জুমার খুতবার আগে যে আজান দেওয়া হয়, এর জবাব দেওয়া যাবে কি না—এ ব্যাপারে ফকিহদের থেকে দুই ধরনের মতামত পাওয়া যায়। কেউ কেউ বলেন, এ আজানের জবাব দেওয়া যাবে না। আতা (রহ.) বলেন, ‘আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, তারা জুমার দিন ইমাম সাহেব খুতবার জন্য বের হওয়ার পরে (মুসল্লিদের জন্য) নামাজ পড়া এবং কথা বলা অপছন্দ করতেন।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ৫৩৪০)
বুখারির একটি হাদিস এবং অন্য আরও বর্ণনার আলোকে অনেক ফকিহ বলেছেন, জুমার খুতবার আজানের জবাব দেওয়া জায়েজ আছে। আবু উমামা ইবনে সাহল ইবনে হুনাইফ (রহ.) বলেন, ‘‘আমি মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.)-কে দেখেছি, তিনি মিম্বারে বসা ছিলেন এবং মুয়াজজিন আজান দিলেন। মুয়াজ্জিন যখন বললেন, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’, তখন মুয়াবিয়া (রা.) বললেন, ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার’, যখন আজান শেষ হলো তখন তিনি বললেন, ‘হে লোকসকল! আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এই মজলিশে যখন মুয়াজ্জিন আজান দেয় তখন এমনটিই বলতে শুনেছি, যেমনটি তোমরা আমাকে বলতে শুনলে।’’ (বুখারি, হাদিস: ৯১৪)
সাইদ ইবনুল মুসাইয়িব (রহ.) বলেন, ‘ইমাম খুতবার জন্য বের হলে নামাজ পড়া যাবে না এবং খুতবা শুরু করলে কথা বলা যাবে না।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ৫৩৪২)
উল্লিখিত হাদিস ও আসারের আলোকে অনেক ফকিহ বলেছেন, খুতবা শুরু করার আগে আজানের জবাব দেওয়া জায়েজ আছে। হিন্দুস্তানের একাধিক ফকিহও এ মতের পক্ষে। আব্দুল হাই লখনভি (রহ.), মুফতি কিফায়াতুল্লাহ (রহ.), জাফর আহমাদ উসমানি (রহ.), মুফতি আব্দুর রহিম লাজপুরি (রহ.) প্রমুখ ফকিহ জুমার আজানের জবাব দেওয়া জায়েজ আছে বলে মতামত দিয়েছেন।
সুতরাং কেউ যদি জুমার খুতবার আজানের জবাব দেয় তাহলে তাকে নিষেধ করা যাবে না। (বাদায়েউস সানায়ে, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৪৯৫; আলবাহরুর রায়েক, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ১৫৫; কিফায়াতুল মুফতি, খণ্ড: ৫, পৃষ্ঠা: ২০৫; ইমদাদুল আহকাম, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৪১৯)
লেখক: আলেম ও সাংবাদিক