ঢাকা ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪

বিবাহের খুতবা

প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪, ০৮:১৮ পিএম
বিবাহের খুতবা
দুটি জায়নামাজ। ছবি: পিন্টারেস্ট

বিবাহ সুন্নতসম্মত পদ্ধতিতে হওয়া বাঞ্ছনীয়। বিবাহ সুন্নাহসম্মত না হলে এর সওয়াব ও বরকত থেকে বঞ্চিত হয় বর-কনে এবং সংশ্লিষ্ট সবাই। বিয়ের অন্যতম অনুষঙ্গ বিয়ের খুতবা। এই খুতবা দাঁড়িয়ে দেওয়া সুন্নত। তবে বসে দিলেও গুনাহ নেই। তাতে বিবাহের ক্ষতি হবে না। খুতবা আরবিতে দিতে হয়। এখানে বিয়ের আরবি খুতবা, উচ্চারণ ও অর্থসহ তুলে ধরা হলো-

إن الحمد لله نحمده ونستعينه ونستغفره ونؤمن به ونتوكل عليه، ونعوذ بالله من شرور انفسنا ومن سيئات اعمالنا، من يهده الله فلا مضل له ومن يضلل فلا هادي له، واشهد ان لا اله الا الله وحده لا شريك له، واشهد ان سيدنا ومولانا محمد عبده و رسوله. اما بعد!

فأعوذ بالله من الشيطان الرجيم، بسم الله الرحمن الرحيم، يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ (سورة آل عمران : 102)  

وقال تعالى: يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ، واحِدَةٍ، وخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا ونِسَاءً واتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ والْأَرْحَامَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا (سورة النساء:1)

وقال تعالى: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَقُولُوا قَوْلًا سَدِيدًا، يُصْلِحْ لَكُمْ أَعْمَالَكُمْ وَيَغْفِرْ لَكُمْ ذُنُوبَكُمْ وَمَنْ يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ فَازَ فَوْزًا عَظِيمًا (سورة الأحزاب: 70-71)

وقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: إذا تزوج العبد فقد استكمل نصف الدين فليتق الله في النصف الباقي ( مشكاة المصابيح: 3096)

وقال عليه الصلاة والسلام: تَزَوَّجُوا الوَدُودَ الوَلودَ ، فإني مُكَاثِرٌ بكم الأمم  (أبي داود: 2046)

বাংলা উচ্চারণ: ইন্নাল হামদা লিল্লাহি, নাহমাদুহু ওয়া নাস্তাইনুহু, ওয়া নাস্তাগফিরুহু, ওয়া নাউজুবিল্লাহি মিন শুরুরি আনফুসিনা, ওয়ামিন সাইয়ি য়াতি আমালিনা, মাই ইয়াহদি হিল্লাহু ফালা মুদিল্লালাহ, ওয়া মাই ইউদলিল ফালা হাদিয়া লাহ।
ওয়া আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহ, ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহ, আম্মা বাদ! ফা আউজু বিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম। বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। ইয়া আইয়ুহাল্লাজিনা আমানুত-তাকুল্লাহা হাক্কা তুকাতিহি, ওয়ালা তামুতুন্না ইল্লা ওয়া আনতুম মুসলিমুন।

ওয়া কালা তায়ালা, ইয়া আইয়ুহান্না সুত্তাকু রাব্বাকুম আল্লাজি খালাকাকুম মিন নাফসিও ওয়াহিদাতিও, ওয়া খালাকা মিনহা জাওজাহা, ওয়া বাসসা মিনহুমা রিজালান কাসিরাও ওয়া নিসা আ, ওয়াত তাকুল্লা হাল্লাজি তাসা আলুনা বিহি, ওয়াল আরহাম, ইন্নাল্লাহা কানা আলাইকুম রাকিবা।

ওয়া কালা তায়ালা, ইয়া আইয়ুহাল্লা জিনা আমানু ইত্তাকুল্লাহা, ওয়া কুলু কাওলান সাদিদা। ইউসলিহ লাকুম আমালাকুম ওয়া ইয়াগ ফিরলাকুম জুনুবাকুম, ওয়ামাই ইয়ুতিয়িল্লাহা ওয়া রাসুলাহু ফাকাদ ফাজা ফাওজান আজিমা।’

ওয়া কালা আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম, ইজা তাজাওয়াজাল আবদু, ফাকাদ ইসতাকমালা নিসফাদ দীন‚ ফাল ইয়াত্তা কিল্লাহা ফিন নিসফিল বাকি।’

ওয়া কালা আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম, আন্নিকাহু মিন সুন্নাতি, ফামান রাগিবা আন সুন্নাতি ফালাইসা মিন্নি। ওয়া কালা আইজান, তাজাও ওয়াজু আল ওয়াদুদাল ওয়ালুদ, ফা ইন্নি মুকাসিরুম বিকুমুল উমামা ইয়াউমাল কিয়ামাহ।’

বাংলা অর্থ: নিশ্চয়ই সকল প্রশংসা আল্লাহর। আমরা তাঁর প্রশংসা করি। তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করি এবং তাঁর কাছে ক্ষমা চাই। আমরা নফসের অকল্যাণ থেকে এবং আমাদের খারাপ কর্মগুলো থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি। আল্লাহ যাকে হেদায়েত দেন কেউ তাকে বিভ্রান্ত করতে পারে না, আর আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করেন তাকে কেউ হেদায়েত দিতে পারে না। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাসক নেই, তিনি একক, তাঁর কোনো শরিক নেই এবং মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বান্দা ও রাসুল।

হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে সত্যিকারের ভয় করো এবং মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। হে মানবজাতি, তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, যিনি তোমাদের এক সত্তা থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং তার থেকেই তার যুগল সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের থেকে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন। ভয় করো যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট জিজ্ঞাসা করো এবং (সতর্ক থাকো) রক্ত, আত্মীয়তার বন্ধন সম্পর্কে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের ওপর তীক্ষ্ন দৃষ্টি রাখেন। (সুরা নিসা, আয়াত: ১)

হে মুমিনগণ, আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্য কথা বলো। তিনি তোমাদের কর্মের ভুলত্রুটি সংশোধন করবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করবেন। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে, তারাই অর্জন করবে প্রকৃত সফলতা। (সুরা আহজাব, আয়াত: ৭০-৭১)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, বান্দা বিবাহ করার মাধ্যমে তার অর্ধেক দীন পূর্ণ করে। অতএব অবশিষ্ট অর্ধেকের জন্য (দীনের ব্যাপারে) আল্লাহকে ভয় করা উচিত। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস: ৩০৯৬)

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, তোমরা এমন স্ত্রীলোকদের বিবাহ করবে, যারা স্বামীদের অধিক ভালোবাসে এবং যারা অধিক সন্তান প্রসবিনী। কেননা, আমি (কিয়ামতের দিন) তোমাদের সংখ্যাধিক্যের কারণে (পূর্ববর্তী উম্মতের ওপর) গর্ব করব। (আবু দাউদ, হাদিস: ২০৪৬)

এ খুতবা ছাড়াও অন্য খুতবা দেওয়া যাবে। যে খুতবায় থাকবে আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রশংসা। বিয়ে সম্পর্কিত কোরআনের আয়াত ও হাদিস। 

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক 

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ উচ্চারণ ও অর্থ, কখন পড়া হয়?

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ০৯:১৫ পিএম
‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ উচ্চারণ ও অর্থ, কখন পড়া হয়?
মক্কার মসজিদুল হারামে নামাজ পড়ছেন মুসল্লিরা। ছবি : হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়

হজ ও ওমরার সঙ্গে সম্পৃক্ত এক বিশেষ আমল হলো তালবিয়া। হাজিরা হজের ইহরাম বাঁধার সময় থেকে জামরাতুল আকাবায় পাথর নিক্ষেপের আগ পর্যন্ত সময়টায় তালবিয়া পড়েন। তবে কঙ্কর নিক্ষেপের আগমুহূর্তে তালবিয়া পড়া শেষ করতে হয়। আর ওমরা পালনকারীদের ইমরাম বাঁধার পর থেকে তালবিয়া পড়া শুরু করে এবং বায়তুল্লাহর তাওয়াফ শুরু করার আগে তালবিয়া পড়া শেষ করতে হয়।

তালবিয়া

لَبَّيْكَ اَللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لا شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لا شَرِيْكَ لَكَ

তালবিয়ার বাংলা উচ্চারণ 
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।

তালবিয়ার বাংলা অর্থ
আমি উপস্থিত হে আল্লাহ, আমি উপস্থিত, আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোনো অংশীদার নেই। নিঃসন্দেহে সমস্ত প্রশংসা ও সম্পদরাজি আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্য আপনার। আপনার কোনো অংশীদার নেই।’ (বুখারি, হাদিস: ১৫৪৯; মুসলিম, হাদিস: ২৮১১)

পুরুষ উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পাঠ করবেন এবং নারীরা পড়বেন নিম্নস্বরে। (মানাসিক, পৃষ্ঠা: ১০০, আদ্দুররুল মুখতার, পৃষ্ঠা: ৪৮৪)। সাইব ইবনে ইয়াজিদ (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমার কাছে জিবরাইল (আ.) এসে বললেন, আমি যেন আমার সাহাবিদের উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পাঠের নির্দেশ দিই।’ (তিরমিজি, হাদিস: ১/১৭১)

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নারীরা উচ্চৈঃস্বরে তালবিয়া পাঠ করবেন না। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, হাদিস: ১৪৮৮২)

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:০৪ এএম
আপডেট: ৩০ জুন ২০২৪, ১১:১১ এএম
অসুস্থ ব্যক্তির জন্য দোয়া
ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজখবর নেওয়ার ছবি।

সুস্থতা আল্লাহতাআলার বড় নেয়ামত। অসুস্থতাও আল্লাহর নেয়ামত। অসুস্থতার মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাকে পরীক্ষা করেন। তার গুনাহ মাফ করেন। বিভিন্ন হাদিসে রোগ-শোক ও বালা-মসিবতের তাৎপর্য ও ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। আলি (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, কোনো মুসলিম যদি অন্য কোনো মুসলিম রোগীকে সকালে দেখতে যায়, তা হলে ৭০ হাজার ফেরেশতা তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত দোয়া করতে থাকে। সে যদি সন্ধ্যায় তাকে দেখতে যায়, তবে ৭০ হাজার ফেরেশতা ভোর পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করতে থাকে এবং জান্নাতে তার জন্য একটি ফলের বাগান তৈরি হয়।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৯৬৯) 

রোগীর গায়ে হাত বুলিয়ে নবিজি (সা.) যে দোয়া পড়তেন
সহমর্মিতা মুমিনের গুণ। অসুস্থ ব্যক্তিদের দেখতে যাওয়া, প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নেওয়া রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ। অসুস্থকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দোয়া করা উচিত। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আমাদের কারও অসুখ হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তার ডান হাত রোগীর গায়ে বুলিয়ে দিয়ে বলতেন—

বাংলা উচ্চারণ: আজহিবিল বাস, রব্বান নাস, ওয়াফি আংতাশ শাফি লা শিফাআ ইল্লা শিফাউকা শিফাআন লা ইউগাদিরু সাকমা। 

বাংলা অর্থ: হে মানুষের রব, এ ব্যক্তির রোগ দূর করে দিন। তাকে নিরাময় করে দিন। নিরাময় করার মালিক আপনিই। আপনার নিরাময় ছাড়া আর কোনো নিরাময় নেই। এমন নিরাময় যা কোনো রোগকে বাকি রাখে না।’ (মুসলিম, হাদিস: ২১৯১) 

যে দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করতেন নবিজি (সা.)
আনাস বিন মালেক (রা.) বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়ে অসুস্থ ব্যক্তিদের ঝাড়ফুঁক করতেন—

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা রাব্বান-নাসি মুজহিবাল বাসি, ইশফি আনতাশ শাফি, লা শাফি ইল্লা আনতা শিফায়ান লা য়ুগাদিরু সুকমা।

বাংলা অর্থ: হে আল্লাহ, মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূরকারী। আমাকে আরোগ্য দিন, আপনি আরোগ্যকারী—আপনি ছাড়া কোনো আরোগ্যকারী নেই। এমন আরোগ্য দাও যে, কোনো রোগ অবশিষ্ট না থাকে। (বুখারি, হাদিস: ৫৭৪২)

‎আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে কোনো রোগাক্রান্ত বা বিপদগ্রস্ত লোককে প্রত্যক্ষ করে বলে

বাংলা উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লা হিল্লাজি আফানি মিম্মাব তালাকা বিহি, ওয়া ফাদ্দলানি আলা কাসিরিম মিম্মান খলাকা তাফদিলা’—সে এই রোগে কখনো আক্রান্ত হবে না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৩২) 


লেখক: আলেম ও গবেষক 

সৌদি সরকারের সম্মাননা পেলেন হাব সভাপতি

প্রকাশ: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:১১ পিএম
আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪, ১০:১২ পিএম
সৌদি সরকারের সম্মাননা পেলেন হাব সভাপতি
হাব সভাপতিকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করছেন সৌদি আরবের হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ড. আল হাসান আল মানাখরা। ছবি: সংগৃহীত

হজ ব্যবস্থাপনায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতস্বরূপ হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমকে বিশেষ সম্মাননা জানিয়েছে সৌদি সরকার।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ড. আল হাসান আল মানাখরা হাব সভাপতিকে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সৌদি হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের ডিজি ড. বদর আল সোলায়মানি।

অনুষ্ঠানে সৌদি উপমন্ত্রী ড. আল হাসান আল মানাখরা বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনায় হাব সভাপতির ভূমিকার প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে ২০২৪ সালের হজে সৌদি মোয়াল্লিমদের সেবা প্রদানে কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে জানতে চেয়েছেন এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।

চলতি বছরের হজে পাথর নিক্ষেপের জন্য জামারাতে প্রবেশের সময় অব্যবস্থাপনাসহ কিছু সৌদি মোয়াল্লিমের গাফিলতির বিষয়ে সৌদি উপমন্ত্রীকে হাব সভাপতি অবহিত করেছেন। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে উল্লেখ করে ড. আল হাসান আল মানাখরা বলেন, ‘আগামী (২০২৫) হজের বিষয়ে একটি রোডম্যাপ শীঘ্রই প্রকাশ করা হবে। এ সময় তিনি আল্লাহর মেহমানদের কল্যাণে আগামীতে একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন এবং হাজিদের কষ্ট লাঘবে কি কি করা যায় এ বিষয়ে হাব সভাপতির মতামত ও পরামর্শ প্রত্যাশা করেন।’

সম্মাননা গ্রহণ অনুষ্ঠানে হাব সভাপতি বলেন, ‘ই-হজ ব্যবস্থাপনার কারণে বাংলাদেশের হজযাত্রী ও হজ এজেন্সির কষ্ট লাঘব হয়েছে। একসময় হজযাত্রীদের বাড়ি ভাড়ার আকদ ও হজ ভিসার বারকোডের জন্য এজেন্সিকে মক্কার মোয়াসসাসায় দিনের পর দিন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো এবং অমানবিক শারীরিক কষ্ট করতে হতো। সৌদি সরকারের ই-হজ চালু করার পর এখন আর এ ভোগান্তি নেই।’

এদিকে সৌদি সরকারের ডিজিটাল হজ ব্যবস্থাপনা বর্তমানে হজযাত্রীদের মোয়াল্লেম সিলেকশন, বাড়ি ভাড়া, ট্রান্সপোর্ট, প্যামেন্ট, ই-ভিসা ইত্যাদি সহজ করার জন্য তিনি সৌদি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের হজযাত্রীদের কল্যাণে ই-হজ ব্যবস্থাপনা চালু করেছেন। বর্তমান ডিজিটাল ই-হজ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হজ ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশ পর্বও সহজ করা হয়েছে। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হজযাত্রীদের কল্যাণে সার্বক্ষণিক হজ কার্যক্রম ব্যক্তিগতভাবে তদারকি করেন।’

২০২৪ সালের হজে সার্বিক সহযোগিতা ও বিশেষ করে সময় শেষ হয়ে যাবার পরও হজ ভিসা ইস্যু চালু রাখার জন্য সৌদি হজ ও ওমরা উপমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এ সময় তিনি সৌদি বাদশাহ, ক্রাউন প্রিন্স, হজ ও ওমরা মন্ত্রী, ভাইস মিনিস্টারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতার বার্তা পৌঁছাতে উপমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলানের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন হাব সভাপতি। পাশাপাশি হাবকে সম্মানিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

রায়হান/মিরাজ রহমান

বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের বিধান

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ০৭:০০ পিএম
আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪, ০৭:৩১ পিএম
বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের বিধান
ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহীত বড়শি দিয়ে শাছ শিকার করার কার্টুন

মাছ শিকারের অনেক পদ্ধতি রয়েছে। এর মধ্যে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার পদ্ধতি বেশ পুরোনো। প্রশ্ন হলো, এভাবে মাছ ধরা শরিয়তসম্মত কিনা? অনেকে মনে করেন, বড়শি দিয়ে মাছ ধরা প্রতারণার শামিল। কিন্তু এটি প্রতারণার পর্যায়ে পড়ে না। কেননা প্রতারণার বিধান শুধু মানুষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, মাছ বা অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে নয়। মাছকে আল্লাহ মানুষের খাদ্য হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। ‘তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও তার খাদ্য হালাল করা হয়েছে, যাতে তা তোমাদের ও কাফেলার জন্য ভোগের উপকরণ হয়...।’ (সুরা মায়িদা, আয়াত: ৯৬)

আল্লাহ আরও বলেন, ‘দুটি দরিয়াও এক রকম নয়। একটি সুমিষ্ট, সুস্বাদু, সুপেয়; অন্যটি লবণাক্ত, বিস্বাদ। তথাপি তোমরা সকল (প্রকার পানি) থেকে তাজা গোশত আহার করো আর বের করো অলংকার; পরিধান করার জন্যে। তোমরা দেখতে পাও নৌযানগুলো ঢেউয়ের বুক চিরে চলাচল করে, যাতে তোমরা তাঁর অনুগ্রহ খোঁজ করতে পার, আর যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।’ (সুরা ফাতির, আয়াত: ১২)। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আমি তোমাদেরকে যে রিজিক দান করেছি, তার মধ্যে পবিত্র বস্তুসমূহ ভক্ষণ করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ৫৭)

বড়শি দিয়ে মাছ ধরার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়
এক. মাছকে আকর্ষণ করতে বড়শিতে টোপ হিসেবে বিভিন্ন কিছু ব্যবহার করা হয়। জীবিত ছোট মাছ, ব্যাঙ, পোকামাকড় বা অন্য কোনো প্রাণী গেঁথে পানিতে রাখা হয়। জীবিত প্রাণীকে এভাবে কষ্ট দেওয়া ইসলামসম্মত নয়। হাদিসে কোনো প্রাণী বেঁধে রেখে সেটিকে তীরের লক্ষ্যস্থল বানাতে নিষেধ করা হয়েছে। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) কোনো প্রাণী বেঁধে সেটিকে তীরের লক্ষ্যস্থল বানাতে নিষেধ করেছেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ৪৮৯৯)

দুই. আল্লাহ সৃষ্টিজগতের প্রতিটি বস্তুকে মানুষের কল্যাণের জন্যই সৃষ্টি করেছেন। সুতরাং মানুষ তার প্রয়োজনে মাছ শিকার করতেই পারে। কিন্তু প্রয়োজন ছাড়া এমনিতে বড়শির ব্যবহার করে মাছকে কষ্ট দেওয়া বা অপচয়ের সুযোগ নেই। প্রয়োজন ছাড়া শুধু বিনোদনের জন্য বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করা বৈধ নয়। কারণ এতে একদিকে নিষ্প্রয়োজনে আল্লাহর সৃষ্টিকে কষ্ট দেওয়া হয়, অন্যদিকে অপচয় হয়; ইসলামে দুটোই নিষিদ্ধ। তবে মাছ শিকার করে খাওয়া বা বিক্রয় করা অথবা অন্য কোনোভাবে উপকৃত হওয়াতে সমস্যা নেই। আল্লাহ বলেন, ‘এবং আহার করবে ও পান করবে। কিন্তু অপচয় করবে না। তিনি অপচয়কারীকে পছন্দ করেন না।’ (সুরা আরাফ, আয়াত: ৩১)

তিন. কোনো কোনো এলাকায় বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের জন্য নির্দিষ্ট মূল্যে টিকিট ছাড়া হয়। কোথাও স্থায়ীভাবে টিকিটের বিনিময়ে বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের ব্যবস্থা রয়েছে। টিকিট সংগ্রহকারীরা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মাছ শিকার করে থাকে। যে যা শিকার করতে পারে সেটা তার হয়ে যায়। কেউ বেশি মাছ শিকার করতে পারে, কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে হয়। মাছ শিকারের এমন পদ্ধতি শরিয়তসম্মত নয়। কারণ এতে কে কী পরিমাণ মাছ পাবে, তা অস্পষ্ট। ক্ষেত্রবিশেষে একেবারেই মাছ না পাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এটা এক ধরনের ধোঁকা ও প্রতারণা। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘পাথরের টুকরা নিক্ষেপের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় ও ধোঁকাপূর্ণ ক্রয়-বিক্রয় রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষেধ করেছেন।’ (মুসলিম, হাদিস: ১৫১৩)

এ ছাড়া এতে জুয়া এবং লটারির সঙ্গেও সাদৃশ্যতা রয়েছে। কারণ এখানে সবাই টাকা দিলেও সবার মাছ পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। আবার কে কী পরিমাণ পাবে, তাও জানা নেই। মাছ না পেলে বা কম পেলে টাকা ফেরত পাওয়ার সুযোগ নেই। টিকিটের মূল্য থেকে বেশি মূল্যের মাছ পেলেও সমন্বয় নেই। ফলে কেউ বেশি পায়, কেউ কম পায়, আবার কেউ বঞ্চিত হয়। ইসলামে জুয়া ও লটারি হারাম। আল্লাহ বলেন, ‘হে বিশ্বাসীরা, মদ, জুয়া, মূর্তি ও ভাগ্যনির্ধারক তীর ঘৃণিত শয়তানি কাজ। তোমরা তা বর্জন করো, যাতে তোমরা সাফল্যমণ্ডিত হতে পার।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৯০) 
তবে পুকুরে এভাবে মাছ ধরার ব্যবস্থা করা যেতে পারে যে, শিকারি যা মাছ পাবে, তা মালিকের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় করে নেবে। মাছ না পেলে তো আর অসুবিধা থাকল না। বড়শি দিয়ে মাছ শিকারের যেমন বৈধতা রয়েছে, তেমনি এর অপব্যবহারে নিষেধাজ্ঞাও রয়েছে। 

মাছ আল্লাহতায়ালার দেওয়া বিশেষ এক নিয়ামত। এটা জবাই করতে হয় না, মরার পরও খাওয়া যায় এবং ইহরাম অবস্থায়ও মাছ শিকার করা জায়েজ বা বৈধ। বিভিন্ন দেশে বিভন্নভাবে মাছ শিকার করা হয়। আধুনিক যন্ত্রপাতি, দেশীয় সরঞ্জাম ব্যবহার এবং বিভিন্ন কলাকৌশল প্রয়োগ হয় এক্ষেত্রে। তবে বড়শির ব্যবহার করে মাছ শিকার করা পরিচিত ও সহজ পদ্ধতি। জীবনের সব ক্ষেত্রেই ইসলামের নির্দেশনা ও বিধান রয়েছে। এর উদ্দেশ্য হলো এ বিধান মানার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে এগিয়ে চলা। আমাদের উচিত, বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করার ক্ষেত্রে ইসলাম প্রদত্ত বিধান অনুসরণ করা।

লেখক: আলেম ও মাদরাসা শিক্ষক

বিয়ের যত কল্যাণ

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪, ০৯:০০ এএম
আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪, ০৯:৫১ এএম
বিয়ের যত কল্যাণ
প্রতীকী ছবি

বিয়ে আল্লাহতায়ালার বিশেষ নেয়ামত এবং রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ। বিয়ের মাধ্যমে মানুষ চারিত্রিক অবক্ষয় থেকে বাঁচতে পারে, আদর্শ পরিবার গঠন করতে পারে, জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে পারে এবং মানসিক প্রশান্তি অর্জন করতে পারে। আল্লাহ বলেন, ‘তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জীবনসঙ্গিনী, যাতে তোমরা তাদের কাছে গিয়ে প্রশান্তি লাভ করতে পারো এবং তিনি তোমাদের পরস্পরের মধ্যে সৃষ্টি করে দিয়েছেন মাওয়াদ্দাহ এবং রহমাহ তথা ভালোবাসা এবং দয়া।’ (সুরা রুম, আয়াত: ২১)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বিয়ে করো। কিয়ামতের দিন আমি তোমাদের মাধ্যমে উম্মতের সংখ্যাধিক্যের ব্যাপারে গর্ব করবো।’ (সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকি, ৭/৭৮)। এখানে বিয়ের কয়েকটি কল্যাণকর দিক নিয়ে আলোচনা করা হলো


মানবজাতির সংরক্ষণ: পৃথিবীতে বিয়েই হলো মানবজাতি সংরক্ষণের একমাত্র বৈধ উপায়। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের স্বজাতির মধ্য থেকেই তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন আর তোমাদের জন্য তোমাদের জোড়া থেকে পুত্র-পৌত্রাদি বানিয়েছেন আর তোমাদেরকে উৎকৃষ্ট রিজিক দিয়েছেন...।’ (সুরা নাহল, আয়াত: ৭২)
আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আমি আপনার আগে অনেক নবি-রাসুল পাঠিয়েছি। আমি তাদের দান করেছি স্ত্রী-সন্তান।’ (সুরা রাদ, আয়াত: ৩৮)

চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষা হয়: বিবাহের মাধ্যমে চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষা হয়। জীবনের বাঁকে বাঁকে শয়তানের পেতে রাখা নানা ফাঁদ থেকে বেঁচে থাকা যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন আল্লাহর কোনো বান্দা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়, তখন তার অর্ধেক দ্বীন পূর্ণ হয়ে যায়। এরপর বাকি অর্ধেকের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করা তার দায়িত্ব হয়ে পড়ে।’ (সিলসিলাতুস সহিহাহ, ৬২৫) 

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও  বলেছেন, ‘হে যুবসমাজ, তোমাদের উচিত হলো বিবাহ করা। বিবাহ দৃষ্টি অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তবে কারও বিবাহের সামর্থ্য না থাকলে, তার উচিত রোজা রাখা। রোজা যৌনশক্তি দমন করে রাখে।’ (তিরমিজি, ১০৮১)


মনের স্থিরতা ও প্রশান্তি অর্জন: পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা তাদের কাছে গিয়ে প্রশান্তি লাভ করতে পারো।’ (সুরা রুম, আয়াত: ২১)। এটাও বিয়ের একটা বিশেষ সফলতা যে, বিয়ে মানবমননে প্রশান্তি আনে। সুস্থ চেতনাবোধ জাগ্রত করে। দায়িত্ববোধ শিক্ষা দেয়। এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীই হলো ভোগের সামগ্রী। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভোগের সামগ্রী হলো সৎ জীবনসঙ্গিনী।’ (মুসলিম, ১৪৬৭)
আরেক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) সৌভাগ্যের চার সোপানের কথা উল্লেখ করেছেন। সেখানে প্রথমে বলেছেন, ‘নেককার স্ত্রী।’ (সহিহুত তারগিব, ২৫৭৬)

জৈবিক চাহিদা পূরণ: জৈবিক চাহিদা মানবজীবনের একটা স্বাভাবিক চাহিদা। একটা নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছানোর পরে প্রত্যেক সুস্থ মানুষ এই চাহিদা অনুভব করেন। এটা রাব্বুল আলামিনেরই সৃষ্টি এবং তিনিই এই চাহিদা পূরণের বৈধ পন্থা মানুষকে বলে দিয়েছেন। পৃথিবীতে যারা যখনই এই চাহিদার বিরুদ্ধে গেছে, তারা লাঞ্ছিত হয়েছে, অপদস্থ হয়েছে, ধিক্কৃত হয়েছে। 
যেমন খ্রিষ্টানরা বহুবার বিভিন্ন শ্রেণির খ্রিষ্টানদের জৈবিক চাহিদা পূরণে নিষেজ্ঞাধা জারি করেছে। ফলে হয়েছে কী? সময়ে সময়ে তাদের চার্চগুলোতে যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। ইন্টারনেটে সার্চ করলে এখনো শত শত প্রমাণ পাওয়া যাবে।
একবার সাহাবিগণের একটি দল রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে খাসি হয়ে যাওয়ার আবদার করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাদেরকে এ ব্যাপারে স্পষ্টভাবে নিষেধ করেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে জিহাদে অংশ নিতাম, কিন্তু আমাদের কোনো সম্পদ ছিল না। 

সুতরাং আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বললাম, আমরা কী খাসি হয়ে যাব? তিনি আমাদেরকে খাসি হতে নিষেধ করলেন এবং কোনো নারীর সাথে একটা কাপড়ের বিনিময়ে হলেও বিবাহ করার অনুমতি দিলেন এবং আমাদেরকে এই আয়াত পাঠ করে শোনালেন, হে মুমিনগণ! আল্লাহতায়ালা যে পবিত্র জিনিসগুলো তোমাদের জন্য হালাল করেছেন, তোমরা তা হারাম করো না এবং সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের পছন্দ করেন না।’

স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে যে আল্লাহতায়ালা জৈবিক চাহিদা পূরণের সহযোগী বানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তো কোরআন মাজিদে এবং হাদিসে নববিতে অনেক বর্ণনা রয়েছে। এখানে শুধু একটা আয়াত উল্লেখ করা হলো। 
আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘স্ত্রীগণ তোমাদের পোশাকস্বরূপ এবং তোমরা তাদের পোশাকস্বরূপ।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭) এই আয়াতের সংক্ষিপ্ত তাফসির হলো, পোশাক যেমন মানুষের ইজ্জতের হেফাজত করে, স্বামী-স্ত্রীও একে অপরের ইজ্জতের হেফাজত করে।

লেখক: শিক্ষক, মাদরাসাতুল হেরা, মিরপুর-২