
সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ভোট চুরি ও দুর্নীতির অভিযোগ তারা যদি আমাদের অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করেন তাহলে যা হবার তা হবে। এ সরকারের ল্যাসপেন্সাররা ব্যাংক, শেয়ারবাজার, রিজার্ভ সব একটা একটা করে খেয়ে ফেলেছে।’
সরকারের মন্ত্রী-এমপি, সচিব ও বিভিন্ন বাহিনীর দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন তাদের দায়িত্ব নেওয়ার আগে নিজ নিজ সম্পদের বিবরণী দাখিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের এত জমি, ফ্ল্যাট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আর নগদ অর্থ তো অতীতে ব্রিটিশ লুটেরাদের হার মানিয়ে দিয়েছে।’
রাজস্ব বোর্ডের সাবেক প্রধান ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘রাজস্ব বোর্ড যদি স্বাধীনভাবে সততার সঙ্গে কাজ করে তাহলে মানুষ ট্যাক্স ফাঁকি না দিয়ে বরং দ্বিগুণ ট্যাক্স কালেকশনের সম্ভাবনা রয়েছে। তেমনি ব্যাংকগুলো যদি সরকারি দলের এমপি-মন্ত্রী ও তাদের পরিবারের প্রভাবমুক্ত থাকে তাহলে সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত গড়ে উঠবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। সরকারি ক্রয় সম্পর্কিত বিষয়গুলো থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে এখন এই সরকার দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে।’ প্রতিবছর রাজস্ব বোর্ডের সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান তিনি।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “আওয়ামী লীগের আশ্রয়ে থাকা হাজার হাজার বেনজীর-মতিউর চুরি-দুর্নীতির যে নজির সৃষ্টি করেছে তাতে এই দলের নাম এখন নতুন করে ‘আওয়ামী লুটপাট লীগ’ রাখা উচিত।”
তিনি বাজেটের সমলোচনা করে বলেন, ‘একদিকে জনগণের ওপর করের বোঝা চাপানো হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাংক থেকে আমানতকারীরা ঋণ ও এলসি সুবিধা পাচ্ছে না। ব্যাংকে রাখা আমানত পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে।’
ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘আমরা প্রথমেই বলতে চাই, একটি অবৈধ সরকার আসলেই বাজেট পেশ করার এখতিয়ার রাখে কি-না? কারণ বাজেট, করসহ অন্য বিষয়গুলো জন্ম থেকেই জনগণের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। বাজেটের আগেই আমরা বলেছিলাম, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করতে হবে, তা করা হয়নি। কর আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা বাস্তবভিত্তিক নয়। আসলে এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের কারণে জনগণ নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নাই।’
ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, এম আমজাদ খান, যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ কবির, সদস্যসচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, শরণ চৌধুরী, ফেরদৌসী আক্তার অপি, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, সদস্যসচিব আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লা রনিসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
এনাম আবেদীন/সালমান/