ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

হাসপাতালে খালেদা জিয়ার খোঁজ নিলেন ফখরুল

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:০০ পিএম
আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪, ১২:০০ পিএম
হাসপাতালে খালেদা জিয়ার খোঁজ নিলেন ফখরুল
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২৭ জুন) রাত সোয়া ৯টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে ঘণ্টাখানেক সেখানে অবস্থান করেন তিনি।

বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।

এদিকে, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন তার মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, সিসিইউ সুবিধাসম্বলিত কেবিনে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।

গত ২৩ জুন খালেদা জিয়া পেসমেকার বসানো হয়। দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসা চলছে। গত ২১ জুন মধ্যরাতে খালেদা জিয়ার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে ভর্তি করা হয়।

মিজানুর রহমান/অমিয়/

দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বাজেটের নৈতিক বৈধতা নেই : এবি পার্টি

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৬:৩৩ পিএম
দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারীদের বাজেটের নৈতিক বৈধতা নেই : এবি পার্টি
ছবি : সংগৃহীত

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী বলেছেন, ‘ভোট জালিয়াত ও দেশের সম্পদ লুণ্ঠনকারী সরকারের জনগণের ট্যাক্স খরচ করার এবং বাজেট দেওয়ার নৈতিক কোন বৈধতা নেই। জনগণ একদিন এই ডামি সরকারের বিচার করবে।’ 

সোমবার (১ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি। আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য অর্থবিল পাসের প্রতিবাদে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে এবি পার্টি। এটি সঞ্চালনা করেন দলের যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু।

সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ভোট চুরি ও দুর্নীতির অভিযোগ তারা যদি আমাদের অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করেন তাহলে যা হবার তা হবে। এ সরকারের ল্যাসপেন্সাররা ব্যাংক, শেয়ারবাজার, রিজার্ভ সব একটা একটা করে খেয়ে ফেলেছে।’

সরকারের মন্ত্রী-এমপি, সচিব ও বিভিন্ন বাহিনীর দায়িত্বশীল পদে যারা আছেন তাদের দায়িত্ব নেওয়ার আগে নিজ নিজ সম্পদের বিবরণী দাখিলের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের এত জমি, ফ্ল্যাট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আর নগদ অর্থ তো অতীতে ব্রিটিশ লুটেরাদের হার মানিয়ে দিয়েছে।’ 

রাজস্ব বোর্ডের সাবেক প্রধান ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সোলায়মান চৌধুরী বলেন, ‘রাজস্ব বোর্ড যদি স্বাধীনভাবে সততার সঙ্গে কাজ করে তাহলে মানুষ ট্যাক্স ফাঁকি না দিয়ে বরং দ্বিগুণ ট্যাক্স কালেকশনের সম্ভাবনা রয়েছে। তেমনি ব্যাংকগুলো যদি সরকারি দলের এমপি-মন্ত্রী ও তাদের পরিবারের প্রভাবমুক্ত থাকে তাহলে সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগিতায় শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত গড়ে উঠবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। সরকারি ক্রয় সম্পর্কিত বিষয়গুলো থেকে শুরু করে প্রতিটি ধাপে এখন এই সরকার দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে।’ প্রতিবছর রাজস্ব বোর্ডের সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানান তিনি। 

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “আওয়ামী লীগের আশ্রয়ে থাকা হাজার হাজার বেনজীর-মতিউর চুরি-দুর্নীতির যে নজির সৃষ্টি করেছে তাতে এই দলের নাম এখন নতুন করে ‘আওয়ামী লুটপাট লীগ’ রাখা উচিত।” 

তিনি বাজেটের সমলোচনা করে বলেন, ‘একদিকে জনগণের ওপর করের বোঝা চাপানো হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাংক থেকে আমানতকারীরা ঋণ ও এলসি সুবিধা পাচ্ছে না। ব্যাংকে রাখা আমানত পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে।’ 

ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘আমরা প্রথমেই বলতে চাই, একটি অবৈধ সরকার আসলেই বাজেট পেশ করার এখতিয়ার রাখে কি-না? কারণ বাজেট, করসহ অন্য বিষয়গুলো জন্ম থেকেই জনগণের অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। বাজেটের আগেই আমরা বলেছিলাম, কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করতে হবে, তা করা হয়নি। কর আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তা বাস্তবভিত্তিক নয়। আসলে এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের কারণে জনগণ নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নাই।’ 

ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনার, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব আব্দুল বাসেত মারজান, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, এম আমজাদ খান, যুবপার্টির আহ্বায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, আহমাদ বারকাজ নাসির, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ কবির, সদস্যসচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মশিউর রহমান মিলু, শরণ চৌধুরী, ফেরদৌসী আক্তার অপি, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, সদস্যসচিব আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লা রনিসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। 

এনাম আবেদীন/সালমান/

বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্ত করছে সরকার: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫১ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৫:৫১ পিএম
বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্ত করছে সরকার: মির্জা ফখরুল
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্র বানানোর চক্রান্ত করছে সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্র করতে আজকে এ সরকার চক্রান্ত করছে। প্রতারণা আশ্রয়ে বাংলাদেশের মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছেন তারা। সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে ভারতের কাছে পরনির্ভরশীল করে ফেলবে। আমরা কোন ষড়যন্ত্রের কথা বলছি না, সত্য কথা বলছি।

সোমবার (১ জুলাই) জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দদের নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া পাঠের আয়োজন করে জাতীয়বাদী আইনজীবী ফোরাম। এসময় উপস্থিতি ছিলেন আইনজীবী ফোরামের সভাপতি জয়নুল আবেদিন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল সহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

ভারতের সঙ্গে সরকারের সমঝোতা চুক্তির সমালোচনা করে তিনি বলেন, সমঝোতা চুক্তির ফলে অতি অল্প সময়ে বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল করবে ভারতের কাছে- এটা প্রমাণিত। সবচেয়ে মারাত্মক বিষয় হচ্ছে, রেললাইন করিডোর। এটি বাংলাদেশের মানুষের কোন কাজে আসবে না, এখানে বাংলাদেশের কোন স্বার্থও নেই। আকাশ ও নৌ পথে পার্টনারশিপ দেওয়া হয়েছে। এটাতে কোন আপত্তি নেই। আপত্তি হল বাংলাদেশের মানুষ কী পেল? আমরা তো কিছুই পাইনি। আমরা তিস্তা নদীর পানি এবং অভিন্ন নদীর পানির হিস্যা পাইনি। সীমান্ত হত্যা বন্ধ হচ্ছে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে আজ একদলীয় ফ্যাসিবাদ শাসনব্যবস্থা চেপে বসেছে। একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। দেশের মানুষ এখন ন্যায়বিচার পায়, অর্থনেতিক দিক দিয়ে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে আছে। দেশে আইনের শাসন নেই। সবমিলিয়ে বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। তাই দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আইনজীবী ফোরামের নেতৃবৃন্দরা অব্যাহত রাখার শপথ নিয়েছেন।

নতুন করে সমমনা জোটের সাথে বৈঠক করে যাচ্ছেন আন্দোলনকে চাঙ্গা করতে, এ প্রক্রিয়াটা কোন পর্যায়ে আছে এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রক্রিয়া চলছে শীঘ্রই জানতে পারবেন।

আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আন্তর্জাতিক ও জাতীয়- যেকোন জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা। কিন্তু এই সরকার জঙ্গিবাদের নাম করে তাদের বিরোধী পক্ষকে হয়রানি করেছে, তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে, কারাগারে নিক্ষেপ করেছে।

আইনজীবী ফোরামের সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন বলেন, দেশে আইন শাসন, গণতন্ত্র ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার জন্য শপথ নিয়েছি। অল্প কিছু দিনের মধ্যে আইনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য চেষ্টা করব, ইনশাল্লাহ। সেজন্য জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সবাই প্রস্তুত আছে, আমরা সফল হবো। 

শফিক/এমএ/

দেশ বিক্রির চুক্তি আড়াল করতেই কথিত জঙ্গি নাটক: ইসলামী আন্দোলন

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৫ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০৪:০৯ পিএম
দেশ বিক্রির চুক্তি আড়াল করতেই কথিত জঙ্গি নাটক: ইসলামী আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

ভারতের সঙ্গে দেশ বিক্রির চুক্তি আড়াল করতেই কথিত জঙ্গি নাটক সাজানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।

রবিবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তেজগাঁও থানা শাখার নবাগত সদস্য তারবিয়াতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে দেশ বিক্রির চুক্তি আড়াল করতেই নিরীহ মাদরাসার ছাত্রদের আটক করে কথিত জঙ্গি নাটক সাজানো হচ্ছে। যা দেশের মানুষ বহু আগ থেকেই জানে ও বুঝে। ঈদুল আজহার ছুটির পর যখন ছাত্ররা বাড়ি থেকে মাদরাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। যাতায়াত পথ থেকে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে তিন-চার দিন পর মিডিয়ার ট্রায়াল দিচ্ছে নাশকতা ও জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে দেশের স্বার্থবিরোধী সব চুক্তি বাতিলের দাবিতে রাজনীতির মাঠ যখন উত্তপ্ত; পুলিশ, আমলা ও সরকারদলীয় দুর্নীতিবাজ, অর্থ পাচারকারীদের মুখোশ যখন জাতির সামনে উন্মোচিত হচ্ছে, ঠিক তখন গণমাধ্যম ও দেশবাসীর দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্যদিকে ফেরানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে সরকার। অনতিবিলম্বে কথিত জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্তের অজুহাতে গ্রেপ্তারকৃত মাদরাসার নিরীহ ছাত্র-শিক্ষকদের মুক্তি দিন। অযথা হয়রানি বন্ধ করুন।’

শাখা সভাপতি আলহাজ আবুল কাশেমের সভাপতিত্বে ওই কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন নগর উত্তর সহ-প্রচার ও দাওয়াহবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মাদ নাজমুল হাসান, মাওলানা সাব্বির খান, হাবিবুর রহমান, শাহজাহানসহ ওয়ার্ড ও ইউনিট নেতারা। 

এনাম আবেদীন/সালমান/অমিয়/

ঢাকা উত্তর আ.লীগে পদ-বাণিজ্য: ‘কল রেকর্ড’ ফাঁস করেন সাবেক এমপি হাবিব

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ১২:৩১ পিএম
আপডেট: ০১ জুলাই ২০২৪, ০১:১২ পিএম
ঢাকা উত্তর আ.লীগে পদ-বাণিজ্য: ‘কল রেকর্ড’ ফাঁস করেন সাবেক এমপি হাবিব
ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক এমপি হাবিব হাসান

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের অর্থের বিনিময়ে দলীয় পদ দেওয়ার একটি ‘কল রেকর্ড’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এই কল রেকর্ড ভাইরাল হওয়ার পেছনে মূল কলকাঠি নেড়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা-১৮ আসনের সাবেক এমপি হাবিব হাসান। দুজনই ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতা। কল রেকর্ডটি ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মোবাইলে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই হাবিবের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের কাছে বিচার দেওয়ার কথা খবরের কাগজকে জানিয়েছেন শেখ বজলুর রহমান। 

গত ২৬ জুন ‘আ. লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের কমিটি- সভাপতি বজলুর অর্থ লেনদেনের অডিও ফাঁস’ শিরোনামে খবরের কাগজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ইতোমধ্যে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে শেখ বজলুর রহমানের পদ বাণিজ্যের এই কল রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। খোদ সভাপতির এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতারাও। ২ মিনিট ২০ সেকেন্ডের ফোনালাপে শোনা যায়, ঢাকা মহানগর উত্তর ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের শীর্ষ পদ পেতে আকবর আলী নামের এক নেতা শেখ বজলুর রহমানের মোবাইলে ফোন করেন। সেখানে ওয়ার্ডের সভাপতি অথবা সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে আকবর আলী নগর সভাপতি শেখ বজলুর রহমানকে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, নগরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের এই কল রেকর্ড  ফাঁস হওয়ার নেপথ্যে রয়েছেন একই কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাসান। গতকাল সেই পদপ্রার্থী আকবর আলীর সঙ্গে সাবেক এমপি হাবিব হাসানের একটি ফোনালাপ খবরের কাগজের কাছে এসেছে। অডিও বার্তাটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এর আগে সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা আকবর আলী ১০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে দলীয় পদ নেওয়ার কথা বলেন। আকবর আলী কৌশলে এই কলটি রেকর্ড করে সাবেক এমপি হাবিব হাসানের কাছে পাঠান। হাবিব হাসান এই রেকর্ডটি বিভিন্ন মাধ্যমে ভাইরাল করেন। সে কথা আবার সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের কানেও পৌঁছে যায়। এরপর হাবিব ও আকবরের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন শেখ বজলুর রহমান। 

‘হাবিব ও আকবর আলীর নতুন ফাঁস হওয়া ১ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের অডিও রেকর্ডটিতে শোনা যায়, আকবর আলী বলছেন, ভাই এইডা কি হইলো ভাই, বুঝলাম না! 

হাবিব হাসান: কোনডা ভাই?
আকবর: এই যে ওই দিন বজলু ভাইয়ের লগে যে কথা বললাম। আমনের (হাবিবের) অফিসে আমারে নিয়ে- গিয়া- ডাইক্কা কথা বললাম, তয় রেকর্ডটা এই সাংবাদিক পুরা ভাইরাল করে দিলো! দুই জনের ছবি দিয়া। এডার কী জবাব দিই? বজলু ভাই ওনে (এখন) ফোন দিছে, আমি কী জবাব দিই? কন তো। ক্যারুম (কেমন) প্যাঁচের ভিত্তে পড়লাম! ভাই?

হাবিব হাসান: চুপ-চাপ বয়ে (বসে) থাকেন গা। ফোন বন্ধ করে বয়ে থাকেন গা।
আকবর: আমনে তো আমারে আশ্বাস দিতে হইবো, আমি তো রেকর্ডটা শুধু আমনেরে (আপনাকে) দিছিলাম। আর তো কেউরে দিছি না। যেমনে হোক আমনে (আপনি) তো আমার নলেজে দিবেন যে- আকবর ভাই কেউ ফোন দিলে ধরবেন না। চুপ-চাপ আপনে বয়ে (বসে) থাকেন, যা করার আমি করতাসি, তাইলে বুঝি আমার ভাই কাজ করতাছে আমার লাইগা।

হাবিব হাসান: আপনে ফোন বন্ধ করে বয়ে থাকেন।’ 
এর পরে দুই নেতা আরও কিছু কথা বলেন।    

এই কল রেকর্ডের বিষয়ে জানতে সাবেক এমপি হাবিব হাসান এবং আকবর আলীকে একাধিকবার কল করলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি। মেসেজের কোনো জবাব দেননি। তবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এক নেতা ও হাবিব হাসানের ঘনিষ্ঠ একজন কল রেকর্ডটি তাদের বলে নিশ্চিত করেছেন। 

এদিকে হাবিব ও আকবরের কল রেকর্ডটি শুনেছেন বলে জানান ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। খবরের কাগজকে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে চাইলে সব কিছু করতে পারি না। আমরা এই পদে থেকে অনেক কিছুই করা যায় না। তাই আমি দলীয় হাইকমান্ডকে বিষয়টি জানিয়েছি। এখন হাইকমান্ড যে সিদ্ধান্ত নিবে তাই হবে।’ অবশ্য তিনি ইতোমধ্যে থানায় জিডি করেছেন বলে জানা গেছে।

বিএনপির সংবাদ সম্মেলন দেশকে আজীবন ভারতের গোলামে পরিণত করবে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৪ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১০:০৪ পিএম
দেশকে আজীবন ভারতের গোলামে পরিণত করবে: মির্জা ফখরুল
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন বর্তমান সরকার ভারতের সঙ্গে যে ১০টি সমঝোতা স্মারক সই করেছে সেগুলো গোলামির নবতর সংস্করণ মাত্র। কানেক্টিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশ পর্যন্ত রেল যোগাযোগের নামে করিডোর প্রদানের মাধ্যমে যা করা হয়েছে তাতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, নিশ্চয়ই ১৯৭২ সালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামি চুক্তির কথা স্মরণ আছে। ৫২ বছর পর সে ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুন ভারতের সঙ্গে সমঝোতার আড়ালে যে সকল সমঝোতা স্মারক করা হয়েছে তা দেশকে আজীবন ভারতের গোলামে পরিণত করবে। বিএনপি দেশবিরোধী এসব চুক্তি-সমঝোতা প্রত্যাখান করছে। 

রবিবার (৩০ জুন) বিকালে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফর, চুক্তি-সমঝোতার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, এসব চুক্তি-স্মারকের মাধ্যমে দেশের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার অংশে পরিণত করা হয়েছে, যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এসব সমঝোতা ও চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ভূরাজনীতিতে নিরাপত্তাকৌশলগত “বাফার স্টেট” হিসেবে ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে চান। এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জটিলতার মধ্যে পড়বে। 

বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্তি শূন্য

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শাসকগোষ্ঠী দাবি করে ভারতের সাথে সম্পর্ক ‘অনন্য উচ্চতায়’ পৌঁছেছে। কিন্তু সম্পর্কের তথাকথিত ‘সোনালি অধ্যায়’ সময়কালে বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্তি শূন্যের কোঠায়। এ সময়ে দুই দেশের মধ্যকার লেনদেনের প্রধান অংশজুড়ে রয়েছে কানেক্টিভিটির নামে একের পর এক ভারতকে ট্রানজিট ও করিডোর সুবিধা প্রদান। ট্রানজিট-করিডোর দেওয়ার রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক ও কৌশলগত ঝুঁকি সত্ত্বেও সবকিছুই একতরফাভাবে করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থকে কোনো গুরুত্বই দেওয়া হয়নি। একদিকে ভারত পেয়েছে অবাধ স্থল ও নৌ ট্রানজিট, যা ভারতের অবশিষ্ট অংশের সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের সেভেন সিস্টার্সের যোগাযোগের সময় ও দৈর্ঘ্য কমিয়েছে অন্তত তিন-চতুর্থাংশ। কলকাতা-আগরতলার ১৭০০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কিলোমিটারে। ভারত পেয়েছে বাংলাদেশের পায়রা, মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অগ্রাধিকার সুবিধা। অন্যদিকে বাংলাদেশ নেপালের মাত্র ২১/২২ কিলোমিটারের ট্রানজিট সুবিধা ভারতের কাছে থেকে আদায় করতে পারেনি। নানা নাম দিয়ে যে দশটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো তাতে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শূন্য।

তিনি বলেন, রেল করিডোরের ফলে বাংলাদেশের লাভ নিয়ে দারুণ সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। একতরফাভাবে ভারতকে করিডোর সুবিধা দেওয়ার জন্য এ চুক্তি করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে না। তার মতে, একতরফা আগ্রাসী বাণিজ্যে বাংলাদেশকে ভারতের অবাধ বিপণিকেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। দু’দেশের সামগ্রিক ২৬ বিলিয়ন বার্ষিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের হিস্যা মাত্র দুই বিলিয়ন। এর মাঝেও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। তীব্র বেকারত্বের বাংলাদেশে কাজ করছে লাখ লাখ ভারতীয় যুবক। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী সংসদে জানিয়েছেন, গত ১০ মাসে ভারতীয়রা নিয়ে গেছে ৫০.৬০ মিলিয়ন ডলার। আমরা জানি, এর বাইরেও অবৈধ পন্থায় নিয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ ডলার।

সীমান্তে হত্যা নিয়ে সরকার চূড়ান্তভাবে নির্লিপ্ত

বাংলাদেশ—ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে প্রতিবছর রেকর্ডসংখ্যক হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার পরও এ সফরে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকার চূড়ান্তভাবে নির্লিপ্ত থেকেছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত অন্তত ১১ বাংলাদেশি সীমান্তে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৯ জন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের তথ্যমতে, ২০০০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ১ হাজার ২৩৬ বাংলাদেশি নিহত এবং ১ হাজার ১৪৫ জন আহত হয়েছেন। এমনকি বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির সদস্যরাও রেহাই পাননি। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের তিনদিনের মাথায়ও একজনকে হত্যা করা হয়েছে। 

সকল চুক্তি-সমঝোতা জনসমক্ষে প্রকাশ করুন

মির্জা ফখরুল বলেন, অবৈধ সরকার রাষ্ট্রের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে কেবলমাত্র ক্ষমতার দখলদারত্ব অব্যাহত রাখতে দেশি-বিদেশি সহযোগী গোষ্ঠী কিংবা প্রভুদের নিরন্তর আস্থা অর্জনে সচেষ্ট। ‘ঢাকা ও দিল্লি নতুন যাত্রা শুরু করেছে, উভয় দেশ রূপকল্প ২০৪১ ও বিকশিত ভারত ২০৪৭ অনুসরণ করে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ নিশ্চিত করার জন্য ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে’- শেখ হাসিনার এ বক্তব্যের মাধ্যমেই তার ভারত সফরের প্রকৃত স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছে। যা দেশবাসীও গভীরভাবে উপলব্ধি করেন বলে বিএনপি বিশ্বাস করে। এ সফরসহ ভারতের সঙ্গে ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত সব চুক্তি অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানান। 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ ও জহির উদ্দিন স্বপন উপস্থিত ছিলেন।

সবুজ/এমএ/